এনবিআরের রাজস্ব আদায়ে বড় ধাক্কা, কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকা

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৭ ০৯:০২:৩২
এনবিআরের রাজস্ব আদায়ে বড় ধাক্কা, কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকা

২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আয় বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। এনবিআরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুন মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুন মাসে আদায় ছিল ৫৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকা।

সাধারণত অর্থবছরের শেষ মাসে রাজস্ব আদায়ের হার তুলনামূলক বেশি হয়। তবে এবারে এনবিআর বিলুপ্তির প্রতিবাদে দেড় মাসব্যাপী আন্দোলন এবং শেষ দিকে দুই দিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে রাজস্ব সংগ্রহে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হয়। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ও অন্যান্য অর্থনৈতিক খাতেও স্থবিরতা দেখা দেয়। এমনকি চট্টগ্রাম বন্দরেও কার্যক্রম বন্ধ ছিল ওই সময়।

তবে জুন মাসে রাজস্ব আদায় কম হলেও পুরো অর্থবছরের হিসাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

আন্দোলনের প্রভাব মূল্যায়নে সরকার একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, এই কমিটি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজসহ দেশের সব কাস্টমস ও কর কার্যালয়ের রাজস্ব ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করবে এবং আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে সরকার এনবিআর বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি বিভাগ গঠনের অধ্যাদেশ জারি করে। এর প্রতিবাদে এনবিআরের কর্মকর্তারা প্রায় দুই মাসব্যাপী কর্মবিরতি পালন করেন। সর্বশেষ ২৮ ও ২৯ জুন দেশব্যাপী অফিসে কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়।

আন্দোলনের পরপরই শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। এখন পর্যন্ত তিনজন সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ২১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন এবং ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।

এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব ও উপকর কমিশনার মুকিতুল হাসানকে গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি রাষ্ট্রীয় গোপন দলিল প্রকাশ করে চাকরির শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছেন।

এছাড়া কর বিভাগের নিরাপত্তাপ্রহরী সেলিম মিয়াকেও এনবিআর চেয়ারম্যান সম্পর্কে শিষ্টাচারবহির্ভূত মন্তব্য করায় বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি হোয়াটসঅ্যাপে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ।

সবশেষে, বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে আরও সাত এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে এনবিআর আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত মোট ২১ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ