‘বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে চেয়ে নিজেরাই মুছে যাবে’ — এনসিপি প্রসঙ্গে আনিস আলমগীর

সোশাল মিডিয়া ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২১ ০৮:৩৫:০৫
‘বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে চেয়ে নিজেরাই মুছে যাবে’ — এনসিপি প্রসঙ্গে আনিস আলমগীর
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বঙ্গবন্ধুর নাম ও আদর্শকে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক ও কলামিস্ট আনিস আলমগীর। তিনি বলেন, ইতিহাস সাক্ষী, যারা বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে চেয়েছে, তাদের নামই ইতিহাস থেকে হারিয়ে গেছে।

এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম ও তার সহযোগীরা গোপালগঞ্জ সফরে গিয়ে উস্কানিমূলকভাবে “মুজিববাদ মুর্দাবাদ” স্লোগান দিয়েছেন। সফরের আগেই তারা গোপালগঞ্জ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার কথা বলেন এবং ‘জুলাই পদযাত্রা’র নাম পরিবর্তন করে করেন ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’, যা আনিস আলমগীরের মতে নিছক কাকতালীয় নয়, বরং প্রতীকী আগ্রাসনের অংশ।

তিনি লিখেছেন, এই উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের ফল আজ দৃশ্যমান—সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারা ছাড়া তারা দেশের কোথাও কার্যক্রম চালাতে পারছে না। অন্যদিকে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রশ্ন তুলেছে, কেন তাদেরকে ভিআইপি নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে? এমনকি বিএনপি নেতারা জানতে চেয়েছেন—তারেক রহমান দেশে ফিরলে তাকেও কি এভাবে পাহারা দেওয়া হবে?

আনিস আলমগীর আরো লিখেছেন, গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুকে অবজ্ঞা করে বক্তব্য দেওয়ার পর নাহিদ ইসলাম আবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে তুলে ধরছেন, যা একধরনের ‘রাজনৈতিক ভারসাম্য আনার চেষ্টা’। অথচ তাদের বক্তব্য ও কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে, যেন শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া মুক্তিযুদ্ধই হয়নি।

তার ভাষায়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ভাস্কর্য, মুরাল থেকে শুরু করে স্থাপনাগুলো থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম ও ছবি মুছে ফেলার প্রতিযোগিতায় নেমেছে এনসিপি। এমনকি ইউনূস সরকার তাদের খুশি করতে নতুন মুদ্রা থেকেও বঙ্গবন্ধুর ছবি সরিয়ে দিয়েছে।

আনিস আলমগীর বলেন, বিএনপি ও জামায়াতকে ছাড়িয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগবিরোধিতার নতুন রূপ দেখাচ্ছে এনসিপি। যেন আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার নৈতিক দায়িত্ব তারা নিজেরাই কাঁধে তুলে নিয়েছে। তবে এর ফলে তারা একঘরে হয়ে পড়েছে, এমনকি দেশি-বিদেশি মুরুব্বিরাও তাদের পক্ষে জনসমর্থন গড়ে তুলতে পারছে না।

তিনি এরশাদ আমলে গঠিত ফ্রিডম পার্টির উদাহরণ টেনে বলেন, “তাদেরও এভাবে দাঁড় করানো হয়েছিল আওয়ামী লীগের বিপরীতে, কিন্তু আজ তাদের নাম ইতিহাস থেকেই মুছে গেছে।”

আনিস আলমগীর তার পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন, “ড. ইউনূস সরকারের বিদায়ের পর কে পাহারা দেবে এই দলটিকে? বিএনপি-জামায়াত কি সেই দায়িত্ব নেবে? যারা নিজেরাই মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ধ্বংস করছে, তারা কি তাদের গড়া ‘জুলাই স্তম্ভ’ টিকিয়ে রাখতে পারবে?”

তার মতে, এনসিপি হয়তো পারবে—শুধু তখনই, যদি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ না থাকে, আর যদি তারা সত্যিই মুজিববাদকে কবর দিতে সক্ষম হয়। তবে ইতিহাস বারবার দেখিয়েছে, যারা বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে চেয়েছে, শেষ পর্যন্ত তাদেরই নাম হারিয়ে গেছে।

আনিস আলমগীর লিখেছেন—“এনসিপি কি পারবে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে দিতে? ফ্রিডম পার্টি এখন কোথায়? এবারের পালা কার?”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ