ডেঙ্গুর হানায় ফের মৃত্যু, বরিশালে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি

দেশজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ ফের বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত এই রোগে নতুন করে ৩১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) তথ্যমতে, এদের মধ্যে বরিশাল অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, যেখানে একাই ৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অধিদপ্তর জানায়, অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৮ জন, ঢাকার বাইরে ঢাকা বিভাগে ৫৯ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ৬১ জন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ২৯ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া, ময়মনসিংহে ৯ জন, রাজশাহীতে ৩০ জন এবং রংপুরে ৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮,৩৪৫ জনে, আর মৃত্যু হয়েছে ৬৯ জনের। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩১ জন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন বলে জানানো হয়।
গত বছর ২০২৪ সালে ডেঙ্গু মহামারির রূপ নিয়েছিল। সেবার মোট মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ স্বাভাবিকভাবে বাড়ে। তবে বরিশাল অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ায় স্থানীয় প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা জনসচেতনতা, বাড়িঘরের চারপাশ পরিষ্কার রাখা, জমে থাকা পানিতে মশার বংশবিস্তার বন্ধ করা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ ছিটানোর ওপর জোর দিচ্ছেন।
সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছে এবং নাগরিকদের মশারি ব্যবহারসহ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
-আকরাম হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক
ওজন কমাতে চিয়া বীজ: যেভাবে খেলে মিলবে সর্বোচ্চ ফল, কখন পান করবেন চিয়া ওয়াটার?
ইনস্টাগ্রাম বা ইউটিউবে ওজন কমানোর হ্যাক খুঁজতে গিয়ে আপনি নিশ্চয়ই চিয়া বীজ দেখেছেন। এই ছোট কালো বীজগুলো এখন স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের কাছে জনপ্রিয়। প্রশ্ন হলো, চিয়া বীজ কি সত্যিই ওজন কমাতে কার্যকর? ভালো খবর হলো, সঠিকভাবে ব্যবহার করলে চিয়া বীজ সত্যিই কাজ করে। ভারত বা আমেরিকায়, এটি ওজন কমানোর একটি সহজ, স্বাস্থ্যকর এবং প্রাকৃতিক উপায়, যেখানে কোনো কঠোর ডায়েটের প্রয়োজন নেই।
চিয়া বীজ কেন ওজন কমাতে সাহায্য করে?
চিয়া বীজ ছোট হলেও অত্যন্ত শক্তিশালী। এগুলো ফাইবার, প্রোটিন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটে সমৃদ্ধ, যা ক্ষুধা কমাতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে।
১. পেট ভরা রাখা: ভেজালে চিয়া বীজ পানি শোষণ করে জেল-এর মতো ঘন হয়ে যায়, পেটে প্রসারিত হয় এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য ভরা থাকার অনুভূতি দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যালোরি গ্রহণ কমে যায়।
২. রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ: মাত্র দুই চামচ চিয়া বীজে প্রায় ১০ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং অতিরিক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমায়।
৩. পুষ্টি: এতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা হজমে সহায়ক এবং শক্তি বাড়ায়।
চিয়া বীজ খাওয়ার ৩টি কার্যকরী উপায়
১. চিয়া ওয়াটার (Chia Water): এটি চিয়া বীজের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কার্যকরী ব্যবহার।
তৈরির নিয়ম:
১ চামচ চিয়া বীজ ২৫০–৩০০ মিলিলিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫–৩০ মিনিট রাখুন, যাতে জেল-এর মতো ঘন হয়ে যায়। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য লেবুর রস বা কয়েকটি পুদিনা পাতা যোগ করতে পারেন।
সেরা সময়: খালি পেটে সকালে বা খাবারের ৩০ মিনিট আগে পান করুন।
২. চিয়া পুডিং: সকালের নাশতা বা হালকা ডেজার্ট হিসেবে চিয়া পুডিং খুবই স্বাস্থ্যকর।
তৈরির নিয়ম: ২ চামচ ভেজানো চিয়া বীজ ১ কাপ দুধ বা বাদামের দুধের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। দারুচিনি, মধু বা ভ্যানিলা এসেন্স যোগ করে ৪–৬ ঘণ্টা বা রাতে ফ্রিজে রাখুন।
৩. চিয়া স্মুদি ও দই বোল: সকালের স্মুদি বা দই-ওটস বোলের সাথে ১–২ চামচ চিয়া বীজ মিশিয়ে খেতে পারেন। সালাদ, সূপ বা স্মুদি বোলের উপরে চিয়া বীজ ছিটিয়ে দিলে ফাইবার এবং পুষ্টি বৃদ্ধি পায়।
সঠিক পরিমাণ ও সতর্কতা
আদর্শ পরিমাণ: দিনে ১–২ চামচ চিয়া বীজ যথেষ্ট।
নিরাপত্তা পরামর্শ: খাওয়ার আগে চিয়া বীজ অবশ্যই ভিজিয়ে নিন, যাতে গলার সমস্যার ঝুঁকি কমে। শুকনো চিয়া ব্যবহার করলে পর্যাপ্ত পানি পান করুন, কারণ ফাইবার কার্যকর হতে পানি প্রয়োজন।
মিথ ভাঙা: চিয়া বীজ একা রাতারাতি ওজন কমাবে না। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি এবং নিয়মিত ব্যায়ামের সঙ্গেই এটি কার্যকর।
মাইগ্রেনের ব্যথা: ১৫ মিনিটে মুক্তি পেতে পারেন যে ঘরোয়া কৌশলে
কথায় আছে, ‘মাইগ্রেন আছে যার, শত্রুর অভাব নেই তার।’ এই ব্যথা যারা একবার অনুভব করেছেন, তারা জানেন এর যন্ত্রণার কোনো তুলনা হয় না। মাথায় তীব্র ব্যথা শুরু হলে রোদ, শব্দ, আলো—সবকিছু অসহ্য মনে হয়। অনেক সময় অ্যাসিডিটি, মানসিক চাপ বা অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমও মাইগ্রেনের ট্রিগার হয়ে দাঁড়ায়। তবে ভারতের খ্যাতনামা স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কল্লোল দে একটি সহজ উপায়ে মাত্র ১৫ মিনিটে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কিছুটা উপশম করার কৌশল জানিয়েছেন।
ব্যথা কমানোর কৌশল: কেন গরম পানিতে পা ডুবাবেন?
ডা. কল্লোলের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মাইগ্রেনের সময় মাথার রক্তনালিতে ব্লাড ফ্লো (রক্তপ্রবাহ) বেড়ে যায়, যা ব্যথার মূল কারণ। তাঁর পরামর্শ হলো, রক্তপ্রবাহকে নিচের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে মাথায় সৃষ্ট চাপ কমানো।
পদ্ধতি:
১. স্থান পরিবর্তন: প্রথমেই আলো বন্ধ করুন বা আলো কম এমন অন্ধকার ও নিরিবিলি জায়গায় চলে যান।
২. গরম পানির সেঁক: এক বালতি গরম (সহনীয় তাপমাত্রার) পানিতে এক মুঠো ম্যাগনেশিয়াম সালফেট বা এপসাম সল্ট মিশিয়ে নিন।
৩. পা ডোবান: দুটো পা পুরোপুরি সেই পানিতে (পাতা পর্যন্ত) ডুবিয়ে রাখুন অন্তত ১০-১৫ মিনিট।
ডা. কল্লোল দে জানান, গরম পানিতে পা রাখলে রক্তপ্রবাহ নিচের দিকে বাড়ে। ফলে মাথায় অতিরিক্ত চাপ কিছুটা কমে যায় এবং ব্যথা ধীরে ধীরে উপশম হয়।
সতর্কতা
তবে, মাইগ্রেনের ব্যথা যদি ঘন ঘন হয় বা খুব তীব্র হয়, তাহলে এই পদ্ধতি সাময়িক আরাম দিলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নিয়মিত চিকিৎসা ও লাইফস্টাইল মেনে চললেই মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
সূত্র : দ্য ওয়াল
চোখই বলে দেবে হৃদরোগের ঝুঁকি: যে ৫টি লক্ষণ চোখে দেখলে সতর্ক হবেন
সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা বলছে, নিয়মিত চোখ পরীক্ষা শুধু দৃষ্টি নয়, হার্টের স্বাস্থ্যও আগেভাগে জানান দিতে পারে। রেটিনায় থাকা ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলো কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চোখের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোখের পেছনের অংশ, অর্থাৎ রেটিনা পর্যবেক্ষণ করে হার্টের রোগের প্রথম সংকেত ধরা সম্ভব, এমনকি বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা উচ্চ রক্তচাপের মতো লক্ষণ প্রকাশের আগেই।
রেটিনায় ধরা পড়ে যে সংকেত
কিডনি যেমন শরীরের নিঃশব্দ কর্মী, হার্টের অসুখও প্রাথমিকভাবে নীরবে শুরু হয়। শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে চোখের ক্ষুদ্র রক্তনালীর ক্ষতি আগে ধরা পড়ে।
রোগের ইঙ্গিত: হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি, রেটিনাল ভেইন অক্লুশন বা হোলেনহরস্ট প্ল্যাকের উপস্থিতি উচ্চ রক্তচাপ, অ্যাথেরোসক্লেরোসিস বা স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্দেশ করতে পারে।
ক্ষতি: চোখে ছোট ছোট ব্লকেজ বা রেটিনাল ক্ষতি, যেমন মাইক্রোঅ্যানিউরিজম, হেমোরেজ বা সংকুচিত নালী, দীর্ঘমেয়াদে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
প্রযুক্তি: উন্নত ইমেজিং প্রযুক্তি যেমন অপটিক্যাল কোহেরেন্স টোমোগ্রাফি (OCT) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) চোখে সূক্ষ্ম পরিবর্তন শনাক্তে সহায়তা করছে।
রেটিনা বিশেষজ্ঞ ডা. জোসেফ নেজগোডা বলেন, চোখের OCT স্ক্যান শুধু দৃষ্টি নয়, হার্ট, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যার প্রাথমিক সংকেতও দিতে পারে।
কাদের জন্য নিয়মিত পরীক্ষা জরুরি?
প্রাথমিক পর্যায়ে হার্টের সমস্যা ধরা পড়লে জীবন বাঁচানো সম্ভব। নিয়মিত চোখ পরীক্ষা সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে বিশেষ কিছু ব্যক্তির জন্য আরও প্রয়োজনীয়:
যারা উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগছেন।
যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে।
যারা ধূমপায়ী বা অতীতে ধূমপান করেছেন।
যাদের পরিবারের কারো হার্ট সমস্যা আছে অথবা ৪০ বছরের বেশি বয়সী।
চিকিৎসকরা বলেন, চোখ পরীক্ষা করলে হার্টের সমস্যার প্রাথমিক সতর্কতা ধরা সম্ভব। চোখের সুস্থতা মানে হার্টের সুস্থতা। চোখ ও হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুরুষের কি স্তন ক্যানসার হতে পারে? জেনে নিন চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলছে
স্তন ক্যানসার শুনলেই সবার আগে মনে আসে নারীর নাম। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় শুধুই নারীদের নয়, পুরুষদেরও হতে পারে স্তন ক্যানসার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্যমতে, প্রতি একশ স্তন ক্যানসার রোগীর মধ্যে অন্তত একজন পুরুষ। বাংলাদেশেও এমন একাধিক কেস পাওয়া গেছে, তবে দেরিতে শনাক্ত হওয়ার কারণে চিকিৎসা জটিল হয়ে পড়ে। তাই বিশেষজ্ঞদের দাবি, পুরুষদেরও এই বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।
পুরুষের স্তন ক্যানসারের কারণ ও লক্ষণ
পুরুষদের শরীরেও অল্প পরিমাণে স্তন টিস্যু থাকে। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে বা জেনেটিক কারণে সেই টিস্যুতেই ক্যানসার কোষ তৈরি হতে পারে।
ঝুঁকির কারণ: অতিরিক্ত মদ্যপান, স্থূলতা (ওজন বৃদ্ধি), লিভারের সমস্যা, রেডিয়েশন এক্সপোজার এবং BRCA2 জিনে মিউটেশন থাকলে পুরুষের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়।
সতর্ক হওয়ার লক্ষণ: পুরুষের স্তন ক্যানসার হলে প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত ব্যথা দেখা দেয় না। তবে নিচের পরিবর্তনগুলো দেখা দিলে সতর্ক হওয়া উচিত: ১. স্তনের নিচে বা আশপাশে ছোট শক্ত গাঁট অনুভব করা। ২. নিপল বা তার চারপাশে লালচে দাগ, চুলকানি বা ভেতরে ঢুকে যাওয়া। ৩. নিপল থেকে রক্ত বা অস্বাভাবিক তরল নিঃসরণ। ৪. স্তনের ত্বকে ভাঁজ বা দাগ পড়া।
চিকিৎসা ও সচেতনতা
চিকিৎসকরা বলছেন, পুরুষের স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা নারী রোগীদের মতোই। অর্থাৎ, অপারেশন, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন এবং হরমোন থেরাপির মাধ্যমে করা হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে চিকিৎসায় সফলতার হার অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরুষের স্তন ক্যানসার এখনও অনেকের কাছেই অজানা বিষয়। লজ্জা, সংকোচ বা অবহেলার কারণে অনেকে দেরিতে চিকিৎসা নেন, যা পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। নিজের শরীর সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাই হতে পারে সবচেয়ে বড় সুরক্ষা।
সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি, ন্যাশনাল ব্রেস্ট ক্যানসার ফাউন্ডেশন
ব্রেস্ট ক্যান্সার: কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ—সচেতনতাই বাঁচাতে পারে জীবন
ব্রেস্ট ক্যান্সার/ স্তন ক্যান্সার মূলত স্তনের কোষের অনিয়ন্ত্রিত বিভাজন ও বিস্তারকে বোঝায়, যা শুরুতে ক্ষুদ্র পিণ্ড বা টিউমার হিসেবে জন্ম নেয় এবং অনুপযুক্ত সময়ে ধরা না পড়লে লিম্ফনোড হয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্বজুড়ে নারীদের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি ধরা পড়া ক্যান্সারের একটি; তবে অল্প সংখ্যায় হলেও পুরুষেরাও আক্রান্ত হন। সুখবর হলো—প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত ও সঠিক চিকিৎসা শুরু করতে পারলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আরোগ্য সম্ভব। বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস ও চিকিৎসা–অ্যাক্সেসের বাস্তবতায় সচেতনতা, নিয়মিত নিজে পরীক্ষা এবং বয়স/ঝুঁকিভেদে উপযুক্ত স্ক্রিনিংই সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
ব্রেস্ট ক্যান্সার কেমন করে শুরু হয়?
স্তনের দুধনালি (ডাক্ট) ও গ্রন্থিল (লোবুল) টিস্যুতে DNA-জনিত ত্রুটি বা জিনগত/পরিবেশগত প্রভাবে কোষের নিয়ন্ত্রণ হারালে ‘ডাক্টাল’ বা ‘লোবুলার’ কার্সিনোমা তৈরি হয়। এই কোষগুলো স্থানীয় টিস্যু ভেঙে ফেলতে পারে (ইনভেসিভ) এবং রক্ত/লসিকা পথে হাড়, লিভার, ফুসফুস বা মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে (মেটাস্টেসিস)। কিছু সাবটাইপ হরমোন-রিসেপ্টর পজিটিভ (ER/PR+), কিছু HER2-পজিটিভ, আবার কিছু ‘ট্রিপল-নেগেটিভ’; প্রতিটি ধরনেই চিকিৎসার কৌশল আলাদা হয়—এ কারণেই সঠিক প্যাথোলজি রিপোর্ট অত্যন্ত জরুরি।
ঝুঁকির কারণ—যেগুলো বদলানো যায়, যেগুলো যায় না
বয়স বাড়া, নারী লিঙ্গ, পরিবারের কাছের আত্মীয়ের (মা/বোন/কন্যা) অল্প বয়সে স্তন ক্যান্সারের ইতিহাস, BRCA1/BRCA2-এর মতো জিন মিউটেশন, ঋতুস্রাব দ্রুত শুরু হওয়া বা দেরিতে মেনোপজ হওয়া—এসব ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
কিন্তু জীবনযাপনের অনেক উপাদান বদলানো যায়: অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, প্রসেসড/অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, অ্যালকোহল গ্রহণ, দীর্ঘমেয়াদি হরমোনাল থেরাপি বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি (ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া)। দেরিতে সন্তান নেওয়া, সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়ানো ও উচ্চমাত্রার মানসিক চাপও ঝুঁকি বাড়ায়। যাদের পারিবারিক ইতিহাস প্রবল বা জিনগত ঝুঁকি আছে, তাদের ক্ষেত্রে স্ক্রিনিং শুরু হয় সাধারণ নির্দেশনার আগেই এবং ডাক্তার-নির্ধারিত পরিকল্পনা মেনে চলা উচিত।
কোন লক্ষণগুলোকে ‘লাল সিগন্যাল’ ধরবেন?
স্তনে বা বগলের নিচে নতুন পিণ্ড/ঘনভাব, স্তনের আকার/আকৃতি বদলে যাওয়া, ত্বকে ডিম্পলিং বা কমলার খোসার মতো খসখসে চেহারা, লালচে/উষ্ণতা/ফুলে থাকা, বোঁটা ভেতরে ঢুকে যাওয়া বা হঠাৎ বদলানো, বোঁটা দিয়ে রক্তমিশ্রিত বা অস্বাভাবিক স্রাব, বোঁটা-চারপাশের ত্বকে চুলকানি/খসখসে দাগ—এগুলোর যেকোনোটি দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। মনে রাখবেন, ব্যথা থাকা না-থাকা—দুটিই হতে পারে; তাই ব্যথা না থাকলেই তা ‘নিরাপদ’ ভাবা ভুল।
স্ক্রিনিং ও প্রাথমিক শনাক্তকরণ—বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তব কৌশল
বয়স ২০-এর পর থেকেই মাসে একবার নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা (Breast Self-Exam) অভ্যাস করুন—ঋতুস্রাবের শেষ হওয়ার ৩–৫ দিন পর আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখা, দাঁড়িয়ে/শুয়ে গোলাকারে আঙুল চালিয়ে পিণ্ড/কঠিনভাব খোঁজা, বগল পর্যন্ত পরীক্ষা—এসব কয়েক মিনিটেই হয়ে যায়। ৩০–৩৫-এর পর ক্লিনিকাল ব্রেস্ট এক্সাম (ডাক্তারের পরীক্ষায়) নিয়মিত করানো ভালো। ম্যামোগ্রাম—বিশেষ ধরনের এক্স-রে—সাধারণভাবে ৪০ থেকে বার্ষিক/দ্বিবার্ষিক শুরু হয়; যাদের ঝুঁকি বেশি, তাদের ক্ষেত্রে আগে শুরু হতে পারে এবং আল্ট্রাসাউন্ড/এমআরআই যুক্ত হতে পারে। পরীক্ষার হার/সময়সূচি বয়স, পারিবারিক ইতিহাস ও ডাক্তারি পরামর্শে নির্ধারিত হওয়া উচিত—‘এক মাপে সবার জন্য’ নয়। সন্দেহজনক চিত্র পাওয়া গেলে সূচিবায়োপসি হলো চূড়ান্ত নির্ণয়ের স্বর্ণমান।
চিকিৎসা—ব্যক্তি, টিউমার ও পর্যায়ভেদে কাস্টমাইজড
চিকিৎসার মূল স্তম্ভ চারটি: সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন, হরমোন/টার্গেটেড/ইমিউনোথেরাপি। ছোট ও লোকালাইজড টিউমারে লাম্পেক্টমি (টিউমার-সহ আংশিক অপসারণ) + রেডিয়েশন অনেক সময় স্তন সংরক্ষণ করে; বড়/মাল্টিফোকাল রোগে মাস্টেক্টমি দরকার হতে পারে এবং প্রয়োজনমতো রিকনস্ট্রাকশন করা যায়। হরমোন-রিসেপ্টর পজিটিভ রোগে ট্যামক্সিফেন/অ্যারোমাটেজ ইনহিবিটর বহু বছর ধরে পুনরাবৃত্তি কমায়। HER2-পজিটিভ রোগে ট্রাস্টুজুমাব-ভিত্তিক টার্গেটেড থেরাপি প্রাণরক্ষা করে। ট্রিপল-নেগেটিভ সাবটাইপে কেমোথেরাপি/ইমিউনোথেরাপির কম্বিনেশন এগিয়ে রেখেছে। সবচেয়ে জরুরি হলো—স্টেজিং, বায়োমার্কার ও রোগীর পছন্দ/সহ্যক্ষমতা বিবেচনায় মাল্টিডিসিপ্লিনারি টিমের সিদ্ধান্ত।
প্রতিরোধ—ঝুঁকি কমানোর বাস্তব ৬ অভ্যাস
ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ন্যূনতম সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম; সবজি–ফল–পূর্ণশস্য–স্বাস্থ্যকর চর্বিভিত্তিক খাদ্যাভ্যাস; অ্যালকোহল পরিহার; ধূমপান না করা; সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো (সম্ভব হলে); দীর্ঘমেয়াদি হরমোনাল থেরাপি হলে ডাক্তারের নিবিড় তত্ত্বাবধান—এগুলো মিলেই ঝুঁকি কমায়। উচ্চঝুঁকির পরিবারে জেনেটিক কাউন্সেলিং/টেস্টিং, প্রফাইল্যাক্টিক কৌশল বা ঘন স্ক্রিনিং নিয়েও বিশেষজ্ঞের সাথে খোলামেলা আলোচনা জরুরি।
বাংলাদেশি বাস্তবতায় কী বাধা, কী সমাধান?
সংকোচ, ‘স্তন’ শব্দ উচ্চারণে সামাজিক অস্বস্তি, চিকিৎসা–কেন্দ্রের দূরত্ব ও ব্যয়—এসব কারণে রোগী দেরিতে আসেন। কম খরচে ম্যামোগ্রাম ক্যাম্প, নার্স–কাউন্সেলরের পরিচালনায় BSE শেখানো, প্রাইমারি হেলথকেয়ারে ‘ব্রেস্ট ক্লিনিক’ কর্নার, কর্মজীবী নারীদের জন্য অফিস-ঘনিষ্ঠ স্ক্রিনিং—এগুলো প্রাথমিক শনাক্তকরণ বাড়াতে পারে। গণমাধ্যমে তথ্যভিত্তিক কনটেন্ট, পুরুষ পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ততা, স্তনস্বাস্থ্যের বিষয়ে লজ্জা নয়—দায়িত্ব—এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে।
কখনই দেরি করবেন না—এই ৫ পরিস্থিতিতে আজই ডাক্তার দেখান
- নতুন/বড় হতে থাকা পিণ্ড বা বগলে গাঁট;
- বোঁটা দিয়ে রক্ত/অস্বাভাবিক স্রাব;
- ত্বকে ডিম্পলিং বা কমলার খোসার মতো পরিবর্তন;
- হঠাৎ বোঁটা ভেতরে ঢুকে যাওয়া;
- মাসের পর মাস একই স্থানে একই পরিবর্তন থাকা।
প্রাথমিক পর্যায়ে একেকটি সপ্তাহ চিকিৎসার ফলাফল পাল্টে দিতে পারে।
শেষকথা—ছোট বদল, বড় পার্থক্য
ব্রেস্ট ক্যান্সার ‘হঠাৎ’ হয় না; শরীর আগেভাগেই সংকেত পাঠায়। আপনার নিয়মিত স্বপর্যবেক্ষণ, বয়স ও ঝুঁকিভিত্তিক স্ক্রিনিং, সুষম জীবনযাপন—এই তিন স্তম্ভই খেলাটা ঘুরিয়ে দিতে পারে। ভয় নয়, তথ্য–পরিকল্পনা–সময়—এই ত্রয়ীই আপনার সবচেয়ে বড় আশ্বাস।
কাশির সিরাপ কি শিশুদের জন্য নিরাপদ? জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
শীতের শুরুতে শিশুর সর্দি-কাশি খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। তবে সম্প্রতি ভারতে কাশির সিরাপ সেবনের পর একাধিক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে—কাশির সিরাপ আদৌ কি শিশুদের জন্য নিরাপদ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে বিক্রি হওয়া অনেক কফ সিরাপেই থাকে বিভিন্ন রাসায়নিকের মিশ্রণ, যা শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
বিশেষ করে ভারতের ঘটনার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে সিরাপে ব্যবহৃত বিষাক্ত পদার্থ ডাইইথিলিন গ্লাইকল, যা শিশুদের কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে। আফ্রিকা, উজবেকিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশেও এরকম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সিরাপের উপাদান ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
চিকিৎসকদের ভাষায়, বাজারে পাওয়া এসব কফ সিরাপ সাধারণত অ্যান্টিহিস্টামিন, ডিকনজেস্ট্যান্ট এবং এক্সপেক্টোরেন্ট উপাদানের মিশ্রণ। এগুলোর লক্ষ্য হলো শ্লেষ্মা কমানো ও কাশির দমক নিয়ন্ত্রণ করা। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, এই সিরাপগুলোর কার্যকারিতা খুব বেশি নয়, বরং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তুলনামূলক বেশি।
ঝুঁকি: কাশির সিরাপ সেবনে শিশুর বমি, অস্থিরতা, অতিরিক্ত ঘুম, দুর্বলভাব, মাথাব্যথা, খিঁচুনি, এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনে মারাত্মক ক্ষতি বা মৃত্যুও হতে পারে।
চিকিৎসক ও AAP-এর সতর্কতা
অভিভাবকদের অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই কফ সিরাপ কিনে দেন, আবার কেউ কেউ প্রাপ্তবয়স্কদের সিরাপের মাত্রা কমিয়ে দেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটি বিপজ্জনক অভ্যাস।
আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস (AAP)-এর নির্দেশনা:
৪ বছরের নিচে: চার বছরের নিচের শিশুদের কফ সিরাপ দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৪ থেকে ৬ বছর: চার থেকে ছয় বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে কেবল চিকিৎসকের পরামর্শেই দেওয়া যেতে পারে।
নিরাপদ বিকল্প
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে ওষুধ ছাড়াই শিশুকে আরাম দেওয়া সম্ভব। এজন্য—
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়ানো,
নাকে স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার,
কুসুম গরম পানিতে ভেজানো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করা—এইসব উপায় নিরাপদ হতে পারে।
তবে দীর্ঘদিন কাশি চলতে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, কারণ এটি নিউমোনিয়া বা শ্বাসতন্ত্রের অন্য সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।
৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পরও ক্লান্তি? ঘুমের গুণমান নষ্ট করছে ৬টি অভ্যাস
দিনভর কাজের চাপ ও মানসিক চাপের পর রাতে আট ঘণ্টা ঘুম হলেই শরীর-মন সতেজ হয়ে যাবে—এমনটা অনেকেই মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ঠিকমতো ঘুমানোর পরও অনেক সময় সকালে উঠেই শরীর ভারী লাগে এবং মন অবসন্ন থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের পরিমাণ নয়, আসল বিষয় হলো ঘুমের গুণমান। অনেকেই সময়মতো ঘুমালেও ঘুমের মান ভালো না হওয়ায় শরীর পুরোপুরি বিশ্রাম পায় না। এর পেছনে ৬টি সাধারণ কারণ কাজ করে।
ঘুমের গুণমান নষ্ট হওয়ার ৬ কারণ
১. ঘুমের ব্যাঘাত: রাতে বারবার ঘুম ভেঙে গেলে ঘুমের গভীর স্তরে পৌঁছানো যায় না, ফলে ঘুম পরিপূর্ণ হয় না।
২. স্লিপ অ্যাপনিয়া: এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে ঘুমের সময় শ্বাস কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এতে ঘুম বারবার ভেঙে যায় এবং সকালে উঠে ক্লান্তি, মাথা ব্যথা বা ঝিমুনি দেখা দেয়।
৩. বিকেল বা রাতে ক্যাফেইন: চা, কফি বা এনার্জি ড্রিংকে থাকা ক্যাফেইন ঘুমের গুণমান কমিয়ে দেয় এবং রাতে ঘুম আসতে দেরি হয়।
৪. অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম: মোবাইল, ট্যাব বা টিভির পর্দা থেকে বের হওয়া নীল আলো মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়, যা ঘুম আসার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
৫. ঘুমের সময়সূচিতে অনিয়ম: প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঘুমাতে যাওয়া বা ঘুম থেকে ওঠা শরীরের বডি ক্লককে এলোমেলো করে দেয়, ফলে ঘুমের গভীরতা কমে যায়।
৬. ভারী খাবার: রাতে তেল-মসলা বা ভারী খাবার খেলে হজমে সমস্যা হয়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
ভালো ঘুমের জন্য করণীয়
১. নিয়মিত রুটিন: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান ও উঠুন।
২. স্ক্রিন টাইম কমান: ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে মোবাইল, ট্যাব বা টিভি থেকে দূরে থাকুন।
৩. আরামদায়ক পরিবেশ: ঘর যেন ঠাণ্ডা, অন্ধকার ও নিরিবিলি হয়।
৪. হালকা খাবার: রাতে হালকা খাবার খান।
৫. মন শান্ত রাখুন: ঘুমানোর আগে বই পড়া, হালকা ব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সব নিয়ম মেনে চলার পরও যদি প্রতিদিন সকালে ক্লান্ত অনুভব করেন, ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা বা শ্বাস বন্ধ হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
সূত্র : আজকাল
শুষ্ক কাশির সমাধান: এই ৪টি ঘরোয়া উপাদানই যথেষ্ট
শুষ্ক কাশি হলে গলা জ্বালা করে কিন্তু শ্লেষ্মা বা কফ তৈরি হয় না। রাতভর এই অস্বস্তিকর কাশি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং গলায় চাপ সৃষ্টি করে। সাময়িক উপশমের জন্য কাশির ওষুধ থাকলেও, বিশেষজ্ঞরা প্রাকৃতিক এবং পরীক্ষিত ঘরোয়া প্রতিকার বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন। মধু, হলুদ, আদা এবং পুদিনা পাতার মতো সহজ উপাদান প্রদাহ কমাতে, শ্বাসনালীকে আর্দ্র করতে এবং দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।
শুষ্ক কাশি দূর করবে যে ৪ ঘরোয়া উপাদান
১. মধু: শুষ্ক কাশি প্রশমিত করার জন্য মধু সবচেয়ে কার্যকরী প্রাকৃতিক প্রতিকার। আর্কাইভস অফ পেডিয়াট্রিক্স অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের রাতের কাশি কমাতে এটি কিছু ওষুধের চেয়েও বেশি কার্যকর।
উপকারিতা: এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য গলায় আবরণ তৈরি করে, জ্বালা কমায় এবং কাশি দমনে সাহায্য করে।
ব্যবহার: দিনে কয়েকবার এক চা চামচ মধু খেতে পারেন অথবা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। (তবে এক বছরের কম বয়সী শিশুদের মধু দেওয়া উচিত নয়)।
২. হলুদ: হলুদে কারকিউমিন থাকে, যা প্রদাহ-বিরোধী, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণসম্পন্ন একটি শক্তিশালী যৌগ। ব্রঙ্কাইটিস এবং হাঁপানির মতো শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার চিকিৎসায় এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
ব্যবহার: কারকিউমিনের শোষণ সর্বাধিক করার জন্য হলুদ এক চিমটি গোল মরিচের সাথে খাওয়া উচিত। গরম দুধ, চা বা কমলার রসে এক চা চামচ হলুদ এবং অল্প গোল মরিচ যোগ করুন। এটি গলার জ্বালা এবং শুষ্ক কাশির সাথে সম্পর্কিত প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
৩. আদা: আদা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী, জীবাণুনাশক এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এটি গলার জ্বালা প্রশমিত করতে সাহায্য করে এবং কাশির আক্রমণ থেকে মুক্তি দেয়।
ব্যবহার: আদা চা বিশেষভাবে কার্যকরী। দ্রুত উপশমের জন্য কাঁচা আদা চিবিয়ে খাওয়া বা গরম স্যুপে খাওয়া ভালো। মধু যোগ করলে এর স্বাদ এবং নিরাময় উভয়ই বৃদ্ধি পায়।
৪. পুদিনা পাতা: পুদিনা মেন্থল সমৃদ্ধ, যা প্রাকৃতিক ডিকনজেস্ট্যান্ট এবং কাশি দমনকারী হিসেবে কাজ করে। এটি গলার স্নায়ু প্রান্তকে অসাড় করতে সাহায্য করে, কাশির তাড়না এবং কনজেশন কমায়।
ব্যবহার: পুদিনা চা এই সুবিধাগুলো উপভোগ করার একটি আরামদায়ক উপায়, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে। পুদিনা তেল মিশিয়ে তার বাষ্প নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করলেও উপশম পাওয়া যায়।
পেটের মেদ কমাবে ৫ পানীয়: সকালে পান করলেই মিলবে চমকপ্রদ ফল
বাড়তি পেটের চর্বি কমানো কঠিন মনে হলেও, সকালের ছোট ছোট অভ্যাসেই মিলতে পারে চমকপ্রদ পরিবর্তন। নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যের পাশাপাশি কয়েকটি সহজ, ঘরোয়া পানীয় অন্তর্ভুক্ত করলেই পেটের মেদ কমানো সম্ভব। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত এই ৫টি পানীয় বিপাকক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে।
পেটের মেদ কমানোর ৫টি ডিটক্স পানীয়
১. লেবু-মধুর গরম পানি: ওজন কমানোর জনপ্রিয় এই পানীয় শরীর থেকে টক্সিন দূর করে, বিপাকক্রিয়া সক্রিয় করে এবং চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ গরম পানিতে আধা চা চামচ মধু ও এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
২. জিরা পানি: জিরা ওজন নিয়ন্ত্রণের এক জাদুকরী উপাদান। এতে থাকা থাইমোকুইনন শরীরে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত পান করলে এটি হজম শক্তি বাড়ায়, বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং পেটের মেদ কমাতে সহায়ক হয়।
৩. মাখন দুধ বা ছাছ (Buttermilk): গরম দিনে শরীর ঠান্ডা রাখতে যেমন কার্যকর, তেমনি পেটের মেদ কমাতেও ছাছ দারুণ। এতে থাকা প্রোবায়োটিক উপাদান হজমে সাহায্য করে, ভিটামিন বি১২ পুষ্টি শোষণ বাড়ায় এবং শক্তি বৃদ্ধি করে।
৪. দারুচিনি চা: সুগন্ধি দারুচিনি চর্বি পোড়াতে কার্যকর। এক কাপ ফুটন্ত পানিতে একটি দারুচিনির টুকরো দিয়ে কিছুক্ষণ রাখলেই তৈরি হবে দারুচিনি চা। সন্ধ্যায় এক কাপ দারুচিনি চা পান করলে মেটাবলিজম বাড়ে এবং শরীর প্রাকৃতিকভাবে ডিটক্স হয়।
৫. গ্রিন টি: গ্রিন টি চর্বি পোড়ানোর জন্য বিশ্বজোড়া পরিচিত। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যাটেচিন বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং অতিরিক্ত ক্যালরি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে। খাবারের পর এক কাপ গ্রিন টি পান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সকালের শুরু যদি এই পাঁচটি স্বাস্থ্যকর পানীয়ের যেকোনো একটি দিয়ে হয়, তাহলে সারাদিন শরীর থাকে সতেজ, হজম শক্তি বাড়ে এবং ধীরে ধীরে পেটের মেদ কমতে শুরু করে।
পাঠকের মতামত:
- ওজন কমাতে চিয়া বীজ: যেভাবে খেলে মিলবে সর্বোচ্চ ফল, কখন পান করবেন চিয়া ওয়াটার?
- মাইগ্রেনের ব্যথা: ১৫ মিনিটে মুক্তি পেতে পারেন যে ঘরোয়া কৌশলে
- যে ৫টি খাবার খাওয়ার পর পানি খাওয়া উচিত নয়
- উদ্বোধনের ১ বছর পর রেলসেতুর পিলারে ফাটল!
- আমরা সালমান শাহকে হত্যা করেছি—রেজভী ফরহাদের সেই জবানবন্দি
- গাজায় ৭০ শতাংশ শিশুই কম ওজনের: ক্ষুধার সংকট নিয়ে UN-এর উদ্বেগ
- মেজর জেনারেল সাজ্জাদ মাহমুদ: আনসার বাহিনী এখন ব্যক্তিনির্ভর নয়, সিস্টেম নির্ভর হবে
- আ.লীগের নির্বাচন ‘বিদেশি চাপ’ নিয়ে প্রেস সচিবের মন্তব্য
- বাণিজ্য যুদ্ধ থেকে বিশ্বশান্তি? ট্রাম্প-শি বৈঠকে নতুন কূটনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত
- চুল পড়া বেড়েছে? অ্যালোপেশিয়ার লক্ষণ, ঘরোয়া প্রতিকার ও করণীয়
- চোখই বলে দেবে হৃদরোগের ঝুঁকি: যে ৫টি লক্ষণ চোখে দেখলে সতর্ক হবেন
- ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- সাগর-রুনি হত্যা মামলা: তদন্ত শেষ করতে আর কত বছর লাগবে, ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
- শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন: আইনজীবীর যুক্তি
- রাষ্ট্র ইমোশন দিয়ে চলে না:সালাহউদ্দিন আহমদ
- ইসরায়েলকে ট্রাম্পের কড়া হুঁশিয়ারি
- প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশ করবে ইসি
- ২৩ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ২৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ২৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- সাইফ-সৌম্যর ব্যাটে: ৩৪৫ দিন পর যে ‘কীর্তি’ গড়ল বাংলাদেশ
- বিতর্কিত কর্মকর্তাদের দায়িত্বে রাখা যাবে না: সিইসিকে বিএনপির আহ্বান
- হত্যা না আত্মহত্যা? সালমান শাহ্র মৃত্যুর ২৯ বছর পর ফ্ল্যাটের দৃশ্য ভাইরাল
- পুরুষ হলে মুখোমুখি হোন: পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে টিটিপি’র সরাসরি চ্যালেঞ্জ
- রায় ঘোষণার চূড়ান্ত দিন ধার্য: শেখ হাসিনার মামলার রায় নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে
- রূপকথা নয় সত্যি! আমাজনের গভীরে মিললো সেই ফুটন্ত জলের নদী
- “শান্তি আনতে পারবেন একমাত্র ট্রাম্প”—ওয়াশিংটনে ন্যাটো মহাসচিব রুটে
- রাশিয়ার ওপর ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞা: জ্বালানি খাতে চাপ বাড়ছে
- সিইসি’র সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি কী দাবি জানাল?
- যে দেশে ঘর জামাই দত্তক নিয়ে বানানো হয় কোম্পানির সিইও
- লিভারপুলের ৫-১ জয়ে ফিরে আসা, চেলসি-রিয়াল-বায়ার্নও জয়ী
- এআই বিভাগে ছাঁটাই, তবে গবেষণা প্রকল্পে বিন্দুমাত্র ছাড় নয়: মেটা
- মিরপুরে আজ সম্মানের লড়াই: সিরিজ বাঁচাতে পারবে কি বাংলাদেশ?
- ল্যুভর মিউজিয়াম: মোনালিসা চুরি হয়েছিল যেভাবে
- জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা
- বৈষম্যহীন ন্যায়বিচারের দাবি: গুমের ভুক্তভোগীদের কণ্ঠে বিচার, জবাবদিহিতা ও রাষ্ট্রীয় আস্থার প্রশ্ন
- এল ডোরাডো থেকে ট্রয়: ইতিহাসের হারানো ৬ শহর, যার রহস্য আজও অমীমাংসিত
- ডোপামিন আসক্তি: নিষিদ্ধ ভিডিওর ফাঁদে তরুণ প্রজন্ম, অজান্তেই হচ্ছে সাইবার অপরাধ
- দ্রুত ওজন কমাতে চান? সকালে পান করুন এই জাদুকরী পানীয়
- রাশিফল: ২৩ অক্টোবর দিনটি আপনার জন্য কেমন যাবে?
- পুরুষের কি স্তন ক্যানসার হতে পারে? জেনে নিন চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলছে
- রাশিয়ার দুই শীর্ষ তেল কোম্পানির ওপর নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
- মিঠামইনের অঘোষিত রাজা,হারুন অর রশীদের দুর্নীতির সাম্রাজ্য
- নিঃশ্বাস নিন সতেজ বাতাসে: ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করবে এই তিন ইনডোর গাছ
- আজই মামলার রায়: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের মুখে শেখ হাসিনা
- মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে রাতভর সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ, নিহত ১
- ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের বিল পাশ, আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন
- ইচ্ছেপূরণ প্রকল্পে নতুন বিতর্ক: বাতিলের সিদ্ধান্ত বদলে ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব
- ব্রেস্ট ক্যান্সার: কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ—সচেতনতাই বাঁচাতে পারে জীবন
- রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ল, নতুন তথ্য দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ইবন খালদুন: রাজনীতি, সমাজ ও ইতিহাসের এক অবিনশ্বর তাত্ত্বিক
- ফ্রান্স: সভ্যতা, প্রজাতন্ত্র ও মানবমুক্তির দীপ্ত ইতিহাস
- বান্দরবান সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি
- ‘এখনই অস্ত্র ত্যাগ নয়’: গাজা পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে অনড় হামাস
- রিশাদ ম্যাজিক স্পিনে উড়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
- অভিভাবকতন্ত্রের প্রলোভন: জেনারেল ভূঁইয়ার বয়ান ও গণতন্ত্রের ঘড়ি থামানোর বিপদ
- ২০ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- মাইগ্রেনের সমস্যা: যে ৬টি অভ্যাস আজই আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে
- শীতকাল আসছে: সুস্থ থাকতে এখনই বর্জন করুন এই ৫টি অভ্যাস
- ২১ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- জ্বীনের অদৃশ্য জগৎ: বিজ্ঞান কি খুলতে চলেছে সেই রহস্যের দরজা?
- ২০ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- ২০ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- ‘জুলাই সনদ’-এর ৫ নম্বর দফা সংশোধনের প্রস্তাব দিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ








