জয়পুরহাটে নাটকীয় ধাওয়া, জনতার সাহসে ধরা পড়ল ছিনতাইকারী

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১৪:৫৮:৫৯
জয়পুরহাটে নাটকীয় ধাওয়া, জনতার সাহসে ধরা পড়ল ছিনতাইকারী

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় ঘটেছে নাটকীয় ও রুদ্ধশ্বাস এক ছিনতাই-পিছুধাওয়ের ঘটনা, যা যেন বাস্তবের রূপে সিনেমার দৃশ্য। প্রায় দুই লাখ টাকা ছিনতাই করে পালানোর সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় থাকা দুই দুর্বৃত্তকে ধাওয়া করে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে জনতার সহায়তায় আটক করা হয়। অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ অর্থ ও মুঠোফোন। আটক ব্যক্তিদের পরবর্তীতে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে জয়পুরহাট-মোকামতলা আঞ্চলিক সড়কের মাটিঘর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। মামলার বাদী মাহফুজ ইসলাম জয়পুরহাট সদরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন। দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে তিনি প্রতিষ্ঠানের ৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা জেলা সদরের একটি ব্যাংকে নিয়ে যান। ব্যাংকে ৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা জমা দিয়ে অবশিষ্ট দুই লাখ টাকা নিয়ে ফেরার পথে ইসলামী ব্যাংকের শাখার সামনে সিএনজি অটোরিকশায় থাকা দুর্বৃত্তদের ফাঁদে পড়েন।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, মাহফুজের কাছে এসে অটোরিকশার চালক তাকে বিদেশি নোট বদলানো যায় এমন জায়গা সম্পর্কে জানতে চায়। মুহূর্তেই অটোরিকশা থেকে আরেক ব্যক্তি নেমে তার সামনে চাকু উঁচিয়ে ভয় দেখায় এবং দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত অটোরিকশা চালিয়ে ক্ষেতলালের দিকে পালিয়ে যায়। মাহফুজের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং ঘটনার পরপরই মাহফুজ ও স্থানীয় কয়েকজন মোটরসাইকেলে করে ছিনতাইকারীদের পিছু নেন।

প্রায় সাত কিলোমিটার দৌঁড়াদৌড়ির পর জয়পুরহাট-মোকামতলা সড়কের মাটিঘর এলাকায় স্থানীয়দের সহায়তায় ব্যারিকেড দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি থামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় সিএনজিতে থাকা দুই ছিনতাইকারীকে আটক করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে এক লাখ নগদ টাকা, একটি মুঠোফোন ও অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার উকিলপাড়ার শাকিল হোসেন (৩৯) এবং গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দক্ষিণ ভাঙা মোড় এলাকার সাজু মিয়া (৪০)। ক্ষেতলাল থানার উপপরিদর্শক কোরবান আলী জানান, আটককৃতদের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাঁদের জয়পুরহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় রাতে থানায় মামলা করেন মাহফুজ ইসলাম। পরদিন সকালে পুলিশ আসামিদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়। জয়পুরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল কাদের জানান, পুরো ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ঘটনাটি শুধু এলাকায় নয়, পুরো জেলায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ সাহসিকতা ও সচেতনতায় কীভাবে অপরাধ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে, এই ঘটনাটি তার বাস্তব উদাহরণ।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ