দুই ট্রলারসহ ৩৪ ভারতীয় জেলে বাংলাদেশে আটক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২১ ১০:৫৯:০৪
 দুই ট্রলারসহ ৩৪ ভারতীয় জেলে বাংলাদেশে আটক
ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস

বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে অবৈধভাবে মাছ ধরার অভিযোগে আটক ৩৪ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে ঢাকা কর্তৃপক্ষের কাছে কনস্যুলার অ্যাক্সেসের অনুরোধ জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৪ থেকে ১৫ জুলাই মধ্যরাতে মংলা বন্দরের নিকটবর্তী বঙ্গোপসাগরের জলসীমা লঙ্ঘন করে মাছ ধরার সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দুটি ভারতীয় ট্রলারসহ ওই ৩৪ জন জেলেকে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে বেআইনিভাবে মাছ ধরার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ভারত সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আটক সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পরপরই ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে তাৎক্ষণিকভাবে কনস্যুলার অ্যাক্সেস চাওয়া হয়েছে, যাতে ভারতীয় কূটনৈতিকরা জেলেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন এবং তাদের আইনি ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা যায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন দেখা দিলেও মানবিক ভিত্তিতে উভয় দেশই পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। জানা গেছে, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে ভারতের কোস্ট গার্ডের কাছে হস্তান্তর করে। এর প্রতিদানে ভারতও ৯০ জন বাংলাদেশি জেলেকে নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়। যদিও গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে কিছুটা শীতলতা অনুভূত হচ্ছে।

এই অঞ্চলে প্রতিবছরই ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। সমুদ্রসীমা স্পষ্টভাবে চিহ্নিত না থাকা এবং অধিকাংশ মাছ ধরার ট্রলারে জিপিএস বা ন্যাভিগেশন প্রযুক্তির অনুপস্থিতির কারণে বহু জেলে অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রতিবেশী দেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ে।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক


বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তির মহাপ্রদর্শনী:বেইজিং থেকে বিশ্বকে চীনের কৌশলগত বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১৫:০৭:১৩
বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তির মহাপ্রদর্শনী:বেইজিং থেকে বিশ্বকে চীনের কৌশলগত বার্তা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ এ চীন শুধু ইতিহাসের স্মৃতি স্মরণ করেনি, বরং একে রূপান্তর করেছে সামরিক আধুনিকায়নের মহামঞ্চে। তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত এই কুচকাওয়াজে চীনের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, কৌশলগত ক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ যুদ্ধনীতির দিকনির্দেশনা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দুই ডজনেরও বেশি রাষ্ট্রপ্রধান। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে এটিকে চীনের সামরিক শক্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক জোট ও প্রভাবেরও প্রতীকী প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নতুন প্রজন্মের বিমান প্রতিরক্ষা: HQ-20, HQ-9C ও HQ-29

চীনের সামরিক প্রদর্শনীর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল HQ-20 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এটি প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে উন্মোচিত হয়। আটচাকার ট্রান্সপোর্টার-ইরেক্টর লঞ্চার সমৃদ্ধ এই ব্যবস্থা অন্তত আটটি ইন্টারসেপ্টর বহন করতে সক্ষম। HQ-9 এর নকশাগত মিল থাকলেও HQ-20 ছোট মিসাইল ব্যবহার করে, যা দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীলতা ও উচ্চ গতিশীলতার বার্তা দেয়।

এছাড়া প্রদর্শিত হয় HQ-9C, যা HQ-9B এর উন্নত সংস্করণ। এতে উন্নত নির্দেশনা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা যোগ হয়েছে। ভারতের “অপারেশন সিন্ধুর”-এ পাকিস্তানের হাতে থাকা HQ-9B ও HQ-16 ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ার অভিজ্ঞতার পর HQ-9C এর উন্নয়নকে বিশ্লেষকরা চীনের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফল বলছেন।

অন্যদিকে, HQ-29 উচ্চতর প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রদর্শিত হয়, যা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যপথে প্রতিরোধ ও নিম্ন-কক্ষপথ উপগ্রহ ধ্বংসে সক্ষম। বিশ্লেষকরা এটিকে মার্কিন নৌবাহিনীর SM-3 ইন্টারসেপ্টর-এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করছেন।

এগুলো প্রমাণ করে, চীন শুধুমাত্র আঞ্চলিক প্রতিরক্ষার দিকে নয়, বরং মহাশূন্য ও বৈশ্বিক স্তরে অ্যান্টি-অ্যাকসেস/এরিয়া ডিনায়াল (A2/AD) ক্ষমতা তৈরি করছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ কৌশলের সরাসরি চ্যালেঞ্জ।

মহাশূন্য ও সাইবার যুদ্ধক্ষেত্র

কুচকাওয়াজে অন্তর্ভুক্ত ছিল নেটওয়ার্ক সাপোর্ট ও সাইবার ইউনিট, যা ইঙ্গিত দেয় সামরিক আধুনিকায়ন কেবল প্রচলিত অস্ত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং মহাশূন্য, সাইবারস্পেস এবং তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রেও চীনের উপস্থিতি জোরদার হচ্ছে। প্রদর্শনীতে ছিল ইলেকট্রনিক জ্যামিং যান, মোবাইল রাডার ইউনিট ও সাইবার ব্রিগেড, যা সর্বাঙ্গীণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে উপস্থাপিত হয়।

‘লয়্যাল উইংম্যান’ ও পানির নিচের ড্রোন

সবচেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণকারী প্রদর্শনীর একটি ছিল FH-97 “লয়্যাল উইংম্যান” ড্রোন। এটির ডানা ছয় মিটার ও দৈর্ঘ্য ১০ মিটার। এটি জে-২০ ও জে-৩৫ স্টেলথ ফাইটারের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করতে পারে। ড্রোনটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ, নজরদারি, এমনকি সুনির্দিষ্ট হামলার সক্ষমতা রাখে। অভ্যন্তরীণ বোম্ব বে-তে অস্ত্র বা সেন্সর বহনের ব্যবস্থা রয়েছে।

ডিজাইনার ডেং শুয়াই রাষ্ট্রীয় গ্লোবাল টাইমসকে জানান, এ ড্রোন “সেন্সর, অস্ত্রভাণ্ডার এবং পাইলটদের জন্য বুদ্ধিমান সহকারী” হিসেবে কাজ করে। এর নামকরণ হয়েছে “লয়্যাল উইংম্যান” কারণ এটি মানবচালিত বিমানের পাশাপাশি “সশস্ত্র দেহরক্ষীর মতো” উড়ে।

ভূমি পর্যায়ে প্রদর্শিত হয় দুইটি বিশালাকার মানববিহীন পানির নিচের যান (UUV), এর একটি চিহ্নিত হয় AJX002 নামে। টর্পেডোর মতো আকৃতির এ যান দীর্ঘ-পাল্লার নজরদারি, আন্ডারসি কেবল ট্যাপিং, মাইন বিছানো বা হামলার মতো মিশনের জন্য তৈরি। এছাড়া উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন লেজার ও মাইক্রোওয়েভ নির্গমনকারী ট্রাকও প্রদর্শিত হয়, যা ড্রোন প্রতিরোধে ত্রিমুখী ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিতি পায়।

ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী ও পারমাণবিক ত্রিমুখী ক্ষমতা

প্রথমবারের মতো চীন তার পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক ত্রিমুখী বাহিনী প্রদর্শন করে—স্থল, নৌ ও বিমানভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা একসঙ্গে। জিংলেই-১ বিমান থেকে নিক্ষেপণযোগ্য পারমাণবিক মিসাইল ছিল এর কেন্দ্রে, সঙ্গে ছিল জুলাং-৩ সাবমেরিন-ভিত্তিক মিসাইল এবং স্থল-ভিত্তিক DF-61, DF-31 ও DF-5C আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র।

DF-5C কে চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী আইসিবিএম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, যা ২০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লা ও একাধিক ওয়ারহেড বহনের ক্ষমতা রাখে। এছাড়া প্রদর্শিত হয় ডিএফ-১৭ হাইপারসনিক মিসাইল এবং ডিএফ-২৬ডি, যা “গুয়াম কিলার” নামে পরিচিত।

প্রচলিত অস্ত্র ও আকাশ শক্তি

প্রচলিত সামরিক সরঞ্জামও কুচকাওয়াজে গুরুত্ব পায়। প্রদর্শিত হয় আধুনিক ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও আর্টিলারি ইউনিট। টাইপ ৯৯বি মেইন ব্যাটল ট্যাংক প্রথমবারের মতো কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। PHL-16 স্বচালিত মাল্টিপল রকেট লঞ্চারও প্রদর্শিত হয়। আকাশ থেকে উড়োজাহাজ প্রদর্শনীতে ছিল জে-২০, জে-৩৫ ও জে-১৫ ফাইটার জেট, হালনাগাদ বোম্বার এইচ-৬জে এবং ক্যারিয়ার-ভিত্তিক প্রাথমিক সতর্কীকরণ বিমান KJ-600। KJ-600 কে PLAN-এর টাইপ 003 ফুজিয়ান এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এটি ১,২০০ কিমি পর্যন্ত দীর্ঘ-পাল্লার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা রাখে।

ভূরাজনৈতিক তাৎপর্য

চীনের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক সুস্পষ্ট বার্তা বহন করে। প্রথমত, এটি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি একটি সরাসরি প্রতিরোধমূলক সংকেত, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ও ঘাঁটিগুলোর প্রেক্ষাপটে। চীন দেখাতে চেয়েছে যে সে কেবল আঞ্চলিক শক্তিই নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ বৈশ্বিক সামরিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে, যা মহাশূন্য থেকে সাইবারস্পেস পর্যন্ত প্রতিটি যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত। দ্বিতীয়ত, কুচকাওয়াজে রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তানের নেতাদের উপস্থিতি একটি প্রতীকী রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছে যে চীন বিকল্প আন্তর্জাতিক জোট গড়ে তুলতে চাইছে, যা পশ্চিমা জোটের পাল্টা ভারসাম্য তৈরি করতে পারে। তৃতীয়ত, এই প্রদর্শনী আঞ্চলিক দেশগুলোর জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলো এই প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে নিজেদের প্রতিরক্ষা কৌশল আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে। ফলে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নতুন সামরিক প্রতিযোগিতা ও কৌশলগত অস্থিরতার দিকে ধাবিত হতে পারে।

বেইজিংয়ের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ কেবলমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিচারণ নয়, বরং এটি ছিল চীনের সামরিক আধুনিকায়ন ও বিশ্বশক্তি হওয়ার ঘোষণা। লয়্যাল উইংম্যান ড্রোন, পানির নিচের যান, ডিরেক্টেড এনার্জি অস্ত্র থেকে শুরু করে পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক ত্রিমুখী বাহিনী—সবকিছুই প্রমাণ করে যে চীন যুদ্ধক্ষেত্রের প্রতিটি মাত্রায় প্রস্তুত। এর ফলে বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্যে নতুন পরিবর্তনের সূচনা হবে এবং বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামরিক প্রতিযোগিতা তীব্রতর হবে। এই প্রদর্শনী থেকে স্পষ্ট যে চীন শুধু প্রতিরক্ষার সীমাবদ্ধতায় নেই, বরং বৈশ্বিক নেতৃত্বের আসনে বসার জন্য সামরিক, প্রযুক্তিগত ও কূটনৈতিক সব দিক থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করছে।


ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব বিমানবন্দর বন্ধ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১২:১২:১২
ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব বিমানবন্দর বন্ধ
ছবি: সংগৃহীত

ইয়েমেন থেকে ছোঁড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে ইসরায়েলের তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ১০টার কিছু আগে ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়, যার ফলে তেল আবিব এবং মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। সেনাবাহিনীর দাবি, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করেছে।

তবে, গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলার পর হাজার হাজার ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করে। একই সঙ্গে বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।


বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোয়াইট হাউসের রহস্যজনক পদক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১১:২১:৪৬
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোয়াইট হাউসের রহস্যজনক পদক্ষেপ
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদরদপ্তর। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস সম্প্রতি ৪৯০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা কর্তনের তালিকা থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) বাদ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি আইনপ্রণেতা এবং ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

গত শুক্রবারের ঘোষণায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির অংশ হিসেবে ডব্লিউটিওতে যুক্তরাষ্ট্রের ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের অর্থ সহায়তা কর্তনের কথা বলা হয়েছিল। এই অর্থ কর্তনের ঘোষণার পর ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা এর তীব্র নিন্দা জানান এবং একে কংগ্রেসের বরাদ্দকৃত অর্থের ওপর একতরফা হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-ইওয়ালা এই সমস্যার সমাধানে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিসের প্রধান জেমিসন গ্রিয়ারসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা জানিয়েছেন। ব্যবসায়িক মহল মনে করে, ডব্লিউটিওতে অর্থায়ন বন্ধ করা হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চীনের আধিপত্য বেড়ে যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়বে।

ট্রাম্প প্রশাসন অতীতে ডব্লিউটিওকে ‘দন্তহীন’ বলে সমালোচনা করেছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইট থেকে ডব্লিউটিও-সম্পর্কিত তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যা এই বিতর্কের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে একটি বাণিজ্যিক সূত্র জানিয়েছে, ডব্লিউটিওর আর কোনো তহবিল কর্তন করা হবে না। এই বিষয়ে হোয়াইট হাউস, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিস বা ডব্লিউটিও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় প্রশাসনই ডব্লিউটিওর সমালোচনা করে আসছে, কারণ তাদের মতে, সংস্থাটি বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে মানদণ্ড নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে।


অতিরিক্ত যাত্রীতে ট্র্যাজেডি:নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত ২৯

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১০:৫৫:৫৯
অতিরিক্ত যাত্রীতে ট্র্যাজেডি:নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত ২৯
ছবিঃ সংগৃহীত

নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় নাইজার রাজ্যে ভয়াবহ নৌদুর্ঘটনায় অন্তত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার মালালে নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির রেড ক্রস ও স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।

প্রায় ৮০ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা তুগান সুলে গ্রাম থেকে দুগ্গা অভিমুখে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে নৌকাটি অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ও নদীর ভেতরে থাকা একটি গাছের গুঁড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়।

স্টেট ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (সেমা) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও দু’জন নিখোঁজ রয়েছেন, তবে ৫০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

দুর্ঘটনার পর নদীর দুই পাড়ে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

নাইজেরিয়ার ব্যস্ত নদীগুলোতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায় নিয়মিত ঘটনা। অতিরিক্ত যাত্রী বহন, নৌকার রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, নিরাপত্তা বিধি উপেক্ষা এবং পর্যাপ্ত তদারকির ঘাটতিই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে প্রতিবারই বহু প্রাণহানি ঘটলেও কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


ইকুয়েডরে আবারও মার্কিন উপস্থিতির সম্ভাবনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১০:৪৩:১১
ইকুয়েডরে আবারও মার্কিন উপস্থিতির সম্ভাবনা
ছবিঃ সংগৃহীত

লাতিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর মাদক কার্টেল-সংশ্লিষ্ট সহিংসতার দোলাচলে বিপর্যস্ত। এরই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বুধবার দেশটির রাজধানী কুইটোতে পৌঁছেছেন। ইকুয়েডর সরকার জানিয়েছে, মাদক ও সহিংসতা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শিগগিরই “গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা চুক্তি” স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ায় পাচার হওয়া কোকেনের অন্যতম প্রধান ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হয়েছে ইকুয়েডর। এর ফলে দেশটি এখন আন্তর্জাতিক অপরাধচক্র ও মাফিয়া গোষ্ঠীর কার্যত আস্তানা হয়ে উঠছে।

রুবিও বুধবার রাতে কুইটো পৌঁছান। বৃহস্পতিবার তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়ার সঙ্গে বৈঠক করবেন। ডানপন্থী নোবোয়া নিজ দেশে সেনাবাহিনীর ভূমিকা বাড়ানোর পক্ষে—যা অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি অনুসৃত।

এর আগে ইকুয়েডরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জন রেইমবার্গ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে এবং অচিরেই একাধিক নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। তবে নিরাপত্তা সুরক্ষায় আরও মৌলিক চুক্তি সামনে আসছে, যা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

রুবিওর সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলে কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। তাদের দাবি, এসব অভিযান মূলত মাদক প্রবাহ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, ভেনেজুয়েলা থেকে আসা এক সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযান আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটকানো হলে বিস্ফোরণে ১১ জন নিহত হয়। তবে এর উৎস বা নিহতদের পরিচয় স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেইমবার্গের ভাষায়, “সন্ত্রাসবাদ ও মাদক পাচারের বিরুদ্ধে আমরা এক যৌথ যুদ্ধে নেমেছি।”

ভৌগোলিকভাবে কোকেন উৎপাদনের দুই প্রধান কেন্দ্র কলম্বিয়া ও পেরুর মাঝে অবস্থান করছে ইকুয়েডর। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট কোকেন সরবরাহের প্রায় ৭০ শতাংশ ইকুয়েডরের বন্দর থেকে রপ্তানি হয়, যার প্রায় অর্ধেক যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তির সম্ভাবনা আলোচনায় এসেছে। ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েলা সোমারফেল্ড সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ওয়াশিংটন চাইলে ইকুয়েডরে নিরাপত্তা উপস্থিতি গড়ে তুলতে পারে। উল্লেখ্য, অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী বাহিনী (ডিইএ) দেশটিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় বন্দর মান্তায় মার্কিন নৌঘাঁটিও ছিল। তবে ২০০৯ সালে বামপন্থী তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া ঘাঁটির চুক্তি নবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানালে মার্কিন ঘাঁটি বন্ধ হয়ে যায়।

আজ নতুন করে নিরাপত্তা সহযোগিতার সম্ভাবনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, মাদকবিরোধী লড়াইয়ে ইকুয়েডর ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে আরও শক্তিশালী অবস্থান নিতে চলেছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


পুতিন জানালেন, কেন তিনি এখনো ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ০৯:২৩:২৫
পুতিন জানালেন, কেন তিনি এখনো ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি
ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন যদি শান্তিচুক্তি করতে রাজি না হয়, তবে রাশিয়া সামরিকভাবেই তার সব লক্ষ্য পূরণ করবে। তবে আলোচনার সম্ভাবনা তিনি পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে।

চীনের এক সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার পর পুতিন বলেন, “যদি ইউক্রেন কোনো সমঝোতায় না আসে, তাহলে রাশিয়া সামরিকভাবেই তার লক্ষ্য পূরণ করবে।” এই বক্তব্যকে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী বিশ্বব্যবস্থার প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার পুতিনকে যুদ্ধ থামাতে রাজি করানোর চেষ্টা করেছেন। পুতিন তার এই “আন্তরিক প্রচেষ্টা”র প্রশংসা করলেও এখনো তা মানেননি।

অন্যদিকে, ইউক্রেন সফরে থাকা যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বিবিসিকে বলেন, অন্তত ট্রাম্প পুতিনকে আলোচনার টেবিলে এনেছেন। প্রয়োজনে যুক্তরাজ্য ও তার মিত্ররা রাশিয়ার ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে এবং ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহায়তা দেবে।

আলোচনা সম্ভব, তবে শর্ত আছে

গত মাসে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। ওই বৈঠকে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতা ভাঙার চেষ্টা করেন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে পুতিনের বৈঠকেরও উদ্যোগ নেন। এ বিষয়ে পুতিন বলেন, “আমি কখনোই এমন বৈঠকের সম্ভাবনা বাতিল করিনি। তবে প্রশ্ন হলো, এর কোনো ফল আসবে কি না। দেখা যাক।” তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, জেলেনস্কি চাইলে মস্কোতে আসতে পারেন। যদিও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এটিকে সঙ্গে সঙ্গে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা নিষেধাজ্ঞা ভারতকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে—ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, “পুতিন ভালোভাবেই জানেন তিনি কোথায় অবস্থান করছেন। আমার আলাদা কোনো বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি জানেন আমি কোথায় আছি, এখন তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

বেইজিংয়ে রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, “টানেলের শেষে সামান্য আলো দেখা যাচ্ছে। সাধারণ জ্ঞান কাজ করলে সমাধান সম্ভব। না হলে সামরিকভাবেই আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে হবে।” তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, দনবাস অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেই থাকবে এবং ভবিষ্যতে কোনো শান্তিচুক্তি হলেও পশ্চিমা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দনবাসে প্রযোজ্য হবে না।


বিধ্বস্ত হচ্ছে একের পর এক মহল্লা, গাজায় এবার মানবিক সংকট চরমে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ০৮:৫১:৪০
বিধ্বস্ত হচ্ছে একের পর এক মহল্লা, গাজায় এবার মানবিক সংকট চরমে
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় একদিনে অন্তত ৭৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছেন ৪৩ জন। হামাসের দাবি, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে পুরো পরিবারকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে হত্যা করছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলি সেনারা তীব্র হামলা চালায়। এই ঘটনাকে হামাস ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।

বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি সাবরিন আল-মাবহুহ আল জাজিরাকে জানান, “আমার ভাইকে তার ঘরেই হত্যা করা হয়েছে। স্ত্রী-সন্তানসহ তার পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।” শেখ রাদওয়ান এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজনও এ হামলার শিকার হন। একটি স্কুলের তাঁবুতে গ্রেনেড হামলার ফলে আগুন ধরে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা জাকিয়া সামি বলেন, “যদি গাজা সিটিতে আগ্রাসন বন্ধ না হয়, আমরা সবাই মরব। যারা শুধু দেখছে, কিছু করছে না—আমরা তাদের ক্ষমা করব না।”

বিধ্বস্ত হচ্ছে পুরো মহল্লা, বাড়ছে মানবিক সংকট

গাজার গণমাধ্যম দপ্তর জানায়, গত তিন সপ্তাহে ইসরায়েল অন্তত ১০০ বার রোবট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো আবাসিক ব্লক ও মহল্লা ধ্বংস করেছে। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে গাজা সিটিতেই মারা গেছেন প্রায় ১ হাজার ১০০ মানুষ। আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ সরেজমিনে জানান, “পরিস্থিতি প্রলয়ংকরী। পুরো মহল্লা একের পর এক ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মানুষ কয়েক দশকে যা গড়ে তুলেছিল, সবকিছু হারাচ্ছে। এটি এক দুঃস্বপ্ন।”

মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অবরোধের কারণে খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশ বন্ধ থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় এক শিশুসহ ছয়জন অনাহারে মারা গেছে। চলমান অবরোধকালে ক্ষুধাজনিত কারণে এখন পর্যন্ত ৩৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১৩১ জন শিশু। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, ইসরায়েলের অভিযানে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

শিশুদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাঁচ বছরের নিচে থাকা ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়বে। বর্তমানে মোট ৩ লাখ ২০ হাজার শিশু মারাত্মক খাদ্যসংকটে ভুগছে। খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসি গত আগস্টেই নিশ্চিত করেছে যে উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে, যা দ্রুত দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে।


বেইজিং সফরে কিম জং-উন, আলোচনায় তার মেয়ে জু আয়ে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ২১:৪৮:৪৪
বেইজিং সফরে কিম জং-উন, আলোচনায় তার মেয়ে জু আয়ে
ছবি: সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন বর্তমানে বেইজিং সফরে আছেন। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য চীন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক হলেও, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, কিমের এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো, তার মেয়ে জু আয়েকে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে পরিচয় করানো।

২০২২ সালে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন প্যারেডে বাবার সঙ্গে প্রকাশ্যে আসার পর জু আয়ে সারা বিশ্বের নজর কাড়েন। সেসময় থেকেই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয় যে, কিম পরিবারের পরবর্তী নেতা হতে যাচ্ছেন জু আয়ে।

দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা, বেইজিংয়ে কিমের পেছনে ট্রেন থেকে যে কিশোরীকে নামতে দেখা গেছে, সে তার মেয়ে জু আয়ে। এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সফরে বাবার সফরসঙ্গী হওয়ায় জু আয়ে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন।

কেন জু আয়েকে উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছে?জু আয়ের বয়স আনুমানিক ১২ বছর। সে কিমের একমাত্র সন্তান, যাকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। গণমাধ্যমে তাকে প্রায়শই ‘প্রিয় কন্যা’ বলে ডাকা হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্লেষকদের মতে, কিম তার মেয়েকে উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলছেন। তারা মনে করেন, এত বড় আন্তর্জাতিক সমাবেশে যেখানে বিশ্বের বড় বড় নেতারা উপস্থিত থাকবেন, সেখানে জু আয়েকে সবার সামনে পরিচিত করানোর বিশেষ কারণ আছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ববিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেন বলেন, এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ার পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার দৌড়ে জু আয়ে সবচেয়ে এগিয়ে। তিনি আরও বলেন, জু আয়ে এখন প্রটোকল সংক্রান্ত বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করছে, যা তাকে ভবিষ্যতে উত্তর কোরিয়ার নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে।

সিউলভিত্তিক ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াং মুজিন বলেন, কিম সম্ভবত তার মেয়েকে চীনের নেতৃত্বের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, কারণ চীন উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।

সিউলভিত্তিক সেজং ইনস্টিটিউটের উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ চোং সিয়ং-চ্যাং বলেন, বেইজিং রেলওয়ে স্টেশনের দৃশ্য দেখে বোঝা গেছে, জু আয়ে কেবল দেশেই নয়, বিদেশেও উত্তর কোরিয়ার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।

সূত্র : রয়টার্স


আফগানিস্তানে নতুন আতঙ্ক: বাড়ি থেকেও আশ্রয়হীন হাজারো পরিবার

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৯:৫৭:১২
আফগানিস্তানে নতুন আতঙ্ক: বাড়ি থেকেও আশ্রয়হীন হাজারো পরিবার
আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর চলছে উদ্ধার তৎপরতা। ছবি : সংগৃহীত

পূর্বাঞ্চলীয় আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর অনেক বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। খাবারের সংকট এবং আফটার শকের আতঙ্কে তারা নিজেদের ঘরে ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না। তাদের এই দুর্দশার খবর প্রকাশ করেছে আরব নিউজ।

গত রোববার পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত আফগানিস্তানের একটি পাহাড়বেষ্টিত দুর্গম এলাকায় ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ভূমিকম্পের পর থেকে এখন পর্যন্ত ছয়টি বড় ধরনের আফটার শক অনুভূত হয়েছে।

সবুজ পাহাড়ের ঢাল এখন সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভূমিকম্পের কয়েক দিন পর এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। এদিকে, যেসব বাড়ি আংশিক ধ্বংস হয়েছে, সেগুলোর বাসিন্দারা মেরামতের সাহস পাচ্ছে না, কারণ তারা আশঙ্কা করছে যেকোনো মুহূর্তে এগুলো পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে।

নানগাহার প্রদেশের দার-আই-নুরের বাসিন্দা ইমরান মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ভূমিকম্পের পর থেকে তিনি তার পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে একটি প্লাস্টিকের মাদুরে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমাদের এখন থাকার কোনো জায়গা নেই, এজন্য সবার কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।”

যাদের সামর্থ্য ছিল, তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। আর যাদের সেই সুযোগ হয়নি, তারা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে যা কিছু পেয়েছেন, তা দিয়েই অস্থায়ী আশ্রয় বানিয়েছেন। নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদে তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও সেখানকার বাসিন্দারা আফটার শকের আতঙ্কে আছেন। ৪২ বছর বয়সী চিকিৎসক ফেরেশতা বলেন, “প্রতিবার যখন আমি পা ফেলি, মনে হয় মাটি কেঁপে উঠছে। আমরা ঘরের ভেতরে থাকি না, বাগানেই ঘুমাই, সারাক্ষণ মনে হয় আরেকটা ভূমিকম্প হবে।”

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৪ হাজার তাঁবু বিতরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অব রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এএফপিকে জানিয়েছে, ৭০০টি তাঁবু এখনও বিতরণ করা সম্ভব হয়নি, কারণ অনেক এলাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে না।

পাঠকের মতামত: