বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কায় এডিবি, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব আশঙ্কাজনক

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৭ ০৮:৪৯:৫০
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কায় এডিবি, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব আশঙ্কাজনক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্কের প্রভাব নিয়ে সতর্কতা জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। বিশেষ করে রপ্তানি ও শিল্প খাতের ধীরগতিই এই সম্ভাব্য কম প্রবৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও)’ প্রতিবেদনের জুলাই ২০২৫ সংস্করণে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। এপ্রিল মাসে প্রকাশিত পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জন্য ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তবে সর্বশেষ প্রতিবেদনে তা আরো কমতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেও, নির্দিষ্ট করে কোনো হার উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র আগামী ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ পালটা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশে বাড়তি খরচ গুনতে হবে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, এতে রপ্তানিতে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে, যার প্রভাব পড়বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির চাপ কিছুটা কমেছে। বৈশ্বিক পণ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা এবং আর্থিক ও রাজস্বনীতির কঠোরতার কারণে এই পরিবর্তন এসেছে। একই কারণে ২০২৬ অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

এডিবি আরও জানায়, বৈশ্বিক বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা ও বাণিজ্যিক উত্তেজনার প্রভাব এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধির হার হতে পারে ৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে তা ৪ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এই দুই বছরের জন্যই প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস পূর্ববর্তী তুলনায় প্রায় অর্ধ শতাংশ পয়েন্ট কমিয়ে ধরা হয়েছে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, গোটা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রবৃদ্ধিও কমে যেতে পারে। এডিবির পূর্বাভাস বলছে, ২০২৫ সালে উন্নয়নশীল এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে, যা পূর্বে ছিল ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২৬ সালের জন্য এই হার কমিয়ে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র শুল্কহার আরও বাড়ায় বা বাণিজ্যিক উত্তেজনা বাড়তে থাকে, তাহলে শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নয়, পুরো এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অর্থনীতি বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন, বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের ব্যাঘাত এবং জ্বালানি তেলের দামের অস্থিরতা।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ