দগ্ধদের জন্য রক্ত বা স্কিন ডোনেশনের প্রয়োজন নেই: বার্ন ইনস্টিটিউট

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৫ ১০:১৭:০৩
দগ্ধদের জন্য রক্ত বা স্কিন ডোনেশনের প্রয়োজন নেই: বার্ন ইনস্টিটিউট

উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীনদের জন্য এখনই রক্ত বা ত্বক (স্কিন) ডোনেশনের কোনো প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ৮টায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বর্তমানে ইনস্টিটিউটের রক্তের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। স্কিন ডোনেশন বা রক্তদানের জন্য সাধারণ জনগণের আলাদা কোনো উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন নেই। আমরা সরকার থেকে প্রয়োজনীয় সবধরনের অর্থ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সহায়তা পাচ্ছি।”

তিনি জানান, এই দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে এখন পর্যন্ত ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন ৪২ জন। তাদের মধ্যে ৮ জনের অবস্থার অবনতি ঘটায় আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আইসিইউ রোগীদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তবে উন্নতির সম্ভাবনায় দুজনকে ইন্টারমিডিয়েট কেয়ারে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “ইন্টারমিডিয়েট কেয়ার ইউনিটে থাকা ২৩ জনের মধ্যে ইতোমধ্যেই ১৩ জনকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে, যা আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক একটি অগ্রগতি।”

বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে এ পর্যন্ত মোট ১৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন বলে নিশ্চিত করেন অধ্যাপক নাসির উদ্দিন। বৃহস্পতিবারই মৃত্যুবরণ করেন আরও দুইজন একজন দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে এবং অপরজন বিকেল সাড়ে ৪টায়।

চিকিৎসা সহায়তার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা নেওয়ার বিষয়েও আলোকপাত করেন তিনি। “সিঙ্গাপুর ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। চীনের চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে এবং তারা খুব দ্রুত সরাসরি যুক্ত হবেন। আমরা বিশ্বের যেকোনো দেশের অভিজ্ঞতাকে সম্মান জানাই ও সম্মিলিতভাবে কাজ করতে আগ্রহী,” বলেন অধ্যাপক নাসির উদ্দিন।

বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে অনেকেই অর্থ পাঠাতে চাইছেন এমন আগ্রহকে সাধুবাদ জানিয়ে অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, “সাধারণ জনগণের সদিচ্ছার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। তবে এই মুহূর্তে আলাদাভাবে অর্থ সহায়তার প্রয়োজন নেই, কারণ সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত তহবিল ও লজিস্টিক সহায়তা আমরা পাচ্ছি।”

অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, “এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দগ্ধ প্রত্যেক ব্যক্তির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমাদের চিকিৎসক দল সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সরকার, চিকিৎসক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ