নিশর্ত যুদ্ধবিরতির পরেই আলোচনায় বসতে চান জেলেনস্কি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১২ ০৮:৩৯:১১
নিশর্ত যুদ্ধবিরতির পরেই আলোচনায় বসতে চান জেলেনস্কি

সত্য নিউজ: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার আবহ তৈরি হলেও, যুদ্ধক্ষেত্রে রক্তপাত থামানোকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যখন কিয়েভের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন, ঠিক তার পরপরই জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—কোনো আলোচনা শুরু হওয়ার আগে রাশিয়াকে নিঃশর্তভাবে অন্তত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যেতে হবে।

শনিবার দেওয়া বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়ার তরফে যুদ্ধ বন্ধের ভাবনা একটি ইতিবাচক বার্তা। বিশ্ব বহু দিন ধরে এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিল। তবে যুদ্ধ থামানোর সর্বপ্রথম ও অনিবার্য শর্ত হলো—সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি। প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্তে মানুষ মারা যাচ্ছে। এ অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না।”

তিনি জানান, ইউক্রেন আগামীকাল ১২ মে থেকে পূর্ণাঙ্গ, টেকসই এবং যাচাইযোগ্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত, যদি রাশিয়াও তাতে অংশ নেয়।

রাশিয়ার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “এই অবিরাম রক্তস্নান থামাতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, এই যুদ্ধ থামলে একটি নতুন, নিরাপদ বিশ্ব গড়ে উঠবে। আমরা চাই, আলোচনা সফল হোক।” ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া পোস্টে আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনাকে বাস্তবতায় রূপ দিতে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও ইউক্রেনের অবস্থানকে সমর্থন করে বলেন, “রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যদি সত্যিই আলোচনা শুরু করতে হয়, তার আগে যুদ্ধবিরতি অবশ্যই প্রয়োজন।” তিনি জানান, ইউরোপীয় নেতারা রাশিয়াকে ১২ মে থেকে ৩০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই প্রস্তাবে সাড়া না দিলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা’ জারি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ম্যাক্রোঁসহ ইউরোপীয় শীর্ষ নেতারা।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের দপ্তরের প্রধান ও ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, “যখন গোলাগুলি চলছে, তখন আলোচনার কোনো অর্থ নেই। প্রথমে যুদ্ধ থামুক, তারপর বাকিসব।”

ইয়ারমাক আরও হুঁশিয়ার করে বলেন, রাশিয়া যেন কথার খেলায় না মেতে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা না করে। “আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত। এখন রাশিয়ার কাছ থেকে বাস্তব প্রতিক্রিয়া চাই।”

বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি আলোচনা শুরুর প্রাক্কালে এই যুদ্ধবিরতির শর্ত রাজনীতিক কৌশল হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের ফসল, অন্যদিকে রাশিয়াকে আলোচনায় টানার একটি কূটনৈতিক পরীক্ষা।

চলমান সংঘাত বন্ধে বিশ্বের নজর এখন সোমবারের দিকে, যখন রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত