গোপালগঞ্জে জুলাই পদযাত্রা: নিরাপত্তায় শত শত বাহিনী, নজরে দেশ

গোপালগঞ্জ আজ রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এক দিনে পরিণত হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে বুধবার (১৬ জুলাই) শহরের পৌর পার্কের উন্মুক্ত মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি বৃহৎ জনসমাবেশ। দিবসটি উপলক্ষে রাজনৈতিক উত্তাপের পাশাপাশি নিরাপত্তা ও সাংগঠনিক প্রস্তুতির চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটছে গোপালগঞ্জ শহরে।

এনসিপি সূত্র জানায়, সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে বক্তব্য দেবেন। উপস্থিত থাকবেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসাইন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী এবং কেন্দ্রীয় নেতা সামান্তা শারমিন, ডা. তাসনিম জারা, নাহিদা সারোয়ার নিভা প্রমুখ। সমাবেশে তারা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ, সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামো এবং গণ–অধিকারের রূপরেখা নিয়ে বক্তব্য দেবেন বলে জানা গেছে।

দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আশা করছেন, পদযাত্রাকে ঘিরে অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সমাগম হবে। এই বড় আকারের জমায়েত নির্বিঘ্ন করতে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, “যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছয় শতাধিক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে অবস্থান করছেন।” তিনি আরও বলেন, “যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে আমরা প্রস্তুত আছি। গোটা এলাকা নজরদারিতে রয়েছে।”

সকাল থেকেই সভাস্থলের চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা চোখে পড়ে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। সভাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, এপিবিএন ও র‌্যাবের সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। বিশেষ করে আশপাশের ভবনগুলো ও উঁচু স্থানগুলোতেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

সভাস্থলের পরিবেশ শৃঙ্খলাপূর্ণ রাখতে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আগাছা ও আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত আছেন। মঞ্চ প্রস্তুত করার পাশাপাশি শেষ মুহূর্তে ব্যানার লাগানো, চেয়ার বসানোসহ অন্যান্য সাজসজ্জার কাজ চলছে পুরোদমে। গোপালগঞ্জ জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে পুরো প্রস্তুতি তদারকি করছেন।

এ বিষয়ে এনসিপির গোপালগঞ্জ জেলার সদস্য মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, “জেলায় এনসিপির কর্মসূচি এখন একটি ফ্যাক্ট। আমরা বিশ্বাস করি, এখানকার পরিবেশ অন্য অনেক জেলার চেয়ে আলাদা। আমরা শান্তিপূর্ণ এবং ভিন্নধর্মী রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাই। সংঘাত নয়, সম্মান ও শৃঙ্খলার রাজনীতি করতে এসেছি।”

একই বক্তব্য রেখেছেন দলের যুগ্ম-সমন্বয়কারী শাকিল মিয়াও। তিনি বলেন, “গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমনকে কেন্দ্র করে নাশকতার আশঙ্কা নেই। স্থানীয় প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে। অনুষ্ঠান শেষেই নেতারা মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।”

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক