‘বাংলায় ফ্যাসিবাদ চলবে না’: নাম বাতিল, উচ্ছেদ, দাঙ্গার বিরুদ্ধে মমতা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৩ ০৯:৪৮:২০
‘বাংলায় ফ্যাসিবাদ চলবে না’: নাম বাতিল, উচ্ছেদ, দাঙ্গার বিরুদ্ধে মমতা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি

বাংলা ও বাঙালির অস্তিত্ব, সাংবিধানিক অধিকার এবং ভাষাগত পরিচয় রক্ষার ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছেন। শহীদ দিবসের (২১ জুলাই) মঞ্চ থেকে ভাষা আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার পরদিন, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) নবান্নে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আরও কড়া ভাষায় কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে আক্রমণ করেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আসামের হস্তক্ষেপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন, “বাংলার বিষয়ে আসাম কীভাবে হস্তক্ষেপ করে? এটা শুধু রাজনৈতিকভাবে অনৈতিক নয়, বরং একেবারেই অসাংবিধানিক এবং বেআইনি। ওরা সীমারেখা লঙ্ঘন করছে। এভাবে চললে কেন্দ্র আর রাজ্যের মধ্যে সংঘাত অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে।”

তিনি বিজেপির তথাকথিত ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’-কে উদ্দেশ করে বলেন, “নিজেদের চরকায় তেল দিন। কালী মন্দির ভাঙছেন, দাঙ্গা করছেন, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছেন, মানুষকে উচ্ছেদ করছেন, ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি করছেন, নাম বাতিল করছেন। এসব করে যদি দেশ চালানোর কথা ভাবেন, তাহলে ভুল করছেন। একবার দেশ বিভক্ত হলে তার মেরুদণ্ড ভেঙে পড়বে।”

মুখ্যমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি হরিয়ানার এক চিঠিতে সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম দিয়ে রাজ্যের একাধিক জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে যাচাই করতে বলা হয়েছে। মালদহ, দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, কুচবিহার, উত্তর ২৪ পরগনার মতো সংবেদনশীল জেলাগুলোর নাম সেখানে উল্লেখ রয়েছে।

মমতা ব্যানার্জি প্রশ্ন তোলেন, “এভাবে কি বাংলাকে দখল করতে চায় ওরা? কী উদ্দেশ্য? এমএইচ গাইডলাইনের নামে কি বাংলা দখলের পরিকল্পনা চলছে?”

তিনি বলেন, “এখন চলছে ভাষার সন্ত্রাস, চলছে মানুষের ওপর নির্যাতনের সন্ত্রাস। জেলার পর জেলা টার্গেট করে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। এটি শুধু প্রশাসনিক বিষয় নয়, এটা জাতিসত্তা, ভাষা ও সাংবিধানিক অধিকারকে আঘাত করার ষড়যন্ত্র।”

মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, “আমরা ভয় পাব না। আমরা আমাদের কাজ করে যাব। মানুষকে রক্ষা করা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। বাংলাকে গায়ের জোরে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করব।”

মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যে স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে যে, তিনি কেন্দ্রের উদ্দেশ্যকে একটি বৃহৎ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আগ্রাসন হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, “ভোটার তালিকা থেকে নাম কেটে, ভয় দেখিয়ে, বাঙালিদের প্রান্তিক করে দিয়ে যদি বিজেপি মনে করে দিল্লি বা মহারাষ্ট্রের মতো বাংলাকেও কব্জা করতে পারবে, তাহলে তারা ভুল করছে। বাংলার মানুষ বিস্ফোরণ ঘটাবে তার প্রমাণ ২১ জুলাইয়ের সমাবেশেই তারা পেয়েছে।”

-রাফসান

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ