ঝড়ে উল্টে গেল নৌকা, ভিয়েতনামে দুঃস্বপ্নের দিন

ভিয়েতনামের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হা লং উপসাগরে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন, আর এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৫ জন। শনিবার একটি পর্যটকবাহী নৌকা আচমকা ঝড়ে পড়ে উল্টে গেলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। রবিবারও নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে জোরালো উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে দেশটির উদ্ধারকর্মীরা।
‘ওয়ান্ডার সি’ নামের নৌযানটিতে ৪৮ জন যাত্রী ও ৫ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। নৌকাটি যখন হা লং উপসাগরে ভ্রমণে ছিল, তখন হঠাৎ করেই প্রবল বৃষ্টিসহ ঝড় শুরু হয়। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই নৌকাটি ডুবে যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম VNExpress জানায়, যাত্রীদের অধিকাংশই হ্যানয় শহর থেকে আসা পরিবার—যাদের মধ্যে ছিল ২০ জনের বেশি শিশু।
শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে ১১ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয় এবং ৩৪টি মরদেহ উদ্ধার করে তীরে আনা হয়। পরে নৌকার কেবিন থেকে আরও তিনজন ক্রু সদস্যের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এখনও যেসব নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের সন্ধানে রবিবার সকালেও অভিযান অব্যাহত ছিল।
একজন জীবিত উদ্ধার হওয়া ১০ বছর বয়সী শিশু সংবাদমাধ্যম VietnamNet-কে বলেন, “আমি গভীরভাবে শ্বাস নিয়ে এক ফাঁকা জায়গা দিয়ে সাঁতরে নিচে গিয়ে আবার ওপরে উঠে এসেছিলাম। চিৎকার করে সাহায্য চাইছিলাম। পরে এক নৌকায় থাকা সৈনিকরা আমাকে তুলে নেন।”
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে জরুরি উদ্ধার তৎপরতা চালাতে প্রতিরক্ষা ও জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, "এই ঘটনার সঠিক কারণ অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
স্থানীয় বাসিন্দা ট্রান ট্রং হুং বলেন, “দুপুর ২টার দিকে হঠাৎ আকাশ অন্ধকার হয়ে যায়। বিশাল সাইজের শিলাবৃষ্টি, প্রচণ্ড বজ্রপাত ও ঝড়ো হাওয়ায় চারদিক অস্থির হয়ে ওঠে।”
ঝড়ের আগের তিন দিন উত্তরের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। শনিবার শুধু হা লং-এ নয়, হ্যানয়, থাই গুয়েন এবং বাক নিং প্রদেশেও প্রবল বৃষ্টি ও ঝড় হয়। রাজধানীতে অনেক গাছ পড়ে যায় তীব্র বাতাসে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মাই ভান খিয়েম বলেন, উত্তর ভিয়েতনামের এই বজ্রঝড় দক্ষিণ চীন সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘উইফা’র কারণে নয়। তবে রবিবার ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছিল এবং আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এটি ভিয়েতনামে আছড়ে পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।
উল্লেখ্য, হা লং উপসাগর প্রতিবছর কোটি কোটি পর্যটক আকৃষ্ট করে এর সবুজ নীল পানি ও চুনাপাথরের দ্বীপগুলোর জন্য। তবে গত বছরও ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে ৩০টি নৌযান ডুবে যায় এই এলাকায়। চলতি মাসেই ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের কাছে একটি ফেরি ডুবে ১৮ জনের মৃত্যু ঘটে।
-নাজমুল হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোয়াইট হাউসের রহস্যজনক পদক্ষেপ
যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস সম্প্রতি ৪৯০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা কর্তনের তালিকা থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) বাদ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি আইনপ্রণেতা এবং ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবারের ঘোষণায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির অংশ হিসেবে ডব্লিউটিওতে যুক্তরাষ্ট্রের ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের অর্থ সহায়তা কর্তনের কথা বলা হয়েছিল। এই অর্থ কর্তনের ঘোষণার পর ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা এর তীব্র নিন্দা জানান এবং একে কংগ্রেসের বরাদ্দকৃত অর্থের ওপর একতরফা হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-ইওয়ালা এই সমস্যার সমাধানে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিসের প্রধান জেমিসন গ্রিয়ারসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা জানিয়েছেন। ব্যবসায়িক মহল মনে করে, ডব্লিউটিওতে অর্থায়ন বন্ধ করা হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চীনের আধিপত্য বেড়ে যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়বে।
ট্রাম্প প্রশাসন অতীতে ডব্লিউটিওকে ‘দন্তহীন’ বলে সমালোচনা করেছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইট থেকে ডব্লিউটিও-সম্পর্কিত তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যা এই বিতর্কের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে একটি বাণিজ্যিক সূত্র জানিয়েছে, ডব্লিউটিওর আর কোনো তহবিল কর্তন করা হবে না। এই বিষয়ে হোয়াইট হাউস, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিস বা ডব্লিউটিও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় প্রশাসনই ডব্লিউটিওর সমালোচনা করে আসছে, কারণ তাদের মতে, সংস্থাটি বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে মানদণ্ড নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে।
অতিরিক্ত যাত্রীতে ট্র্যাজেডি:নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত ২৯
নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় নাইজার রাজ্যে ভয়াবহ নৌদুর্ঘটনায় অন্তত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার মালালে নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির রেড ক্রস ও স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
প্রায় ৮০ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা তুগান সুলে গ্রাম থেকে দুগ্গা অভিমুখে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে নৌকাটি অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ও নদীর ভেতরে থাকা একটি গাছের গুঁড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়।
স্টেট ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (সেমা) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও দু’জন নিখোঁজ রয়েছেন, তবে ৫০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর নদীর দুই পাড়ে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
নাইজেরিয়ার ব্যস্ত নদীগুলোতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায় নিয়মিত ঘটনা। অতিরিক্ত যাত্রী বহন, নৌকার রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, নিরাপত্তা বিধি উপেক্ষা এবং পর্যাপ্ত তদারকির ঘাটতিই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে প্রতিবারই বহু প্রাণহানি ঘটলেও কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
-সুত্রঃ এ এফ পি
ইকুয়েডরে আবারও মার্কিন উপস্থিতির সম্ভাবনা
লাতিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর মাদক কার্টেল-সংশ্লিষ্ট সহিংসতার দোলাচলে বিপর্যস্ত। এরই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বুধবার দেশটির রাজধানী কুইটোতে পৌঁছেছেন। ইকুয়েডর সরকার জানিয়েছে, মাদক ও সহিংসতা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শিগগিরই “গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা চুক্তি” স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ায় পাচার হওয়া কোকেনের অন্যতম প্রধান ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হয়েছে ইকুয়েডর। এর ফলে দেশটি এখন আন্তর্জাতিক অপরাধচক্র ও মাফিয়া গোষ্ঠীর কার্যত আস্তানা হয়ে উঠছে।
রুবিও বুধবার রাতে কুইটো পৌঁছান। বৃহস্পতিবার তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়ার সঙ্গে বৈঠক করবেন। ডানপন্থী নোবোয়া নিজ দেশে সেনাবাহিনীর ভূমিকা বাড়ানোর পক্ষে—যা অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি অনুসৃত।
এর আগে ইকুয়েডরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জন রেইমবার্গ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে এবং অচিরেই একাধিক নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। তবে নিরাপত্তা সুরক্ষায় আরও মৌলিক চুক্তি সামনে আসছে, যা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
রুবিওর সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলে কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। তাদের দাবি, এসব অভিযান মূলত মাদক প্রবাহ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, ভেনেজুয়েলা থেকে আসা এক সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযান আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটকানো হলে বিস্ফোরণে ১১ জন নিহত হয়। তবে এর উৎস বা নিহতদের পরিচয় স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেইমবার্গের ভাষায়, “সন্ত্রাসবাদ ও মাদক পাচারের বিরুদ্ধে আমরা এক যৌথ যুদ্ধে নেমেছি।”
ভৌগোলিকভাবে কোকেন উৎপাদনের দুই প্রধান কেন্দ্র কলম্বিয়া ও পেরুর মাঝে অবস্থান করছে ইকুয়েডর। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট কোকেন সরবরাহের প্রায় ৭০ শতাংশ ইকুয়েডরের বন্দর থেকে রপ্তানি হয়, যার প্রায় অর্ধেক যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে।
এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তির সম্ভাবনা আলোচনায় এসেছে। ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েলা সোমারফেল্ড সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ওয়াশিংটন চাইলে ইকুয়েডরে নিরাপত্তা উপস্থিতি গড়ে তুলতে পারে। উল্লেখ্য, অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী বাহিনী (ডিইএ) দেশটিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় বন্দর মান্তায় মার্কিন নৌঘাঁটিও ছিল। তবে ২০০৯ সালে বামপন্থী তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া ঘাঁটির চুক্তি নবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানালে মার্কিন ঘাঁটি বন্ধ হয়ে যায়।
আজ নতুন করে নিরাপত্তা সহযোগিতার সম্ভাবনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, মাদকবিরোধী লড়াইয়ে ইকুয়েডর ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে আরও শক্তিশালী অবস্থান নিতে চলেছে।
-সুত্রঃ এ এফ পি
পুতিন জানালেন, কেন তিনি এখনো ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি
ইউক্রেন যদি শান্তিচুক্তি করতে রাজি না হয়, তবে রাশিয়া সামরিকভাবেই তার সব লক্ষ্য পূরণ করবে। তবে আলোচনার সম্ভাবনা তিনি পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে।
চীনের এক সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার পর পুতিন বলেন, “যদি ইউক্রেন কোনো সমঝোতায় না আসে, তাহলে রাশিয়া সামরিকভাবেই তার লক্ষ্য পূরণ করবে।” এই বক্তব্যকে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী বিশ্বব্যবস্থার প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার পুতিনকে যুদ্ধ থামাতে রাজি করানোর চেষ্টা করেছেন। পুতিন তার এই “আন্তরিক প্রচেষ্টা”র প্রশংসা করলেও এখনো তা মানেননি।
অন্যদিকে, ইউক্রেন সফরে থাকা যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বিবিসিকে বলেন, অন্তত ট্রাম্প পুতিনকে আলোচনার টেবিলে এনেছেন। প্রয়োজনে যুক্তরাজ্য ও তার মিত্ররা রাশিয়ার ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে এবং ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহায়তা দেবে।
আলোচনা সম্ভব, তবে শর্ত আছে
গত মাসে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। ওই বৈঠকে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতা ভাঙার চেষ্টা করেন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে পুতিনের বৈঠকেরও উদ্যোগ নেন। এ বিষয়ে পুতিন বলেন, “আমি কখনোই এমন বৈঠকের সম্ভাবনা বাতিল করিনি। তবে প্রশ্ন হলো, এর কোনো ফল আসবে কি না। দেখা যাক।” তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, জেলেনস্কি চাইলে মস্কোতে আসতে পারেন। যদিও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এটিকে সঙ্গে সঙ্গে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা নিষেধাজ্ঞা ভারতকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে—ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, “পুতিন ভালোভাবেই জানেন তিনি কোথায় অবস্থান করছেন। আমার আলাদা কোনো বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি জানেন আমি কোথায় আছি, এখন তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
বেইজিংয়ে রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, “টানেলের শেষে সামান্য আলো দেখা যাচ্ছে। সাধারণ জ্ঞান কাজ করলে সমাধান সম্ভব। না হলে সামরিকভাবেই আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে হবে।” তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, দনবাস অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেই থাকবে এবং ভবিষ্যতে কোনো শান্তিচুক্তি হলেও পশ্চিমা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দনবাসে প্রযোজ্য হবে না।
বিধ্বস্ত হচ্ছে একের পর এক মহল্লা, গাজায় এবার মানবিক সংকট চরমে
ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় একদিনে অন্তত ৭৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছেন ৪৩ জন। হামাসের দাবি, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে পুরো পরিবারকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে হত্যা করছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলি সেনারা তীব্র হামলা চালায়। এই ঘটনাকে হামাস ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি সাবরিন আল-মাবহুহ আল জাজিরাকে জানান, “আমার ভাইকে তার ঘরেই হত্যা করা হয়েছে। স্ত্রী-সন্তানসহ তার পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।” শেখ রাদওয়ান এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজনও এ হামলার শিকার হন। একটি স্কুলের তাঁবুতে গ্রেনেড হামলার ফলে আগুন ধরে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা জাকিয়া সামি বলেন, “যদি গাজা সিটিতে আগ্রাসন বন্ধ না হয়, আমরা সবাই মরব। যারা শুধু দেখছে, কিছু করছে না—আমরা তাদের ক্ষমা করব না।”
বিধ্বস্ত হচ্ছে পুরো মহল্লা, বাড়ছে মানবিক সংকট
গাজার গণমাধ্যম দপ্তর জানায়, গত তিন সপ্তাহে ইসরায়েল অন্তত ১০০ বার রোবট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো আবাসিক ব্লক ও মহল্লা ধ্বংস করেছে। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে গাজা সিটিতেই মারা গেছেন প্রায় ১ হাজার ১০০ মানুষ। আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ সরেজমিনে জানান, “পরিস্থিতি প্রলয়ংকরী। পুরো মহল্লা একের পর এক ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মানুষ কয়েক দশকে যা গড়ে তুলেছিল, সবকিছু হারাচ্ছে। এটি এক দুঃস্বপ্ন।”
মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অবরোধের কারণে খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশ বন্ধ থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় এক শিশুসহ ছয়জন অনাহারে মারা গেছে। চলমান অবরোধকালে ক্ষুধাজনিত কারণে এখন পর্যন্ত ৩৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১৩১ জন শিশু। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, ইসরায়েলের অভিযানে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
শিশুদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাঁচ বছরের নিচে থাকা ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়বে। বর্তমানে মোট ৩ লাখ ২০ হাজার শিশু মারাত্মক খাদ্যসংকটে ভুগছে। খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসি গত আগস্টেই নিশ্চিত করেছে যে উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে, যা দ্রুত দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে।
বেইজিং সফরে কিম জং-উন, আলোচনায় তার মেয়ে জু আয়ে
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন বর্তমানে বেইজিং সফরে আছেন। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য চীন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক হলেও, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, কিমের এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো, তার মেয়ে জু আয়েকে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে পরিচয় করানো।
২০২২ সালে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন প্যারেডে বাবার সঙ্গে প্রকাশ্যে আসার পর জু আয়ে সারা বিশ্বের নজর কাড়েন। সেসময় থেকেই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয় যে, কিম পরিবারের পরবর্তী নেতা হতে যাচ্ছেন জু আয়ে।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা, বেইজিংয়ে কিমের পেছনে ট্রেন থেকে যে কিশোরীকে নামতে দেখা গেছে, সে তার মেয়ে জু আয়ে। এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সফরে বাবার সফরসঙ্গী হওয়ায় জু আয়ে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন।
কেন জু আয়েকে উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছে?জু আয়ের বয়স আনুমানিক ১২ বছর। সে কিমের একমাত্র সন্তান, যাকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। গণমাধ্যমে তাকে প্রায়শই ‘প্রিয় কন্যা’ বলে ডাকা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্লেষকদের মতে, কিম তার মেয়েকে উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলছেন। তারা মনে করেন, এত বড় আন্তর্জাতিক সমাবেশে যেখানে বিশ্বের বড় বড় নেতারা উপস্থিত থাকবেন, সেখানে জু আয়েকে সবার সামনে পরিচিত করানোর বিশেষ কারণ আছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ববিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেন বলেন, এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ার পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার দৌড়ে জু আয়ে সবচেয়ে এগিয়ে। তিনি আরও বলেন, জু আয়ে এখন প্রটোকল সংক্রান্ত বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করছে, যা তাকে ভবিষ্যতে উত্তর কোরিয়ার নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে।
সিউলভিত্তিক ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াং মুজিন বলেন, কিম সম্ভবত তার মেয়েকে চীনের নেতৃত্বের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, কারণ চীন উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।
সিউলভিত্তিক সেজং ইনস্টিটিউটের উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ চোং সিয়ং-চ্যাং বলেন, বেইজিং রেলওয়ে স্টেশনের দৃশ্য দেখে বোঝা গেছে, জু আয়ে কেবল দেশেই নয়, বিদেশেও উত্তর কোরিয়ার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।
সূত্র : রয়টার্স
আফগানিস্তানে নতুন আতঙ্ক: বাড়ি থেকেও আশ্রয়হীন হাজারো পরিবার
পূর্বাঞ্চলীয় আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর অনেক বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। খাবারের সংকট এবং আফটার শকের আতঙ্কে তারা নিজেদের ঘরে ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না। তাদের এই দুর্দশার খবর প্রকাশ করেছে আরব নিউজ।
গত রোববার পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত আফগানিস্তানের একটি পাহাড়বেষ্টিত দুর্গম এলাকায় ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ভূমিকম্পের পর থেকে এখন পর্যন্ত ছয়টি বড় ধরনের আফটার শক অনুভূত হয়েছে।
সবুজ পাহাড়ের ঢাল এখন সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভূমিকম্পের কয়েক দিন পর এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। এদিকে, যেসব বাড়ি আংশিক ধ্বংস হয়েছে, সেগুলোর বাসিন্দারা মেরামতের সাহস পাচ্ছে না, কারণ তারা আশঙ্কা করছে যেকোনো মুহূর্তে এগুলো পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে।
নানগাহার প্রদেশের দার-আই-নুরের বাসিন্দা ইমরান মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ভূমিকম্পের পর থেকে তিনি তার পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে একটি প্লাস্টিকের মাদুরে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমাদের এখন থাকার কোনো জায়গা নেই, এজন্য সবার কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।”
যাদের সামর্থ্য ছিল, তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। আর যাদের সেই সুযোগ হয়নি, তারা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে যা কিছু পেয়েছেন, তা দিয়েই অস্থায়ী আশ্রয় বানিয়েছেন। নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদে তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও সেখানকার বাসিন্দারা আফটার শকের আতঙ্কে আছেন। ৪২ বছর বয়সী চিকিৎসক ফেরেশতা বলেন, “প্রতিবার যখন আমি পা ফেলি, মনে হয় মাটি কেঁপে উঠছে। আমরা ঘরের ভেতরে থাকি না, বাগানেই ঘুমাই, সারাক্ষণ মনে হয় আরেকটা ভূমিকম্প হবে।”
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৪ হাজার তাঁবু বিতরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অব রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এএফপিকে জানিয়েছে, ৭০০টি তাঁবু এখনও বিতরণ করা সম্ভব হয়নি, কারণ অনেক এলাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে না।
চায়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একই প্রেমিকের সঙ্গে দুই গৃহবধূর পলায়ন
একই পরিবারের দুই গৃহবধূ এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের তিন মেয়েকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে দুজনেই মিলে পালিয়ে যান একই পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে। তবে স্বপ্নের ঘর বাঁধার আগেই পুলিশ তাদের আটক করেছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায়।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছেন সেই প্রেমিক। স্থানীয় সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, সোমবার বিকেলে হঠাৎ করেই ইয়াসিন শেখ এবং তার ভাই আনিসুর শেখের স্ত্রীরা নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা তাদের কোথাও খুঁজে না পেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তারা জানান, তাদের স্ত্রীরা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে যাননি, বরং প্রতিবেশী যুবক আরিফ মোল্লা তাদের প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন। আরিফের স্ত্রীও পুলিশের কাছে একই দাবি করেন।
পরপর দুটি পরিবার থেকে একই ধরনের অভিযোগ আসায় পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে। তারা দুই গৃহবধূর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে। তবে পুলিশ সেখানে পৌঁছানোর আগেই প্রেমিক আরিফ মোল্লা পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে।
অবশেষে মঙ্গলবার রাতে ওই দুই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। বুধবার তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা স্বীকার করেন, একই প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর জন্যই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তারা জানান, বাড়ির লোকজন যেন তাদের আটকাতে না পারে, সেজন্য তারা চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন।
পুলিশের প্রশ্নের জবাবে বড় জা কুলচান বেগম অকপটে জানান, “হ্যাঁ, আমরা দুজন একই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছিলাম।” পুলিশের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা। কারণ সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় একাধিক প্রেমিকের নাম উঠে আসে। কিন্তু এখানে দুই নারীর লক্ষ্য একই ব্যক্তি হওয়ায় তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
এই ঘটনায় পুরো এলাকায় তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, একই পরিবারের দুই গৃহবধূ যে একই পুরুষের প্রেমে পড়বেন এবং এমন ভয়ংকর পরিকল্পনা করবেন, তা তারা কখনো ভাবেননি। অনেকেই বলছেন, এই ঘটনা সমাজ ও পারিবারিক সম্পর্কের ভাঙন কতটা গভীর হয়েছে, তা স্পষ্ট বোঝাচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই নারীকে আদালতে তোলা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে। একইসঙ্গে মূল অভিযুক্ত প্রেমিক আরিফ মোল্লাকে ধরতে সর্বাত্মক অভিযান চলছে।
সৌদি রাজতন্ত্রের অজানা অধ্যায়: ক্ষমতার জন্য বাবা ও ভাইদের ছাড় দিলেন না মোহাম্মদ বিন সালমান
প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর সৌদি আরবের সিংহাসনে বসেন সালমান বিন আবদুল আজিজ। কিন্তু উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতার এই পালাবদল মোটেই সহজ ছিল না। এটি ছিল নাটকীয় সিদ্ধান্ত আর অপ্রত্যাশিত উত্থানের এক নতুন অধ্যায়।
শুরুতে বাদশাহ সালমান ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে তার ৬৯ বছর বয়সী সৎভাই মুকরিন বিন আবদুল আজিজের নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু মাত্র তিন মাস পরেই তিনি হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত বদল করেন। মুকরিনকে সরিয়ে তার স্থানে নিয়ে আসেন নিজের ভাইপো ৫৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ বিন নায়েফকে। পাশাপাশি ২৯ বছরের ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি।
প্রায় ৯ বছর আগে যখন একের পর এক এসব ঘটনা ঘটছিল, সে সময় মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম সৌদি আরবের রাজনীতিতে কেউ শোনেননি। তাঁর সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানতেনও না কেউ।
অন্যদিকে মোহাম্মদ বিন নায়েফের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল মার্কিন প্রশাসন। তিনি প্রতিরক্ষা বিষয়ে এফবিআইয়ের (যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো) কোর্স করেছিলেন। নিয়েছিলেন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে সন্ত্রাস দমন কৌশলের প্রশিক্ষণও; কিন্তু ২০০৯ সালের আগস্টে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা চালানো হয়। ওই হামলার জন্য সে সময় দায়ী করা হয়েছিল আল-কায়েদাকে।
সৌদি বাদশাহর ‘দ্বাররক্ষক’
মোহাম্মদ বিন সালমান এমবিএস নামে বহুল পরিচিত। লেখক ডেভিড বি ওটাওয়ে তাঁর বইয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পর্কে লিখেছেন, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার পরপরই তিনি (মোহাম্মদ বিন সালমান) বাদশাহর গেট কিপার (দ্বাররক্ষক) হওয়ার জন্য নিজের পদকে ব্যবহার করতে শুরু করেন।’ উদ্দেশ্য ছিল, বাবাকে নজরে রাখা।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্রুতই মোহাম্মদ বিন সালমান তাঁর বাবাকে পরিবার ও বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের থেকে আলাদা করে ফেলেন। এমনকি এ-ও বলা হয় যে বাদশাহকে তাঁর স্ত্রী, মানে এমবিএসের মায়ের সঙ্গেও দেখা করতে বাধা দেওয়া হয়।
লেখক বেন হাবার্ড তাঁর বই ‘দ্য রাইজ টু পাওয়ার, মোহাম্মদ বিন সালমান’-এ উল্লেখ করেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন নায়েফ ও তাঁর দুই রক্ষী বাদশাহর সঙ্গে দেখা করার জন্য লিফটে উঠেছিলেন। দোতলায় লিফটের দরজা খুলতেই বাদশাহর সৈন্যরা এগিয়ে গিয়ে নায়েফের রক্ষীদের অস্ত্র ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন।’
ডেভিড বি ওটাওয়ের বইয়ে দাবি করা হয়েছে, মোহাম্মদ বিন সালমান কার্যত তাঁর মা এবং দুই বোনকে গৃহবন্দী করেন এবং বাবাকে এ সম্পর্কে ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পেতে দেননি। বাদশাহ নিজের স্ত্রীর কথা জিজ্ঞাসা করলেই বলা হতো চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।
ইয়েমেন আক্রমণ
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দ্রুতই নিজের প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তাঁর তত্ত্বাবধানে সে বছরের ২৬ মার্চ (২০১৫ সাল) হুতি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ইয়েমেনের রাজধানী সানাকে মুক্ত করতে হামলা চালায় সৌদি বিমানবাহিনী।
মোহাম্মদ বিন সালমান ছোটবেলায় খুব দুষ্টু ছিলেন। ইংরেজি পড়ার চেয়ে ওয়াকিটকিতে প্রাসাদের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতেই বেশি আগ্রহ ছিল তাঁর।—রশিদ সেকাই, সৌদি যুবরাজের ইংরেজি শিক্ষক
ওটাওয়ে তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে সৌদি জনগণ ওই হামলার প্রশংসা করেছিলেন। ভেবেছিলেন, শেষ পর্যন্ত ইরানের সম্প্রসারণবাদী প্রবণতার বিরোধিতা করার সাহস দেখিয়েছে তাঁদের দেশ।’
‘কিন্তু কিছুদিন পর এ হামলা বাদশাহ, মোহাম্মদ বিন সালমান ও সৌদি আরবের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটিকে মোহাম্মদ বিন সালমানের পররাষ্ট্রনীতির গাফিলতি হিসেবে বিবেচনা করা হতে থাকে।’
মোহাম্মদ বিন নায়েফকে আটক
কাছাকাছি সময়েই তৎকালীন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফকে অপসারণ করে ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ক্রাউন প্রিন্স করার সিদ্ধান্ত নেন বাদশাহ সালমান।
পবিত্র রমজান মাসের শেষ দিকে ২০১৫ সালের ২০ জুন রাতে রাজপরিবারের একাধিক সদস্য পবিত্র মক্কায় জড়ো হন। সেই রাতে, রাজনৈতিক ও সুরক্ষাবিষয়ক কাউন্সিলের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, যার সভাপতিত্ব করার কথা ছিল মোহাম্মদ বিন নায়েফের; কিন্তু বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণ আগেই তিনি একটি বার্তা পান। সেখানে বলা হয়েছিল, বাদশাহ সালমান তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান।
বলা হয়, সৌদি আরবে অন্তত ১০ হাজার প্রিন্স রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। তাঁদের সবাইকে সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক ভাতা দেওয়া হয়। সর্বনিম্ন ভাতা ৮০০ ডলার এবং সর্বোচ্চ পৌনে ৩ লাখ ডলার। ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার পরই এ ভাতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
তড়িঘড়ি হেলিকপ্টারে সওয়ার হয়ে বাদশাহর সঙ্গে দেখা করার জন্য সাফা মহলে পৌঁছান বিন নায়েফ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই দেহরক্ষী।
লেখক বেন হাবার্ড তাঁর বই ‘দ্য রাইজ টু পাওয়ার, মোহাম্মদ বিন সালমান’-এ উল্লেখ করেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন নায়েফ ও তাঁর দুই রক্ষী বাদশাহর সঙ্গে দেখা করার জন্য লিফটে উঠেছিলেন। দোতলায় লিফটের দরজা খুলতেই বাদশাহর সৈন্যরা এগিয়ে গিয়ে নায়েফের রক্ষীদের অস্ত্র ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন।’
‘পাশের একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় নায়েফকে। তিনি চলে যেতে উদ্যত হলে, বাধা দেওয়া হয় এবং ক্রাউন প্রিন্স পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে। কিন্তু তাঁদের কথা শুনতে নারাজ ছিলেন বিন নায়েফ।’
নায়েফের পদত্যাগ
ওই রাতেই বিন নায়েফকে গৃহবন্দী করা হয় এবং রয়্যাল কোর্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়্যাল কাউন্সিলের সদস্যদের ডেকে জানতে চান, তাঁরা মোহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ বানানোর সিদ্ধান্তের বিষয়ে একমত কি না।
কাউন্সিলের ৩৪ সদস্যের মধ্যে ৩১ জন সমর্থন জানান। তাঁদের ফোনকল রেকর্ড করা হয় এবং মোহাম্মদ বিন নায়েফকে জানানো হয়, তাঁর কতজন আত্মীয় বাদশাহর এ সিদ্ধান্তে সমর্থন করেছেন।
মোহাম্মদ বিন সালমান তখনো ক্রাউন প্রিন্স হননি। রিয়াদে একটি মূল্যবান জমির ওপর নজর পড়ে তাঁর বাবার; কিন্তু জমির মালিক সেটি বিক্রি করতে চাইছিলেন না। এ নিয়ে চাপ দিতে একজন বিচারকের কাছে যান মোহাম্মদ বিন সালমান। বিচারকও এ নিয়ে কথা বলতে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তখন মোহাম্মদ বিন সালমান বিচারকের টেবিলে রিভলবারের একটি বুলেট রাখেন। ইঙ্গিত ছিল, বিচারক তাঁর কথা না মানলে হয়তো তাঁকে গুলি করা হবে।—রিচার্ড লেসি, সৌদি রাজপরিবারের ইতিহাস পর্যবেক্ষক
বেন হাবার্ড তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন, ‘বিন নায়েফ ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। কিন্তু সে রাতে তাঁকে ওষুধ দেওয়া হয়নি। ফলে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত পরদিন সকালে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করার জন্য তৈরি হয়ে যান।’ তাঁকে পাশের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে বাদশাহ সালমান ও তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা ক্যামেরাসহ হাজির ছিলেন।
বিন নায়েফকে অভ্যর্থনা জানান বাদশাহ এবং তাঁর হাতে চুম্বন করেন। নায়েফ খুব নিচু স্বরে সালমানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। তাঁদের এই সাক্ষাতের ভিডিও সৌদি টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সে সময় বারবার সম্প্রচার করা হয়।
‘এরপর মোহাম্মদ বিন নায়েফ কক্ষ থেকে বেরোনোর পর অবাক হয়ে দেখেন যে তাঁর রক্ষীরা সেখানে নেই। জেদ্দায় নিজের প্রাসাদে পৌঁছানোর পর তাঁকে সেখানে গৃহবন্দী করে রাখা হয়।’
বিন নায়েফের নীরবতা
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রশ্নের জবাবে রয়্যাল কোর্টের একজন মুখপাত্র অবশ্য ওই রাত সম্পর্কে ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে ক্রাউন প্রিন্সের পদ থেকে মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়েছিল রয়্যাল কাউন্সিল। রয়্যাল কোর্ট আরও জানায়, তাঁকে বরখাস্ত করার কারণগুলো গোপন রাখা হয়েছে এবং সেগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।
ঘটনার প্রায় এক মাস পর নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, মরফিন ও কোকেনে আসক্ত থাকার কারণে বিন নায়েফকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাদশাহ।
ওই বছরের শেষের দিকে বিন নায়েফের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। তাঁর প্রতি এমন আচরণ নিয়ে মোহাম্মদ বিন নায়েফ অবশ্য প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি।
বর্তমানে পরিস্থিতি এমন যে ১৯৮৫ সালের ৩১ আগস্ট জন্ম নেওয়া মোহাম্মদ বিন সালমানের পোস্টার সৌদি আরবের সর্বত্র দেখা যায়। তিনি সৌদি রাজপরিবারের অন্যতম যুবরাজ, যিনি বিদেশে পড়াশোনা করেননি। তিনি কখনোই সৌদি সেনাবাহিনী বা বিমান বাহিনীর সদস্য ছিলেন না। রিয়াদের রয়্যাল অ্যান্ড সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি।
মোহাম্মদ বিন সালমানের ইংরেজি শিক্ষক রশিদ সেকাই বিবিসিকে বলেছিলেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমান ছোটবেলায় খুব দুষ্টু ছিলেন। ইংরেজি পড়ার চেয়ে ওয়াকিটকিতে প্রাসাদের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতেই বেশি আগ্রহ ছিল তাঁর।’
স্নাতক হওয়ার পর ২০০৭ সালে সারা বিনতে মাশুরকে বিয়ে করেন মোহাম্মদ বিন সালমান। এই যুগলের চারটি সন্তান রয়েছে।
পিয়ানোতে ধ্রুপদি সুর
মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় তাঁকে নিজের বাড়িতে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
বইয়ে সে প্রসঙ্গে বেন হাবার্ড লিখেছেন, পুরো সন্ধ্যাটাই কেরির সঙ্গে কথা বলে কাটান মোহাম্মদ বিন সালমান। সে সময় বিন সালমানের চোখ পড়ে সেখানে রাখা পিয়ানোর ওপর।
জন কেরি বিন সালমানের কাছ থেকে জানতে চান, ‘আপনি পিয়ানো বাজাতে জানেন? পিয়ানোতে ধ্রুপদি সুর বাজিয়ে তাক লাগিয়ে দেন মোহাম্মদ বিন সালমান।’
‘ঘরে উপস্থিত সবাই অবাক হয়েছিলেন। যেহেতু ‘‘ওয়াহাবি ঘরানার’’ মানুষেরা সংগীত অপছন্দ করে, ফলে জন কেরি আশা করেননি যে মোহাম্মদ বিন সালমান পিয়ানো বাজাবেন।’
বিচারকের টেবিলে বুলেট
শুরু থেকেই যুবরাজ বিন সালমানের ঝোঁক ছিল বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজস্ব অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য গড়ে তোলার দিকে।
সৌদি রাজপরিবারের ইতিহাস পর্যবেক্ষক রিচার্ড লেসি লিখেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমান তখনো ক্রাউন প্রিন্স হননি। রিয়াদে একটি মূল্যবান জমির ওপর নজর পড়ে তাঁর বাবার। কিন্তু জমির মালিক সেটি বিক্রি করতে চাইছিলেন না।’
‘এ নিয়ে চাপ দিতে একজন বিচারকের কাছে যান মোহাম্মদ বিন সালমান। বিচারকও এ নিয়ে কথা বলতে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তখন মোহাম্মদ বিন সালমান বিচারকের টেবিলে রিভলবারের একটি বুলেট রাখেন। ইঙ্গিত ছিল, বিচারক তাঁর কথা না মানলে হয়তো তাঁকে গুলি করা হবে।’
যুবরাজের এহেন আচরণ সম্পর্কে বাদশাহ আবদুল্লাহর কাছে অভিযোগ করেন বিচারক। এ খবর কখনো অস্বীকার করেননি সালমান। এরপর ২০১১ সালে বাদশাহ আবদুল্লাহ যখন মোহাম্মদ বিন সালমানের বাবাকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন, তখন শর্ত দিয়েছিলেন যে এমবিএস যেন কখনোই মন্ত্রণালয়ের ভবনে প্রবেশ না করে।
নারীদের গাড়ি চালানোর স্বাধীনতা
মোহাম্মদ বিন সালমানের বাবা যখন সৌদি আরবের বাদশাহ হিসেবে দায়িত্ব নেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৭৯ বছর। শোনা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরেই আলঝেইমারে ভুগছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষমতার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
সৌদি আরবের যুবক ও নারীদের মন জয় করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন বিন সালমান। তিনি ২০১৮ সালে নারীদের জন্য প্রচলিত ড্রেস কোড (পোশাকবিধি) শিথিল করে বলেছিলেন, প্রকাশ্যে নারীদের ‘আবায়া’ পরার দরকার নেই।
সেই বছরই নারীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা নিজেরাই কাজে বা কেনাকাটার জন্য গাড়ি চালিয়ে যেতে পারেন। এ জন্য সঙ্গে পুরুষ অভিভাবক রাখার প্রয়োজন নেই।
লেখক মার্ক থম্পসন তাঁর ‘বিয়িং ইয়ং, মেল অ্যান্ড সৌদি’ শীর্ষক বইয়ে লিখেছেন, ‘অর্থনৈতিক কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, নারীদের স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য নয়।’ তাঁর মতে, ‘নারীরা পুরুষের অনুমতি ছাড়াই যাতে কাজ করতে ও উপার্জন করা অর্থ ব্যয় করতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয় এ পদক্ষেপ।’
‘শুরা’র সমাপ্তি
সৌদি আরববিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে ‘শুরা’ ও জ্যেষ্ঠ প্রিন্সদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঐতিহ্যে বিরাম টেনেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। ‘শুরা’ বলতে পরামর্শমূলক পরিষদকে বোঝায়। এর বদলে নিজেকে এক ও একমাত্র শাসক হিসেবে তুলে ধরেছেন তিনি।
নিজের সিদ্ধান্ত ও রাজনীতির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রতিবাদ বা সমালোচনা যে বিন সালমান বরদাস্ত করবেন না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
চেজ ফ্রিম্যান ১৯৯০-এর দশকের উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় সৌদি আরবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর মতে, ‘সৌদি রাজপরিবারের ঐক্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো শুরার ধারণার প্রতি সম্পূর্ণ অবজ্ঞা।’
বিলাসবহুল সামগ্রীর প্রতি আকর্ষণ
ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার আগেও দামি সামগ্রীর প্রতি আকর্ষণের জন্য পরিচিত ছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি ৪৪০ ফুট লম্বা বিলাসবহুল ইয়ট কিনতে ৫০ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন। এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে লেওনার্দো দা ভিঞ্চির বিখ্যাত চিত্রকর্ম কেনার জন্য ৪৫ কোটি ডলার খরচ করেন।
সমালোচনা এড়াতে বিন সালমান প্রথমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ওই বিখ্যাত চিত্রকর্ম আবুধাবির জাদুঘরে দিয়ে দেবেন; কিন্তু তেমনটা হয়নি। এর কিছুদিন পরই তাঁর বিলাসবহুল নৌযান ‘সেরিন’-এ দেখা যায় ওই চিত্রকর্ম।
একের পর এক গ্রেপ্তার, হারিরির পদত্যাগ
বলা হয়, সৌদি আরবে অন্তত ১০ হাজার প্রিন্স রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। তাঁদের সবাইকে সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক ভাতা দেওয়া হয়। সর্বনিম্ন ভাতা ৮০০ ডলার এবং সর্বোচ্চ পৌনে ৩ লাখ ডলার।
ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার পরই এ ভাতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর মোহাম্মদ বিন সালমান সরকারি তহবিল তছরুপের অভিযোগে প্রিন্স, ব্যবসায়ী ও জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা মিলিয়ে ৩৮০ জনকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন।
বেন হাবার্ড লিখেছেন, ‘তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ১১ জন প্রিন্স ছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী আদিল ফিকিয়া এবং অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আবদুল আজিজও ছিলেন।’
‘তাঁদের সবার মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং পাঁচ তারকা রিটজ-কার্লটন হোটেলে নিয়ে গিয়ে গৃহবন্দী করা হয়। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা অর্থ সরকারকে ফেরত দেওয়ার পর তাঁদের সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁরা মোট ১০০ কোটি ডলার জরিমানাও দেন।’
একই ভাবে সৌদি আরব সফরে যাওয়া লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরিকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে বিন সালমানের বিরুদ্ধে। সে সময় ওই অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়।
বেন হাবার্ড লিখেছেন, ‘আল-হারিরি মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করতে এলে তাঁকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর গাড়িবহরে থাকা ব্যক্তিদের বাইরে থাকতে বলা হয়। ওই কক্ষেই হারিরিকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।’
‘আল-হারিরি লেবাননের পতাকার পাশে দাঁড়িয়ে পদত্যাগের ঘোষণা করেন এবং একটা বিবৃতি পাঠ করেন। সে বিবৃতি বিশ্বজুড়ে টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছিল।’
আল-হারিরিকে বলতে শোনা যায়, তাঁর পদত্যাগ লেবাননকে আরও শক্তিশালী ও স্বাধীন করে তুলবে। এই বিবৃতি পাঠের সময় তিনি বেশ কয়েকবার থামেন এবং এমন একটা ইঙ্গিত দেন যে ওই বিবৃতি তিনি নিজে লেখেননি।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ‘হারিরি যদি পদত্যাগই করতে চাইতেন, তবে বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে কেন পদত্যাগ করলেন?’
এর কয়েকদিন পর আল-হারিরি দেশে ফেরেন এবং তাঁর সেই পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এই অদ্ভুত ঘটনার নেপথ্যের কাহিনি অবশ্য কখনোই জানা যায়নি।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২০১৮ সালের মে মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সৌদি সরকার ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ২ হাজার ৩০৫ জনকে আটক করেছে, যাঁদের মধ্যে ২৫১ জন তিন বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন এবং তাঁদের কখনো বিচারকের সামনে হাজির করা হয়নি।
শুধু তা-ই নয়, নিউইয়র্কভিত্তিক ‘কমিটি ফর দ্য প্রটেকশন অব জার্নালিস্ট’ও তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, সৌদি আরবে ২৬ জন সাংবাদিক বন্দী রয়েছেন। এ সংখ্যা চীন ও তুরস্কের পর বিশ্বে সর্বোচ্চ। আবার ২০১৯ সালে এক হাজার সৌদি নাগরিকের ওপর ভ্রমণ-নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
জামাল খাসোগি হত্যা মামলা
মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্য সবচেয়ে বিব্রতকর ব্যাপার ছিল, যখন তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে গিয়ে এমবিএসের অন্যতম সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাসোগি খুন হন।
খাসোগি আরব নিউজ ও আল-ওয়াতানের মতো সংবাদপত্রের সম্পাদক ছিলেন। সব প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ বিন সালমান এক বছর ধরে ওই হত্যার দায় অস্বীকার করেন।
ডেভিড বি ওটাওয়ে লিখেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমানের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর তত্ত্বাবধানে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তদন্ত শেষে সিআইএ এ সিদ্ধান্তে আসে যে এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ স্বয়ং যুবরাজই দিয়েছিলেন।’
‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ) মোহাম্মদ বিন সালমানের একটা পুরোনো রেকর্ডিং খুঁজে পায়, যেখানে সৌদি আরবে না ফিরলে খাসোগিকে গুলি করার কথা বলেছিলেন তিনি।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উপস্থাপক নোরা ডোনেল যুবরাজকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন?’
জবাবে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছিলেন, ‘একেবারেই না। এটি একটি জঘন্য অপরাধ। কিন্তু সৌদি আরবের নেতা হিসেবে আমি এর সম্পূর্ণ দায় নিচ্ছি। বিশেষত, যখন অপরাধীরা সৌদি সরকারের হয়ে কাজ করছিল।’
এরপর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সৌদি আরবের এক আদালত সাংবাদিক খাসোগিকে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে ২০২০ সালের ২০ মে প্রয়াত সাংবাদিকের পুত্র সালেহ খাসোগি তাঁর বাবার হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দেন।
পাঠকের মতামত:
- অ্যাশেজে খেলতে ঝুঁকি নিতেও প্রস্তুত প্যাট কামিন্স
- বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোয়াইট হাউসের রহস্যজনক পদক্ষেপ
- আওয়ামী লীগের পদ ছাড়লেন ইউপি সদস্য, জানালেন তিনি সব সময় বিএনপির ‘একনিষ্ঠ কর্মী’
- দুইবারের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়নের স্বপ্নযাত্রা আবার শুরু
- ফজলুর রহমানকে ঘিরে নতুন বিতর্ক, ছাত্রদল নেতার বহিষ্কারের দাবি
- অতিরিক্ত যাত্রীতে ট্র্যাজেডি:নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত ২৯
- ব্যয় সাশ্রয়ের পরিপত্র উপেক্ষা: মন্ত্রীদের জন্য ৬০টিসহ ২৮০ গাড়ি কিনছে সরকার
- ইকুয়েডরে আবারও মার্কিন উপস্থিতির সম্ভাবনা
- একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক ও বাবরের খালাসের রায় বহাল
- হঠাৎ স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন! মোনালি ঠাকুরের সংসারে ভাঙনের সুর?
- কোরআনের আলোকে পরকাল: অবিশ্বাসীদের শেষ পরিণতি
- জুলাই সনদে আসছে বড় পরিবর্তন
- পুতিন জানালেন, কেন তিনি এখনো ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি
- অভিষেক রাঙাতে পারলেন না কিউবা: এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শুরুতেই হোঁচট খেলো বাংলাদেশ
- মাদকের ভয়াবহ পরিণতি: অকালে ঝরে যাচ্ছে জীবন, পঙ্গু হচ্ছে তরুণ সমাজ
- বিধ্বস্ত হচ্ছে একের পর এক মহল্লা, গাজায় এবার মানবিক সংকট চরমে
- সকালে খালি পেটে এই ৬টি খাবার খান, নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস-উচ্চ রক্তচাপ
- আজ কেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া? জেনে নিন আজকের পূর্বাভাস
- গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
- ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: আপিলের রায় আজ, কী হবে তারেক রহমানের ভাগ্য?
- কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি: যেসব ফল খেলে মিলবে সমাধান
- বেইজিং সফরে কিম জং-উন, আলোচনায় তার মেয়ে জু আয়ে
- মেসির বিদায়ী ম্যাচে পানি ঢালতে চান ভেনেজুয়েলার কোচ বাতিস্তা
- ইতিহাসে সর্বোচ্চ: বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম আবারো বাড়লো
- নুরের চিকিৎসা দেশে করাই সম্ভব: ঢামেক পরিচালক
- খুলনায় জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুর
- আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ভারতের দল: রাশেদ খান
- চাঁদাবাজদের মানুষ ক্ষমতায় দেখতে চায় না: চরমোনাইর পীর
- আফগানিস্তানে নতুন আতঙ্ক: বাড়ি থেকেও আশ্রয়হীন হাজারো পরিবার
- লিটনের ব্যাটে ঝড়, শেষ টি-টোয়েন্টিতে দারুণ শুরু বাংলাদেশের
- ইতালির পথে আবারও ট্রাজেডি, ভূমধ্যসাগরে প্রাণহানি
- মাত্র ২২০ টাকায় মিলল পুলিশে চাকরি
- তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে নতুন ঘোষণা দিলেন আহমেদ আযম খান
- গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভে অচল পল্টন মোড়
- চায়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একই প্রেমিকের সঙ্গে দুই গৃহবধূর পলায়ন
- ড. ইউনূসের নতুন ভিশন: সমুদ্রই হবে বিশ্বের পথে বাংলাদেশের মহাসড়ক
- মাতারবাড়ী-মহেশখালী হবে বাংলাদেশের সিঙ্গাপুর: আশিক চৌধুরী
- ড. ইউনূসকে সরাতে কঠোর আন্দোলন হতে পারে: জাহেদ উর রহমান
- সৌদি রাজতন্ত্রের অজানা অধ্যায়: ক্ষমতার জন্য বাবা ও ভাইদের ছাড় দিলেন না মোহাম্মদ বিন সালমান
- ইসি’র ঘোষণায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা: তাহলে কি আওয়ামী লীগ বাদ পড়তে যাচ্ছে?
- মহাকাশে ইসরায়েলের নতুন নজরদারি: উৎক্ষেপণ হলো ‘ওফেক-১৯’
- ডিএসই’র বাজার প্রতিবেদন: এক নজরে আজকের লেনদেন
- শেয়ারবাজারে আজ বড় লোকসান দিল যেসব কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে ফিরল স্বস্তি, শীর্ষে থাকা কোম্পানির তালিকা প্রকাশ
- জাতীয় পার্টির পাশাপাশি জামায়াতকেও কাঠগড়ায় তুললেন রুমিন ফারহানা
- পিআর পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী: ‘জনগণ তো এটা চায় না’
- নুরের ওপর হামলা প্রমাণ করে দেশ এখনও স্বৈরাচারমুক্ত নয়: দুদু
- অন্তর্বর্তী সরকার এখন বিএনপি ও জামায়াতের নির্দেশে চলছে: সামান্তা শারমিন
- চীনের সামরিক মহড়া: প্রকাশ্যে এলো নতুন পারমাণবিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি
- ডাকসু নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, নির্ধারিত তারিখেই ভোট
- যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থার শীর্ষে এএইচজেড
- জ্ঞান ফিরেছে নুরুল হক নুরের
- "জাতীয় নাগরিক পার্টি আসলে ইউনূসের দল, জামায়াতই দেশ চালাচ্ছে"
- ছেলের আত্মহত্যার জন্য দায়ী ChatGPT’: কাঠগড়ায় OpenAI
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ভ্যালু, ভলিউম ও ট্রেডে শীর্ষ ২০ কোম্পানি
- ডিএসই–৩০ সূচকের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর লেনদেনের চিত্র
- জুলাই সনদ নিয়ে মতভেদ চরমে, আজ তিন দলের সঙ্গে বৈঠক অন্তর্বর্তী সরকারের
- ২৮ আগস্ট দরপতনের তালিকায় শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আজকের লেনদেনের সামগ্রিক বিশ্লেষণ
- ২৮ আগস্ট শীর্ষ ১০ গেইনার তালিকা
- ০১ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ডিএসই ব্লক মার্কেটে বড় লেনদেন
- নিহত গাজা সাংবাদিকের চিঠি পড়ে কেঁদে ফেললেন জাতিসংঘে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত
- সংসদ ভবনে আগুন দিল বিক্ষোভকারীরা