শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক সিরিজ সিরিজ জয়

খেলা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ২৩:০৩:৪২
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক সিরিজ সিরিজ জয়
তানজিদ তার ক্যারিয়ারের সেরা ৪৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন। ছবি: ক্রিকইনফো

শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি–টোয়েন্টি ম্যাচে স্বাগতিকদের ৮ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিল টাইগাররা। ১৩৩ রানের সহজ লক্ষ্য হেসেখেলেই ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশ, আর সেই জয়ের নায়ক ছিলেন তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান ও স্পিনার মেহেদী হাসান। ম্যাচটি শুরুতেই বাংলাদেশের জন্য কিছুটা ধাক্কা ছিল, কারণ ইনিংসের প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান পারভেজ হোসেন ইমন। কিন্তু এরপর তানজিদ হাসান ও লিটন দাসের দ্বিতীয় উইকেট জুটি ৭৪ রান যোগ করে ম্যাচের রাশ টেনে ধরেন। লিটন ২৬ বলে ৩২ রান করে আউট হলেও অপরপ্রান্তে তানজিদ তার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলেন। ৪৭ বলে ৭৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে তিনি মারেন ১টি চার ও ৬টি বিশাল ছক্কা, যা শ্রীলঙ্কার বোলিং লাইনআপকে পুরোপুরি ছিন্নভিন্ন করে দেয়। ম্যাচ জয়ের শেষ রানের স্কোর করেন তাওহিদ হৃদয়, যিনি ২৫ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন এবং শান্তভাবেই দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন ১৬.৩ ওভারে।

এর আগে টসে জিতে শ্রীলঙ্কা ব্যাটিংয়ে নামে এবং শুরুতে কিছুটা ভালো অবস্থানে থাকলেও দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়। ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা একমাত্র ব্যাটার যিনি লড়াই চালিয়ে যান, ৩৯ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। কিন্তু বাকিদের মধ্যে কেউই বড় ইনিংস গড়তে পারেননি। বাংলাদেশের পক্ষে স্পিনার মেহেদী হাসান বল হাতে ম্যাজিক দেখান। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট—যা তার আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার। এছাড়া মুস্তাফিজুর রহমান, শামীম হোসেন ও শরীফুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন। শ্রীলঙ্কা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রান করে। বাংলাদেশের বোলিং পরিকল্পনা ছিল নিখুঁত, বিশেষ করে মাঝ ওভারে স্পিনারদের প্রভাব ও লাইন-লেন্থে বৈচিত্র্য লঙ্কান ব্যাটারদের ভীষণ ভোগায়।

ম্যাচ শেষে মেহেদী হাসান ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য। এই জয়ে ২–১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ, যা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি–টোয়েন্টি সিরিজ জয় হিসেবেই ইতিহাসে স্থান করে নিল। তরুণদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এই জয়ের মূলে ছিল। বিশেষ করে তানজিদ, হৃদয় ও মেহেদীর আত্মবিশ্বাসী উপস্থাপন ভবিষ্যতের দলের জন্য আশার আলো দেখায়। এই সিরিজ জয় শুধু পরিসংখ্যানগত অর্জন নয়, বরং এটি বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস, পরিকল্পনা ও প্রক্রিয়াগত উন্নতির প্রতিচ্ছবি—যা সামনে বড় টুর্নামেন্টগুলোর জন্য প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ