ডিবি হারুনকে নিয়ে ডা. সাবরিনার মুখ খুলল, জানালেন গোপন কাহিনী

সোশাল মিডিয়া ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১২:৩৫:৩৭
ডিবি হারুনকে নিয়ে ডা. সাবরিনার মুখ খুলল, জানালেন গোপন কাহিনী

বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী সম্প্রতি সাবেক গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে আলোচনার ঝড় তুলেছেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে সাবরিনা বলেন, হারুন তার প্রতি বারবার ‘আন-অফিশিয়াল’ আচরণ করেছেন, যা আইন ও প্রটোকলের পরিপন্থী।

সাক্ষাৎকারে ডা. সাবরিনা দাবি করেন, হারুন অর রশিদ তাকে কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে তলব করেননি। বরং ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে বারবার দেখা করতে বলতেন। তিনি বলেন, "হারুন সাহেব আমাকে তিনবার ফোন করে বলেন- ‘একটু আসেন, কথা আছে’। অথচ আমি তখন তদন্তাধীন মামলার মূল ব্যক্তি ছিলাম না, এমনকি জেকেজির চেয়ারম্যান বা কোনো নথিভুক্ত স্বাক্ষরকারীও না।"

সাবরিনার ভাষ্যমতে, ওই সময় তিনি বাইরে অবস্থান করছিলেন। তবে হারুনের আচরণ ও তলবের ধরন নিয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেন, "বাবা বলতেন যদি ডাক আসে, তা যেন নিয়ম মেনে হয়। তার নামে তখন নানা ধরনের গসিপ প্রচলিত ছিল। আমি জানি না সেগুলো কতটা সত্যি, কিন্তু আমার পরিবার চায়নি আমি এভাবে কারও সঙ্গে দেখা করি।"

ডা. সাবরিনা অভিযোগ করেন, গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন নাটকীয়তা করতে ভালোবাসতেন। তিনি বলেন, "যেদিন আমাকে ডাকা হয়, আমি দেখলাম সাংবাদিকরা আগেই উপস্থিত। এটা কি সাধারণ ঘটনা? কীভাবে সাংবাদিকরা আগে থেকে জানলো? এরপর আমাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়, অথচ সেদিন আমার সঙ্গে কেবল দুটো প্রশ্ন করা হয়েছিল—আমি কোন মেডিকেল কলেজে পড়েছি এবং কোন বিসিএস ব্যাচে ছিলাম।"

গ্রেপ্তারের পর মুক্তি পেলেও সাবরিনার দাবি, ডিবি হারুন তার ওপর নজরদারি অব্যাহত রাখেন। সাবরিনা বলেন, “আমার একটি বই ‘সমকামিতা’ নিয়ে লেখা বলে দাবি করে সেটি বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করেছিলেন হারুন, যদিও ওই বইয়ের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না।”

এই সাবেক চিকিৎসক বলেন, হারুন যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস করত না। তিনি বলেন, "একবার এক সাংবাদিক আমাকে নিয়ে গসিপ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে হারুন উত্তর দেন—আমি বড় বড় অপরাধী ধরি, তাই অনেকে পছন্দ করে না। সে সময় আমার নাম বলেননি, কিন্তু আমি বুঝেছিলাম, তিনি আমাকে ইঙ্গিত করেই বলছেন।"

বর্তমানে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পরই এসব বিষয়ে প্রকাশ্যে বলার সাহস পাচ্ছেন বলে জানান ডা. সাবরিনা। তার ভাষায়, "তখন সাহস ছিল না, হারুনের বিপুল ক্ষমতা ছিল। এখন তিনি আর সেই জায়গায় নেই, তাই আমি বলতে পারছি।"

এই মন্তব্যগুলোর পর প্রশাসন ও রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক ডিবি কর্মকর্তার ‘প্রভাব-প্রতিপত্তি’ এবং 'ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে' ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। পাশাপাশি, ডা. সাবরিনার এই অভিযোগ সামনে আসায় প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও পুলিশি তদন্ত প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।প্রশাসন এখনও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলে চাপ বাড়ছে এই অভিযোগগুলোর যথাযথ তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ