ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ল বিজিবি, তারপর যা ঘটল

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ০৯:৫৯:২৯
 ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ল বিজিবি, তারপর যা ঘটল

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ফের ঘটলো সীমান্ত সংশ্লিষ্ট একটি স্পর্শকাতর ঘটনা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার জোহরপুর-টেক সীমান্তে দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) এক সদস্য মতিউর রহমান ভুলবশত ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাকে বাংলাদেশে হস্তান্তর করে।

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২০ জুন) রাতে এবং বিজিবি সদস্য মতিউর রহমানকে শনিবার রাতে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে রউফ।

বিজিবি কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার রাতে জোহরপুর-টেক সীমান্তে চোরাচালানবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছিলেন মতিউর রহমান।

বিশেষ করে গরু পাচারকারীদের ধাওয়া করতে গিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে তিনি নির্ধারিত সীমান্ত চিহ্ন অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ফেলেন। ঘটনাটি মুহূর্তেই নজরে আসে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের।

এরপর স্থানীয় বিএসএফ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ভারতের বাজিতপুর ক্যাম্পে নিয়ে যান এবং সেখানে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়।

বিষয়টি জানার পর বিজিবি কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরদিন শনিবার পতাকা বৈঠক আয়োজনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ আলোচনায় মতিউর রহমানকে ফেরত দেওয়া হয়।

বিএসএফের বাজিতপুর ক্যাম্পে সংক্ষিপ্ত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে হস্তান্তর করে বিএসএফ। এরপর বিজিবির তত্ত্বাবধানে মতিউর রহমান নিরাপদে নিজ ক্যাম্পে ফেরত আসেন।

বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে রউফ বলেন- “এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সবসময় সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনার সময় ঘটতে পারে। বিএসএফের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক এবং সময়োচিত যোগাযোগের কারণে বিষয়টি খুব দ্রুত সমাধান হয়েছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল যাতে না ঘটে, সে জন্য সীমান্ত টহল ও গমনপথে আরও বেশি সচেতনতা অবলম্বন করা হবে।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই অসংখ্য চোরাচালান এবং অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ। বিশেষ করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর অঞ্চলে গরু, ফেনসিডিল, ও অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি ও বিএসএফ নিয়মিত অভিযান চালায়।

এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও তাৎক্ষণিক সংকট মোকাবিলার দক্ষতা প্রশংসার দাবি রাখে। মতিউর রহমানের এই ঘটনাটি প্রমাণ করে, যান্ত্রিক ভুল বা পরিস্থিতিগত উত্তেজনার মধ্যেও উভয় দেশের নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে।

সীমান্তকে যুদ্ধক্ষেত্র না বানিয়ে সচেতনতা, সমঝোতা ও মানবিকতা দিয়ে সমস্যা সমাধান সম্ভব এটাই হয়েছে এবারের পতাকা বৈঠকের শিক্ষা।

রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ