রোজকার শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ

২০ জুলাই শেয়ারবাজারে লেনদেন বেড়েছে, সূচক মিশ্র: অগ্রগতি ও পতনের দ্বৈতচিত্রে বাজার

শেয়ারবাজার ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২০ ১৭:৪৯:৪৯
২০ জুলাই শেয়ারবাজারে লেনদেন বেড়েছে, সূচক মিশ্র: অগ্রগতি ও পতনের দ্বৈতচিত্রে বাজার

আজ ২০ জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ারবাজার একটি মিশ্র প্রবণতা প্রদর্শন করেছে। এদিন মোট ৩৯৮টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়, যার মধ্যে ১৮০টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধি পায়, ১৪৬টি কমে যায়, এবং ৭২টি অপরিবর্তিত থাকে। অর্থাৎ মোট শেয়ারের প্রায় ৪৫ শতাংশই ঊর্ধ্বমুখী ছিল যা বাজারে কিছুটা পজিটিভ মোমেন্টাম নির্দেশ করে। A ক্যাটাগরির শেয়ারগুলোর মধ্যেও মোট ২১৯টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে, যার মধ্যে ৯৮টি অগ্রসর এবং ৮৪টি দরপতনের শিকার হয়েছে। B ও Z ক্যাটাগরির শেয়ারগুলোতেও একই রকম মিশ্র প্রবণতা দেখা যায় — Z ক্যাটাগরিতে ৫২টি শেয়ার অগ্রগতি দেখালেও ২৪টি কমেছে, যা সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এবং অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দেয়।

মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর পারফরম্যান্স তুলনামূলকভাবে দুর্বল ছিল, যেখানে ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৪টি অগ্রসর হয়েছে, আর ১৫টির দরপতন হয়েছে। অপরদিকে, কর্পোরেট বন্ড মার্কেট ছিল অনেকটাই স্থিতিশীল — মোট ২টি বন্ডের লেনদেন হয়েছে, যার মধ্যে ১টি দর বেড়েছে এবং অন্যটি অপরিবর্তিত ছিল। সরকারী সিকিউরিটিজ (G-Sec)-এ চিত্রটি তুলনামূলক নেতিবাচক, যেখানে ৫টি ট্রেডের মধ্যে ৪টির দর কমেছে।

দিনটির সর্বমোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭৭৫৯.০৯ কোটি টাকা, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অঙ্ক এবং বাজারে তরলতার উপস্থিতি নির্দেশ করে। মোট লেনদেন হয়েছে ২,২৪,১৪৪টি ট্রেডে, যেখানে মোট শেয়ারের পরিমাণ ছিল ২৭.৭৫ কোটি।

বাজার মূলধন বা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন হিসাব অনুযায়ী, ইকুইটি সেগমেন্টের মূল্য ছিল ৩৪৭,৯২৪ কোটি টাকা, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২,৯৭৬ কোটি টাকা, এবং ডেবট সিকিউরিটিজের মূল্য ছিল ৩৪০,৯৪১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মোট বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৬৯১,৯১০ কোটি টাকা, যা বাজারের স্থায়িত্ব এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতাও নির্দেশ করে।

এছাড়া, ব্লক মার্কেটে এদিন ২৯টি স্ক্রিপস-এর মোট ৪৫টি লেনদেন হয় এবং এর মাধ্যমে ১০৫.২৭ কোটি টাকার লেনদেন সম্পন্ন হয়। এই ব্লক ট্রেডগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্ক্রিপস ছিল ASIATICLAB, LOVELLO, BRACBANK, SHEPHERD, RENATA, BEXIMCO, BATBC, ইত্যাদি। এর মাধ্যমে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানভিত্তিক এবং উচ্চমূল্যের শেয়ারগুলোর প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে।

তবে বাজার বিশ্লেষণে একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যে, লেনদেন ও দরবৃদ্ধির সংখ্যা বেশি হলেও দরপতনের সংখ্যাও কম নয়। বিশেষত B ক্যাটাগরি এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দুর্বলতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা ও স্বল্পমেয়াদি দোলাচলের ইঙ্গিত দেয়। যদিও সামগ্রিক ট্রেড ভলিউম ও বাজার মূলধন দৃঢ়তার প্রতীক, বাজার এখনো নিঃসন্দেহে একটি ‘সতর্ক পর্যায়ে’ রয়েছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ