ঘানায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় দুই মন্ত্রীসহ আটজন নিহত: জাতীয় শোক ঘোষণা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ০৯:৫৫:৪৩
ঘানায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় দুই মন্ত্রীসহ আটজন নিহত: জাতীয় শোক ঘোষণা
ছবিঃ সংগৃহীত

ঘানার জাতীয় জীবনে নেমে এসেছে গভীর শোক। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এডওয়ার্ড ওমানে বোয়ামা এবং পরিবেশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইব্রাহিম মুর্তালা মোহাম্মদসহ আটজনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে এক সামরিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায়। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার কিছু পর রাজধানী আক্রা থেকে অবুয়াসির উদ্দেশ্যে যাত্রা করা হেলিকপ্টারটি দক্ষিণাঞ্চলীয় আশান্তি অঞ্চলের একটি ঘন অরণ্যে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই টেলিভিশন চ্যানেল ‘জয় নিউজ’-এ প্রচারিত সেলফোন ফুটেজে ধোঁয়া ওঠা ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়, যা পরে নিশ্চিত করে দেয় যে মন্ত্রীরা সেই ফ্লাইটেই ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট জন মহামার কার্যালয় থেকে জানানো হয়, দুর্ঘটনায় উপস্থিত সকল যাত্রী ও ক্রু—মোট আটজনই নিহত হন। এই ট্র্যাজেডিকে রাষ্ট্রের জন্য একটি ‘চরম দুঃখজনক ক্ষতি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রেসিডেন্টের প্রধান সচিব জুলিয়াস ডেব্রাহ। তিনদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে, এবং বৃহস্পতিবার থেকে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাষ্ট্রপতি দপ্তর।

প্রয়াত প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বোয়ামা ছিলেন একজন চিকিৎসক, যিনি প্রেসিডেন্ট মহামার প্রথম মেয়াদে যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সাহেল অঞ্চলের সন্ত্রাসবাদ ঘনিয়ে আসা ঝুঁকির সময়ে তিনি ঘানার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুনর্গঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। একইসাথে, তিনি বুরকিনা ফাসো, মালি এবং নাইজারের সামরিক সরকারগুলোর সাথে আঞ্চলিক কূটনীতির ধারায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন।

পরিবেশমন্ত্রী ইব্রাহিম মুর্তালা মোহাম্মদ ছিলেন ঘানার ‘গালামসি’—অর্থাৎ অবৈধ স্বর্ণ খনির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অগ্রভাগে। এই অনিয়ন্ত্রিত খনন প্রক্রিয়া দেশের কৃষিজমি ও নদী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে, বিশেষত কোকো উৎপাদনে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। তার নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘ঘানা গোল্ড বোর্ড’, এবং বিদেশিদের স্বর্ণ ব্যবসা নিষিদ্ধ করে সরকারের শক্ত অবস্থান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হয়।

ইউএনইপি’র নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসেন বলেন, “মুর্তালা ছিলেন এক নিবেদিতপ্রাণ পরিবেশবাদী, যিনি আফ্রিকা এবং বিশ্বজুড়ে সমানভাবে শ্রদ্ধেয় ছিলেন।” সাম্প্রতিক সময়েই তিনি নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত আফ্রিকান মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্স অন এনভায়রনমেন্ট (AMCEN)-এ সদস্য নির্বাচিত হন।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে ঘানার সশস্ত্র বাহিনী। জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় তারা একটি ‘অবৈধ খনন নিয়ন্ত্রণ’ বিষয়ক সরকারি কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন। এই ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আরও রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা সমন্বয়কারী আলহাজি মুনিরু মোহাম্মদ এবং প্রেসিডেন্ট মহামার দল এনডিসির ভাইস চেয়ারম্যান স্যামুয়েল সারপং।

ঘানার এই ট্র্যাজেডি কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা, পরিবেশ ও আন্তর্জাতিক কূটনীতির অগ্রযাত্রায় এক অপূরণীয় ক্ষতি। দেশটির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে এই শূন্যতা কতটা গভীর প্রভাব ফেলবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

-শারমিন সুলতানা, নিজস্ব প্রতিবেদক


‘৭টি যুদ্ধ থামিয়েছি, ৭টি নোবেল চাই’: ট্রাম্পের নতুন দাবি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৭:৩৫:৪৮
‘৭টি যুদ্ধ থামিয়েছি, ৭টি নোবেল চাই’: ট্রাম্পের নতুন দাবি
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও নোবেল শান্তি পুরস্কার দাবি করেছেন। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) আমেরিকান কর্নারস্টোন ইনস্টিটিউট ফাউন্ডার্স ডিনারে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, চলতি বছরে তিনি বাণিজ্যের মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তার দাবি—তিনি মোট সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছেন এবং প্রতিটি যুদ্ধের জন্য তার একটি করে নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই খবর জানিয়েছে।

‘বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়ে যুদ্ধ থামিয়েছি’

ট্রাম্প বলেন, “বিশ্বমঞ্চে আমরা এমন কিছু করছি, যা আগে কখনো হয়নি। আমরা শান্তি চুক্তি করছি, যুদ্ধ থামাচ্ছি।” তিনি উদাহরণ হিসেবে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বন্ধ করার কথা উল্লেখ করেন। ট্রাম্প বলেন, “ভাবুন তো ভারত আর পাকিস্তান—ওদের পারমাণবিক অস্ত্র আছে। আমি বলেছিলাম, যদি যুদ্ধ করো তবে কোনো বাণিজ্য হবে না। তারা যুদ্ধ থামাল।” তিনি দুই দেশের নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেও মূল ব্যাপার হিসেবে বাণিজ্যের মাধ্যমে সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেন।

সাতটি সংঘাত থামানোর দাবি

শুধু ভারত-পাকিস্তান নয়, আরও একাধিক সংঘাত বন্ধ করার কৃতিত্ব দাবি করেন ট্রাম্প। তার ভাষায়, “আমরা থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, কসোভো-সার্বিয়া, ইসরায়েল-ইরান, মিসর-ইথিওপিয়া, রুয়ান্ডা-কঙ্গো—সব জায়গায় যুদ্ধ বন্ধ করেছি। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই বাণিজ্যের কারণে থেমেছে।”

নিজের সাফল্যের দাবি করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, অনেকে তাকে বলেছেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারলে তিনি নোবেল পুরস্কার পাবেন। ট্রাম্প বলেন, “আমি তো ইতোমধ্যে সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছি। প্রতিটি যুদ্ধের জন্য আমার একটি করে নোবেল পাওয়া উচিত।”

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, তিনি ভেবেছিলেন এটি সহজেই সমাধান করা যাবে, কারণ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। তবে পরে তিনি হতাশ হয়েছেন। তবুও তার দাবি, এই সংঘাতও শেষ পর্যন্ত সমাধান হবে।


ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তুরস্ক? মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৭:২৩:২৬
ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তুরস্ক? মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা থেকে শুরু করে লেবানন, ইরান এবং ইয়েমেন—প্রায় সবখানেই সামরিক হামলা চালিয়ে ইসরায়েল এখন কার্যত আঞ্চলিক অস্থিরতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় বিমান হামলা চালানোর পর এবার তুরস্কেও উদ্বেগ বেড়েছে। আঙ্কারার কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তবে তুরস্ক?

কাতার থেকে তুরস্ক: বিশ্লেষকদের সতর্কবার্তা

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র কাতারে ইসরায়েলের বিমান হামলার পর আন্তর্জাতিক গবেষক ও বিশ্লেষকদের নজর এখন তুরস্কের দিকে। আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক মাইকেল রুবিন স্পষ্টভাবে বলেন, তুরস্ক ইসরায়েলের পরবর্তী টার্গেটে পরিণত হতে পারে এবং ন্যাটো সদস্যপদও হয়তো এই আক্রমণ থেকে তুরস্ককে রক্ষা করতে পারবে না। ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেইর মাসরিও একই সুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “আজ কাতার, কাল তুরস্ক।”

এর প্রতিক্রিয়ায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা তীব্র সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, যদি ইসরায়েল তুরস্কের ওপর হামলার চিন্তাও করে, তবে দেশটির জন্য ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে।

‘সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু’ হিসেবে দেখছে ইসরায়েল

গত কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো তুরস্ককে ‘ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু’ হিসেবে উপস্থাপন করছে। বিশেষ করে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের সক্রিয় উপস্থিতি এবং যুদ্ধ-পরবর্তী সিরিয়ার পুনর্গঠনে দেশটির ভূমিকাকে ইসরায়েল নতুন হুমকি হিসেবে দেখছে।

এই প্রেক্ষাপটেই তুরস্ক গত আগস্টে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানায়। আঙ্কারার মতে, এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তাও।

যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা ও ন্যাটোর ভূমিকা

কাতারে বিমান হামলার পর তুরস্কের ভেতরে আরেকটি প্রশ্ন উঠে এসেছে—ন্যাটোর প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকর? কারণ, কাতারকে যুক্তরাষ্ট্র ‘মেজর নন-ন্যাটো অ্যালাই’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তবু ইসরায়েলের হামলার পর ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। আটলান্টিক কাউন্সিলের নন-রেসিডেন্ট ফেলো ওমর ওজকিজিলসিক আল জাজিরাকে বলেন, “তুরস্ক বুঝে গেছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটোর ওপর নির্ভর করে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।” তার মতে, ইসরায়েল সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবং এর পেছনে ওয়াশিংটনের নীরব সমর্থন রয়েছে।

নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ পরিকল্পনা

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ধারণাকে খোলাখুলিভাবে সমর্থন করেছেন। আগস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “অবশ্যই, আমি এই ধারণায় বিশ্বাস করি।” আঙ্কারার কাছে এই মন্তব্য নিছক প্রতীকী কোনো বক্তব্য নয়; বরং এটিকে তুরস্কের আঞ্চলিক কৌশল ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থের সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “গ্রেটার ইসরায়েলের উদ্দেশ্য হলো—এ অঞ্চলের দেশগুলোকে দুর্বল, অকার্যকর ও বিভক্ত করে রাখা।”

ইসরায়েলের আগ্রাসী উপস্থিতি ও আঞ্চলিক আধিপত্যের নকশা

ইসরায়েল শুধু গাজা কিংবা পশ্চিম তীরেই সীমাবদ্ধ নেই। সম্প্রতি তারা সিরিয়ায় একাধিক হামলা চালিয়েছে, ইয়েমেনেও বিমান হামলা করেছে। এমনকি গাজায় সাহায্যবাহী বহর বহনকারী জাহাজের ওপর তিউনিসিয়ার উপকূলে আক্রমণ চালায়। ইরানের সঙ্গেও সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ইসরায়েল। সব মিলিয়ে তেলআবিবের সামরিক তৎপরতা এখন প্রায় গোটা অঞ্চলের প্রতিটি সংঘাতময় এলাকায় বিস্তৃত হয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত টম বারাক স্বীকার করেছিলেন—ইসরায়েল কখনোই একটি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সিরিয়া চায় না। সিরিয়ার ওপর হামলা, লেবাননে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে আঘাত, ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ—সবকিছুই ইঙ্গিত দেয়, ইসরায়েল ধাপে ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বীদের দুর্বল করছে।

সংঘর্ষের পরবর্তী ক্ষেত্র: সিরিয়া?

তুরস্কের সাবেক নৌ-অ্যাডমিরাল ও ‘ব্লু হোমল্যান্ড’ কৌশলের স্থপতি সেম গুরদেনিজ মনে করেন, তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম সরাসরি সংঘর্ষের ক্ষেত্র হতে পারে সিরিয়ার ভূমি ও আকাশসীমা। তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গ্রিস, গ্রিক সাইপ্রাস ও ইসরায়েল মিলে সাইপ্রাসে যে সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটি গড়ে তুলছে, তা তুরস্কের ব্লু হোমল্যান্ড কৌশলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

সূত্র : আল জাজিরা


ভারতের আসল শত্রু বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা: নরেন্দ্র মোদি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৬:৪৫:৪৩
ভারতের আসল শত্রু বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা: নরেন্দ্র মোদি
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তার দেশের আসল শত্রু অন্য কোনো জাতি নয়, বরং বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা। গুজরাটে ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের সামুদ্রিক প্রকল্প উদ্বোধনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ভারত ‘বিশ্বব্যাপী বন্ধু হওয়ার অনুভূতি নিয়ে এগিয়ে চলছে’ এবং দেশের কোনো বড় প্রতিপক্ষ নেই।

‘স্বনির্ভর হতে হবে ভারতকে’

নরেন্দ্র মোদি বলেন, “প্রকৃত অর্থে যদি আমাদের কোনো শত্রু থাকে, তা হলো অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভরতা।” সমৃদ্ধি অর্জন এবং ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ নিশ্চিত করার জন্য ভারতকে অবশ্যই স্বনির্ভর হতে হবে বলে তিনি জোর দেন। তিনি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ‘বহিরাগতদের’ ওপর নির্ভরতা হ্রাস করার আহ্বান জানান।

মোদি বলেন, “আমরা যদি অন্যের করুণার ওপর নির্ভরশীল থাকি, তাহলে আমাদের আত্মসম্মানও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্যদের ওপর (নির্ভরশীল করে) ঝুঁকি নিতে পারি না।”

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য উত্তেজনা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদির এসব মন্তব্য এলো। গত মাসে ওয়াশিংটন রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতীয় আমদানির ওপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপ করে।

হোয়াইট হাউস এইচ-১বি ভিসা আবেদনের ওপর নতুন করে ১০০০০০ ডলার বার্ষিক ফি ঘোষণা করেছে। আইটি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন ন্যাসকম জানিয়েছে, এটি দক্ষ ভারতীয় কর্মীদের ক্ষতি করবে।


লাতিন আমেরিকায় নতুন বিক্ষোভ, এবার পেরুতে ফুঁসে উঠেছে জেন-জি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১২:২০:৩৪
লাতিন আমেরিকায় নতুন বিক্ষোভ, এবার পেরুতে ফুঁসে উঠেছে জেন-জি
পেরুতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ/ ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুতে জেন-জি (Generation Z) বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাজধানী লিমায় শত শত সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভের কারণ

পেরুতে বেড়ে চলা সামাজিক অস্থিরতা, সংগঠিত অপরাধ, ব্যাপক সরকারি দুর্নীতি এবং সাম্প্রতিক পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা লিমায় প্রেসিডেন্ট ভবন এবং কংগ্রেস ভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভকারী গ্লাডিস বলেন, “আজকের দিনে আগের তুলনায় গণতন্ত্র কমে গেছে। ভয় আর চাঁদাবাজির কারণে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।” সেলেন আমাসিফুয়েন নামের আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, “কংগ্রেসের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, তাদের প্রতি জনগণের কোনো বিশ্বাসও নেই… তারা দেশটাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।”

হতাহতের খবর

স্থানীয় রেডিও স্টেশন এক্সিতোসা জানিয়েছে, তাদের একজন প্রতিবেদক এবং একজন ক্যামেরাম্যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্যালেটের আঘাতে আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অন্তত তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট বোলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা কমেছে

দেশটির প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। আগামী বছর তার মেয়াদ শেষ হবে। এরই মধ্যে দেশে চাঁদাবাজি ও সংগঠিত অপরাধের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় জনঅসন্তোষ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে, সরকার ও রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠ কংগ্রেস উভয়কেই অনেক নাগরিক দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখে। সম্প্রতি আইনসভা একটি আইন পাস করেছে, যেখানে তরুণদের বেসরকারি পেনশন ফান্ডে যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অথচ অনেক তরুণ এখনো অনিশ্চিত কর্মপরিবেশের মধ্যে রয়েছে।

ট্যাগ: পেরু জেন-জি

ট্রাম্প প্রশাসনের বড় সিদ্ধান্ত: এককালীন ফি নিয়ে আতঙ্কে বিদেশি কর্মীরা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১২:০৬:১৮
ট্রাম্প প্রশাসনের বড় সিদ্ধান্ত: এককালীন ফি নিয়ে আতঙ্কে বিদেশি কর্মীরা
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসার জন্য নতুন করে ১ লাখ ডলারের এককালীন ফি কার্যকর হচ্ছে রবিবার থেকে। হোয়াইট হাউস শনিবার জানিয়েছে, এই ফি প্রতি পিটিশনের (আবেদনের) জন্য প্রযোজ্য হবে, তবে যাদের ইতিমধ্যেই বৈধ ভিসা রয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত আসার সময় এই ফি দিতে হবে না।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট এক্সে (পূর্বতন টুইটার) লিখেছেন, “এটি বার্ষিক ফি নয়। কেবলমাত্র নতুন আবেদন জমা দেওয়ার সময় এটি একবার দিতে হবে।” তিনি আরও জানান, বর্তমানে বিদেশে অবস্থানরত এইচ-১বি ভিসাধারীরা যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে কোনো অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করবেন না।

এই ঘোষণার আগে শুক্রবার বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছিলেন, এই ফি প্রতিবছর দিতে হবে, যদিও তখন তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তার মন্তব্যের পর মাইক্রোসফট, জেপি মরগান এবং অ্যামাজনের মতো শীর্ষ কোম্পানিগুলো অভ্যন্তরীণ ইমেইলে কর্মীদের সতর্ক করে বলেছিল, আপাতত দেশ ছেড়ে না যাওয়াই ভালো। গোল্ডম্যান স্যাকসও এক মেমোতে আন্তর্জাতিক ভ্রমণে সতর্ক থাকতে কর্মীদের পরামর্শ দেয়।

লেভিট শনিবার স্পষ্ট করে বলেন, ভিসাধারীরা স্বাভাবিক নিয়মে দেশ ছেড়ে যেতে এবং ফেরত আসতে পারবেন। নতুন ফি কেবল আগামী লটারির রাউন্ডে প্রযোজ্য হবে এবং বর্তমান ভিসাধারীদের নবায়ন বা পুনঃপ্রবেশে এটি নেওয়া হবে না।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আমেরিকান শ্রমিকদের জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাদের মতে, কম বেতনের বিদেশি শ্রমিকদের কারণে আমেরিকান শ্রমিকদের চাকরি ঝুঁকিতে পড়ছে।

শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে নির্বাহী আদেশে এই নতুন ফি কার্যকর করেন, তা নিয়ে ভারতীয় আইটি খাতের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ভারতীয় আইটি শিল্পের সংগঠন ন্যাসকম বলেছে, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত হাজার হাজার ভারতীয় পেশাদারের কর্মপরিকল্পনা ও গ্লোবাল অপারেশন ব্যাহত করতে পারে।

হোয়াইট হাউসের শনিবার প্রকাশিত তথ্যপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে কিছু আবেদনকারীর ক্ষেত্রে এই ফি মওকুফ করা হতে পারে। এছাড়াও, শ্রম দফতর ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি যৌথভাবে যাচাই, তদারকি, অডিট এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থার জন্য নির্দেশিকা তৈরি করবে। শ্রম সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তিনি এইচ-১বি কর্মীদের মজুরি কাঠামো পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়া শুরু করেন এবং উচ্চ দক্ষতা ও উচ্চ বেতনের কর্মীদের অগ্রাধিকার দেন।

শুক্রবারের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে কর্পোরেট কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জনপ্রিয় চীনা সামাজিক মাধ্যম রেডনোটে অনেক এইচ-১বি ভিসাধারী তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন—কেউ কেউ বিদেশে নামার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে দেশে ফিরে আসছেন এই আশঙ্কায় যে নতুন ফি তাদেরও দিতে হতে পারে।

-নাজমুল হাসান


ইতিহাসের নতুন মোড়ে ব্রিটেন: আজ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১১:৪১:৩৯
ইতিহাসের নতুন মোড়ে ব্রিটেন: আজ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি
ছবিঃ সংগৃহীত

ব্রিটেন আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি ও প্রেস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার রোববার এই ঘোষণা দেবেন।

এতদিন যুক্তরাজ্য সবসময় ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক অভিযান, হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু এবং দুর্ভিক্ষের মতো মানবিক সংকট দেশটির অবস্থান পাল্টে দিয়েছে।

স্টার্মার জুলাইয়ে বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতিতে গুরুতর পদক্ষেপ না নেয়, তবে ব্রিটেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের আগেই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। তাঁর মতে, এই স্বীকৃতি দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, এতে সন্ত্রাসবাদ পুরস্কৃত হবে এবং উগ্রবাদকে উৎসাহ দেওয়া হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বড় বার্তা দেবে। আশা করা হচ্ছে, ফ্রান্সসহ আরও অন্তত ১০টি দেশ শিগগিরই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে।

প্রসঙ্গত, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২১৯ জন নিহত হন। প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক।

-সুত্রঃ এ এফ পি


ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এরদোগান: টানাপোড়েনপূর্ণ সম্পর্কের পর কেন এই বৈঠক?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১০:৫৭:৩৫
ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এরদোগান: টানাপোড়েনপূর্ণ সম্পর্কের পর কেন এই বৈঠক?
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প নিজেই এই ঘোষণা দিয়েছেন।

ট্রাম্প লেখেন, “আমরা এরদোগানের সঙ্গে বাণিজ্য ও সামরিক খাতে অনেক চুক্তি নিয়ে কাজ করছি। এর মধ্যে রয়েছে বোয়িং বিমান কেনার একটি বড় চুক্তি, গুরুত্বপূর্ণ এফ-১৬ চুক্তি এবং এফ-৩৫ নিয়ে চলমান আলোচনা, যা আমরা ইতিবাচকভাবে শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।” তিনি আরও লেখেন, “প্রেসিডেন্ট এরদোগান এবং আমার সবসময়ই খুব ভালো সম্পর্ক। আমি ২৫ তারিখে তার সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় আছি।”

অতীতের টানাপোড়েনপূর্ণ সম্পর্ক

এরদোগান সর্বশেষ ২০১৯ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে হোয়াইট হাউস সফর করেছিলেন। ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ট্রাম্পের শাসনামলে তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থাকলেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছিল বেশ টানাপোড়েনপূর্ণ। এর প্রধান কারণ ছিল সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক এবং মস্কোর সঙ্গে আঙ্কারার ঘনিষ্ঠতা।

২০১৯ সালে রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনায় তুরস্ক ট্রাম্প প্রশাসনকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি বাতিল করে এবং বিমানটির যৌথ উৎপাদন কর্মসূচি থেকে তুরস্ককে বাদ দেয়। পরবর্তীতে তুরস্ক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কেনার জন্য একটি চুক্তিতে সম্মত হয়।


আফগানিস্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা’: ট্রাম্পের হুমকিতে নতুন করে উত্তেজনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১০:৪৬:২২
আফগানিস্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা’: ট্রাম্পের হুমকিতে নতুন করে উত্তেজনা
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি পুনর্দখলের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এবং এ বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ট্রাম্পের এমন কঠোর অবস্থানের কারণে আফগানিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

ট্রাম্পের হুমকি ও বাগরামের গুরুত্ব

ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, আফগানিস্তান যদি বাগরাম বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে ‘খারাপ কিছু’ ঘটতে পারে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “আমরা এখন আফগানিস্তানের সঙ্গে কথা বলছি এবং আমরা এটি ফিরে চাই—এখনই চাই। আর যদি তারা না দেয়, তাহলে আমি কী করব, তা আপনি শিগগিরই জানতে পারবেন।”

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের সময় বাগরাম ছিল মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রধান ঘাঁটি। এই বিশাল ঘাঁটিতে ফাস্টফুড চেইন থেকে শুরু করে বড় শপিং স্টোর পর্যন্ত ছিল। এছাড়া, এখানে একটি বড় কারাগার কমপ্লেক্সও ছিল। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তাদের সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার পর তালেবান সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে এবং বাগরামসহ অন্যান্য সামরিক ঘাঁটি তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

সামরিক অভিযান ও নিরাপত্তা ঝুঁকি

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাগরাম বিমানঘাঁটি পুনর্দখল করতে গেলে এটি একটি পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযানে রূপ নিতে পারে, যার জন্য ১০ হাজারের বেশি সেনা ও উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন হবে। একইসঙ্গে, ঘাঁটিটি তালেবান, ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং আল-কায়েদার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর হুমকির মুখে পড়বে। এছাড়া ইরান থেকেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কা রয়েছে, যেমনটি ২০২৫ সালের জুন মাসে কাতারের একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ঘটেছিল।

রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্প সরাসরি সেনা পাঠানোর বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি, তবে তার মন্তব্য পরিস্থিতিকে নতুন দিকে মোড় দিয়েছে।


ভারত আক্রমণ করলে সৌদি আরব পাশে থাকবে: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ২১:১৮:৪০
ভারত আক্রমণ করলে সৌদি আরব পাশে থাকবে: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে সই হওয়া কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেছেন, ভারত যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তাহলে সৌদি আরব প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসবে। তার মতে, এই চুক্তি ন্যাটো জোটের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের মতো, যেখানে এক সদস্যের ওপর আক্রমণ মানেই সবার ওপর আক্রমণ।

‘পারমাণবিক সক্ষমতা চুক্তির অন্তর্ভুক্ত’

প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জিও টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই চুক্তিতে পারস্পরিক কৌশলগত সহায়তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং ভারত আক্রমণ করলে সৌদি আরব অবশ্যই পাকিস্তানের পাশে থাকবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।” রয়টার্সকে দেওয়া আরেকটি সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রও এই চুক্তির আওতায় সৌদি আরবের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তার ভাষায়, “আমাদের সক্ষমতাগুলো অবশ্যই এই চুক্তির আওতায় ব্যবহারযোগ্য থাকবে।”

অন্যদিকে, সৌদি আরবের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন যে, এটি একটি সর্বাত্মক প্রতিরক্ষা চুক্তি, যাতে সব ধরনের সামরিক সক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত।

চুক্তির পেছনের কারণ ও প্রতিক্রিয়া

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের রিয়াদ সফরের সময় এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির মূল শর্ত অনুযায়ী, যেকোনো এক দেশের ওপর আগ্রাসন মানেই উভয়ের ওপর আগ্রাসন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরবের বিশাল অর্থনৈতিক শক্তি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এতে পাকিস্তান শক্তিশালী আর্থিক সহায়তা এবং একটি ‘আরব জোট’-এর সুবিধা পেতে পারে, আর সৌদি আরব পাবে একটি ‘পারমাণবিক ঢাল’।

এই চুক্তির প্রতিক্রিয়ায় ভারত জানিয়েছে, তারা এর প্রভাব তাদের জাতীয় নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা খতিয়ে দেখছে।

‘দরজা বন্ধ নয়’

খাজা আসিফকে ‘আরব জোট’ গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “দরজা বন্ধ নয়। তবে আগেভাগে কিছু বলা যাবে না।” তিনি বলেন, এই অঞ্চলের মুসলিম জনগোষ্ঠীসহ সব দেশের নিজেদের একত্রে প্রতিরক্ষা করার অধিকার আছে।

পাঠকের মতামত: