হার্টের রিং: তিন কোম্পানির ১০টি স্টেন্টের দাম কমালো সরকার

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১৯:৩২:০৪
হার্টের রিং: তিন কোম্পানির ১০টি স্টেন্টের দাম কমালো সরকার
হার্টের রিং

হার্টের রিংয়ের দাম কমালো সরকার, সর্বোচ্চ কমেছে ৩৬ শতাংশ

হৃদরোগীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা সামগ্রী করোনারি স্টেন্ট বা হার্টের রিংয়ের দাম কমিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনে রোববার (৩ আগস্ট) এ তথ্য জানায়।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তিনটি কোম্পানির ১০ ধরনের স্টেন্টের দাম নতুনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটিমাত্র স্টেন্টের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানভেদে প্রতি ইউনিট স্টেন্টের খুচরা মূল্য এখন সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে করে একেক ধরনের স্টেন্টে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। সর্বোচ্চ কমেছে ৩৬ শতাংশ।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. আকতার হোসেন জানান, যেসব স্টেন্টের দাম কমানো হয়েছে সেগুলোর দাম আগে অনেক বেশি ছিল। সরকার নিয়ন্ত্রিত মূল্য নির্ধারণ কমিটি ধাপে ধাপে আরও কোম্পানির স্টেন্টের দাম পুনর্নির্ধারণ করবে। নতুন এই দাম আগামী সপ্তাহ থেকেই কার্যকর হবে।

মেডট্রনিক, অ্যাবোট ভাসকুলার এবং বস্টন সায়েন্টিফিক—এই তিন কোম্পানির আমদানিকৃত রিংগুলোর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, জীবনদায়ী এই চিকিৎসা সামগ্রীর ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট মূল্যনীতি থাকলে দাম অযাচিতভাবে বাড়ানো বা কমানো বন্ধ হবে। তবে তারা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন দামে স্টেন্ট সরবরাহ করবেন বলে জানান।

বাংলাদেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় রিং পরানো একটি বহুল প্রচলিত পদ্ধতি। কারও হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হলে চিকিৎসকরা অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি পদ্ধতির মাধ্যমে রিং স্থাপনের পরামর্শ দেন। এই পদ্ধতিতে সরু ক্যাথেটার দিয়ে ধমনীতে একটি ছোট জালাকৃতির স্টেন্ট স্থাপন করা হয়, যা রক্তনালী খোলা রাখে এবং হৃদপিণ্ডে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল নিশ্চিত করে।

বাংলাদেশে ব্যবহৃত স্টেন্ট বা রিং প্রায় সবই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত থেকে এসব রিং আসে। বিভিন্ন হাসপাতালে এসব রিংয়ের মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখা হয় এবং রোগীর পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসক নির্দিষ্ট রিং প্রতিস্থাপন করেন।

/আশিক


হাড়ের ব্যথায় ভুগছেন? শুধু বয়স নয়, দায়ী আপনার ৫টি অভ্যাস

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৯:৪২:৫৪
হাড়ের ব্যথায় ভুগছেন? শুধু বয়স নয়, দায়ী আপনার ৫টি অভ্যাস
ছবি : সংগৃহীত

শরীরের হাড় বা গিঁটে হঠাৎ ব্যথা অনুভব করার বিষয়টি এখন আর কেবল বয়স্কদের সমস্যা নয়। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, অনেক সময় আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস, বিশৃঙ্খল জীবনযাত্রা এবং স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলাই হাড় ও গিঁটের সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই ধরনের ব্যথাকে অনেকেই শুরুতে গুরুত্ব দিতে চান না, কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে এই অবহেলা চলাফেরার ক্ষমতা পর্যন্ত কেড়ে নিতে পারে এবং জীবনমানের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা হাড় ও গিঁটের ব্যথার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। শরীরে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং প্রোটিনের ঘাটতি থাকলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজনের কারণে হাড় ও গিঁটের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে, যা ব্যথার অন্যতম কারণ। বর্তমান জীবনযাত্রায় দীর্ঘ সময় বসে থাকা বা শারীরিক পরিশ্রমের অভাব অর্থাৎ অ্যাক্টিভিটি কমে যাওয়াও এই সমস্যাকে ত্বরান্বিত করছে। এর বাইরে অ্যালার্জি, প্রদাহজনিত সমস্যা বা আর্থ্রাইটিস এবং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াও ব্যথার সাধারণ কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে চিকিৎসকরা বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। হাড় ও সন্ধির সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা অপরিহার্য। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দুধ, ডিম, মাছ, শাকসবজি ও বাদাম সমৃদ্ধ খাবার রাখার ওপর জোর দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি নিয়মিত হালকা হাঁটা, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং হাড় ও গিঁটকে শক্ত রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে হাড়ের ওপর চাপ কমানো এবং পর্যাপ্ত পানি পান করাও জরুরি। তবে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে বা চলাফেরায় সমস্যা দেখা দিলে কালক্ষেপণ না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।


শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কেন বাড়ে? জানুন বাঁচার উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ২১:১৫:০৯
শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কেন বাড়ে? জানুন বাঁচার উপায়
ছবি : সংগৃহীত

শীতের সকালের কুয়াশা আর হালকা ঠান্ডা পরিবেশ অনেকের কাছে উপভোগ্য হলেও হার্টের রোগীদের জন্য এই সময়টা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, তাপমাত্রা কমলে শরীর নিজেকে উষ্ণ রাখতে অতিরিক্ত কাজ শুরু করে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে হৃৎপিণ্ডের ওপর। ঠান্ডার কারণে শরীরের রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়, যা শরীরের ভেতরের তাপ ধরে রাখতে সাহায্য করে। তবে এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হার্টকে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে এটি বড় কোনো সমস্যা না হলেও হার্টের রোগীদের জন্য এটি এনজাইনা, শ্বাসকষ্ট কিংবা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই শীতকালে হৃদরোগীদের বাড়তি সচেতনতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, শীতে বাইরে বের হওয়ার সময় শরীর ভালোভাবে গরম পোশাকে ঢেকে রাখা প্রয়োজন। একটার ওপর আরেকটা বা একাধিক লেয়ারের পোশাক পরা এবং মাথা, হাত ও পা ভালোভাবে ঢেকে রাখা উচিত, কারণ এসব অঙ্গ দিয়ে দ্রুত শরীরের তাপ বেরিয়ে যায়। তবে অপ্রয়োজনে দীর্ঘক্ষণ তীব্র শীতে বাইরে না থাকাই শ্রেয়। পাশাপাশি ঠান্ডার সময় ভারী কাজ করা বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম থেকেও বিরত থাকতে হবে। ভারী জিনিস তোলা, খুব দ্রুত হাঁটা বা দৌড়ানোর মতো কাজ হার্টের ওপর হঠাৎ চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা হৃদরোগীদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।

শীতের সময় আরেকটি বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি, আর তা হলো অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া। গরম কাপড় পরে অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটি বা কাজ করলে শরীর ঘেমে যেতে পারে। এতে হঠাৎ রক্তচাপ কমে গিয়ে হার্টের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই ঘামতে শুরু করলেই কাজ থামিয়ে বিশ্রাম নেওয়া বা ঘরের ভেতরে চলে আসা উচিত। এছাড়া শীতে ফ্লু বা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে, আর জ্বর বা সংক্রমণ হার্টকে আরও দুর্বল করে দেয়। তাই হার্টের রোগীদের জন্য সময়মতো ফ্লু শট নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ফ্লুর উপসর্গ দেখা দিলে নিজে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেকে মনে করেন শীতে অ্যালকোহল শরীর গরম রাখে, কিন্তু এটি ভুল ধারণা। অ্যালকোহল শরীরের তাপ দ্রুত বের করে দেয় এবং হার্টের ঝুঁকি বাড়ায়, তাই হৃদরোগীদের জন্য এটি এড়িয়ে চলাই নিরাপদ।

সূত্র : ভেরিওয়েল হেলথ


শীতে কেন বাড়ে মাইগ্রেন? জেনে নিন বাঁচার উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২০:৫৯:৪৭
শীতে কেন বাড়ে মাইগ্রেন? জেনে নিন বাঁচার উপায়
ছবি : সংগৃহীত

শীতের আগমনে প্রকৃতিতে পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের জীবনে নেমে আসে মাইগ্রেনের অসহ্য যন্ত্রণা এবং ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন এই ব্যথা কতটা পীড়াদায়ক হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে তাপমাত্রার পারদ নিচে নামার ফলে মানুষের মাথার ত্বক এবং ঘাড়ের রক্তনালীগুলো দ্রুত সংকুচিত হতে শুরু করে যা সরাসরি ট্রাইজেমিনাল স্নায়ুপথে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয় এবং এর ফলেই তীব্র মাথাব্যথা অনুভূত হয়। যাদের আগে থেকেই মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে হঠাৎ ঠান্ডা বাতাস লাগাটা বড় বিপদের কারণ হতে পারে আবার বারবার গরম থেকে ঠান্ডা বা ঠান্ডা পরিবেশ থেকে গরমে যাতায়াত করলে ভাস্কুলার সিস্টেমের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে যা যন্ত্রণাকে উসকে দেয়। এছাড়া শীতের তীব্রতায় অনেকে দীর্ঘসময় ঘরবন্দি হয়ে থাকার ফলে শারীরিক সক্রিয়তা কমে যায় এবং এই আলস্য থেকেও মাথাব্যথার প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকরা নিজেকে সবসময় হাইড্রেটেড বা আর্দ্র রাখার ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছেন এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে সুস্থ থাকতে দিনে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন। শীতের সময় সর্দি-কাশির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাইগ্রেন বাড়ে তাই ঠান্ডা বাতাস এড়াতে কান ও মাথা ভালোভাবে ঢেকে রাখা এবং দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনের স্ক্রিন বা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকা জরুরি। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন যে জাঙ্ক ফুড ও অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ মাথাব্যথাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে তাই এর পরিবর্তে খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি ও মৌসুমি ফল রাখতে হবে। ধূমপান ও অ্যালকোহল জাতীয় বদভ্যাস ত্যাগ করার পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে হালকা ব্যায়াম এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও জেগে ওঠার অভ্যাস মাইগ্রেনের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে সাহায্য করে তবে সমস্যা তীব্র হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।


চোখের যে ৫ লক্ষণে বুঝবেন কিডনি নষ্ট হচ্ছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৯:০৯:৪৯
চোখের যে ৫ লক্ষণে বুঝবেন কিডনি নষ্ট হচ্ছে
ছবি : সংগৃহীত

মানবদেহের অভ্যন্তরীণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় কিডনি বা বৃক্কের ভূমিকা অপরিসীম এবং এই অঙ্গটিকে শরীরের ছাঁকনি হিসেবে অভিহিত করা হয় যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা ও ক্ষতিকর বর্জ্য নিষ্কাশনে নিরলসভাবে কাজ করে যায়। শরীরের দুই পাশে অবস্থিত এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি এতটাই নীরবে কাজ করে যে এর কার্যকারিতা নষ্ট হতে শুরু করলেও প্রাথমিক অবস্থায় বা একটি কিডনি বিকল হলেও মানুষ সচরাচর তা টের পান না। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা কিডনি রোগকে একটি 'সাইলেন্ট কিলার' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তবে তারা এও জানিয়েছেন যে কিডনি পুরোপুরি অকেজো হওয়ার আগেই আমাদের শরীর বিশেষ করে চোখ কিছু আগাম সতর্কবার্তা প্রেরণ করে যা সময়মতো বুঝতে পারলে বড় ধরনের বিপদ এড়ানো সম্ভব।

বিশেষজ্ঞদের মতে কিডনি যখন রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ সঠিকভাবে ছাঁকতে ব্যর্থ হয় তখন শরীরে টক্সিন বা বিষাক্ত উপাদানের মাত্রা বেড়ে যায় এবং এর ফলে পানি ও খনিজের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে সরাসরি চোখের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিডনি রোগের প্রভাবে চোখের সূক্ষ্ম রক্তনালিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যার ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া বা ফোকাস করতে সমস্যা এমনকি সবকিছু দ্বিগুণ দেখার মতো জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যা হাইপারটেনসিভ বা ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির লক্ষণ হিসেবে পরিচিত। উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগীরা যদি হঠাৎ করে দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তবে তাদের কেবল চোখের ডাক্তার নয় বরং দ্রুত নেফ্রোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত কারণ রেটিনায় তরল জমা বা ফোলাভাব অন্ধত্বের ঝুঁকি পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।

অনেকেরই ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের নিচে সাময়িক ফোলাভাব দেখা যায় কিন্তু এই ফোলা ভাব যদি সারাদিন স্থায়ী হয় এবং চোখের পাতার চারপাশে অস্বাভাবিক স্ফীতি লক্ষ্য করা যায় তবে এটি প্রোটিনুরিয়া নামক কিডনি সমস্যার স্পষ্ট ইঙ্গিত হতে পারে। চিকিৎসকরা ব্যাখ্যা করেছেন যে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন বেরিয়ে গেলে রক্তে এর ঘাটতি দেখা দেয় এবং তখন শরীরের নরম টিস্যুগুলোতে বিশেষ করে চোখের চারপাশে তরল জমে গিয়ে এই দীর্ঘস্থায়ী ফোলাভাব তৈরি করে। এছাড়া শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের ভারসাম্যহীনতার কারণে চোখ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাওয়া, অনবরত চুলকানি বা খচখচানি অনুভব করা এবং কৃত্রিম লুব্রিকেশনেও কাজ না হওয়া কিডনি জটিলতার বা ডায়ালাইসিস প্রয়োজনের পূর্বলক্ষণ হতে পারে।

কিডনি বিকল হওয়ার আরেকটি বিরল কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো রঙের পার্থক্য বুঝতে না পারা বিশেষ করে নীল ও হলুদ রঙের বিভাজন করতে চোখের অক্ষমতা তৈরি হওয়া যা শরীরে ইউরেমিক টক্সিন জমে অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ঘটে থাকে। এছাড়া কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই যদি চোখ ঘন ঘন লাল বা রক্তবর্ণ ধারণ করে তবে এটি অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের কারণে চোখের ক্ষুদ্র রক্তনালি ফেটে যাওয়ার ফল হতে পারে যা কিডনি রোগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। লুপাস নেফ্রাইটিসের মতো অটোইমিউন রোগগুলো একইসঙ্গে কিডনি ও চোখকে আক্রান্ত করতে পারে তাই চোখের যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং নিয়মিত কিডনি স্ক্রিনিং করা অত্যন্ত জরুরি।

সূত্র : মায়ো ক্লিনিক


হঠাৎ মাসিক বন্ধ বা অনিয়মিত হলে কী করবেন এবং কখন যাবেন চিকিৎসকের কাছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ২১:২৬:৪০
হঠাৎ মাসিক বন্ধ বা অনিয়মিত হলে কী করবেন এবং কখন যাবেন চিকিৎসকের কাছে
ছবি : সংগৃহীত

নারীদের স্বাভাবিক স্বাস্থ্যচক্রের একটি অবিচ্ছেদ্য ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মাসিক বা পিরিয়ড। চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী ২১ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে নিয়মিত মাসিক হওয়াকে স্বাভাবিক ধরা হয়। কিন্তু বর্তমানে অনেক নারীই হঠাৎ মাসিক দেরিতে হওয়া আগেভাগে হওয়া অতিরিক্ত রক্তপাত বা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। চিকিৎসকদের মতে মাসিক অনিয়মিত হওয়ার পেছনে একাধিক শারীরিক ও মানসিক কারণ সক্রিয় থাকে।

হরমোনের ভারসাম্যহীনতাই প্রধান কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়াই মাসিক অনিয়মের প্রধান কারণ। শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মাত্রা ঠিক না থাকলে মাসিক চক্র বিঘ্নিত হয়। বিশেষ করে থাইরয়েড সমস্যা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা পিসিওএস এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগে হরমোনের বড় ধরনের গোলযোগ দেখা দেয় যা সরাসরি পিরিয়ডের ওপর প্রভাব ফেলে।

মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার প্রভাব মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাও বড় একটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন মানসিক চাপ থাকলে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশ প্রভাবিত হয় যা সরাসরি মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে সময়মতো ডিম্বস্ফোটন না হওয়ায় মাসিক পিছিয়ে যায় বা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ওজন ও জীবনযাপনের ভূমিকা ওজনের হঠাৎ পরিবর্তন অর্থাৎ অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া বা দ্রুত ওজন কমে যাওয়া মাসিক অনিয়মের আরেকটি বড় কারণ। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমলে বা চর্বি খুব কমে গেলে হরমোনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বিশেষ করে কঠোর ডায়েট বা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা নারীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া ঘুমের অভাব অনিয়মিত জীবনযাপন দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহার জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের সংক্রমণ এবং বয়সজনিত পরিবর্তনও মাসিক অনিয়মের জন্য দায়ী হতে পারে। কিশোরী বয়সে বা মেনোপজের আগের সময়েও মাসিক চক্র স্বাভাবিকের তুলনায় অনিয়মিত হতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ চিকিৎসকেরা বলছেন মাসিক অনিয়মিত হওয়া অনেক সময় শরীরের ভেতরের কোনো বড় সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। তাই তিন মাসের বেশি সময় ধরে মাসিক অনিয়ম চললে বা অতিরিক্ত ব্যথা ও রক্তপাত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নিয়মিত জীবনযাপন সঠিক খাদ্যাভ্যাস মানসিক চাপ কমানো এবং পর্যাপ্ত ঘুম মাসিক চক্র স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।


শীতকালে সাইনাস বাড়লে ঘরে কী করবেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১২ ১০:৪৬:১৮
শীতকালে সাইনাস বাড়লে ঘরে কী করবেন
ছবি: সংগৃহীত

শীতের আগমনেই সাইনাস আক্রান্তদের দুর্ভোগ নতুন করে অনুভূত হয়। ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস নাকের ভেতরের পথকে শুকিয়ে দেয়, ফলে সাইনাসে জমাট বাঁধা প্রদাহ, মাথাব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ও মুখে চাপের মতো উপসর্গ বাড়তে থাকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৌসুম বদলের এই সময়ে নাকের সঠিক যত্ন ও ঘরের পরিবেশ আর্দ্র রাখলেই উপসর্গ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

নাক পরিষ্কার রাখা সাইনাসের প্রথম সুরক্ষা

বিশেষজ্ঞদের মতে, নাকের ভেতর শ্লেষ্মা জমে থাকা ও অ্যালার্জেন অবরোধ দূর করতে লবণজল ভিত্তিক স্যালাইন স্প্রে নিয়মিত ব্যবহার খুবই কার্যকর। অনেকেই নেটি পট ব্যবহার করে নাক ধুয়ে থাকেন, যা সাইনাস প্যাসেজ পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে এবং নাক বন্ধভাব দ্রুত কমায়।

শীতের শুষ্ক বাতাসে বাড়ে প্রদাহ, হিউমিডিফায়ার উপকারী

শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকে, ফলে সাইনাসের অভ্যন্তরীণ টিস্যুগুলো সহজেই উত্তেজিত হয়। এজন্য ঘরে হিউমিডিফায়ার চালিয়ে বাতাসে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনলে নাকের ভেতরের প্রদাহ কমে এবং স্বস্তি আসে। শুষ্ক আবহাওয়া যাদের সাইনাসে সমস্যা বাড়িয়ে দেয়, তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে সহায়ক।

গরম ভাপ নিলে দ্রুত আরাম

গরম জলের ভাপ নেওয়া দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত উপায়। গরম ভাপ নিলে নাকের পথ আর্দ্র হয় এবং জমাট বাঁধা স্রাব নরম হয়ে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়, যা সাইনাসের চাপ কমাতে সাহায্য করে।

উষ্ণ সেঁকের মাধ্যমে ব্যথা উপশম

মুখের সাইনাস এলাকায় উষ্ণ ভেজা তোয়ালে বা কমপ্রেস লাগালে রক্তসঞ্চালন বাড়ে এবং প্রদাহের কারণে সৃষ্ট চাপ ও ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।

শরীরকে আর্দ্র রাখা জরুরি

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর শুষ্ক হয় না, ফলে সাইনাসের শ্লেষ্মা পাতলা থাকে এবং সহজে বেরিয়ে আসে। তরল গ্রহণ কম হলে সাইনাসের সমস্যাগুলো আরও তীব্র হতে পারে।

পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম

বদল সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান সাইনাসের সঙ্গে লড়তে সহায়তা করে।

ভিটামিন ডি সাইনাস স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ

গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি–এর ঘাটতি থাকলে সাইনাস প্রদাহের প্রবণতা বাড়তে পারে। তাই পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি নিশ্চিত করাও শীতকালের জন্য প্রয়োজনীয়।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন

ঘরোয়া যত্ন নেওয়ার পরও যদি নাক বন্ধভাব, মাথাব্যথা, জ্বর বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ কমতে না থাকে, তাহলে দ্রুত নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। দির্ঘস্থায়ী বা পুনর্বার দেখা দেওয়া সাইনাস সমস্যা চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান ছাড়া উপেক্ষা করা ঠিক নয়।


ঠান্ডায় জয়েন্ট পেইন বাড়ে কেন এবং কীভাবে কমাবেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ১২:০৮:৫৫
ঠান্ডায় জয়েন্ট পেইন বাড়ে কেন এবং কীভাবে কমাবেন
ছবি: সংগৃহীত

শীত এলেই দেশের বহু মানুষ হাঁটু, কোমর, আঙুল, কাঁধসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা বাড়ার অভিযোগ করেন। বিশেষ করে আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা পুরোনো আঘাতজনিত সমস্যা থাকা ব্যক্তিদের জন্য শীতকাল হয়ে ওঠে সবচেয়ে কষ্টকর সময়। চিকিৎসকেরা বলছেন, তাপমাত্রা কমে গেলে মানবদেহের রক্তপ্রবাহ, জয়েন্টের তরল, টিস্যুর চাপ এবং স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ায় বহু পরিবর্তন ঘটে। সেই কারণেই এই মৌসুমে জয়েন্ট পেইন বেড়ে যায় বহুগুণে।

ঠান্ডা আবহাওয়ার প্রভাবে শরীরের ভেতরে যা ঘটে

শরীরের জৈব-ফিজিওলজিক্যাল কার্যক্রম শীতের তীব্রতায় ধীর হয়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানী গবেষণায় দেখা গেছে-

১. রক্তনালী সংকুচিত হওয়া

শীত পড়লেই হাত-পায়ের ছোট রক্তনালী দ্রুত সঙ্কুচিত হয়, যাকে ভ্যাসোকনস্ট্রিকশন বলা হয়। এর ফলে জয়েন্টে পর্যাপ্ত রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছায় না। এই ঘাটতি জয়েন্টকে আরও সংবেদনশীল করে তোলে, যার ফলে ব্যথা ও শক্তভাব বাড়ে।

২. সিনোভিয়াল ফ্লুইড ঘন হয়ে যাওয়া

জয়েন্টকে নরমভাবে নড়াচড়া করতে যে পিচ্ছিল তরল (synovial fluid) সাহায্য করে, ঠান্ডা তাপমাত্রায় তা ঘন হয়ে আঠালো হয়। এর ফলে জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়, হঠাৎ নড়াচড়া করতে গেলে ব্যথা অনুভূত হয়। আর্থ্রাইটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এ সমস্যাটি আরও বেশি অনুভূত হয়।

৩. ব্যারোমেট্রিক চাপ কমে যাওয়া

ঠান্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে সাধারণত বায়ুচাপ কমে। এই কম চাপ জয়েন্টের টিস্যুকে সামান্য প্রসারিত করে এবং স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ কারণেই অনেকেই শীত আসার আগে ব্যথা বাড়ার আগাম সংকেত অনুভব করেন।

৪. শুষ্কতা ও প্রদাহ বৃদ্ধি

শীতকালে বাতাস শুষ্ক থাকে, যা প্রদাহজনিত সমস্যাকে তীব্র করতে পারে। আর্থ্রাইটিস, গাউট বা রিউমাটয়েড সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা শুষ্ক বাতাসে আরও ব্যথা অনুভব করেন।

৫. পেশী সংকোচন

ঠান্ডায় পেশীগুলো স্বাভাবিকের তুলনায় শক্ত হয়ে যায়, যা জয়েন্টের স্থিতিস্থাপকতা কমিয়ে দেয়। এর ফলে জয়েন্টের ওপর চাপ বাড়ে এবং ব্যথা তীব্র হয়।

কোন কোন গোষ্ঠী বেশি ঝুঁকিতে?

শীতের সময়ে জয়েন্ট ব্যথা বাড়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি গোষ্ঠীর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি—

  • রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগী
  • অস্টিওআর্থ্রাইটিস রোগী
  • বয়স্ক মানুষ
  • অতিরিক্ত ওজনধারী ব্যক্তি
  • পুরোনো হাড়-জয়েন্টে আঘাত আছে এমন রোগী
  • ভিটামিন-ডি বা ক্যালসিয়াম ঘাটতি আছে এমন ব্যক্তি

চিকিৎসকদের মতে, এই গোষ্ঠীর মানুষদের জন্য শীত আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

জয়েন্ট পেইন কমাতে যা করবেন

১. গরম সেঁক ও উষ্ণ থেরাপি

হট ওয়াটার ব্যাগ বা হিটিং প্যাড দিয়ে দিনে কয়েকবার সেঁক দিলে পেশী শিথিল হয় এবং রক্তপ্রবাহ বাড়ে। গরম পানিতে গোসলও ব্যথা কমাতে খুব কার্যকর।

২. জয়েন্টকে উষ্ণ রাখা

হাত, পা, হাঁটু ও কোমর ঢেকে রাখলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। শীতপ্রবণদের জন্য থার্মাল পোশাক অত্যন্ত উপকারী।

৩. নিয়মিত হালকা ব্যায়াম

চলাফেরা বন্ধ করলে পেশী শক্ত হয়ে যায়। প্রতিদিন একটু হাঁটা, যোগব্যায়াম, স্ট্রেচিং বা সাঁতার করলে জয়েন্ট সচল থাকে।

৪. ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার

স্যালমন, সার্ডিন, আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিড প্রকৃতিগতভাবে প্রদাহ কমায়। এই খাবারগুলো জয়েন্টের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৫. ব্যথানাশক ও প্রদাহনাশক ওষুধ

চিকিৎসকের পরামর্শে NSAIDs যেমন আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন নেওয়া যেতে পারে। নিজে নিজে ওষুধ নেওয়া বিপজ্জনক।

৬. ঘরের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ

ঘরের পরিবেশ অত্যন্ত শুষ্ক থাকলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা ভালো। এতে জয়েন্টের শুষ্কতা কমে।

৭. ফিজিওথেরাপি ও পেশী শক্তিশালীকরণ

নিয়মিত ফিজিওথেরাপি পেশীকে শক্তিশালী করে এবং জয়েন্টে চাপ কমায়।

৮. ভিটামিন ডি পরীক্ষা ও চিকিৎসা

অনেকের শীতকালে ভিটামিন-ডি কমে যায়, যা হাড়কে দুর্বল করে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নেওয়া উচিত।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

ব্যথা টানা কয়েক দিন ধরে চললে

জয়েন্ট ফুলে গেলে

হাঁটতে বা ওঠানামা করতে কষ্ট হলে

জ্বরের সঙ্গে জয়েন্ট ব্যথা হলে

পুরোনো আর্থ্রাইটিস হঠাৎ খারাপ হলে

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ব্যথা উপেক্ষা করলে দীর্ঘমেয়াদে জয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।


বারবার হাই তোলা শুধুই ক্লান্তি নয় বরং এটি হতে পারে হৃদরোগের আগাম বার্তা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৮ ২১:১৮:৫১
বারবার হাই তোলা শুধুই ক্লান্তি নয় বরং এটি হতে পারে হৃদরোগের আগাম বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

হাই তোলা মানেই শরীর ক্লান্ত বা ঘুম পাচ্ছে এমনটাই সাধারণত মনে করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন বারবার বা অস্বাভাবিকভাবে হাই তোলা সব সময় ঘুম বা ক্লান্তির ইঙ্গিত নয় বরং এটি হতে পারে হৃদরোগের প্রাথমিক সতর্ক সংকেত। সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি বা রক্তচাপের ওঠানামা হলে মস্তিষ্কের হাই রিফ্লেক্স সক্রিয় হয়ে ওঠে যা হৃদযন্ত্রে বাড়তি চাপের বার্তা দেয়।

মস্তিষ্ক কেন সংকেত পাঠায়

মস্তিষ্কের ব্রেইনস্টেম অংশ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদস্পন্দন রক্তচাপ ও শ্বাসপ্রশ্বাস। যখন হৃদপিণ্ড ঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে ব্যর্থ হয় বা রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় তখন মস্তিষ্ক অস্থির হয়ে ওঠে। তখন শরীরের তাপমাত্রা সামঞ্জস্যে রাখতে মস্তিষ্ক হাই তোলার সংকেত পাঠায়। এই কারণেই অনেক সময় দেখা যায় হার্ট অ্যাটাকের আগে বা চলাকালীন রোগী বারবার হাই তুলছেন।

কখন সতর্ক হবেন

বিশেষজ্ঞদের মতে যদি বারবার হাই উঠছে অথচ ঘুম পাচ্ছে না এবং এর সঙ্গে বিশেষ কিছু উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। লক্ষণগুলো হলো বুকে চাপ বা অস্বস্তি অনুভব করা হালকা মাথা ঘোরা বা ভার লাগা অতিরিক্ত ঘাম হওয়া বমিভাব এবং চোয়াল ঘাড় বা কাঁধে ব্যথা। এছাড়া হঠাৎ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিলে তা হৃদযন্ত্রে রক্ত চলাচলের ব্যাঘাত বা হার্ট অ্যাটাকের আগাম সতর্কতা হতে পারে।

করণীয় ও পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত হাই তোলা যদি নিয়মিত হয় তাহলে দ্রুত ইসিজি ইকোকার্ডিওগ্রাম বা ট্রেডমিল টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিত। পাশাপাশি ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ কোলেস্টেরল ও স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। ধূমপান মদ্যপান ও মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম হৃদপিণ্ডকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। সব হাই হৃদরোগের ইঙ্গিত না হলেও হঠাৎ ঘন ঘন হাই এবং সঙ্গে বুকে অস্বস্তি দেখা দিলে বিষয়টি হালকাভাবে না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।


এইচআইভি চিকিৎসায় বড় সুখবর, ওষুধ ছাড়াই ১৮ মাস সুস্থ থাকার রেকর্ড

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৮ ১১:১৮:৪০
এইচআইভি চিকিৎসায় বড় সুখবর, ওষুধ ছাড়াই ১৮ মাস সুস্থ থাকার রেকর্ড
ছবি : সংগৃহীত

এইচআইভি বা এইডস আজও এমন একটি রোগ যার পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য কোনো চিকিৎসা নেই। একবার সংক্রমিত হলে রোগীকে সারা জীবন ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয়। প্রতিদিন ওষুধ খাওয়া এবং নিয়ম মেনে চিকিৎসা চালানো ও বিভিন্ন জটিলতা এড়িয়ে চলা সব মিলিয়ে রোগীর জীবন মানসিকভাবে ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে আশার ঝলক। যেখানে এখন পর্যন্ত রোগীদের প্রতিদিন অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি বা এআরটি নিতে হয় সেখানে নতুন এক থেরাপি ব্যবহার করে কয়েকজন রোগী পুরো ১৮ মাস ওষুধ ছাড়াই সুস্থ ছিলেন। এটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও চিকিৎসা জগতে এক বড় সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা প্রচলিত ওষুধের পরিবর্তে কম্বিনেশন থেরাপি ব্যবহার করছেন। এই বিশেষ থেরাপিতে রোগীদের প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন এবং ইমিউন অ্যাকটিভ ওষুধ ও বিশেষ ধরনের অ্যান্টিবডি দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাটি চালানো হয়েছে ১০ জন রোগীর ওপর এবং বিস্ময়করভাবে দেখা গেছে যে তাঁরা কেউই ১৮ মাস ধরে নিয়মিত এআরটি ছাড়াই সুস্থ ছিলেন। এমনকি যাদের অবস্থা আগে বেশি খারাপ ছিল তাঁরাও আলাদা কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ভালো ছিলেন বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।

এইচআইভি ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় যার ফলে রোগী সহজেই বিভিন্ন সংক্রমণ ও জটিল রোগে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে যক্ষ্মা ও ছত্রাকজনিত সংক্রমণ এবং স্নায়ু সমস্যা ও কিছু ধরনের ক্যানসার অন্যতম। সংক্রমণ শুরুর প্রথম কয়েক সপ্তাহ জ্বর বা সর্দি কাশির মতো হালকা উপসর্গ দেখা দিলেও পরে দীর্ঘ সময় কোনো লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে। তবে শেষ পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে পড়ে এবং নানা জটিলতা দেখা দেয়।

এখন পর্যন্ত মানুষের নির্ভরশীলতা মূলত এআরটির ওপর। এটি ভাইরাস পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে না তবে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রোগীকে দীর্ঘদিন সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। নতুন এই থেরাপির পরীক্ষায় দেখা গেছে ওষুধ ছাড়া রোগীরা দীর্ঘ সময় ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হচ্ছেন। গবেষকরা আশা করছেন এটি ভবিষ্যতে রোগীকে কঠিন চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ রাখার পথ খুলে দিতে পারে এবং এইডস নির্মূলের লক্ষ্যের দিকে বিশ্বকে এক ধাপ এগিয়ে নিতে পারে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত