এসিসি সভা আয়োজন নিয়ে দ্বিধা-বিভক্তি, চাপে বিসিবি

খেলা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৩ ১০:০৭:১২
এসিসি সভা আয়োজন নিয়ে দ্বিধা-বিভক্তি, চাপে বিসিবি
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। তবে এই সভাকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু বিভ্রান্তি, কূটনীতি ও জটিলতা তৈরি হয়েছে। সভার আয়োজক দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বরাবরই বলে আসছে, তাদের ভূমিকা শুধু আনুষ্ঠানিক, তারা শুধু অতিথিদের নৈশভোজ ও সভাস্থল প্রস্তুত করছে। মূল দায়িত্ব এসিসির।

তবে বিষয়টিকে এতটা সরলভাবে দেখছে না ভারত ও শ্রীলঙ্কা। তাদের অভিযোগ, বিসিবি নাকি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সঙ্গে এক ধরনের অঘোষিত জোটে যুক্ত হয়েছে। ফলে এসিসির মধ্যেই তৈরি হয়েছে বিভাজন। প্রশ্ন উঠছে, আয়োজক হিসেবে বিসিবি কি এই সংকট থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারবে?

এই পরিস্থিতিতে বিসিবির ভেতরেও একধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করছে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, ভারতের অসন্তুষ্টির কারণে ভবিষ্যতে বিসিবিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপে পড়তে হতে পারে। বিষয়টি আরও জটিল হয়েছে এসিসি সভাপতি ও পিসিবি চেয়ারম্যান আশরাফ নাকভির ভূমিকার কারণে। বিসিবির অন্তর্বর্তী সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল নাকভিকে ‘সম্মান’ দেখিয়ে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন বলে মনে করছেন অনেকে। এতে বিসিবির ভবিষ্যৎ ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এদিকে সভার কোরাম পূরণে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সভা বৈধ করতে টেস্ট খেলুড়ে পাঁচ দেশের মধ্যে অন্তত তিনটি এবং সহযোগী ১০ দেশের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান এরই মধ্যে সভা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। যদিও বিসিবি ও পিসিবি মিলে আফগানিস্তানকে অংশগ্রহণে রাজি করাতে চেষ্টা চালাচ্ছে এবং মৌখিকভাবে সম্মতিও মিলেছে।

বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানান, আজ চূড়ান্তভাবে জানা যাবে আফগানিস্তান সভায় অংশ নিচ্ছে কি না। তবে সবশেষ খবর অনুযায়ী, এসিসির ২৭টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৯টি ইতোমধ্যে অংশগ্রহণে সম্মতি জানিয়েছে। কিছু দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে পিসিবির প্রধান নির্বাহী সালমান নাসিম মঙ্গলবারই ঢাকায় পৌঁছেছেন এবং তাদের চেয়ারম্যান নাকভি আজ আসবেন।

অন অ্যারাইভাল ভিসার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে আসছেন বাহরাইন, ভুটান, ব্রুনাই, চীন, চাইনিজ তাইপে, কম্বোডিয়া, মালদ্বীপ, কুয়েত, মিয়ানমার, কাতার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, তাজিকিস্তান, ইরান, জাপান ও ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধিরা। তবে নেপাল, ওমান, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড ও হংকং থেকে প্রতিনিধিরা আসবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।

এসিসির ইতিহাসে কখনও এত বিভাজন ও অনিশ্চয়তা দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে বিসিবি কর্মকর্তারা। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এজিএম আয়োজন করতে গিয়ে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। সভাটি সফল হলেও বিসিবির ওপর থেকে দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক চাপ কাটবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ