পশ্চিম আফ্রিকায় আবারও ম্যাঙ্কিপক্সের হুমকি, গাম্বিয়ায় শুরু প্রাদুর্ভাব

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৩ ১০:২৮:৪৮
পশ্চিম আফ্রিকায় আবারও ম্যাঙ্কিপক্সের হুমকি, গাম্বিয়ায় শুরু প্রাদুর্ভাব
ছবিঃ সংগৃহীত

গাম্বিয়ায় নতুন করে ম্যাঙ্কিপক্স রোগের প্রাদুর্ভাব ধরা পড়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানায়, নিয়মিত স্বাস্থ্য নজরদারির অংশ হিসেবে ম্যাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত একটি ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। এ রোগটি গত শুক্রবার শনাক্ত হয় এবং এটি বর্তমানে গাম্বিয়ায় সক্রিয় নয় এমন রোগ হিসেবে গণ্য হওয়ায়, একটি মাত্র সংক্রমণই একটি প্রাদুর্ভাব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গাম্বিয়ার মতো একটি দেশে যেখানে এই রোগটি পূর্বে চলমান ছিল না, সেখানে একটি সংক্রমণ ধরা পড়াই জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা হিসেবে বিবেচিত। এর জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”

প্রতিবেশী সিয়েরা লিওনে জানুয়ারি থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত ৩,৩৫০ জনের ম্যাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। লাইবেরিয়ায় জুনের শুরুতে ৭১টি সক্রিয় কেস ছিল এবং গিনিতে গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে ২০০ ছাড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, ম্যাঙ্কিপক্স এখনও একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, বিশেষ করে পশ্চিম আফ্রিকায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (DR Congo), উগান্ডা এবং বুরুন্ডিতেও এই বছর হাজার হাজার এমপক্স সংক্রমণের কেস নথিভুক্ত হয়েছে।

গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা অন্যান্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে কন্টাক্ট ট্রেসিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে।

ম্যাঙ্কিপক্স একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা স্মলপক্স ভাইরাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এটি সংক্রমিত প্রাণী থেকে মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে এবং ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি থেকে অন্যজনের মধ্যে ছড়াতে পারে। রোগের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, পেশীর ব্যথা এবং ফোঁড়ার মতো বড় বড় চর্মরোগ। এটি কখনও কখনও প্রাণঘাতী হতে পারে।

এই ভাইরাসের দুটি উপপ্রকার রয়েছে—ক্লেড ১ এবং ক্লেড ২। গাম্বিয়ায় শনাক্ত রোগীর দেহ থেকে সংগৃহীত নমুনার জিনগত সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তি কোন ক্লেডে আক্রান্ত।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত শনাক্তকরণ, কার্যকর কোয়ারেন্টাইন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিই এই ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে প্রধান অস্ত্র।

-আকরাম হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ