গোপালগঞ্জে এনসিপি সমাবেশে হামলা

বিচারের মুখোমুখি হবে দোষীরা, প্রতিশ্রুতি অন্তর্বর্তী সরকারের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১৭:৩৬:৩১
বিচারের মুখোমুখি হবে দোষীরা, প্রতিশ্রুতি অন্তর্বর্তী সরকারের

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সংঘটিত বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) বিকেলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই হামলাকে গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতার ওপর নগ্ন আঘাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী সচিব ফয়েজ আহম্মদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, “গোপালগঞ্জে যে সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে নিন্দনীয় ও অমার্জনীয়। শান্তিপূর্ণভাবে এক বছর আগের বিপ্লবী আন্দোলনের বার্ষিকী পালন করতে আসা তরুণ নাগরিকদের ওপর এমন হামলা তাদের মৌলিক অধিকার হরণের শামিল।”

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য, উপস্থিত পুলিশ সদস্য এবং পেশাগত দায়িত্বে নিয়োজিত সাংবাদিকরাও নির্মম হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের ওপর শারীরিক আঘাত, গাড়ি ভাঙচুর, হেনস্তা ও বাধা প্রদানের মাধ্যমে দেশের সংবিধান স্বীকৃত শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারে নগ্ন হস্তক্ষেপ চালানো হয়েছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের এই বিবৃতিতে গোপালগঞ্জে সহিংসতার জন্য সরাসরি দায়ী করা হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ‘ছাত্রলীগ’ এবং সংশ্লিষ্ট দলীয় কর্মীদের। বলা হয়েছে, “এই বর্বরোচিত হামলা, যা নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগ ও দলীয় কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে তার জবাবদিহি অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে। হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।”

বিবৃতিতে হামলার তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের প্রশংসা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে যারা ভয়ভীতি ও হুমকি সত্ত্বেও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে গেছেন, তাদের প্রশংসা করে বলা হয়েছে, “আমরা সাহসী ছাত্রদের অবিচলতা ও দৃঢ় মনোবলের জন্য অভিবাদন জানাই, যারা সব হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সমাবেশ সম্পন্ন করেছেন।”

বিবৃতির শেষাংশে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে পুনরায় জোর দিয়ে বলা হয়, “এই বর্বরতার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে। এটা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছি: বাংলাদেশের মাটিতে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। ন্যায়বিচার অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি।”

এনসিপির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। তরুণদের বিপ্লবী চেতনায় শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণে দেশের গণতন্ত্র ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের একটি বিকল্প দৃশ্যপট তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু দিনের শেষে সংঘটিত সহিংসতা সেই প্রত্যাশাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়।

নির্বাচনকালীন এই স্পর্শকাতর সময়ে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এমন হামলা দেশের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এক অশনি সংকেত বলেই বিবেচিত হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও বিচার না হলে তা আগামী দিনের রাজনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে এবং তরুণ নেতৃত্বের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ