যমুনার বৈঠকে বড় বার্তা দিল জামায়াত-ইসলামী আন্দোলন

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৩ ০৯:৩১:৩৯
যমুনার বৈঠকে বড় বার্তা দিল জামায়াত-ইসলামী আন্দোলন

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় সামরিক বিমান বিধ্বস্তের প্রেক্ষাপট ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে যমুনা নদীসংলগ্ন একটি অজ্ঞাত স্থানে। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক টেবিলে বসেন বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আইন-শৃঙ্খলা, নির্বাচনপূর্ব প্রস্তুতি এবং বহুল আলোচিত ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয় বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বৈঠক শেষে জামায়াত ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রতিনিধিরা গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেও বিএনপি ও এনসিপির নেতারা নীরব ছিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাদের বক্তব্য না দেওয়াকে একটি কৌশলগত অবস্থান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বৈঠক শেষে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এক বিবৃতিতে বলেন, “গতকাল মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, আমরা সে ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করছি। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে এবং নিহতদের পরিবার যেন যথাযথ সহায়তা পায়, সে আহ্বান আমরা সরকারের প্রতি জানিয়েছি।”

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে একটি বিশেষ মহল দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চক্রান্ত করছে। আমরা সরকারকে বলেছি—আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই দেশে ফ্যাসিবাদের আর কোনো স্থান নেই। জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তিকে প্রতিহত করবে।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের আগেই একটি শান্তিপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি। একটি লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করা ছাড়া কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।”

ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমানও বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, “বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে কেউ কেউ গুজব ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অপতৎপরতা রুখতে রাজনৈতিকভাবে ঐক্য বজায় রাখতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সবাই একমত যে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে আর যেন পুনর্বাসিত করা না যায়। যে যেই অবস্থানে থাকি না কেন, এই স্বৈরাচারী প্রবণতার বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান জরুরি।”

সচিবালয়ে বারবার হামলার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে তো সচিবালয়ে এমন বারবার হামলার ঘটনা ঘটেনি। তাহলে এই সরকারের আমলে কেন ঘটছে? প্রশাসনিক ব্যর্থতা রয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা জরুরি।”

তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “নির্বাচনের পূর্বে যেন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটে, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার যেন আরও কঠোর হয়।”

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ