ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, ষড়যন্ত্র করে ঠেকানো যাবে না: শামসুজ্জামান দুদু

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২০ ১৫:৩২:৩২
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, ষড়যন্ত্র করে ঠেকানো যাবে না: শামসুজ্জামান দুদু

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা যতই চেষ্টা করুক না কেন, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ভারত বা অন্য কোনো আঞ্চলিক শক্তি এই নির্বাচন রুখে দিতে পারবে না। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষই প্রমাণ করবে গণতন্ত্রের পক্ষে তারা কার পাশে দাঁড়িয়েছে।

রোববার (২০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রজন্ম দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য দেন তিনি। সমাবেশটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলমান 'ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের' প্রতিবাদে আয়োজন করা হয়।

দুদু বলেন, দেশে এখন বহুমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। স্বৈরতন্ত্রের পতনের পর গণতন্ত্রের যে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তার সফল বাস্তবায়নের জন্য একটি নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। তিনি সতর্ক করে বলেন, নির্বাচন বিলম্বিত করার অর্থই হবে দেশকে অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দেওয়া। এতে কুচক্রী মহল ও দেশবিরোধী শক্তির হাতে সময় যাবে, যারা আবারো দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাবে।

বিএনপি এই নেতা অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর একটি বড় দেশ আশ্রয় দিয়েছে শেখ হাসিনাসহ কিছু বিতাড়িত গোষ্ঠীকে। সেই গোষ্ঠী বর্তমানে বিদেশ থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। একইসঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কিছু নেতাও ‘আপত্তিকর ও উস্কানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ড. ইউনূসকে বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দলই সমর্থন জানিয়েছে। তার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে শুরু করে। তবে এই স্থিতিশীলতাকে কেউ কেউ হীনমন্যতার কারণে আক্রমণ করছে। তিনি সম্প্রতি চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে তার একটি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।

দুদু সরাসরি মন্তব্য করেন, “সালাহউদ্দিন সাহেব এখন একটি রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র। তাঁকে সমালোচনা করা যাবে না, সেটা নয়। কিন্তু স্বাধীনতার নামে আপত্তিকর বক্তব্য দিলে, সেটি উস্কানিমূলক হয়ে ওঠে। উস্কানির মাধ্যমে কেউ যদি পরিস্থিতি ঘোলাটে করে স্বৈরতন্ত্রের পথ খুলে দিতে চায়, সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।”

বিএনপির এই নেতা জোর দিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এই চারটি বিষয়ে কোনো আপস নেই। “এই জাতি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছে, ৭১-এর ইতিহাস বিকৃতি কিংবা উস্কানির জবাব আমরা দেব ব্যালটের মাধ্যমে।”

দুদু দাবি করেন, বিএনপি মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। অনেক সময়ে সরকারপন্থী শক্তির কাছ থেকে অশ্লীল ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য আসার পরও বিএনপি শান্ত থেকেছে। বিএনপির কেউ কোথাও কোনো বক্তাকে আক্রমণ করেনি। তিনি বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীরা ধৈর্যশীল, তারা জানে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পথে কেবল ধৈর্য আর সহিংসতাহীন প্রতিরোধেই জয় সম্ভব।”

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্রজন্ম দলের সভাপতি জনি হোসেন সরকার। এছাড়াও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, নির্বাহী সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির ও মৎস্যজীদলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ