ভাঙারি ব্যবসায়ী  হত্যাকাণ্ডে নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৪:১০:৪৭
ভাঙারি ব্যবসায়ী  হত্যাকাণ্ডে নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য

রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (মিটফোর্ড) সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদ (৩৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৩ জুলাই) সকালে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে রাজিব ও সজিব নামের এই দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা দুজনই মামলার এজহারভুক্ত আসামি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

এ নিয়ে আলোচিত এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এর আগে ৯ জুলাই সন্ধ্যায় মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনের পাকা রাস্তায় একদল দুর্বৃত্ত মো. সোহাগকে কুপিয়ে ও পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার পর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এই নির্মম দৃশ্য স্থানীয়দের আতঙ্কিত করে তোলে এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

ঘটনার পরপরই কোতয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ১০ জুলাই নিহত সোহাগের বড় বোন কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

১১ জুলাই পুলিশ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার মূল আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিনকে (২২) গ্রেপ্তার করে। রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়। একই ঘটনায় র‍্যাব অভিযান চালিয়ে আলমগীর (২৮) ও মনির ওরফে ছোট মনির (২৫) নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

এরপর ১২ জুলাই রাতে কোতয়ালি থানা পুলিশ মামলার আরও একজন এজহারভুক্ত আসামি মো. টিটন গাজী (৩২)–কে গ্রেপ্তার করে। সর্বশেষ রোববার সকালে গ্রেপ্তার হওয়া রাজিব ও সজিবসহ এ মামলায় মোট সাতজনকে আটক করা হলো।

পুলিশ জানায়, তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ ও ভুক্তভোগীর পারিবারিক ও পেশাগত তথ্য বিশ্লেষণ করে হত্যার পেছনের মূল মোটিভ নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে পূর্ববিরোধ, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব কিংবা সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা—তা যাচাই করছে তদন্তকারীরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, এমন ভয়াবহভাবে প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলার চরম অবক্ষয়ের দৃষ্টান্ত। তারা চান, যেন প্রকৃত অপরাধীরা শিগগির গ্রেপ্তার হয় এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।

মিটফোর্ডের মতো জনাকীর্ণ এলাকায় এমন নৃশংসতা শুধু পুরান ঢাকা নয়, পুরো রাজধানীর নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েই বড় প্রশ্ন তুলেছে। এই ঘটনার বিচার এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ আরও জোরালো ও দৃশ্যমান হওয়া জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট মহল।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ