“বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু থাকতে চায় চীন”- ওয়াং ই’র কুয়ালালামপুর বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১০ ১৬:৪৯:০৫
“বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু থাকতে চায় চীন”- ওয়াং ই’র কুয়ালালামপুর বার্তা

চীন সবসময় বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু, প্রতিবেশী ও অংশীদার হিসেবে থাকতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি। বৈঠকে ওয়াং ই আরও বলেন, চীন কেবল কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং আস্থানির্ভর, দীর্ঘমেয়াদি ও অংশীদারত্বমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় বাংলাদেশের সঙ্গে।

বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে ওয়াং ই বলেন, চীন বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, স্থিতিশীল ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সমর্থন দেয়। তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, নির্বাচন পরিচালনায় চীন কোনো হস্তক্ষেপ করবে না; তবে প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত থাকবে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় চীন পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন ওয়াং ই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রয়োজন অনুযায়ী উন্নয়নের পথ অন্বেষণে চীন সবসময় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। অবকাঠামো, প্রযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি ও শিল্প খাতে চীন সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী। এই অংশীদারত্বকে তিনি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার একটি ভিত্তি হিসেবেও তুলে ধরেন।

ওয়াং ই বৈঠকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি সামনে রয়েছে। তিনি বলেন, এই সম্পর্ক শুধু অতীতের বন্ধুত্বের নিদর্শন নয়, বরং ভবিষ্যতের কৌশলগত পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তিনি এ সম্পর্কের গভীরতা ও বহুমাত্রিকতা আরও বাড়াতে যৌথ পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণের ওপর জোর দেন।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য হিসেবে ওয়াং ই কেবল পররাষ্ট্রনীতির শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধি নন, বরং চীনের বৃহত্তর কৌশলগত চিন্তার ধারকও। ফলে তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতিপথ স্পষ্ট হয়। তিনি বলেন, চীন চায় বাংলাদেশসহ পুরো এশিয়া আধুনিক, উন্নত ও টেকসই হোক, এবং এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে চীন সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে প্রস্তুত।

বর্তমান বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশ যে একাধিক শক্তির আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে, তা স্পষ্ট। চীন এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের প্রভাবের মোকাবিলায় বাংলাদেশকে একটি নির্ভরযোগ্য সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করছে। তবে বাংলাদেশ সরকারকে সেই সম্পর্ক রক্ষায় ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে বিদ্যমান অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক বিবেচনায় রেখে।

এই বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক ধারা তৈরি করেছে, যা আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর ও কৌশলগত অংশীদারত্বে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ