ফখরুলের অভিযোগ: অন্তর্বর্তী সরকার আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী, কারণ তারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, ঐকমত্যের নথি তৈরির সময় সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে কাজ করলেও চূড়ান্তভাবে সেটি উপস্থাপনের পর দেখা যায়, মূল বিষয়গুলো বিকৃত করা হয়েছে এবং বিএনপির দেওয়া “নোট অব ডিসেন্ট” বা ভিন্নমতগুলো উপেক্ষা করা হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল স্মরণ করেন, “যেদিন ঐকমত্যের নথি জমা দেওয়া হয়েছিল, সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। সব দল ছাতা হাতে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে স্বাক্ষর করেছিলাম। দীর্ঘ আলোচনার পর আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, কিছু বিষয়ে মতভেদ ছিল, সেগুলো আমরা লিখিতভাবে জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেটি উপস্থাপন করার পর দেখা গেল, সেখানে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত।” তিনি বলেন, “এটা শুধু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নয়, জনগণের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা যেই আস্থা রেখেছিলাম, তারা সেই আস্থা ভেঙে দিয়েছে। এটি জনগণের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা—একটি ‘ব্রিচ অব ট্রাস্ট’। তাই আজকের রাজনৈতিক অচলাবস্থার দায় সম্পূর্ণভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের।”
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কমিশন প্রায় এক বছর ধরে সংস্কার ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেছে। আমরা বেশির ভাগ বিষয়ে একমত হয়েছি, কেবল কিছু বিষয়ে মতভেদ থাকায় আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিলাম। অথচ চূড়ান্ত নথিতে সেই ভিন্নমতগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।” তিনি দাবি করেন, বিএনপি নির্বাচনে গেলে এসব সংস্কার প্রস্তাব তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকবে, জনগণ যদি সমর্থন দেয়, তবে সংসদে তা পাস করে দেশের কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ফখরুলের এই বক্তব্য মূলত অন্তর্বর্তী সরকারের জবাবদিহি, নীতিগত স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক ঐকমত্যের সংস্কৃতি পুনর্বিবেচনার আহ্বান। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, দীর্ঘ আলোচনার পর প্রস্তুত নথিতে পরিবর্তন বা বাদ পড়া বিষয়গুলো প্রকাশ্যে না আনা হলে আস্থার সংকট আরও গভীর হবে। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য প্রয়োজন, সব পক্ষের উপস্থিতিতে নথির প্রকাশ্য যাচাই, ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আলাদা সংযোজন হিসেবে প্রকাশ এবং ভবিষ্যৎ সংস্কারের জন্য নিরপেক্ষ মধ্যস্থতার উদ্যোগ।
একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার
রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতবিরোধের কারণে জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখন এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে “দুরূহ চ্যালেঞ্জ” হিসেবে দেখছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকার গণভোট ও সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। আলোচনায় এমন প্রস্তাবও উঠে এসেছে যে, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের বিষয়টি সরকার গভীরভাবে বিবেচনা করছে, যদিও এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের প্রসঙ্গটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে উপস্থিত উপদেষ্টাদের মতামত চান। উপদেষ্টাদের বেশিরভাগই জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একদিনে করার পক্ষে মত দেন, তবে প্রধান উপদেষ্টা কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করে শুধু মতামত গ্রহণ করেন।
গত মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তাব জমা দেয় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, সনদের সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কারগুলো বিশেষ সরকারি আদেশ (Executive Order) আকারে ঘোষণা করে তার ভিত্তিতে গণভোট আয়োজন করা উচিত। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে নবনির্বাচিত সংসদকে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হবে, যারা ২৭০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সংস্কার সম্পন্ন করবে। তবে গণভোটের তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সুপারিশ জমা দেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান স্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিএনপি বলেছে, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের এখতিয়ার নেই। দলটির মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল নভেম্বরের মধ্যে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। এনসিপি জানিয়েছে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর দেবে কি না, তা নির্ভর করবে অন্তর্বর্তী সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর। ফলে সংস্কার বাস্তবায়নের প্রশ্নে রাজনৈতিক অনৈক্য নতুন মাত্রা পেয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “২৭০ দিন ধরে আলোচনার পরও আমরা এখনো প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য দেখতে পাচ্ছি না, বরং অনৈক্য আরও গভীর হয়েছে। এটি আমাদের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।” তাঁর ভাষায়, এখন বিরোধ দুইভাবে দেখা দিচ্ছে—প্রথমত, সংস্কার প্রস্তাব কীভাবে পাস করা হবে এবং দ্বিতীয়ত, গণভোট কখন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, “এখন যারা জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, তারাও একে অপরের বিরুদ্ধে উত্তেজিত অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় সরকার কীভাবে অগ্রসর হবে, তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে।”
সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সরকার এখন প্রস্তাবগুলো বিশ্লেষণ করছে এবং দ্রুতই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও জানান, গণভোট একসঙ্গে হবে কি না, এ নিয়ে মতভেদ চরমে উঠেছে। তবে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত এবং সেই সিদ্ধান্ত দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করবে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের কারণে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে সরকার চূড়ান্তভাবে আলোচনায় ফিরবে কি না, না কি নির্বাহী আদেশ জারি করে সরাসরি বাস্তবায়নের পথে যাবে—সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো অনিশ্চিত। তবে উপদেষ্টারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, খুব শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
স্বাক্ষরের পরে বিপক্ষে অবস্থান জুলাই সনদ নিয়ে বিএনপিকে কঠোর বার্তা হাসনাত আবদুল্লাহর
জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করার পরও একটি রাজনৈতিক দল কেন সেই স্বাক্ষরের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার লাকসাম সদরের বাইপাস এলাকায় এনসিপি আয়োজিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বিএনপিকে ইঙ্গিত করে কঠোর সমালোচনা করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বিএনপিকে লক্ষ্য করে বলেন, "নাসির ভাই আজকে বলেছেন, স্বাক্ষর করার পরে আজকে আবার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিয়েই যদি করবা না, তাহলে কাবিনে সিগনেচার কেন করলা। সংসার যদি নাই করবা, তাহলে কবুল কেন বললা।"
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, "কবুল যেহেতু বলেছেন, কাবিনে যেহেতু সিগনেচারও করেছেন, আপনাদের সংসারও করতে হবে। সংসার যদি না করতে চান, রাস্তা খোলা আছে, জনগণের সামনে এসে বলতে হবে আমরা ডিভোর্স দিতে চাই।" তিনি আরও যোগ করেন, জনগণকে বোকা বানিয়ে সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া যাবে না, বরং জনগণের সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
এর আগে, হাসনাত আবদুল্লাহ ফিতা কেটে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন করেন।
পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক (কুমিল্লা অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক) নাভিদ নওরোজ শাহ। লাকসাম উপজেলা প্রধান সমন্বয়ক আল মাহমুদের (ফজলে রাব্বী) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই পথসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জুলাই আন্দোলনের শহীদ লাকসামের জিসানের নানা জাবেদ মিয়া, এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক সালাউদ্দিন জাবের এবং লাকসাম উপজেলা সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম। সভা শেষে লাকসাম সদরে এনসিপির পক্ষে জনমত গঠনে প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়।
শাপলা কলি দিয়ে ইসি বুঝিয়েছে আমরা শিশুদের দল: সামান্তা
নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতীকের তালিকায় নতুন প্রতীক হিসেবে 'শাপলা কলি' অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), যারা দীর্ঘদিন ধরে 'শাপলা' প্রতীকটি পাওয়ার জন্য ইসির কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিল।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ নতুন প্রতীকের তালিকায় 'শাপলা কলি' যুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। যদিও সচিবের দাবি, এই প্রতীক যুক্ত করার সঙ্গে এনসিপি বা অন্য কোনো দলের দাবির কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই।
ইসির এই সিদ্ধান্তে এনসিপি নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বৃহস্পতিবার ঢাকায় জাতীয় যুবশক্তির আয়োজনে এক সেমিনারে মন্তব্য করেন, "কোনো ধরনের আইনি কারণ ছাড়া আমাদেরকে 'শাপলা কলি' দিয়ে গেজেট দিয়েছে ইসি। তারা বুঝিয়েছে আমরা বাচ্চাদের দল।" তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বড় দলগুলোও এনসিপিকে তেমনভাবে মূল্যায়ন করে না, যা এক ধরনের বৈষম্য।
একই সেমিনারে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, কমিশন কীসের ভিত্তিতে 'শাপলা কলি' নির্ধারণ করেছে, তা তাদের বোধগম্য নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, "শাপলা প্রশ্নে আমরা আপসহীন।"
ইসির প্রতীকের তালিকায় 'শাপলা কলি' যুক্ত করার বিষয়ে সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এনসিপি 'শাপলা' প্রতীক চেয়েছে, আর নতুন প্রতীক হিসেবে যুক্ত হয়েছে 'শাপলা কলি'। তিনি মনে করেন, দুটোর মধ্যে পার্থক্য আছে এবং এ বিষয়ে ব্যাখ্যার অবকাশ নেই।
তিনি আরও জানান, তালিকার কিছু প্রতীক নিয়ে 'বিরূপ মন্তব্য' আসায় সেগুলো বাদ দিয়ে নতুন প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে 'শাপলা কলি'ও রয়েছে। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, এর সঙ্গে কারও কোনো দাবির বিষয় প্রাসঙ্গিক নয়।
ইসি সচিবের তথ্যমতে, পুরনো তালিকা থেকে ১৬টি প্রতীক বাদ দিয়ে নতুন প্রতীক যুক্ত করার পর ইসির প্রতীকের মোট সংখ্যা এখন ১১৯-এ দাঁড়িয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, "ইলেকশন কমিশন মনে করেছে সংশোধন করা দরকার, তাই করেছে। কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, স্বাধীনতা আছে বলেই তালিকা সংশোধন করেছে।"
এদিকে, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঐকমত্য কমিশন ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল নিয়েও সমালোচনা করেছেন। তিনি বিএনপির 'নোট অব ডিসেন্ট'-কে 'নোট অব চিটিং' বলে আখ্যা দেন। জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা মুখে জুলাই সনদের কথা বললেও নিম্নকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির কথা বলে আসন নিয়ে দরকষাকষি করছে, যা এক ধরনের ভণ্ডামি।
এনসিপি সমন্বয়কের হুঁশিয়ারি গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি হলে দায়ভার প্রধান উপদেষ্টার
ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যদি এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা না যায় এবং পরবর্তীতে দেশে কোনো গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে তার সম্পূর্ণ দায়ভার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ওপর বর্তাবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে 'রাজনীতির বর্তমান এবং ভবিষ্যতের পথরেখা' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সংস্কার কমিশন সুপারিশমালা জমা দিয়েছে এবং এখন বল প্রধান উপদেষ্টার কোর্টে রয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে 'আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়' হিসেবে উল্লেখ করে তিনি মন্তব্য করেন, "বলা হয় যে, বিদেশি খেলোয়াড়রা বাংলাদেশে খেলতে এলে পিছলে যায়, কারণ মাঠ পিছলা। কিন্তু এই পিছলা মাঠে আমাদের আইন উপদেষ্টা আরও বেশি তেলমর্দন করেন। তিনি রাজনীতিবিদদের শুধু পিছলা খাওয়াতে চান।"
তিনি দাবি করেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালার খসড়া অবশ্যই জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। তার দল এনসিপি জনসম্মুখে সেই ড্রাফট আসার পরই তাতে স্বাক্ষর করবে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দেশ একটি ভিন্ন এবং অস্পষ্ট পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, "অস্পষ্টতার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে ঠেলে দিতে পারব না।"
জামায়াত-বিএনপির 'কুতর্ক' নিয়ে মন্তব্য
গণভোট নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জামায়াত ও বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, গণভোট আগে হবে না পরে হবে—এটা নিয়ে দল দুটির মধ্যে কেবলই 'কুতর্ক' চলছে। এই কুতর্ক থেকে বেরিয়ে এসে তাদের নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা উচিত।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "আপার হাউসের পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব), লোয়ার হাউসে এনে বিষয়টি নিয়ে আপনারা ধোঁয়াশা তৈরি করেছেন।" তবে তিনি অনুমান করেন, গণভোটের প্রশ্নে জামায়াত একসময় বিএনপির সঙ্গে একমত হবে এবং এই দুই দল মিলে আসলে 'কুতর্ক' করছে।
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ একপাক্ষিক ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা: মির্জা ফখরুল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করার সক্ষমতা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই বলে কঠোর মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, যেকোনো আদেশ অবশ্যই রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরিত হতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতেই বিএনপি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, "ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব এবং সুপারিশে প্রতীয়মান হয় যে দীর্ঘ এক বছর ধরে সংস্কার কমিশন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলসমূহের ধারাবাহিক আলোচনা অর্থহীন, অর্থ ও সময়ের অপচয়, প্রহসনমূলক এবং জাতির সঙ্গে প্রতারণা।" তিনি বলেন, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত থাকাটাই স্বাভাবিক।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবনা ও সুপারিশগুলো একপাক্ষিক এবং জোরপূর্বক জাতির ওপর চাপানো হচ্ছে। তিনি বলেন, যেসব দফায় আগে সবাই সম্মত হয়েছিল, তার মধ্যে কিছু দফাকে 'অগোচোরেই পরিবর্তন' করা হয়েছে।
ফখরুল আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রস্তাবনাগুলো ২৭০ দিনের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে, তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিপরীত।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসংস্থানকে কেন্দ্রে রেখে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি গড়ার লক্ষ্য তারেক রহমানের
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক 'ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি' গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েছেন, যা লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং দেশের প্রবৃদ্ধিতে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান নিশ্চিত করবে। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই পরিকল্পনার কথা জানান।
তারেক রহমান বলেন, "আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট, ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা যা লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারী গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।"
নারী শ্রমশক্তিতে ডে-কেয়ারের গুরুত্ব
তিনি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে নারীদের কম অংশগ্রহণের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, মোট পুরুষের ৮০ শতাংশের বিপরীতে মাত্র ৪৩ শতাংশ নারী কর্মজীবী। এই বিশাল ব্যবধানকে 'জাতির অর্ধেকেরও বেশি মেধা ও দক্ষতাকে পিছনে ফেলে দেওয়া' হিসেবে আখ্যা দেন তারেক রহমান।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, "যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যার সুযোগ না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেন, অথবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ করে দেন, তখন কী হয়? বাংলাদেশ হারায় সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা এবং অগ্রগতি।"
বিএনপির লক্ষ্য হলো এমন একটি আধুনিক ও গণমুখী বাংলাদেশ তৈরি করা, যেখানে কোনো নারীকে তার পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে বাধ্য হতে হবে না। এই কারণেই বিএনপি সারাদেশে শিশু পরিচর্যা (চাইল্ডকেয়ার) ব্যবস্থাকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কৌশলের অংশ করার উদ্যোগ গ্রহণের কথা বিবেচনা করছে।
তারেক রহমানের পরিকল্পনায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে
সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা।
সরকারি অফিসগুলোতে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জন্য একটি জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
যেসব নিয়োগকর্তা শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থা রাখবে তাদের জন্য কর সুবিধা ও সিএসআর (CSR) ক্রেডিট প্রদান করা।
নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রদান করা।
তিনি দাবি করেন, এই একটি সংস্কার নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে এবং দেশের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করতে পারে।
অর্থনৈতিক অপরিহার্যতা
তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী হওয়ায় কর্মজীবী মায়েদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয় বলে তারেক রহমান উল্লেখ করেন। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি জানান, যে কারখানাগুলোতে শিশু পরিচর্যার সুবিধা থাকে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি থাকে, অনুপস্থিতি কমে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই খরচ তুলে আনতে পারে।
তারেক রহমান বলেন, "শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ। সড়ক যেমন বাজারকে সংযুক্ত করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সাফল্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে।" তিনি নারীর ক্ষমতায়নকে 'বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি'র ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, "আমরা এমন যেকোনো পশ্চাৎমুখী ধারণা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে।"
গণভোটের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে ৮ দলের ৫ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ
জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই নভেম্বরে গণভোট আয়োজনের দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে নির্বাচন ভবনের সামনে এবং মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে পাকা মার্কেট সংলগ্ন সড়কে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে এই কর্মসূচি পালন করে দল দুটি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ মোট আটটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলগুলোর নেতারা জোর দিয়ে বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এর ভিত্তিতে নভেম্বরের মধ্যে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। তারা নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানান, সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায়, বর্তমান নির্বাচন কমিশনকেও বিগত কমিশনের মতো পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ বলেন, "জাতীয় নির্বাচনের আগে নভেম্বরে গণভোট দিতে হবে। জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। সরকারের কিছু অর্থ খরচ হলেও গণভোটের আয়োজন করা অপরিহার্য। অন্যথায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।"
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেন, জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দিতেই তারা নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দিতে এসেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের কোনো বিকল্প নেই এবং জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হতে পারে না। তার দাবি, অবশ্যই নভেম্বর মাসেই গণভোট দিতে হবে।
আটটি রাজনৈতিক দলের ৫ দফা দাবি
জামায়াতে ইসলামীসহ এই আটটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। এগুলো হলো:
১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি করা এবং ওই আদেশের ওপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে গণভোটের আয়োজন করা।
২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু করা।
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকল দলের জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করা।
৪. বর্তমান ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।
৫. ‘স্বৈরাচারের দোসর’ হিসেবে অভিহিত জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালায় ক্ষুব্ধ বিএনপি: দেখছে জামায়াত ও এনসিপির মতের প্রতিফলন
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেওয়া সুপারিশমালা নিয়ে চরম বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির নেতারা মনে করছেন, এই সুপারিশমালায় বিএনপি, যারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান অংশীদার, তাদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। উল্টো, এতে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মতো দুটি দলের প্রস্তাবের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে এসব আলোচনা হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কমিশন সুপারিশমালা জমা দেওয়ার পরই রাত ১০টা থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে এই বৈঠক চলে। পরদিন বুধবার রাতেও মুলতুবি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে আপত্তি:
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালায় বলা হয়েছে, আগামী সংসদ নিয়মিত কাজের পাশাপাশি প্রথম ২৭০ দিন (৯ মাস) 'সংবিধান সংস্কার পরিষদ' হিসেবে কাজ করবে। এই সময়ের মধ্যে গণভোটে পাশ হওয়া প্রস্তাবগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে, যদি পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়, তবে বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা এই 'স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত' হওয়ার বিধানকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিমত, এই প্রক্রিয়াটি পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জারীকৃত লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (এলএফও) এবং আইয়ুব খানের প্রবর্তিত মৌলিক গণতন্ত্র (বেসিক ডেমোক্রেসি)-এর মতো একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনীয়।
এলএফও ও মৌলিক গণতন্ত্রের সঙ্গে তুলনা:
নেতারা বলেন, যেমন করে আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র (১৯৫৯ সালে প্রবর্তিত পরোক্ষ নির্বাচনভিত্তিক ব্যবস্থা) বা ইয়াহিয়ার এলএফও (১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের নীতি সংক্রান্ত ফরমান) দ্বারা জাতির ওপর চিন্তা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ঠিক তেমনি কমিশনের এই সুপারিশে দুটি দলের প্রস্তাব ও ঐকমত্য কমিশনের নিজস্ব চিন্তাভাবনা জাতির ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের মতে, এটি জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একধরনের প্রতারণা।
দলটির নীতিনির্ধারকদের অভিযোগ, এই সুপারিশমালা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অংশীদারদের মধ্যে ঐক্যের পরিবর্তে অনৈক্য সৃষ্টি করছে। বিএনপির এখন মনে করছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অন্তর্বর্তী সরকার এবং জামায়াত ও এনসিপি একই পক্ষ বা একই এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে। তারা ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন সঠিক সময়ে না করার একটি অপচেষ্টা হিসেবে পুরো বিষয়টিকে দেখছে।
নোট অব ডিসেন্ট এবং পরবর্তী পদক্ষেপ:
বিএনপির অভিযোগ, দলটি সবচেয়ে বড় 'স্টেকহোল্ডার' হওয়া সত্ত্বেও তাদের মতামতকে সুপারিশমালায় উপেক্ষা করা হয়েছে। এমনকি বৈঠকে তাদের পক্ষ থেকে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (ভিন্নমত) লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, চূড়ান্ত সুপারিশমালা থেকে সেটিও বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তারা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মন্তব্য করেন, ১৭ অক্টোবর দেশের ২৫টি রাজনৈতিক দল যে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছিল, কমিশনের সুপারিশ তার সঙ্গে মেলেনি। তিনি মনে করেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করাই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, "রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ।"
স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "বিএনপির যা প্রস্তাবনা, সেগুলোর কিছুই ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে রাখা হয়নি। বরং বিএনপি যেগুলো চায়নি, সেগুলোই রাখা হয়েছে।" তিনি ঐকমত্য কমিশনকে কার্যত ‘অনৈক্য কমিশন’ বলেও আখ্যা দেন।
এই সামগ্রিক ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা দ্রুত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের উদ্বেগ জানাবে। পাশাপাশি, দলটি একটি সংবাদ সম্মেলন করে এই সুপারিশমালার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াও জানাবে।
চাঁদাবাজ ও দখলদারদের জন্য বিএনপির কড়া পদক্ষেপ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বা দখলদার কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের কখনো বিএনপির সদস্যপদ পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য দল পূর্ণভাবে বন্ধ দরজা রাখবে, কারণ বিএনপি সর্বদা স্বচ্ছতা, শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এই মন্তব্য তিনি বুধবার (২৯ অক্টোবর) নরসিংদীর একটি রিসোর্টে আয়োজিত জেলা বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি-এ বলেন।
রিজভী আরও বলেন, দলের সদস্যপদ সাধারণ মানুষের জন্য সর্বদা উন্মুক্ত। তিনি বলেন, “শিক্ষক, কৃষক, দিনমজুর, রিকশাচালক—যে কোনো শ্রেণির মানুষ বিএনপির সদস্য হতে পারে। দলের দরজা সকল সৎ ও যোগ্য নাগরিকের জন্য খোলা।” তার কথায়, বিএনপি সব সময় জনগণের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে, তাই দলের সদস্যপদে শৃঙ্খলা ও নৈতিক মান বজায় রাখা অপরিহার্য।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, যারা অতীতে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীন কর্মকাণ্ডের প্রভাব বা দাপট দেখিয়েছে, তাদের জন্যও বিএনপির রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এটি দলকে আরও গণতান্ত্রিক ও সকল শ্রেণির মানুষের জন্য গ্রহণযোগ্য করার একটি পদক্ষেপ। রিজভীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, দল সদস্যপদে যোগ্যতা, নৈতিকতা ও আদর্শ বজায় রাখতে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে, যাতে কোনো অপরাধমূলক বা বিতর্কিত ব্যক্তি দলের কার্যক্রমে প্রবেশ করতে না পারে।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, এই সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি হলো দলের জনসংযোগ বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এটি শুধু নতুন সদস্য যুক্ত করার সুযোগ নয়, বরং দলের মধ্যে শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধির একটি উপায়। তিনি আশ্বাস দেন, বিএনপি সবসময় স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল প্রক্রিয়ায় নতুন, যোগ্য এবং আদর্শবান সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করবে, যাতে দলের রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ আরও বিস্তৃত হয়।
রিজভীর ভাষ্যে বোঝা যায়, বিএনপি প্রতিটি স্তরে জনগণের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ সদস্যবৃন্দ তৈরি করতে সচেষ্ট। তিনি জানান, দলের এই পদক্ষেপটি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে সৎ ও শিক্ষিত নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
-রাফসান
পাঠকের মতামত:
- একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার
- ফখরুলের অভিযোগ: অন্তর্বর্তী সরকার আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে
- শেষ হলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ
- অনন্য মামুনের পোস্টে ঢালিউডে তামান্না ভাটিয়ার সম্ভাব্য আগমন
- নিজ দেশে ইসরায়েলিদের বিক্ষোভ
- ডা. জাকির নায়েক ঢাকায় আসছেন, ভারতের দাবি হস্তান্তরের
- রক্তদান শুধু মানবসেবা নয়, এটি এক মহৎ ইবাদত
- জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে ড. গালিবের সতর্কবার্তা
- পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ফের উত্তেজনায় ট্রাম্প ও ইরান
- জান্নাত-জাহান্নামের রহস্য উন্মোচন কুরআনের আলোকে
- তুরস্ক-কাতারের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে নতুন শান্তির বার্তা
- দেশের ২১ জেলায় ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস
- স্বাক্ষরের পরে বিপক্ষে অবস্থান জুলাই সনদ নিয়ে বিএনপিকে কঠোর বার্তা হাসনাত আবদুল্লাহর
- দীর্ঘ বৈঠকের পর যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে সম্মত পাকিস্তান ও আফগানিস্তান
- সৌদি আরবে ওমরাহ ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর নতুন নিয়ম
- সামরিক শাসন থেকে সংসদীয় ব্যবস্থা বাংলাদেশে গণভোটের অতীত জানা-অজানা
- শয়তানের আক্রমণ থেকে বাঁচুন রাতে ঘুমানোর আগে যে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)
- ঘুমের ওষুধ নয় অনিদ্রা দূর করবে আপনার রান্নাঘরের ৬ খাবার
- ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- সামরিক প্রস্তুতি লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রেসিডেন্টের কঠোর নির্দেশ
- শাপলা কলি দিয়ে ইসি বুঝিয়েছে আমরা শিশুদের দল: সামান্তা
- রেকর্ড বৃদ্ধি পরদিনই দরপতন শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে নতুন স্বর্ণের মূল্য
- অধ্যাপক ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুমোদন পেল নতুন মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ
- আমরা কীভাবে কী করব, বুঝতে পারছি না: আসিফ নজরুল
- ৩০ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ৩০ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ৩০ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- এনসিপি সমন্বয়কের হুঁশিয়ারি গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি হলে দায়ভার প্রধান উপদেষ্টার
- উন্মোচিত হল ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সত্যতা
- এক শতাব্দী পর সৈকতে ভেসে এলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বোতলবন্দি চিঠি
- ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ একপাক্ষিক ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা: মির্জা ফখরুল
- বিটিআরসি'র নতুন নিয়ম ১৬ ডিসেম্বর থেকে: আপনার ফোন বৈধ কিনা, জেনে নিন প্রক্রিয়া
- কর্মসংস্থানকে কেন্দ্রে রেখে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি গড়ার লক্ষ্য তারেক রহমানের
- গণভোটের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে ৮ দলের ৫ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ
- বাংলাদেশি টাকার আজকের বিনিময় হার প্রকাশিত
- ওয়ান ব্যাংক পিএলসি-এর Q3 ২০২৫ আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- ফ্রিজে ঘন ঘন বরফ জমছে? স্থায়ী সমাধান দেবে ৩টি সহজ টিপস
- ফ্রিজে ঘন ঘন বরফ জমছে? স্থায়ী সমাধান দেবে ৩টি সহজ টিপস
- RELIANCINS-এর Q3 ২০২৫ আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- উচ্চ রক্তচাপই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়: জীবন রক্ষায় প্রতিরোধের উপায়গুলি জেনে নিন
- GSP ফাইন্যান্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- পরমাণু যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে কি বিশ্ব? ট্রাম্পের নির্দেশে বাড়ছে উদ্বেগ
- মেঘনা ইন্স্যুরেন্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- পূবালী ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- ট্রাম্প-শি আলোচনা সম্পন্ন: বৈঠকের পর কী বড় সিদ্ধান্ত এলো?
- IFIC ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এশিয়া সফরের মধ্যেই প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন বাহিনীর নতুন হামলা
- বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র-চীনের ঐতিহাসিক চুক্তি
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য সুখবর!
- রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে
- ছবি, ভিডিও আর ভয়ের ব্যবসা: অনলাইনে হানিট্র্যাপের অন্ধকার দুনিয়া
- IFIC ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- পূবালী ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- ইতিহাসের পাতায় আজ: ৩০ অক্টোবর - বিজয়, বিপ্লব আর বেদনার দিন
- ২৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ২৯ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ প্রভাবে ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস
- রাসুল (সা.) কেন অন্যের পাপকাজ প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন?
- আজকের বাজারের সেরা এবং খারাপ পারফরমার: লাভের সম্ভাবনা কোথায়?
- রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- ২৮ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ২৭ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় বাবা হারানো: দুই শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে স্ত্রীর আকুল আবেদন
- GSP ফাইন্যান্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ








