যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অস্বীকার করে হামাসের পাল্টা হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৭ ০৯:০০:২৭
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অস্বীকার করে হামাসের পাল্টা হামলা

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বক্তব্যে তাদের আলোচনার অবস্থান বিকৃতভাবে উপস্থাপনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভাকেই বর্তমান যুদ্ধবিরতির প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

মেহর নিউজের শনিবার (২৬ জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত আল-রিশক এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর বিশেষ দূত হ্যারি উইটকফের মন্তব্যে বিস্মিত। এসব বক্তব্য মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর মূল্যায়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং হামাসের সত্যিকারের অবস্থানকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে।”

গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হামাসকে যুদ্ধবিরতির আলোচনার ব্যর্থতার জন্য দায়ী করে বলেন, “এই গোষ্ঠী শীঘ্রই শিকার হবে।” এর আগে বৃহস্পতিবার হ্যারি উইটকফ মন্তব্য করেন, “হামাস যথেষ্ট সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না,” যা দ্বারা যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে আলোচনায় সম্পৃক্ততা হ্রাসের ইঙ্গিত দিয়েছে।

তবে আল-রিশক পরবর্তীতে জানান, “আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল গঠনমূলক ও নমনীয়, যা মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিশরও স্বীকার করেছে। মার্কিন পক্ষের এসব বক্তব্য বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্যুত। নেতানিয়াহুর সরকার প্রকৃত বাধা হিসেবে অবহেলা করা হচ্ছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “যুদ্ধ থামানো এবং গাজার মানবিক বিপর্যয় প্রশমনে হামাস শুরু থেকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে।”

মানবিক সহায়তা চুরির অভিযোগ সম্পর্কেও আল-রিশক বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে স্পষ্ট যে গাজায় সাহায্য চুরির মোট ১৫৬ ঘটনার মধ্যে অন্তত ৪৪টি ইসরাইলি সামরিক অভিযানের ফল।”

হামাস নেতৃবৃন্দ যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে, “ইসরাইলি আগ্রাসন ও গণহত্যার জন্য দায় এড়ানোর পথ বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তা বন্ধ করে চাপ সৃষ্টি করতে হবে যাতে তারা আগ্রাসন বন্ধ করে বন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়।”

বর্তমানে কাতারে যুদ্ধবিরতির পরোক্ষ আলোচনা অব্যাহত রয়েছে, তবে কোনো চূড়ান্ত চুক্তি এখনো কার্যকর হয়নি। ইসরাইল হামাসকে আলোচনায় বিলম্বের জন্য দোষারোপ করলেও হামাস বলছে, প্রকৃত বাধা ইসরাইল নিজেই সৃষ্টি করছে, বিশেষত টেকসই যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে।

প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো বন্দি বিনিময়, যেখানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার সময় আটক ২৫১ জন ইসরাইলির মধ্যে এখনও ৪৯ জন হামাসের কব্জায় রয়েছেন। ইসরাইলি সেনাবাহিনী ধারণা করে যে তাদের মধ্যে ২৭ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।

ইসরাইলের দাবী, হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে হবে। অন্যদিকে, হামাসের দাবি যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে, ইসরাইল গাজা থেকে সম্পূর্ণ সরে আসতে হবে এবং অবাধ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

ইসরাইল দাবি করছে, তারা কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের হালনাগাদ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। তবে বাস্তবে তেমন কোনো চুক্তি এখনো গৃহীত হয়নি। ফলে যুদ্ধবিরতি অচলাবস্থায় রয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে দেরি হচ্ছে।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ