অ্যাপল কন্যার বিয়ে ঘিরে আলোচনায় জাঁকজমক, পরিচয় হয়েছিল ঘোড়ায় চড়তে গিয়ে!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৪ ২১:২৩:০৪
অ্যাপল কন্যার বিয়ে ঘিরে আলোচনায় জাঁকজমক, পরিচয় হয়েছিল ঘোড়ায় চড়তে গিয়ে!
ছবি: সংগৃহীত

অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা ইভ জবস বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন চলতি সপ্তাহেই। ২৭ বছর বয়সী ইভের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবেন অলিম্পিক স্বর্ণজয়ী অশ্বারোহী হ্যারি চার্লস। তাদের এই বিয়েকে ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিশাল ব্যয়, অতিথি তালিকা এবং আয়োজনের জাঁকজমক।

দ্য নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বিয়েতে খরচ হতে পারে প্রায় ৬.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৮১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার সমান। আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। এছাড়া সংগীত পরিবেশন করবেন বিখ্যাত ব্রিটিশ শিল্পী এলটন জন।

ইভ জবস জন্মগ্রহণ করেন ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই। তিনি একজন পেশাদার ফ্যাশন মডেল হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে থাকেন নিউইয়র্ক শহরে। তিনি ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার শৈশব কেটেছে ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টোতে।

স্নাতকের আগে তিনি ফ্লোরিডার ওয়েলিংটনের আপার এচেলন একাডেমিতে লেখাপড়া করেন, যেখানে তিনি ঘোড়ায় চড়া শেখেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সময়েই তার সঙ্গে পরিচয় হয় ব্রিটিশ অশ্বারোহী হ্যারি চার্লসের।

উল্লেখ্য, স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবসের সন্তান ইভ যখন ১৩ বছর বয়সী, তখনই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান প্রযুক্তি জগতের এই কিংবদন্তি।

/আশিক


নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ২১:০০:১৬
নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব

কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে একাধিক বিস্ফোরণে শহরের কূটনৈতিক ও আবাসিক এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দোহায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর কয়েকজন সদস্যের আবাসিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

হামাস সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, হামলার সময় সংগঠনের আলোচনাকারী প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক করছিল। এর মধ্যেই হঠাৎ হামলা চালানো হয়। হামাস বলছে, এটি মূলত শান্তি প্রচেষ্টা ব্যাহত করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, ইসরাইল তাঁর প্রস্তাব মেনে নিয়েছে এবং এবার হামাসকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, “এটাই হামাসের জন্য শেষ সতর্কবার্তা।” তবে দোহায় হামলার পর হোয়াইট হাউস আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। মার্কিন দূতাবাস অবশ্য স্থানীয়দের সতর্ক করে জানিয়েছে, নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে।

কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হামলাকেcowardly” আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও কাতারের সার্বভৌমত্বের নগ্ন লঙ্ঘন এবং কাতার ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি। একই সুরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা (পিএলও) এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি আরব সতর্ক করেছে, ইসরাইলের এ ধরনের “অপরাধমূলক আগ্রাসন” আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “এ হামলা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ইসরাইল পরিচালনা করেছে এবং এর পূর্ণ দায়ভার ইসরাইল নিচ্ছে।” ইসরাইলি বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ এবং কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এ অভিযানের প্রশংসা করেছেন।

হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল দোহা শহরের একটি আবাসিক এলাকা, যেখানে বিদেশি দূতাবাস ও বিদ্যালয়ও অবস্থিত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দ গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তেই আতঙ্ক দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ ইতোমধ্যেই দোহায় অবস্থানরত নাগরিকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল এ হামলার মাধ্যমে শুধু কাতারের সার্বভৌমত্বকেই লঙ্ঘন করেনি, বরং চলমান আলোচনাকে ভণ্ডুল করার বার্তাও দিয়েছে। আল জাজিরার বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা একে “গ্যাংস্টার আচরণ” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি এ হামলার অনুমোদন না দিয়ে থাকে, তবে অবিলম্বে নিন্দা জানানো উচিত।

ইসরাইল এর আগে গাজা, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন, তিউনিসিয়া এবং ইরানেও হামলা চালিয়েছে। এবার কাতারে হামলা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা করছে।


বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১৬:২৯:৩৭
বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
ছবিঃ সংগৃহীত

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। এর মাত্র একদিন আগে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দমন-পীড়নের ঘটনা।

রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে ৭৩ বছর বয়সী ওলি লিখেছেন, “আজ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি, যাতে রাজনৈতিক সমাধানের পথে আরও অগ্রসর হওয়া যায় এবং বিদ্যমান সংকট নিরসনের উপায় খোঁজা সম্ভব হয়।”

সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপগুলো চালু করা হয়, তবুও বিক্ষোভ থামেনি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো হয়, যাতে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।

ওলি গত বছর চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন, যখন তার কমিউনিস্ট পার্টি মধ্য-বামপন্থি নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গঠন করে সরকার গড়ে। তবে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি ও ধীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে জনঅসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছিল।

হিমালয়ের এই দেশটির জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। এর মধ্যে ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৩ শতাংশ। কিন্তু বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি এবং মাথাপিছু আয় মাত্র ১,৪৪৭ ডলার। ফলে তরুণ প্রজন্ম ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছে।

২০০৮ সালে এক দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধের পর নেপাল রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে ফেডারেল প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। মাওবাদীদের শান্তি চুক্তির মাধ্যমে রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে বয়স্ক রাজনীতিবিদদের ক্ষমতা দখলের পালাবদল, দলাদলি ও ঘনঘন সরকার পরিবর্তন জনগণের কাছে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আরও অবিশ্বস্ত করে তুলেছে।

গত শুক্রবার থেকে টিকটকে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, সাধারণ নেপালিদের দুঃখ-দুর্দশার বিপরীতে রাজনীতিবিদদের সন্তানরা বিলাসবহুল সামগ্রী ও বিদেশ ভ্রমণ প্রদর্শন করছে। এসব দৃশ্য বিক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

ওলির পদত্যাগ নিঃসন্দেহে নেপালের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে। তবে এই অস্থিরতা থেকে উত্তরণের পথ এখনো অনিশ্চিত।

-সুত্রঃ এ এফ পি


আবারও যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ইরান: সেনাপ্রধান হাতামির হুঁশিয়ারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১২:৩৬:২২
আবারও যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ইরান: সেনাপ্রধান হাতামির হুঁশিয়ারি
ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আমির হাতামি আবারও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে জানায়, তিনি সম্প্রতি ইসফাহান, তাবরিজ এবং হামাদান শহরে বিভিন্ন সেনা ইউনিট পরিদর্শনের সময় এমন মন্তব্য করেন। তাঁর ভাষায়, এর আগে সংঘটিত ১২ দিনের যুদ্ধে পশ্চিমা মিত্রদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং ন্যাটোর প্রযুক্তিগত সমর্থন সত্ত্বেও ইসরায়েল তেহরানের কাছে ভয়াবহ পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিল।

হাতামি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে যে আগ্রাসন চালানো হয়েছিল তার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করা। কিন্তু সেই সময় ইরানের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী ছাড়াও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড, বাজিস মিলিশিয়া এবং সাধারণ জনগণ সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তিনি উল্লেখ করেন, জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সশস্ত্র বাহিনীর কৌশলগত প্রস্তুতি ইসরায়েলি আগ্রাসনকে ব্যর্থ করে দেয়। তাঁর মতে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি জনগণের সুরক্ষার জন্য নিবেদিত এবং সেটি ধ্বংস করা কোনো বিদেশি শক্তির পক্ষে সম্ভব নয়।

ইরানি সেনাপ্রধান আরও অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ও তার মিত্ররা ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করেছিল। তবে আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ মানবসম্পদ এবং সমন্বিত প্রতিরক্ষা কৌশলের কারণে ইরান সেই ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ইরান বারবার প্রমাণ করেছে যে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের যেকোনো আগ্রাসন ঠেকাতে সক্ষম।

জনগণের ঐক্যকে সামরিক সক্ষমতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন হাতামি। তাঁর মতে, একটি দেশ যত উন্নত অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক প্রযুক্তিই অর্জন করুক না কেন, জনগণের ঐক্য ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় জনগণের অপ্রত্যাশিত সমর্থন ইরানকে শক্তি যুগিয়েছিল এবং ভবিষ্যতেও জাতীয় ঐক্য ইরানের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে কাজ করবে।

-রফিক


থাকসিন শিনাওত্রার কারাদণ্ড: রাজনৈতিক বংশপরিচয়ের পতনের আভাস

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১২:০৩:৩২
থাকসিন শিনাওত্রার কারাদণ্ড: রাজনৈতিক বংশপরিচয়ের পতনের আভাস
ছবিঃ সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার দেশটির প্রভাবশালী ও বিতর্কিত রাজনীতিবিদ থাকসিন শিনাওয়াত্রাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানায়, ২০২৩ সালে নিজস্ব হাসপাতালে থেকে শিনাওত্রা কারাদণ্ড অযথা সম্পন্ন করেছিলেন, যা বেআইনি ছিল।

দশকেরও বেশি সময় ধরে শিনাওত্রার রাজনৈতিক বংশপরিচয় দেশের সামরিক ও রাজতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক মহলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই পরিবার এবং তাদের পপুলিস্ট ধারা দেশটির প্রথাগত সামাজিক কাঠামোর জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইনি ও রাজনৈতিক ব্যর্থতার পরিশেষে তাদের প্রভাব হ্রাস পেতে শুরু করেছে। সর্বশেষ তার কন্যা পেটংটার্ন শিনাওত্রাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবারের সর্বোচ্চ আদালতের রায় থাইল্যান্ডের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য একটি কঠিন ধাক্কা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। আদালতের নির্দেশে তার ব্যাংকক রিম্যান্ড প্রিজনে স্থানান্তরের জন্য ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে।

থাকসিন ২০০১ এবং ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তবে দ্বিতীয় মেয়াদে সামরিক অভ্যুত্থানের পর নির্বাসনে যান। ২০২৩ সালের আগস্টে দেশে ফেরার পর তিনি দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে আট বছরের সাজা পান। কিন্তু তিনি কখনো সেল না কাটিয়ে ব্যক্তিগত হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাজার বিশেষ ক্ষমা ও বয়স্ক বন্দীদের জন্য পূর্বমুক্তির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাজা এক বছরে কমিয়ে দেওয়া হয়।

এই সময়ের ফেরা ও হাসপাতাল ট্রান্সফার, যা পেউ থাই পার্টির নতুন সরকার গঠনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, তা জনমনে বিশেষ ব্যবস্থার অভিযোগ ও সন্দেহ সৃষ্টি করেছিল। আদালতের রায়ে বলা হয়, “অভিযুক্তের সাজা কার্যকর করা বেআইনি। তিনি জানতেন বা সচেতন ছিলেন যে তার স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার মধ্যে নেই এবং এটি বহির্বিভাগে চিকিৎসা করা যেত।”

শিনাওত্রার পরিবারের জন্য রাজনৈতিক সাফল্যের এই ধাক্কা একটি চ্যালেঞ্জ হলেও তারা এখনও রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গণ্য। তার কন্যা পেটংটার্ন জানিয়েছেন, “আমার পিতা এখনও মানুষের জীবন উন্নয়নের জন্য তাঁর নৈতিক ও রাজনৈতিক ভূমিকার মাধ্যমে নেতা হিসেবে রয়েছেন।”

বিশ্লেষকরা মনে করেন, শিনাওত্রা সহজে রাজনীতি ছাড়বেন না। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে তার প্রভাব ও বুদ্ধিমত্তা এখনও বিবেচনার বিষয়। আদালতের বাইরে তার সমর্থকরা লাল রঙের পোশাকে উপস্থিত হয়ে রায়ের প্রতি একাগ্রতা দেখিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে পেউ থাই পার্টি ক্ষমতা হারানো এবং শিনাওত্রার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা গুজব ও রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, “এটি শেষ নয়, তবে পেউ থাইয়ের শক্তি কমিয়ে দিয়েছে।”

-সুত্রঃ এ এফ পি


মেক্সিকোতে ভয়াবহ ট্রেন-বাস সংঘর্ষে ১০ নিহত, আহত ৪১

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১১:০৪:২৮
মেক্সিকোতে ভয়াবহ ট্রেন-বাস সংঘর্ষে ১০ নিহত, আহত ৪১
ছবিঃ সংগৃহীত

মেক্সিকোর মধ্যাঞ্চলে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪১ জন। সোমবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মেক্সিকো সিটির উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে আটলাকোমুলকো এলাকায়, যখন একটি মালবাহী ট্রেন ধাক্কা দেয় একটি ডাবল-ডেকার যাত্রীবাহী বাসে।

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রেললাইন অতিক্রমের সময় হঠাৎ করেই ট্রেনটি বাসটিকে আঘাত করে। আশেপাশের যানবাহন থেমে থাকলেও বাসটি লাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছিল। ভিডিওতে কোনো রেলগেট বা নিরাপত্তা ব্যারিয়ার দৃশ্যমান হয়নি, যা দুর্ঘটনার ভয়াবহতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় সিভিল প্রটেকশন বিভাগের কর্মকর্তা অ্যাড্রিয়ান হার্নান্দেজ জানান, আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, আহত যাত্রীরা বাস থেকে কোনোরকমে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। ঘটনাস্থলে তোলা ছবিতে পুরো বাসটির ছাদ ও পেছনের অংশ ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয় প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে বাস চালককে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হার্নান্দেজ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের অবহেলা ও সড়কপথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।

-সুত্রঃ এ এফ পি


বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে প্রগতিশীল ঢেউ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:২২:৫১
বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে প্রগতিশীল ঢেউ

যুক্তরাষ্ট্রের ভেরমন্ট অঙ্গরাজ্যের সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স তাঁর Fighting the Oligarchy Tour–এর অংশ হিসেবে শনিবার নিউইয়র্কের ব্রুকলিন কলেজে এক টাউন হলে অংশ নেন। সঙ্গে ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী ও ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান মামদানি। স্যান্ডার্সের এই ট্যুর ইতিমধ্যেই ২১টি অঙ্গরাজ্যে পৌঁছেছে এবং তিন লাখেরও বেশি মানুষ এতে যুক্ত হয়েছেন। ব্রুকলিনে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রায় ১,৭০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন, যা মামদানির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ও নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের জাতীয় গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করে।

টাউন হলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মামদানি বলেন, রাজনীতি সাধারণ মানুষের শক্তিতে চালিত হতে পারে। আয়বৈষম্য ও বড় করপোরেশনের প্রভাবের বিরুদ্ধে তিনি কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দাবি করেন, ডোরড্যাশ তাঁর প্রার্থিতা ঠেকাতে এক মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। তবে তাঁর বার্তা ছিল স্পষ্ট—“নিউইয়র্ক সিটি বিক্রির জন্য নয়।” অন্যদিকে বার্নি স্যান্ডার্স ধনকুবেরদের ক্ষমতার সমালোচনা করে বলেন, এলন মাস্ককে ট্রিলিয়নেয়ার বানানোর মতো সিদ্ধান্তগুলো এক অমানবিক বৈষম্যের প্রতিফলন, যখন লক্ষ লক্ষ মানুষ খাবারের জন্য সংগ্রাম করছে।

প্রগতিশীল এ প্রার্থী সামাজিক নীতির দিকেও নজর দেন। শিশুসেবা (childcare) নিয়ে স্থানীয়দের প্রশ্নের জবাবে মামদানি জানান, ছয় সপ্তাহ থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের জন্য বিনামূল্যে ডে–কেয়ার চালু করবেন। তিনি বলেন, শিশুসেবার ব্যয় অনেক পরিবারের আয়ের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত চলে যায়, যা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জন্য অসহনীয়।

তবে এই অগ্রযাত্রার পাশাপাশি মামদানি ও স্যান্ডার্স হোয়াইট হাউস থেকে আসা চাপের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি মামদানিকে “কমিউনিস্ট” বলে আক্রমণ করেছেন এবং অভিযোগ উঠেছে যে তিনি নিউইয়র্কের বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসকে নিজের প্রশাসনে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। যদিও ট্রাম্প পরে এ দাবি অস্বীকার করেন, নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয় অ্যাডামসকে সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত করার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। এদিকে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো, যিনি বর্তমানে মামদানির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।

জরিপগুলোতে মামদানি দ্বিগুণ ব্যবধানে কুমোকে পেছনে ফেলেছেন। তবে এখনো কোনো জরিপে তিনি ৫০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পাননি। কুমোর দাবি, যদি অ্যাডামস বা রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া সরে দাঁড়ান, তবে সেই ভোট তাঁর দিকে যাবে। তা সত্ত্বেও মামদানির জনপ্রিয়তা প্রমাণ করছে, প্রগতিশীল নীতির প্রতি নিউইয়র্কবাসীর আস্থা বাড়ছে।

স্যান্ডার্স বলেন, মামদানির উত্থান প্রমাণ করছে প্রগতিশীল তরঙ্গ এখন জাতীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি উল্লেখ করেন, মিনিয়াপলিস, সিয়াটল ও অ্যালবুকার্কির মতো শহরে প্রগতিশীল প্রার্থীরা মেয়র পদে লড়াই করছেন। এ প্রার্থীরা আয়বৈষম্য, আবাসন সমস্যা ও শ্রমিক সুরক্ষার মতো ইস্যু সামনে এনেছেন, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।

টাউন হলে স্যান্ডার্স ও মামদানি উভয়েই সতর্ক করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রয়োজনে নিউইয়র্কে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে পারেন। মামদানি বলেন, আমরা ক্যালিফোর্নিয়ার মতো আদালতের পথে এমন পদক্ষেপ ঠেকানোর প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে বাস্তবতা হলো, গত বছরই গভর্নর ক্যাথি হোচুল নিউইয়র্ক সাবওয়েতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিলেন, যদিও তখন অপরাধের হার কমছিল। সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসে নিউইয়র্কে গুলির ঘটনা ছিল ইতিহাসে সর্বনিম্ন পর্যায়ে।

সব মিলিয়ে, ব্রুকলিনের এই টাউন হল শুধু নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের প্রতিযোগিতা নয়, বরং মার্কিন রাজনীতিতে প্রগতিশীল শক্তির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা হিসেবে নতুন এক অধ্যায় উন্মোচন করেছে। সূত্রঃ আল জাজিরা।


গাজা অভিমুখী শান্তিপূর্ণ মিশনে হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১৭:২৪
গাজা অভিমুখী শান্তিপূর্ণ মিশনে হামলা
গাজা, ছবিঃ সংগৃহীত

গাজা সলিডারিটি ফ্লোটিলা (GSF) জানিয়েছে, তাদের বহরে থাকা ‘ফ্যামিলি বোট’ নামের জাহাজে এক ড্রোন হামলার ফলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় জাহাজটির প্রধান ডেক এবং নিচতলার সংরক্ষণাগারে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংগঠনটি নিশ্চিত করেছে।

সংগঠনটি তাদের সরকারি প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজের অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী চিত্র তুলে ধরেছে। সেখানে দেখা যায়, সামনের ডেকের মেঝে ও দেয়াল সম্পূর্ণ কালো হয়ে গেছে এবং চারপাশে দগ্ধ চিহ্ন স্পষ্ট।

GSF এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিশনকে ভয় দেখানো বা বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে এমন আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হলেও আমরা থেমে থাকব না। গাজার জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং অবরোধ ভাঙার আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে দৃঢ় সংকল্প ও অঙ্গীকার নিয়ে।”

প্রসঙ্গত, অগ্নিকাণ্ডের সময় জাহাজে ছয়জন ক্রু সদস্য অবস্থান করছিলেন। তবে সৌভাগ্যক্রমে তারা সবাই নিরাপদে আছেন বলে জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা এবং গাজার অবরোধ ভাঙার শান্তিপূর্ণ উদ্যোগে নিয়োজিত এই বহরটি দীর্ঘদিন ধরেই নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে। তবুও GSF-এর দাবি, তারা গাজার মানুষের দুর্দশা লাঘবের জন্য তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

সূত্র: আল জাজিরা


প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১৪:০৭
প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
ছবিঃ সত্য নিউজ

ফ্রান্সের জাতীয় সংসদ সোমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, যা দেশটির আধুনিক ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। মাত্র নয় মাস ক্ষমতায় থাকার পরই বাইরু তাঁর মিতব্যয়ী বাজেট নিয়ে জটিল অচলাবস্থা কাটাতে আস্থা ভোট ডাকেন। বাজেটে প্রস্তাব ছিল ৪৪ বিলিয়ন ইউরো (৫২ বিলিয়ন ডলার) সাশ্রয় করে ফ্রান্সের ঋণের বোঝা কমানো। কিন্তু ফল এসেছে উল্টো—৩৬৪ জন সাংসদ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানান, আর আস্থা জানান মাত্র ১৯৪ জন।

ফরাসি সংবিধানের ৫০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরপরই প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সরকারের পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন সংসদের স্পিকার ইয়েল ব্রন-পিভেট। বাইরু এভাবে আস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ফ্রান্সের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী।

রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক বিবৃতিতে জানান, তিনি এই ফলাফল মেনে নিয়েছেন এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। মঙ্গলবার বাইরুর সঙ্গে বৈঠকে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে।

ম্যাক্রোঁর সামনে নতুন সংকট

২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত ছয়জন প্রধানমন্ত্রী দেখলেন ম্যাক্রোঁ। তবে ২০২২ সাল থেকে পাঁচবার নেতৃত্ব বদলের ফলে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ এখন অস্থিরতায় ভরা। ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে সক্রিয় থাকলেও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট এখন তাঁর জন্য বড় মাথাব্যথা।

বাইরু আস্থা ভোটের ঝুঁকি নিয়ে বলেন, “সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হতো কোনো ঝুঁকি না নেওয়া—যেন সব আগের মতো চলতে থাকে। অথচ ঋণের পাহাড় ফ্রান্সের জন্য প্রাণঘাতী। কয়েক বছরের মধ্যে দেশকে ঋণের স্রোত থেকে বাঁচাতেই আমরা এই পরিকল্পনা নিয়েছিলাম।”

নতুন নেতৃত্ব কে?

এখন প্রশ্ন, ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? সমাজতান্ত্রিক পার্টির নেতা অলিভিয়ার ফোরে ঘোষণা দিয়েছেন, বামপন্থীরা দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, “আমাদের সময় এসেছে ফ্রান্সকে নতুন পথে নিয়ে যাওয়ার।” তবে এমন সরকার কতটা টিকবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।

অন্যদিকে, ম্যাক্রোঁর আস্থাভাজন হলেও ঝুঁকিপূর্ণ প্রার্থী হতে পারেন বিচারমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানাঁ। তুলনামূলকভাবে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্যাথরিন ভত্রাঁ কিংবা অর্থমন্ত্রী এরিক লম্বার।

তবে সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ফরাসিদের ৬৪ শতাংশ চান ম্যাক্রোঁ নিজেই পদত্যাগ করুন, নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ নয়। যদিও সংবিধান অনুযায়ী তিনি ২০২৭ সালের নির্বাচনে তৃতীয়বার প্রার্থী হতে পারবেন না।

লে পেনের ছায়া

রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি সামাজিক অস্থিরতাও বাড়ছে। “ব্লক এভরিথিং” নামের একটি বামপন্থী জোট বুধবার দেশে গণআন্দোলনের ডাক দিয়েছে। বড় শ্রমিক সংগঠনগুলোও আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে, ২০২৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) দলের সবচেয়ে বড় সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে এর নেতা মেরিন লে পেন মার্চ মাসে ভুয়া চাকরির মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড (যার মধ্যে দুই বছর স্থগিত) ও পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষিদ্ধ হন।

লে পেন অবশ্য রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। সোমবার আদালত জানিয়েছে, তাঁর আপিল শুনানি ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। যদি আপিলে জয় পান, তবে আবারও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দৌড়ে ফিরতে পারেন তিনি। ইতোমধ্যেই তিনি ম্যাক্রোঁকে দ্রুত সংসদীয় নির্বাচনের ডাক দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “এটি আর কোনো বিকল্প নয়, এটি একটি বাধ্যবাধকতা।”

ফ্রান্সের এই রাজনৈতিক অস্থিরতা কেবল সরকারের স্থায়িত্ব নয়, বরং ইউরোপীয় রাজনীতিতেও নতুন অনিশ্চয়তার জন্ম দিচ্ছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


জাতিসংঘ ক্ষুব্ধ, স্পেন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি—গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসযজ্ঞ তীব্রতর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১২:৩৫
জাতিসংঘ ক্ষুব্ধ, স্পেন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি—গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসযজ্ঞ তীব্রতর

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজা সিটির বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেছেন, “এখনই শহর ছাড়ো”। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক ইসরাইলকে “গণহত্যা”র দায়ে অভিযুক্ত করে বলেন, দেশটি একের পর এক “যুদ্ধাপরাধ” চালাচ্ছে এবং বেসামরিক লোকদের বাঁচার পথ বন্ধ করে দিচ্ছে।

জাতিসংঘের কড়া ভাষা

ভলকার টার্ক বলেছেন, গাজার ধ্বংসযজ্ঞ এখন “বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিচ্ছে”। তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) জানুয়ারির রায় অনুযায়ী ইসরাইলকে গণহত্যা প্রতিরোধে বাধ্য করা হয়েছিল, অথচ বাস্তবে তার উল্টো দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

গাজায় বোমাবর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, রবিবার সকাল থেকে সোমবার পর্যন্ত ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজা সিটিতে অন্তত ৫০টির বেশি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং আরও ১০০ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। spokesman মাহমুদ বাসাল অভিযোগ করেন, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর শিবির সংলগ্ন আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে, যাতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২০০–এর বেশি তাঁবু ধ্বংস হয়। গাজার তুফ্ফাহ ও আজ-জারকা এলাকায় ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে এখনও মরদেহ উদ্ধার করছে উদ্ধারকর্মীরা। স্থানীয়রা বলছে, মসজিদ ও খেলার মাঠও হামলার শিকার হয়েছে।

নিহত ও ক্ষুধাজনিত মৃত্যু

স্থানীয় হাসপাতালগুলো জানিয়েছে, সোমবার একদিনেই কমপক্ষে ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ৩২ জন গাজা সিটির। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, খাদ্যসংকট ও অপুষ্টিতে দুই শিশুসহ আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ দিন ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন সাংবাদিক ওসামা বালুশাও। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় প্রায় ২৫০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন—সবাই ফিলিস্তিনি, কারণ ইসরাইল বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়নি। এটি আধুনিক ইতিহাসের সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত।

‘মানবিক এলাকা’ও নিরাপদ নয়

ইসরাইল গাজা সিটির জামাল আব্দেল নাসের সড়কের বাসিন্দাদের জন্য নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে বলেছে, তারা যেন শহর ছেড়ে দক্ষিণের আল-মাওয়াসিতে চলে যায়। অথচ এই আল-মাওয়াসিই বারবার বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে। যেখানে আগে ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ ছিল, সেখানে এখন প্রায় ৮ লাখ মানুষ গাদাগাদি করে বসবাস করছে।

স্পেনের কঠোর পদক্ষেপ

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সাঞ্চেজ জাতিসংঘের সুরে সুর মিলিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইসরাইলে অস্ত্র বহনকারী জাহাজ ও বিমান স্পেনের বন্দর ও আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারবে না। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানো হবে এবং অবৈধ ইসরাইলি বসতিতে উৎপাদিত পণ্য আমদানিও নিষিদ্ধ করা হবে। সাঞ্চেজ আরও ঘোষণা দেন, যেকোনো ব্যক্তি যারা সরাসরি এই “গণহত্যা”য় জড়িত, তাদের স্পেনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ও হামাসের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, “এটাই হামাসের জন্য শেষ সতর্কবার্তা।” ওয়াশিংটন নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, যার অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। তবে শর্ত রাখা হয়েছে—গাজার নতুন সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে তবেই এই প্রত্যাহার সম্ভব হবে। হামাস এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, এটি আসলে ইসরাইলকে গাজার ওপর ভেটো ক্ষমতা দেওয়ার ফাঁদ।

পশ্চিম তীরে রক্তপাত

একই দিনে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের হামলায় ছয়জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হন। ইসরাইলি সেনা হামলাকারীদের হত্যা করে। এর পর ইসরাইলি বাহিনী পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের বিভিন্ন গ্রাম অবরোধ ও অভিযান চালায়।

জেনিনে অভিযানের সময় দুই কিশোর নিহত হয়। মানবাধিকারকর্মী মুস্তাফা বারঘুতি অভিযোগ করেন, ইসরাইল প্রতিবার এ ধরনের ঘটনা অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে সমষ্টিগত শাস্তি দেয়, যার লক্ষ্য পশ্চিম তীর দখল ও জনসংখ্যা উচ্ছেদ।

পাঠকের মতামত: