বিশেষ প্রতিবেদন

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সয়াবিন চুক্তি: কি কারণে ভারতের বাজার হারানোর শঙ্কা তৈরি হলো?

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১৯:০৮:৪৩
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সয়াবিন চুক্তি: কি কারণে ভারতের বাজার হারানোর শঙ্কা তৈরি হলো?

সম্প্রতি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক বিলিয়ন ডলারের সয়াবিন আমদানির চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার বাজার ও কূটনৈতিক সমীকরণে নতুন দিক তৈরি করেছে। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের তিনটি শীর্ষ সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান আগামী এক বছরের মধ্যে বিপুল পরিমাণ সয়াবিন আমদানি করবে।

এই চুক্তি শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না, বরং বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের একক প্রভাবের ভারসাম্য বদলে দিতে পারে।

ভারতের প্রধান সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই চুক্তি ভারতের জন্য বড় ধরনের আঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের তেল ও সয়ামিল রপ্তানি ইতিমধ্যেই কমছিল। বাংলাদেশের এই নতুন চুক্তি ভারতীয় রপ্তানিকারকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।

ভারতের বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের বাজার হারানোর ঝুঁকি ভারতের জন্য বাস্তব হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবছরে ভারতের সয়ামিল রপ্তানি বাংলাদেশের বাজারে ১.৬৩ লাখ টনে নেমে এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪৬ শতাংশ কম।

ভারতের সয়াবিন প্রসেসর অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ডি.এন. পাঠক মন্তব্য করেছেন, “বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বল্পমূল্যে প্রচুর সয়াবিন কিনছে। আমাদের রপ্তানি ২০২৪-২৫ তেলবছরে তীব্রভাবে কমেছে। এক বিলিয়ন ডলারের এই চুক্তি স্পষ্ট সংকেত দিচ্ছে যে বাংলাদেশ আর ভারতের পণ্যকে অগ্রাধিকার দেবে না। এটি ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়।”

এর আগে, ৪ নভেম্বর ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশের তিনটি শীর্ষ সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান আগামী ১২ মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক বিলিয়ন ডলারের সয়াবিন আমদানি করবে।

এই চুক্তি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক শক্তি উভয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই সহযোগিতা দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের একতিমাত্র প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভারসাম্যের নতুন সমীকরণ সৃষ্টি করছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চুক্তি শুধু খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ও কূটনীতির মানচিত্রকেও পরিবর্তন করতে পারে। এর ফলে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা নতুন কৌশল নিতে বাধ্য হবেন।


৫ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১১:৪০:৩৯
৫ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত
ছবিঃ সংগৃহীত

একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরুর আগেই বিনিয়োগকারীদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসি-র এই সিদ্ধান্তের ফলে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক—এই পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন আজ থেকে বন্ধ থাকবে।

বুধবার এই পাঁচটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে তাদের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে এই ব্যাংকগুলোতে প্রশাসকও নিয়োগ দেয়।

গতকাল বুধবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ব্যাংকগুলোর শেয়ারের মূল্য 'শূন্য' ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, ব্যাংকগুলোর বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে শেয়ারধারীরা কোনো অর্থ পাবেন না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের এই ঘোষণার পর থেকেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ দেখা দেয়। এর একদিন পরই আজ লেনদেন শুরুর আগেই বিএসইসি ব্যাংক পাঁচটির লেনদেন স্থগিতের কথা জানালো।

তবে শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিএসইসি বেশ বিলম্ব করেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের মত হলো, সরকারের পক্ষ থেকে যখন এসব ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তখন যদি বিএসইসি ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিত, তাহলে নতুন করে কোনো বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না।


লক্ষ্যপূরণ কঠিন: মূল্যস্ফীতি কমলেও শহরের ব্যয় এখন গ্রামের চেয়ে বেশি

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৮:১৫:৩২
লক্ষ্যপূরণ কঠিন: মূল্যস্ফীতি কমলেও শহরের ব্যয় এখন গ্রামের চেয়ে বেশি
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর লোগো। ছবি : সংগৃহীত

চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের অক্টোবর মাসে দেশের মূল্যস্ফীতি আবারও কিছুটা কমেছে। সরকারি হিসেবে সদ্য শেষ হওয়া অক্টোবর মাসে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৭ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। মূলত খাদ্য পণ্যের দাম কিছুটা কমে আসার কারণেই গড় মূল্যস্ফীতিতে এই প্রভাব পড়েছে। তবে এই সময়ে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মাসিক ভোক্তা মূল্যসূচকে (সিপিআই) মূল্যস্ফীতির এই তথ্য তুলে ধরেছে।

বিবিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর মাসে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে।

মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ১৭ শতাংশের অর্থ হলো, ২০২৪ সালের অক্টোবরে যে পণ্য ১০০ টাকায় কিনতে হয়েছিল, একই পণ্য কিনতে গত অক্টোবরে খরচ হয়েছে ১০৮ টাকা ১৭ পয়সা।

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা বলা হয়েছে। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিও দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত মুদ্রানীতি অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য লক্ষ্যমাত্রা ছিল গড় মূল্যস্ফীতিকে ৬.৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা। তবে, মূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রার ওপরে থাকায় এই অর্থবছরের জন্য এই লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে।

সিপিআই তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, অক্টোবর মাসে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৭ দশমিক ০৮ শতাংশ হয়েছে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এক বছর আগে একই সময়ে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ।

অন্যদিকে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমলেও এ সময় দেশের খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। বিবিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে দেশের খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরে কমে ছিল ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় এখন বেশি।

গ্রামে: অক্টোবর মাসে গড় মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। গ্রাম এলাকায় খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।

শহরে: একই সময়ে শহরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। শহরের নাগরিকদের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ।

এটি আগের মাস সেপ্টেম্বরের তুলনায় একটি ভিন্ন চিত্র, যখন শহরের তুলনায় গ্রাম এলাকায় মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি ছিল।


দেউলিয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৫:১০:৫৪
দেউলিয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত
ছবি: সংগৃহীত

আর্থিক সংকটে পতিত পাঁচটি শারিয়াভিত্তিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের কার্যক্রম অকার্যকর ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রিয় ব্যাংকের এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো, এই ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এবং দেশের ইসলামী ব্যাংকিং খাতে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা।

এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে একটি নতুন সরকারি মালিকানাধীন ইসলামি ব্যাংক গঠন করা হচ্ছে। নতুন ব্যাংকের নাম রাখা হয়েছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এ পদক্ষেপ ব্যাংকগুলোর দীর্ঘদিনের আর্থিক দুরবস্থা এবং ধারাবাহিক ক্ষতির প্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে।

সংযুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, এক্সিম ব্যাংক পিএলসি এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। এই ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ আজই ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের কার্যক্রম ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের অধীনে পরিচালিত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার (৫ নভেম্বর) সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রেরণ করেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ৫ নভেম্বর থেকে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। একই সঙ্গে, ব্যাংকগুলোর নীতিনির্ধারণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম কেন্দ্রিয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।

গভর্নর এই ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের জরুরি বৈঠকের জন্য তলব করেছেন। বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার বিশদ অবস্থা ও একীভূতকরণের পরিকল্পনা জানানো হবে। এর আগে, কোম্পানি সচিবদের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রাথমিক তথ্য প্রদান করা হয়েছে।

এর পেছনের কারণ স্পষ্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই ব্যাংকগুলো দীর্ঘ সময় ধরে তারল্য সংকট, বড় পরিমাণ শ্রেণীকৃত ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি এবং মূলধন ঘাটতি সমস্যায় ভুগছে। বহুবার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হলেও ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা উন্নতি পায়নি।

শেয়ারবাজারেও ব্যাংকগুলোর মূল্য মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। প্রতিটি ব্যাংকের নেট অ্যাসেট ভ্যালু (NAV) ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে, যা দেখায় যে তারা কার্যত দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছে গেছে। এ পরিস্থিতিতে, একীভূতকরণের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার এবং নীতি-নিয়ন্ত্রণের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি মালিকানাধীন নতুন ইসলামি ব্যাংক গঠনের অনুমোদন দিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাব এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সুপারিশের ভিত্তিতেই আজকের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আজ বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাবেন। ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের এই উদ্যোগ দেশের শারিয়াভিত্তিক ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদি কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

-রাফসান


রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৪ ১৯:০৬:৫৮
রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প
ছবিঃ সংগৃহীত

চলতি অর্থবছরের তৃতীয় মাস অর্থাৎ অক্টোবরে সামগ্রিক রপ্তানি আয়ে পতন অব্যাহত রয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে ৩৮২ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা ৭.৪৩ শতাংশ কম। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের রপ্তানিও এই সময়ে কমেছে ৮.৩৯ শতাংশ।

সোমবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

টানা তিন মাস রপ্তানি কমার হার

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রপ্তানি খাতে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমার হার ছিল ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর আগস্টে রপ্তানি কমেছিল ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তবে গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে রপ্তানি খাতে ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

এই এক মাসের বড় প্রবৃদ্ধির প্রভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে (জুলাই-অক্টোবর) সামগ্রিক রপ্তানি খাতে ২ দশমিক ২২ শতাংশের একটি ক্ষীণ প্রবৃদ্ধির ধারা দেখাচ্ছে। যা অর্থবছরের শুরুতে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও চার মাস পর এসে তা মাত্র ২ দশমিক ২২ শতাংশে ঠেকেছে।

তৈরি পোশাক খাতে তীব্র পতন

দেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। টানা তিন মাস ধরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমলেও অর্থবছরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। গত জুলাইয়ে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ২৪ শতাংশ। পরের মাসে এই রপ্তানি কমে পৌনে ৫ শতাংশ হয় এবং সেপ্টেম্বরে কমেছিল প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। গত মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৩০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক, যা গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।

ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ২৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।

রপ্তানি কমার নেপথ্যে একাধিক কারণ

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল রপ্তানি কমে যাওয়ার কারণগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলেন, তৈরি পোশাকের প্রধান দুই বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি কমেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক রপ্তানিতে।

তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক বসানোর ফলেই রপ্তানি কমেছে। শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণার ফলে সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা সতর্কতা হিসেবে বেশি বেশি তৈরি পোশাক সংগ্রহ করে রেখেছিল। এর ফলে এখন তারা কম পোশাক আমদানি করছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বাংলাদেশের বড় বাজার ইউরোপে চীন বেশি মনোযোগ দিয়েছে। এতে ইউরোপের বাজারে চীনের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপে বাড়তি মূল্যস্ফীতির কারণে ক্রেতারা তাদের ক্রয় কমিয়েছে। মহিউদ্দিন রুবেল যোগ করেন, এসবের সম্মিলিত প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে।

অন্যান্য প্রধান খাতের চিত্র

দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি খাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক ধারায় আছে। জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে এই খাত থেকে ৪১ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ বেশি।

তবে পণ্য রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখিয়েছে। এই সময়ে ৪৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৭২ শতাংশ কম। শুধু গত মাস, অর্থাৎ অক্টোবরে, ১০ কোটি ২২ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা ৯.৫৭ শতাংশ কম।


বাজারে স্বর্ণের পুনরায় উত্থান, দাম ছুঁতে পারে ৪,০০০ ডলার

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৪ ১৮:১৭:০৩
বাজারে স্বর্ণের পুনরায় উত্থান, দাম ছুঁতে পারে ৪,০০০ ডলার
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম আবারও বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দিনের শুরুতে সামান্য পতনের পর বাজারের সক্রিয়তা বাড়ায় স্পট এবং ফিউচার উভয় ধরনের স্বর্ণের দাম পুনরায় উত্থান লক্ষ্য করেছে। তবে সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতির পরও স্বর্ণের দাম এখনও সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড স্পর্শ করেনি এবং বাজার সামগ্রিকভাবে এখনও নিম্নমুখী ধারা থেকে পুরোপুরি বেরোতে পারেনি।

দিনের মধ্যভাগে স্পট গোল্ডের দাম আউন্সপ্রতি ৩,৯৯৬.৬৮ ডলারে পৌঁছায়, যা সেশনের শুরুতে ০.৯ শতাংশ কমেছিল। পাশাপাশি, ডিসেম্বরের সরবরাহযোগ্য মার্কিন স্বর্ণ ফিউচারের দাম আউন্সপ্রতি ৪,০০৭.৭০ ডলার হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। সুইসকোট ব্যাংকের স্বাধীন বিশ্লেষক কার্লো আলবার্তো ডি কাসা জানিয়েছেন, স্বর্ণের দাম বর্তমানে প্রায় ৪,০০০ ডলারের কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে বাজারের চিত্র বোঝা গুরুত্বপূর্ণ হবে কতটা বৃদ্ধি সম্ভব এবং কোনো বড় সংশোধন আসছে কি না তা তখনই স্পষ্ট হবে।

কার্লো আলবার্তো ডি কাসা আরও বলেন, বর্তমানে আমরা মার্কিন ডলারের দৃঢ় অবস্থান লক্ষ্য করছি। ডিসেম্বরে সুদের হার কমানোর আশা ধীরে ধীরে কমছে, এবং বেড়ে যাওয়া ইল্ড স্বর্ণের দামের ওপর চাপ ফেলছে। বিনিয়োগকারীরা মার্কিন অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচকের দিকে নজর দিচ্ছেন, যা সুদের হার নির্ধারণে মূল ভূমিকা পালন করবে।

গত তিন মাসে ডলারের মান শীর্ষ পর্যায়ে উঠেছে। ফেডের মধ্যে সুদের হার কমানোর বিষয়ে ভিন্নমত থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কে-সিএম ট্রেডের প্রধান বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, মার্কিন ডলারের দৃঢ় অবস্থান এখন স্বর্ণের বৃদ্ধির পথে প্রধান প্রতিবন্ধকতা। বিনিয়োগকারীরা বছরের শেষের দিকে আরেকটি সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনা পুনর্মূল্যায়ন করছেন।

গত সপ্তাহে ফেড এই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার সুদের হার হ্রাস করেছে। তবে ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেছেন, এখনই আরেকটি সুদের হার কমানো নিশ্চিত নয়। বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা ডিসেম্বর মাসে সুদের হার কমার সম্ভাবনা ৬৫ শতাংশ হিসেবে দেখছেন, যা পাওয়েলের বক্তব্যের আগে ৯০ শতাংশের বেশি ছিল।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শক্তিশালী ডলার, বেড়ে যাওয়া ইল্ড এবং ফেডের অনিশ্চয়তা স্বর্ণের বাজারকে অত্যন্ত সংবেদনশীল করে তুলেছে। সামনের কয়েক সপ্তাহে মার্কিন অর্থনৈতিক সূচক এবং ফেডের নীতি স্বর্ণের দামের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।


নির্বাচিত সরকারের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৪ ০৮:২১:৪৭
নির্বাচিত সরকারের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত
ছবি: সংগৃহীত

ব্যবসায়ীদের মতে, দেশের ব্যবসা পরিবেশের উন্নতি এবং অর্থনীতির গতিশীলতা আনতে নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন। তারা মনে করছেন, শ্রম আইন সংশোধন, শ্রমিক সংগঠন গঠনসহ গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব আগামী নির্বাচিত সরকারের হাতে থাকা উচিত। এছাড়াও, জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার দুপুরে গুলশানের একটি হোটেলে ইংরেজি দৈনিক ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেস আয়োজিত অর্থনৈতিক সংস্কার বিষয়ক সেমিনারে ব্যবসায়ীরা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ। বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা সেমিনারে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, "দায়িত্ব নেওয়ার সময় ব্যবসা পরিবেশ প্রায় ৯৯ শতাংশ খারাপ ছিল। এখন সম্ভবত এটি ৯৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ধীরে ধীরে এটি ৯০ শতাংশে উন্নত হবে। তবে দ্রুত উন্নতি না হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। বর্তমান সরকার এনবিআরের সিঙ্গেল উইন্ডো ব্যবস্থা চালু করেছে। এর ফলে দুই মাসে প্রায় ১২ লাখ সরাসরি সাক্ষাৎ কমেছে, অর্থাৎ ১২ লাখ বার কাগজপত্র এনবিআরে আনা হয়নি।" তিনি বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্যের উল্লেখও করেন।

বাংলাদেশ থাই চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, "শ্রম আইন এবং শ্রমিক সংগঠন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এখন কেন নেওয়া হচ্ছে? নির্বাচিত সরকার তিন মাসের মধ্যে দায়িত্ব নেবে, সেক্ষেত্রে এ ধরনের সিদ্ধান্ত তাদের হাতে থাকা উচিত। আমরা অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা বলছি, কিন্তু কোনো মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) বা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) কার্যকর হচ্ছে না।"

নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, "বর্তমান ব্যবসা পরিস্থিতিতে এলডিসি উত্তরণের উপযুক্ত সময় নয়। ইতিমধ্যেই ১৬টি ব্যবসায়ী সংগঠন সরকারের কাছে আবেদন করেছে যাতে জাতিসংঘ বাংলাদেশির পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে এবং এলডিসি উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।"

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, "এখন আমাদের নির্বাচিত সরকার দরকার। আগামী ১০–১৫ বছর জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার না থাকলে অনেক সমস্যা সমাধান হবে না।"

সিরামিকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, "সুশাসন ছাড়া কোনো দেশের ব্যবসা বা অর্থনীতি এগোবে না। ক্রেতারা আতঙ্কিত, পণ্য কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র সমাধান নির্বাচন।"

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহীর, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো কেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান-উজ জামান এবং আকিজ বশির গ্রুপের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।

বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, "বিদেশি বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে, কিন্তু দেশের অবকাঠামো দুর্বল। বিমানবন্দর আগুনে পুড়ে গেলে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ মনে করবে না।"

ইউসিবির চেয়ারম্যান শরীফ জহীর বলেন, "ব্যাংক খাতের বর্তমান অবস্থা যদি না বদলায়, তবে খাতটি দুই বছরের বেশি টিকে থাকতে পারত না। খেলাপি ঋণের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা না নিলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।"

-শরিফুল


বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলায় নতুন উদ্যোগ: প্রতি টন ৩০২ ডলারে মার্কিন গম

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৩ ১৬:৫৩:৪৫
বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলায় নতুন উদ্যোগ: প্রতি টন ৩০২ ডলারে মার্কিন গম
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙরে পৌঁছেছে দ্বিতীয় জাহাজটি । ইনসেটে আমদানি করা গম । ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির (জি-টু-জি চুক্তি নং-১) অধীনে দ্বিতীয় চালানে ৬০ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস নামের একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোর ৪টায় জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রের করপাস ক্রিস্টি বন্দর থেকে এই বিশাল পরিমাণ গম নিয়ে কুতুবদিয়ায় নোঙর করে।

জি-টু-জি চুক্তির অধীনে আমদানি

এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করবে। এমভি স্পার এরিস জাহাজটি এই চুক্তির দ্বিতীয় চালান বহন করে এনেছে। এর আগে, প্রথম চালান হিসেবে এমভি নোর্স স্ট্রাইড নামের একটি জাহাজ ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছিল, যার মাধ্যমে আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়।

বন্দরে নোঙরের পরপরই এমভি স্পার এরিস জাহাজে রক্ষিত গমের গুণগত মান পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার পর পরই দ্রুততম সময়ের মধ্যে গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। উল্লেখ্য, এই পুরো কার্যক্রমটি গত ২৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (MOU) আলোকে শুরু হওয়ার বিষয়টি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছিল।

বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কৌশল

সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া, ইউক্রেন ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে গম আমদানি করা হলেও, এবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির এই সিদ্ধান্তটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রেক্ষাপটে এই দেশটি থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েশনের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান এগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল-এর কাছ থেকে জি-টু-জি বা সরাসরি সরকার-থেকে-সরকার পদ্ধতিতে এই গম ক্রয় করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি টন গমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০২ মার্কিন ডলার। এই ক্রয় প্রক্রিয়াটি ২৩ জুলাই ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির অনুমোদনের পর শুরু হয়, যেখানে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছিল।


১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১৯:৪১:২৭
১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রাইজবন্ডের ১০০ টাকা মূল্যমানের ১২১তম ড্র সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ড্রয়ে প্রথম পুরস্কার হিসেবে ৬ লাখ টাকা পেয়েছে নম্বর ০১০৮৩৩১। দ্বিতীয় পুরস্কার ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা পাওয়া নম্বর হলো ০১৫৬৮৯৭। এছাড়া তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ১ লাখ টাকা করে দুটি নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে—০০৫৬৩৬২ ও ০৪৫৩৬৬৮। চতুর্থ পুরস্কার ৫০ হাজার টাকার জন্য নির্বাচিত নম্বর হলো ০৯১২৪৪৪ ও ০৯৮৩৫৭২।

রোববার (২ নভেম্বর) ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এই ড্র অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ড্রে পঞ্চম পুরস্কারের জন্য ১০ হাজার টাকার ৪০টি নম্বর ঘোষণা করা হয়েছে। সেগুলো হলো:০০১৩৩৮৬, ০০১৪৯৯২, ০০২৮১৮৩, ০০৫৩২২৬, ০১১৯০৬৯, ০১৬৮৮৭৩, ০২৪৪০৭৪, ০২৫৭৫৯৪, ০২৬৫৯৩৮, ০২৯২৯৪১, ০২৯৬৪২৯, ০৩২৭৯১০, ০৩৪০৪০৭, ০৩৪৯৩১৫, ০৩৫৫২০৬, ০৩৬৭৫২৯, ০৩৬৯১১৭, ০৪১৭৭২৮, ০৪২৫৬৮৩, ০৫০১০৪৩, ০৫১৫৫৪২, ০৫৪৯৫২১, ০৫৬৫৯৩৬, ০৬০২২৬৫, ০৬২০২৫৯, ০৬২৪৭১৮, ০৬৭৪৩৪৪, ০৭১২৭৪০, ০৭৫৯০৫৯, ০৭৬৯৩৯২, ০৭৮২৭২৮, ০৭৯১৪২৮, ০৭৯৯৭৩২, ০৮২১৬৭৭, ০৮৬৫১২২, ০৯০৩৩৯২, ০৯০৪৩৫২, ০৯২২১৮০, ০৯৩৬৬১৭, ০৯৮৫৯৫২।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, মোট ৩,৮১৮টি প্রাইজবন্ডের মধ্যে ৪৬টি টিকিট পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। সঞ্চয় অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, ড্রয়ের ৬০ দিনের মধ্যে বিজয়ীরা তাদের পুরস্কার দাবি করতে পারবেন। উল্লেখ্য, নির্ধারিত সময়সীমার পর প্রাইজবন্ডের দাবিগুলি গ্রহণযোগ্য হবে না।

২০২৩ সালে প্রবর্তিত সংশোধিত নীতিমালার অধীনে, প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের অর্থের ওপর ২০ শতাংশ কর প্রযোজ্য।


বেসরকারি ব্যাংক ঘিরে প্রবাসী রেমিট্যান্সের মূল প্রবাহ

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১৮:৫১:০৯
বেসরকারি ব্যাংক ঘিরে প্রবাসী রেমিট্যান্সের মূল প্রবাহ
ছবি: সংগৃহীত

অক্টোবর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন মোট ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার, যা বর্তমান বিনিময় হার ১২২ টাকা প্রতি ডলার ধরে ৩১,২৭৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকার সমতুল্য। এটি দৈনিক গড়ে প্রায় ৮ কোটি ২৬ লাখ ডলার বা প্রায় ১,০০৮ কোটি টাকার প্রবাসী আয় হিসেবে গণনা করা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই মাসে সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের মিলিতভাবে ৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে বলা হয়েছে, অক্টোবরের মোট রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো মাধ্যমে এসেছে ৪৭ কোটি ৭৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৪ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলো মাধ্যমে এসেছে সর্বাধিক ১৮৩ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এছাড়া, বিদেশি ব্যাংকগুলো মাধ্যমে এসেছে ৭৭ লাখ ডলারের বেশি।

এই তথ্য থেকে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্থ পাঠানোর মূল ধারা বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে কিছু ব্যাংক কোনো রেমিট্যান্স গ্রহণ করতে না পারা বা শূন্য থাকতে থাকা প্রভাবকে কেন্দ্র করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান দেখা দিতে পারে।

প্রবাসী আয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বাড়ানো, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও বৈদেশিক লগ্নি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অক্টোবর মাসের এই পরিসংখ্যান অর্থনীতিবিদদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত

গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠদান, দীর্ঘদিন ধরে পাঠ্যপুস্তকনির্ভর শিক্ষা ও পরীক্ষাকেন্দ্রিক মূল্যায়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের... বিস্তারিত

ক্যানসার চিকিৎসায় মহা সাফল্য: নতুন ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পরীক্ষায় শতভাগ কার্যকারিতা

ক্যানসার চিকিৎসায় মহা সাফল্য: নতুন ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পরীক্ষায় শতভাগ কার্যকারিতা

ক্যানসার চিকিৎসায় বিজ্ঞানীরা এক যুগান্তকারী অগ্রগতি অর্জন করেছেন। নতুন এক ধরনের ক্যানসার ভ্যাকসিনের প্রাথমিক মানবদেহে পরীক্ষায় শতভাগ সাড়া পাওয়ার দাবি... বিস্তারিত