জলবায়ু পরিবর্তন
উষ্ণতা থামেনি, রূপ বদলেছে: নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে বিশ্ব

জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় গত জুলাই মাসটি ছিল ইতিহাসের তৃতীয় উষ্ণতম জুলাই। যদিও টানা রেকর্ড ভাঙা গরমের ধারা এবার কিছুটা থেমেছে, কিন্তু ইউরোপীয় জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘কোপার্নিকাস’ জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে চরম আবহাওয়ার ধ্বংসযজ্ঞ এখনো অব্যাহত। বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি, বিধ্বংসী বন্যা, দাবানল ও ভয়াবহ তাপপ্রবাহের সাক্ষী হয়েছে বিশ্ববাসী।
গত মাসে পাকিস্তান ও উত্তর চীন জুড়ে অতিভারী বৃষ্টিপাতে বন্যা সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে কানাডা, স্কটল্যান্ড ও গ্রিসে দাবানলের বিস্তার রুখতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনকে। দীর্ঘ খরার কারণে দাবানল আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এশিয়া ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ার অনেক দেশেই জুলাই মাসে নতুন সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রার রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
কোপার্নিকাস পরিচালক কার্লো বুয়োনতেম্পো বলেন, "২০২৩ ও ২০২৪ সালে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার পর এবারের জুলাই একটু কম উষ্ণ ছিল। তবে এটি ভ্রান্ত ধারনা দিচ্ছে যে জলবায়ু পরিবর্তন থেমে গেছে। বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা এখনো একটি উত্তপ্ত বিশ্বের পরিণতি দেখে চলেছি।"
এই জুলাইয়ে গড় তাপমাত্রা শিল্পপূর্ব যুগের (১৮৫০-১৯০০) চেয়ে ১.২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। যদিও এটি ২০২৩ ও ২০২৪ সালের তুলনায় কিছুটা কম, তথাপি প্যারিস চুক্তির ১.৫ ডিগ্রি লক্ষ্যসীমার কাছাকাছি। বিজ্ঞানীদের মতে, এই সামান্য পার্থক্যই যথেষ্ট হয়ে উঠছে ঝড়, তাপপ্রবাহ ও বন্যার মতো চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব দ্বিগুণ করে তুলতে।
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চল, ইরাক এবং প্রথমবারের মতো তুরস্কেও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। স্পেনে শুধু জুলাই মাসেই তাপপ্রবাহ-সম্পর্কিত কারণে মৃত্যু হয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষের।
জলবায়ু পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছেন জীবাশ্ম জ্বালানি—তেল, কয়লা ও গ্যাস পোড়ানোকে। বুয়োনতেম্পো সতর্ক করেছেন, "যতক্ষণ না আমরা বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা স্থিতিশীল করতে পারছি, ততক্ষণ নতুন রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়া এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাত্রা বাড়তেই থাকবে।"
বিশ্বব্যাপী উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ১১টি দেশ গত জুলাইয়ে তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। চীন, জাপান, উত্তর কোরিয়া, তাজিকিস্তান, ভুটান, ব্রুনেই ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর তালিকায় এই রেকর্ড যুক্ত হয়েছে। ফিনল্যান্ডে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা একটানা ২০ দিন ছিল, যা দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন।
তবে অন্যদিকে, আমেরিকার উত্তর ও দক্ষিণ অংশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার কিছু অংশ এবং অ্যান্টার্কটিকায় স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা ঠান্ডা আবহাওয়া ছিল।
সাগরের উষ্ণতা বৃদ্ধিও ছিল আশঙ্কাজনক। গত জুলাই ছিল সমুদ্রপৃষ্ঠে উষ্ণতার দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ মাস। বিশেষ করে নরওয়েজিয়ান সাগর, উত্তর সাগরের কিছু অংশ ও উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে।
আর্কটিক অঞ্চলের বরফের বিস্তার ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় ১০ শতাংশ কম, যা গত ৪৭ বছরের মধ্যে জুলাই মাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। বরফ গলে যাওয়ার ফলে সূর্যের তাপ প্রতিফলিত না হয়ে সমুদ্রে শোষিত হয়, ফলে উষ্ণতা আরও বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর অতিরিক্ত তাপের প্রায় ৯০ শতাংশই শোষিত হয় সাগরের দ্বারা, যা ভবিষ্যতের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ।
-এম জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক
পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ

সাদিক আহমেদ প্রান্ত
পরিবেশ কর্মী ও কলাম লেখক
এক সময় বাংলাদেশের নদীগুলো ছিল জীবনের উৎস। কৃষকরা নদীর পানি ব্যবহার করে জমিতে সেচ দিতেন, খাল-বিল ছিল মাছ ও কৃষির আশ্রয়স্থল। চারদিকে ছিল অফুরন্ত পানির সরবরাহ, আর পানির সংকট তখন কারো কল্পনাতেও আসেনি। কিন্তু আজ সেই চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। বিশুদ্ধ পানির অভাব এখন এক বৈশ্বিক সংকট, যা ভবিষ্যতে মানব সভ্যতার অস্তিত্বকেই প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দশকে পৃথিবীর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হবে মিঠা পানির সংকট। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগবে। বর্তমানে বিশ্বের ২.২ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানির সেবা থেকে বঞ্চিত, এবং ২০২২ সালে ৭৮৩ মিলিয়ন মানুষ ভুগেছে অপুষ্টিতে। অন্যদিকে ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালে বিশ্ব জনসংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৯৮০ কোটিতে, যা পানি ও খাদ্য উভয়ের ওপর ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করবে।
পানি আজ কেবল প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, এটি এখন এক ভূরাজনৈতিক ইস্যু। একবিংশ শতাব্দীতে দেশগুলোর মধ্যে পানি সংকট নিয়ে টানাপোড়েন বাড়ছে, যা ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের ইঙ্গিত দেয়। মিশর ও ইথিওপিয়ার মধ্যে নীলনদকে কেন্দ্র করে বিরোধ, ভারত ও পাকিস্তানের সিন্ধু চুক্তি নিয়ে উত্তেজনা, কিংবা গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের পানি বণ্টন নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের দীর্ঘ আলোচনাই প্রমাণ করছে যে ভবিষ্যতের সংঘাতের কেন্দ্রে থাকবে পানি। অতীতে যুদ্ধ হয়েছে তেল ও ভূমির জন্য, ভবিষ্যতের যুদ্ধ হবে পানির জন্য। বিশেষজ্ঞদের এই সতর্কবার্তা এখন আর কল্পনা নয়, বাস্তব সম্ভাবনা।
পানির সংকট কেবল পরিবেশগত সমস্যা নয়, এটি সামাজিক ন্যায়বিচার ও বৈষম্যের প্রশ্নেও পরিণত হয়েছে। ২০১১ সালে চিলির কোকিম্বো অঞ্চলে পানি সম্পূর্ণ বেসরকারিকরণ করা হলে কৃষক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী মারাত্মক সংকটে পড়ে। আবার ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরে “ডে জিরো” ঘোষণা করা হয়, যখন প্রতিজন নাগরিককে দিনে মাত্র ৫০ লিটার পানি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এই ঘটনাগুলো দেখায় যে পুঁজিবাদী বিশ্বে পানি এখন বাজারে বিক্রি হওয়া এক পণ্য, যার মূল্য নির্ধারিত হয় মুনাফার ভিত্তিতে, মানুষের প্রয়োজনের ভিত্তিতে নয়।
জলবায়ু পরিবর্তন একসঙ্গে প্রভাব ফেলছে পানির প্রাপ্যতা ও খাদ্য উৎপাদনে। হিমবাহ গলে যাচ্ছে, নদীর প্রবাহ হ্রাস পাচ্ছে, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার মাটিকে বিষাক্ত করছে, ফলে ফসলের উৎপাদন কমছে এবং খাদ্য ঘাটতি বাড়ছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বহু দেশে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, জলাশয় দখল ও অতিরিক্ত পাম্পিংয়ের ফলে পানির স্তর ক্রমেই নিচে নামছে। এর ফলে কৃষি, মৎস্য ও জীববৈচিত্র্য সবকিছুই হুমকির মুখে পড়ছে।
পানির অভাব সরাসরি প্রভাব ফেলছে খাদ্য নিরাপত্তায়। কৃষি উৎপাদন হ্রাস পেলে খাদ্যের দাম বেড়ে যায়, অপুষ্টি বৃদ্ধি পায়, আর দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এভাবেই পানি সংকট ও খাদ্য সংকট এখন একে অপরের পরিপূরক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্ধকারের মাঝেও আশার আলো আছে। মানবজাতি ইতিমধ্যেই এমন অনেক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে যা পানি ও খাদ্য সংকট মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। হাইড্রোপনিক ও ভার্টিক্যাল ফার্মিং শহুরে কৃষিতে এক নতুন দিগন্ত খুলেছে। এতে প্রচলিত কৃষির তুলনায় ৯০ শতাংশ পানি সাশ্রয় হয় এবং ফলন ১০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। ড্রিপ সেচ প্রযুক্তি ফসলের শিকড়ে সরাসরি পানি পৌঁছে দিয়ে অপচয় কমায় ও উৎপাদন বাড়ায়। বায়োটেকনোলজির অগ্রগতিতে তৈরি হয়েছে এমন ফসল, যা খরা, লবণাক্ততা বা অতিরিক্ত তাপমাত্রার মধ্যেও টিকে থাকতে পারে। খরাপ্রবণ অঞ্চলের জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘ড্রট-রেসিস্ট্যান্ট’ ধান ও গমের জাত, যা স্বল্প পানিতে উৎপাদন সম্ভব করছে।
পানিশোধনের ক্ষেত্রেও এসেছে নতুনত্ব। রিভার্স অসমোসিস, লাইফস্ট্র, এবং ইলেক্ট্রোডায়ালাইসিস প্রযুক্তি দূষিত পানিকে বিশুদ্ধ করছে। যদিও এসব প্রযুক্তি এখনো ব্যয়বহুল, কিন্তু সহযোগিতা ও ব্যাপক উৎপাদনের মাধ্যমে এগুলোকে সুলভ করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, ইসরাইল তার ব্যবহৃত বৃষ্টির ৮৫ শতাংশ পানি পুনর্ব্যবহার করে, যা বিশ্বে অন্যতম সেরা উদাহরণ।
যত উন্নত প্রযুক্তিই উদ্ভাবিত হোক, যদি ব্যক্তিগত ও সামাজিক পর্যায়ে পানির অপচয় বন্ধ না করা যায়, তবে কোনো প্রযুক্তিই টেকসই সমাধান দিতে পারবে না। প্রতিটি ফোঁটা পানি অপচয় মানে একটি প্রাণের জন্য হুমকি। এখনই প্রয়োজন সচেতনতা ও মনোভাবের পরিবর্তন।
বিশ্বের সীমান্তনদীগুলোর পানি বণ্টন এখন এক জটিল ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা। জাতিসংঘের উচিত আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগ করে নিশ্চিত করা যে কোনো দেশ একতরফাভাবে বাঁধ নির্মাণ করে অন্য দেশের পানি প্রবাহ বন্ধ করতে না পারে। একই সঙ্গে দরকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রযুক্তি স্থানান্তর। বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন প্রযুক্তি ও আধুনিক কৃষি উদ্ভাবন যেন কেবল ধনী দেশ বা কোম্পানির একচেটিয়া সম্পদ না হয়, বরং তা বৈশ্বিক মানবকল্যাণে ব্যবহৃত হয়।
বিশ্ব দ্রুত এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে, যেখানে পানি ও খাদ্য সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদে পরিণত হবে। ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নির্ভর করবে আজ আমরা কীভাবে এই সম্পদ ব্যবহার, সংরক্ষণ ও ন্যায্যভাবে বণ্টন করি তার ওপর। প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও নৈতিকতার সম্মিলিত প্রয়াস, সঙ্গে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাই আসন্ন সংকট মোকাবিলার একমাত্র কার্যকর পথ।
আমাদের যুদ্ধ হোক অস্ত্রের নয়, সচেতনতার, সংযমের ও মানবিকতার। যখন আমরা অবহেলায় পানি নষ্ট করি, তখন পৃথিবীর কোথাও কেউ তৃষ্ণায় কাতরায়।
লেখক: সাদিক আহমেদ প্রান্ত,পরিবেশ কর্মী ও কলাম লেখক,কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ।
যোগাযোগ: [email protected]
ঢাকা ও আশেপাশের এলাকার আজকের আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা এবং আশেপাশের এলাকায় বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ কারণে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকার আকাশ আংশিকভাবে থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। এ সময়ে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
বাতাস দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৫ শতাংশ। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হবে ২৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজকের সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ২১ মিনিটে, এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৬টা ৪ মিনিটে।
একই সঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১২০ ঘণ্টার সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ জায়গা, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গা, এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গা আজ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এ ছাড়া, সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। আবহাওয়াবিদরা মনে করাচ্ছেন, নাগরিকরা হঠাৎ বৃষ্টির জন্য প্রস্তুত থাকলে দুর্ভোগ এড়ানো সম্ভব।
‘আর ফেরার উপায় নেই’: জলবায়ু সংকটে পৃথিবীর ইকোসিস্টেম বিপন্ন
বৈশ্বিক উষ্ণতা যে আগের সব পূর্বাভাসকে অতিক্রম করে ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে, তার এক কঠোর প্রমাণ এখন সামনে। বিশ্বের প্রবাল প্রাচীরগুলো (Coral Reefs) প্রায় অপরিবর্তনীয় মৃত্যুযাত্রায় পৌঁছে গেছে—যা বিজ্ঞানীদের ভাষায় পৃথিবীর প্রথম ‘জলবায়ুজনিত ইকোসিস্টেম ধসের টিপিং পয়েন্ট’। সোমবার প্রকাশিত গ্লোবাল টিপিং পয়েন্টস রিপোর্টে এ সতর্কবার্তা দিয়েছেন ১৬০ জন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী।
এই প্রতিবেদনটি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন ইকোসিস্টেম কোন পর্যায়ে পৌঁছালে আর ফিরে আসা সম্ভব নয়—তা নিরূপণ করেছে বৈজ্ঞানিকভাবে। এবারের এই অভূতপূর্ব বিশ্লেষণ প্রকাশিত হলো এমন এক সময়, যখন ব্রাজিলের আমাজন বনাঞ্চলের কিনারায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০ (COP30)।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা যদি প্রাক-শিল্প যুগের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বেড়ে যায়, তবে বিশ্বের বৃহত্তম রেইনফরেস্ট আমাজনও ধসের মুখে পড়বে। এর আগের হিসাব অনুযায়ী, এই সীমা কিছুটা বেশি ধরা হয়েছিল, যা এখন কমিয়ে আনতে হয়েছে বননিধনের গতি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে।
আরও উদ্বেগজনক হলো, বৈশ্বিক উষ্ণতা অব্যাহত থাকলে বিপর্যস্ত হতে পারে পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র স্রোত অ্যাটলান্টিক মেরিডিওনাল ওভারটার্নিং সার্কুলেশন (AMOC)—যা উত্তর ইউরোপের শীতকালকে সহনীয় রাখে। এর ধস বিশ্ব আবহাওয়ার ভারসাম্যকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করতে পারে।
ব্রিটেনের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী এবং প্রতিবেদনের প্রধান লেখক টিম লেন্টন বলেন, “পরিবেশে পরিবর্তন এখন দ্রুত ও ভয়াবহ গতিতে ঘটছে—বিশেষ করে জীববৈচিত্র্য ও জলবায়ুর ক্ষেত্রে। আমরা আসলে এক নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি।”
আশার কিছু আলোও আছে
তবে হতাশার মাঝেও কিছু আশার ইঙ্গিত দেখছেন গবেষকরা। টিম লেন্টন বলেন, “আমরা এখনো সম্পূর্ণ অসহায় নই। আমাদের হাতে পরিবর্তনের সুযোগ আছে।” তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৫ সালে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের পরিমাণ প্রথমবারের মতো কয়লাচালিত বিদ্যুতের চেয়ে বেশি হয়েছে—যা একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।
এই সাফল্যকে সামনে রেখে বিজ্ঞানীরা নভেম্বরের কপ৩০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন দ্রুত কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নেয়।
জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই প্রাক-শিল্প যুগের চেয়ে ১.৩ থেকে ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি বেড়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রকৃতিতে পরিবর্তন যেভাবে দ্রুত ঘটছে, তা তাদের প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহ।
উষ্ণতম বছর ও প্রবাল মৃত্যুযাত্রা
গত দুই বছর পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হিসেবে নথিবদ্ধ হয়েছে। এর ফলে সাগরে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ, যা পৃথিবীর ৮৪ শতাংশ প্রবাল প্রাচীরকে ব্লিচিং (রঙ হারিয়ে ফেলা) ও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। অথচ এই প্রবাল প্রাচীরই সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের প্রায় এক-চতুর্থাংশের আশ্রয়স্থল।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রবালগুলোকে বাঁচাতে হলে পৃথিবীর তাপমাত্রা আবারও ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে—যা সম্ভব হবে কেবল বৈশ্বিক জলবায়ু উদ্যোগে বিপ্লব ঘটলে।
অস্ট্রেলিয়ার সিএসআইআরও (CSIRO) জলবায়ু বিজ্ঞান কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী পেপ কানাডেল বলেন, “নতুন প্রতিবেদনটি স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে, প্রতি বছর জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের পরিসর ও তীব্রতা বাড়ছে।”
বর্তমান নীতিমালা অনুসারে, পৃথিবী এই শতাব্দীর শেষে প্রায় ৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বৃদ্ধির পথে রয়েছে—যা মানবসভ্যতার অস্তিত্বের জন্য এক অশনিসংকেত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে শুধু প্রবাল প্রাচীর বা আমাজন নয়—পৃথিবীর বহু প্রাকৃতিক ব্যবস্থাই ধ্বংসের অপ্রতিরোধ্য পথে এগোবে। সময় ফুরিয়ে আসছে, কিন্তু আশার আলো এখনো নিভে যায়নি—শুধু দরকার বিশ্বনেতাদের সাহসী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও মানবজাতির সম্মিলিত উদ্যোগ।
-এম জামান
ইউরোপের পরিবেশ সংকট: অগ্রগতি সত্ত্বেও সতর্কবার্তা ইইএ’র
ইউরোপ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ঠিকই, কিন্তু পরিবেশ রক্ষা ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্ষতি মোকাবিলায় মহাদেশটিকে আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে—সোমবার প্রকাশিত ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি (ইইএ)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন দশকে ইউরোপ উল্লেখযোগ্যভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ও বায়ুদূষণ কমাতে সক্ষম হলেও সামগ্রিকভাবে মহাদেশটির পরিবেশের অবস্থা ‘ভালো নয়’। ১৯৯০ সালের তুলনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমেছে ৩৭ শতাংশ, যা যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের মতো বড় দূষণকারীদের তুলনায় অনেক এগিয়ে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো এবং ২০০৫ সাল থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দ্বিগুণ বৃদ্ধির ফলে এ অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।
তবুও ইইএ মনে করে, ইউরোপীয় দেশগুলোকে ইউরোপীয় গ্রিন ডিলের অধীনে ইতোমধ্যেই গৃহীত নীতি ও কর্মপরিকল্পনা আরও জোরালোভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ মহাদেশটির প্রকৃতি ক্রমেই অবনতি ও অতিরিক্ত শোষণের শিকার হচ্ছে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৮১ শতাংশ সুরক্ষিত আবাসস্থল খারাপ বা খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে, ৬০-৭০ শতাংশ মাটি দূষিত বা ক্ষতিগ্রস্ত এবং ৬২ শতাংশ জলাশয় স্বাস্থ্যকর পরিবেশে নেই।
জল এখন ক্রমশ বিরল হয়ে পড়ছে এবং কৃষি, পানি সরবরাহ ও জ্বালানি খাতে দক্ষ শাসনব্যবস্থা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, পানি পুনঃব্যবহার ও জনসচেতনতা বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পানি সাশ্রয় করা সম্ভব বলে মনে করে ইইএ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সরাসরি নয় বরং পরোক্ষভাবে অবকাঠামো ও ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে তুলছে।
প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, ইউরোপের অধিকাংশ ভবন প্রচণ্ড গরম সহ্য করার মতোভাবে নির্মিত নয় এবং মহাদেশের ১৯ শতাংশ মানুষ নিজের ঘর আরামদায়ক তাপমাত্রায় রাখতে সক্ষম নয়। যদিও তাপপ্রবাহের প্রকোপ বাড়ছে, ইইএ’র ৩৮টি সদস্য দেশের মধ্যে মাত্র ২১টি দেশে গরম মোকাবিলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রিক কর্মপরিকল্পনা রয়েছে।
ক্রমবর্ধমান আর্থিক ক্ষতি
১৯৮০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইউরোপে তাপপ্রবাহ, বন্যা, ভূমিধস ও দাবানলের মতো চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনায় ২ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতির মাত্রাও বেড়েছে কয়েকগুণ—২০২০ থেকে ২০২৩ সময়কালে বার্ষিক গড় ক্ষতি ২০১০-২০১৯ সময়কালের তুলনায় আড়াই গুণ বেশি। শুধু ২০২৩ সালে স্লোভেনিয়ার বন্যার ক্ষতি দেশটির জিডিপির ১৬ শতাংশের সমান।
ইইএ-এর টেকসই উন্নয়ন ইউনিটের প্রধান ক্যাথরিন গ্যানজলেবেন সতর্ক করে বলেন, “মানব টিকে থাকার জন্য উচ্চমানের প্রকৃতি অপরিহার্য। এখনই যদি পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, ভবিষ্যতে খরচ ও ক্ষতি আরও বেশি হবে।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দূষণ প্রতিরোধ মানুষের মৃত্যু ও রোগের সংখ্যা কমায়। সূক্ষ্ম ধূলিকণার কারণে হওয়া অকাল মৃত্যুর হার ২০০৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কমেছে, যা এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
-এম জামান
সেন্টমার্টিনকে রক্ষা করতে পারলেই পর্যটন টিকে থাকবে: রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে কখনোই ভ্রমণ বন্ধ করা হয়নি, তবে পর্যটক সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন ব্যবসায়ীদের নয়, এটি সবার।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর পান্থপথে পানি ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সেন্টমার্টিন ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সেন্টমার্টিনকে রক্ষা করতে পারলেই পর্যটন টিকে থাকবে। তিনি উল্লেখ করেন, “দ্বীপে ভ্রমণ কখনোই বন্ধ করা হয়নি, শুধু পর্যটকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে—এটি একটি বৈশ্বিক অনুশীলন।” তিনি জানান, সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন না করার সিদ্ধান্ত ২০১৬ সালেই নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমান সরকার এসে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করছে।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, “সেন্টমার্টিনের স্থানীয় মানুষ হোটেলগুলোর মালিক নয়। আন্দোলন যারা করেন, তাদের বেশির ভাগই হচ্ছে বাইরের ব্যবসায়ী।”
চলনবিলে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিস্ময়
এ সময় চলনবিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে চলা আন্দোলনের বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “এখন কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে বিলে! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা পড়াশোনা করেন, তারা কীভাবে এ ধরনের দাবি তুলতে পারেন, আন্দোলন করতে পারেন বা প্রস্তাব পাঠাতে পারেন?”
তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, “সরকার অনুমতি দিল কি না, সেটা পরের বিষয়। মূল প্রশ্ন হলো—আপনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আদৌ এ ধরনের প্রকল্প প্রস্তাব পাঠাতে পারেন কিনা।”
জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো নির্দিষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাসের প্রতিশ্রুতি বেইজিংয়ের
জাতিসংঘের এক বৈঠকে নতুন জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে চীন—যা প্রথমবারের মতো নির্দিষ্ট সংখ্যাগত লক্ষ্য নির্ধারণের মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর অঙ্গীকার। দেশটি ২০৩৫ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ থেকে ১০ শতাংশ নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্য স্থির করেছে এবং “এর চেয়েও ভালো করার চেষ্টা করবে” বলে জানিয়েছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ২০০৬ সাল থেকে সর্বোচ্চ দূষণকারী হিসেবে পরিচিত চীন বর্তমানে বৈশ্বিক নিঃসরণের প্রায় ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী। paradoxically, দেশটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রেও এক শীর্ষ শক্তি—যেখানে সৌরপ্যানেল, ব্যাটারি ও বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদনে তারা বিশ্বের অগ্রগামী। ফলে, চীনের জলবায়ু অঙ্গীকার ও বাস্তবায়ন বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখতে পারবে কি না, তা নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্যারিস চুক্তির আওতায় দেশগুলোকে প্রতি পাঁচ বছর পরপর তাদের “ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন” (এনডিসি) হালনাগাদ করতে হয়। নভেম্বর মাসে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিতব্য বছরের প্রধান জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক মহলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এই ঘোষণা নিয়ে প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। এর আগে ২০২১ সালের অঙ্গীকারে চীন বলেছিল ২০৩০ সালের আগেই কার্বন নিঃসরণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাবে এবং ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হবে—কিন্তু সেখানে সুনির্দিষ্ট মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য ছিল না, যা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের হতাশ করেছিল।
চীনের নতুন পরিকল্পনায় বলা হয়েছে—
অর্থনীতির সার্বিক নিঃসরণ সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ৭-১০ শতাংশ কমানো হবে, এবং প্রয়োজনে আরও বেশি কমানোর চেষ্টা চলবে। কিছু বিশ্লেষকের মতে, চীনের নিঃসরণ ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায় অতিক্রম করেছে।
মোট জ্বালানি ব্যবহারে অ-জীবাশ্ম জ্বালানির অংশ ৩০ শতাংশের ওপরে নেওয়া হবে।
২০২০ সালের তুলনায় ছয়গুণ বেশি সৌর ও বায়ুশক্তি উৎপাদন ক্ষমতা স্থাপন করে ৩,৬০০ গিগাওয়াটে উন্নীত করা হবে।
বন আচ্ছাদন বৃদ্ধি করে ২৪ বিলিয়ন ঘনমিটার পর্যন্ত নেওয়া হবে।
বৈদ্যুতিক গাড়িকে নতুন গাড়ি বিক্রির মূলধারায় পরিণত করা হবে।
উচ্চ নিঃসরণকারী শিল্পগুলোকে জাতীয় কার্বন বাণিজ্য ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে এবং “জলবায়ু সহনশীল সমাজ” গড়ে তোলা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই লক্ষ্যগুলো তুলনামূলকভাবে বিনয়ী হলেও চীনের নবায়নযোগ্য প্রযুক্তি খাতের দ্রুত অগ্রগতির কারণে বাস্তবে দেশটি ঘোষিত লক্ষ্য অতিক্রম করতে পারে। গ্রীনপিস ইস্ট এশিয়ার ইয়াও ঝে বলেন, “এটি আমাদের গ্রহকে নিরাপদ রাখতে যথেষ্ট নয়, তবে আশার কথা হলো চীনের প্রকৃত ডিকার্বনাইজেশনের গতি কাগজে লেখা লক্ষ্যকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।”
তবে নির্দিষ্ট কোনো ভিত্তিবর্ষ উল্লেখ না করে কেবল “সর্বোচ্চ” শব্দটি ব্যবহার করায় কিছু প্রশ্নও উঠেছে। সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের বিশ্লেষক লাউরি মাইলিভির্টা বলেন, এটি নিকট ভবিষ্যতে নিঃসরণ বৃদ্ধির সুযোগও খোলা রাখছে। তাঁর মতে, “এটি উচ্চাভিলাষের সিলিং নয়, বরং ফ্লোর।”
এশিয়া সোসাইটির কেট লোগান ও লি শুও মনে করেন, চীনের পরিকল্পনায় ব্যবহৃত “striving to do better” বাক্যাংশ অন্তত একটি ইতিবাচক সংকেত যে দেশটি বাস্তব অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে অঙ্গীকার পুনর্বিবেচনার জন্য প্রস্তুত।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র আবারও প্যারিস চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানো এবং বিভক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ না করার প্রেক্ষাপটে চীনের এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক জলবায়ু কূটনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা বহন করছে।
-এম জামান
টেকসই উন্নয়নে নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতির ওপর জোর দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে হলে বাংলাদেশকে দ্রুত পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে অগ্রসর হতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের অন্যতম জনবহুল ও জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আর দীর্ঘ সময় জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না।
অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেইজ ও তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে অংশ নিয়ে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, “এখনই সময় বাংলাদেশকে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বিকল্পগুলো নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবার, বিশেষ করে বৃহৎ পরিসরে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।”
কার্ল পেইজ এ সময় পরবর্তী প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি ও হাইব্রিড সিস্টেমের সাম্প্রতিক অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বার্জ-মাউন্টেড পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরগুলো ব্যয়সাশ্রয়ী, কম রক্ষণাবেক্ষণপ্রয়োজনীয় এবং দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাতের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে সক্ষম।
তিনি আরও জানান, পারমাণবিক বিদ্যুৎ এখন আর আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোর কাছে বিতর্কিত নয়। বিশ্বব্যাংকের মতো সংস্থাও এসব প্রযুক্তিতে অর্থায়ন করতে আগ্রহী। ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো এ ধরনের প্রযুক্তি গ্রহণ শুরু করেছে।
কার্ল পেইজের মতে, উদ্ভাবনী সক্ষমতা ও উদ্যোক্তা মনোভাবের জন্য বাংলাদেশ এ খাতে নেতৃত্ব দিতে পারে। এর ফলে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির মূল্য স্থিতিশীলতা এবং শিল্পখাতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। “বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির কৌশলগত কেন্দ্র এবং শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক উদ্ভাবনের নেতৃত্ব দিতে পারে,” তিনি যোগ করেন।
অধ্যাপক ইউনুস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতি ঘোষণা করেছে, যেখানে সৌরশক্তি উৎপাদন ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্পের ক্ষেত্রে বিস্তারিত গবেষণা ও বাস্তবতা যাচাই অপরিহার্য।
তিনি বলেন, “আমরা অবশ্যই এসব সুযোগ নিয়ে কাজ করব, কিন্তু আগে গভীর গবেষণা করতে হবে। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা ব্যাপকভাবে কমাতে হবে।”
ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মরশেদও উপস্থিত ছিলেন।
-নাজমুল হাসান
“জলবায়ু বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব: COP30-এর আগে গুতেরেসের হুঁশিয়ারি”
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, প্রাক-শিল্পযুগের গড় তাপমাত্রার তুলনায় বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রচেষ্টা ভেঙে পড়ার পথে। শুক্রবার এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতি ও জলবায়ু প্রভাবশালী দেশগুলোর জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (NDCs) বা জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা এখনো কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি।
গুতেরেস বলেন, “আমরা একেবারে এই লক্ষ্য হারানোর দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের জরুরি ভিত্তিতে এমন কর্মপরিকল্পনা দরকার, যা পুরো অর্থনীতি ও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকে কাভার করবে এবং ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস লক্ষ্যের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।”
বিলম্বে সংকট ঘনীভূত
প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ২০৩৫ সালের জন্য নতুন লক্ষ্য বা NDC ঘোষণার কথা ছিল কয়েক মাস আগে। কিন্তু ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন, বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংকট এই প্রক্রিয়াকে ধীর করেছে। এমন পরিস্থিতিতে গুতেরেসের মতে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বৈশ্বিক নির্গমন ব্যাপকভাবে কমানো না গেলে এই লক্ষ্য আর টিকবে না।
চীন-ইইউর নীরবতা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে
ব্রাজিলে আসন্ন COP30 শীর্ষ সম্মেলনের আগে বহু দেশই এখনো তাদের জলবায়ু পরিকল্পনা ঘোষণা করেনি। বিশেষত চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো প্রধান শক্তিগুলোর নীরবতা জলবায়ু কূটনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। গুতেরেস আশা করছেন, নিউইয়র্কে আয়োজিত জাতিসংঘের জলবায়ু সপ্তাহ এবং ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার সঙ্গে তার যৌথ নেতৃত্বাধীন জলবায়ু শীর্ষ বৈঠক এই প্রচেষ্টাকে নতুন গতি দেবে।
বিজ্ঞানীদের কঠিন পূর্বাভাস
আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন প্যানেল (IPCC)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, উষ্ণতা যত বাড়বে, ততই ঘন ঘন তীব্র তাপদাহ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং চরম আবহাওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। ১.৫ ডিগ্রি সীমায় উষ্ণতা আটকে রাখতে পারলে এসব ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে অনেক কম হবে।
মহাসচিবের বার্তা: আতঙ্ক নয়, দৃঢ়তা দরকার
গুতেরেস বলেন, “এটি আতঙ্কিত হওয়ার বিষয় নয়, বরং দৃঢ় সংকল্পের সময়। দেশগুলোকে চাপ দিয়ে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করাই এখন প্রধান কাজ।” তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০২৪ সাল রেকর্ডকৃত সবচেয়ে উষ্ণ বছর হিসেবে ইতিহাসে নথিভুক্ত হয়েছে—যা এই সংকটের গভীরতা স্পষ্ট করে।
-এম জামান
জলবায়ু ইস্যুতে গণমাধ্যমের দায়িত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান
বাংলাদেশের অন্যতম বড় উন্নয়ন সংস্থা পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সাংবাদিকদের আরও গভীরতর প্রতিবেদন প্রকাশ করা প্রয়োজন।
আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,“বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। যদি বিস্তারিত ও বিশ্লেষণধর্মী জলবায়ু প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জলবায়ু ক্ষতিপূরণের জন্য বাংলাদেশের দাবি আরও শক্তিশালী হবে।”
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জলবায়ু ন্যায়বিচার (Climate Justice) নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমকর্মীদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
পিকেএসএফ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) যৌথভাবে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ছিল সাংবাদিকদের জলবায়ু পরিবর্তন ও এর অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে আরও দক্ষ করে তোলা, যাতে তারা সঠিক তথ্যভিত্তিক সংবাদ তৈরি করতে পারেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম থেকে ৬০ জন সাংবাদিক এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।
জাকির আহমেদ খান জানান, বর্তমানে পিকেএসএফ দেশের দুই কোটির বেশি নিম্নআয়ের পরিবারের সঙ্গে কাজ করছে। তিনি বলেন,“আমরা জনগণের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছি যাতে তারা পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন এখন টিকে থাকার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাংবাদিকরা যদি জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক দিকগুলো বিশ্লেষণ করে উপস্থাপন করেন, তবে দেশ-বিদেশে নীতি নির্ধারক মহলে বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর আরও শক্তিশালী হবে।
-সুত্রঃ বি এস এস
পাঠকের মতামত:
- ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আজকের নামাজের সময়সূচি
- ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও অনড় জোহরান মামদানি; প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই দিলেন কঠোর জবাব
- ৫ বা ১২ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন? ইসি প্রস্তুত, অপেক্ষা শুধু সরকারের সবুজ সংকেতের
- কেউ যেন ফাউল গেম খেলতে না পারে: চট্টগ্রাম হামলায় সতর্ক করলেন জামায়াত আমির
- ইসি'র ঘোষণা: ভোটার এলাকা বদলাতে চাইলে হাতে আছে মাত্র ৫ দিন
- ইসি'র ঘোষণা: ভোটার এলাকা বদলাতে চাইলে হাতে আছে মাত্র ৫ দিন
- পাকিস্তানে মিলল বিশাল স্বর্ণ ভান্ডার: মজুত ৬৩৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি!
- গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত
- ভারত-নেপালের বিপক্ষে প্রাথমিক দল ঘোষণা: ২৭ সদস্যের স্কোয়াডে চমক
- ব্রণ, বলিরেখা ও সানবার্ন থেকে মুক্তি; ত্বকের যত্নে আইস কিউব ব্যবহারের ১০ সহজ কৌশল
- মনোনয়ন ঘোষণার একদিন পরই হামলা; চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ
- ইতিহাসের একমাত্র অপরাজিত বীর খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রাঃ):তাঁর রণকৌশলে বদলে যায় পৃথিবীর মানচিত্র!
- গরু চোরাচালানকারী ধরতে গ্রেনেড: লালমনিরহাটে বিএসএফের কাণ্ডে উত্তেজনা
- মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ, নতুন তথ্য ফাঁস
- রাজনৈতিক এজেন্ডায় দুর্নীতি: জয়-পুতুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের গুরুতর মামলা
- গ্রেফতার হতে পারেন অভিনেত্রী তানজিন তিশা
- হৃদরোগের ঝুঁকি কম বয়সে: হার্টের রক্তনালী বন্ধ হওয়ার ৭টি প্রাথমিক লক্ষণ চিনে সতর্ক হোন
- বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে ফিরবেন কি সাকিব আল হাসান
- লক্ষ্যপূরণ কঠিন: মূল্যস্ফীতি কমলেও শহরের ব্যয় এখন গ্রামের চেয়ে বেশি
- মাইলস্টোন বিমান বিধ্বস্ত: দুর্ঘটনার জন্য পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটি দায়ী, জানালেন প্রেস সচিব
- কালো শকুনের হাতে দেশ, সতর্ক করলেন সারজিস আলম
- সিনেমার পর ক্রিকেট সাম্রাজ্য: বিপিএল-এর নতুন আসরে শাকিব খানের দলের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি
- আবহাওয়ার জরুরি বার্তা: দেশের চার অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস
- জাতীয় দলের নতুন ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল: জানালেন দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জের কথা
- সুষ্ঠু নির্বাচন হলেই স্থিতিশীল হবে দেশ: সেনাসদর থেকে বার্তা
- ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী গ্রামে সৌদি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
- বুক ধড়ফড়ের নেপথ্যে পানিশূন্যতা: হৃদস্পন্দন দ্রুত হলে যা করবেন, জানালেন বিশেষজ্ঞরা
- শ্রীবরদীতে অবৈধভাবে মজুদ ১০৬ বস্তা সরকারি সার জব্দ
- পদত্যাগ করে রাজনীতিতে: অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান
- "বিএনপি নেতাদের হাতে হেনস্তার শিকার সালাউদ্দিন"
- দেউলিয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত
- ০৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ০৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ০৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এনসিপি’র প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা; এককভাবে ৩০০ আসনে লড়ার প্রস্তুতি
- জোহরান মামদানির জয়ে উচ্ছ্বাসে মাতলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা
- জাকির নায়েকের সফর স্থগিত করলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
- এদের সরাতে লাঠি হাতে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই: ডাকসু সদস্য সর্ব মিত্র চাকমা
- আইনি লড়াইয়ে বড় মোড়: জিয়া অরফানেজ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
- এবিবি ব্যাংক লিমিটেড এর কুপন পেমেন্ট ও রেকর্ড ডেট সম্পর্কিত ঘোষণা
- দেশের ছয় অঞ্চলে ঝড়ের সম্ভাবনা, নৌবন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত জারি
- APEXFOODS-এর Q1 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- জামায়াত আমিরের স্পষ্ট বার্তা ও দলের প্রস্তুতি
- মামদানির জয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প কি সত্যিই ফেডারেল তহবিল বন্ধ করবেন এবার
- ইতিহাস সৃষ্টিকারী কে এই জোহরান মামদানি? যিনি প্রথম মুসলিম ও সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হতে চলেছেন
- উত্তর গাজার প্রবেশপথ এখনো বন্ধ,যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা
- এনসিপিকে যে কয়টি আসন দিতে পারে বিএনপি
- আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নির্বাচনী পরিকল্পনা ফাঁস
- জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত
- যুদ্ধ ও মহানুভবতা: সুলতান সালাউদ্দিন যেভাবে জেরুজালেম জয় ও শত্রুর মন জিতেছিলেন
- ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক সংলাপ: জ্ঞানচর্চায় উপনিবেশের ছায়া কাটাতে আহ্বান বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানীর
- রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে
- গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত
- ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
- চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আবারও পর্দায় পূজা চেরি
- IFIC ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- পূবালী ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- ইতিহাসের পাতায় আজ: ৩০ অক্টোবর - বিজয়, বিপ্লব আর বেদনার দিন
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শেয়ারবাজারে শীর্ষ বিশ শেয়ারের তালিকা প্রকাশ
- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ
- GSP ফাইন্যান্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ৫ ও ৬ নভেম্বর বন্ধ থাকবে ২ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ড
- ১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা








