নোয়াখালীতে সেনা সহায়তায় ৫০+ অবৈধ বাঁধ কাটা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ০৯:৪২:৩৪
নোয়াখালীতে সেনা সহায়তায় ৫০+ অবৈধ বাঁধ কাটা

নোয়াখালীর সদর উপজেলার কালাদরপ ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে গড়ে তোলা হয়েছিল অসংখ্য অবৈধ বাঁধ। এসব বাঁধের ফলে জলাবদ্ধতা ও কৃষি ক্ষতির শিকার হচ্ছিল স্থানীয়রা। এ অবস্থায় গতকাল রোববার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টানা অভিযানে এসব অবৈধ বাঁধ কেটে ফেলা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহনেওয়াজ তানভীর। তাকে সহায়তা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল। অভিযানে কালাদরপ ইউনিয়নের মুন্সিরতালুক এলাকা থেকে শুরু করে রব বাজার পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় অন্তত ৫০টিরও বেশি বাঁধ উচ্ছেদ করা হয়।

এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট শাহনেওয়াজ তানভীর জানান, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত স্বার্থে খাল ও জলাধারের গুরুত্বপূর্ণ অংশে অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণ করে পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছিল। এতে কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ফসলহানি হচ্ছিল, এমনকি বসতবাড়িতেও পানি ঢুকে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। মাঠপর্যায়ের তদন্ত ও স্থানীয়দের একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে দেখা যায়, প্রায় অর্ধশতাধিক বাঁধ পানি নিষ্কাশনে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। জনগণের স্বার্থে কোনো ধরনের ছাড় না দিয়ে এসব বাঁধ কেটে দেওয়া হয়।

অভিযানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সরেজমিনে উপস্থিত থেকে সহায়তা করেন। এলাকাবাসী প্রশাসনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। মুন্সিরতালুক এলাকার বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন জানান, “বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি ঢুকত, খাল দখল হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা নিত্যদিনের বিষয় ছিল। এখন মনে হচ্ছে একটু স্বস্তি পাবো।”

নোয়াখালী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আখিনূর জাহান নীলা বলেন, কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে জেলার ছয়টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল এখনও পানির নিচে। অনেক মানুষ ঘরবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতির উন্নয়নে পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যেকোনো ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

এই অভিযান কেবল একটি প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি স্থানীয় কৃষি ও জনজীবনের স্বস্তি ফেরাতে একটি বড় উদ্যোগ। পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং পরিবেশগত ভারসাম্যও রক্ষা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালাতে হবে এবং স্থানীয় জনগণকেও খাল ও জলাধার রক্ষায় সচেতন করতে হবে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ