ঘুমও হতে পারে ইবাদত: জানুন নবীজির (সা.) ঘুমের ৭টি সুন্নত

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৪ ১৮:২৭:৪৬
ঘুমও হতে পারে ইবাদত: জানুন নবীজির (সা.) ঘুমের ৭টি সুন্নত

ঘুম মানবজীবনের অপরিহার্য এক অংশ। একজন মুমিনের জন্য ঘুম শুধুই শারীরিক বিশ্রামের বিষয় নয়, বরং এটিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি ইবাদত হিসেবেও বিবেচনা করা উচিত। ইসলাম ঘুমের একটি পূর্ণাঙ্গ সুন্নাহ পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছে, যা অনুসরণ করলে শুধু শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায় না, বরং তা পরকালের সফলতার পথও সুগম করে।

রাতের শুরুতে ঘুমানো এবং শেষ তৃতীয়াংশে জেগে ইবাদত করা

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে দেরি করে জাগরণ অপছন্দ করতেন, বিশেষত ইশার নামাজের পর। প্রয়োজনে ছাড়া তিনি রাতের শুরুতেই ঘুমাতে পছন্দ করতেন। পাশাপাশি, তিনি রাতের শেষ ভাগে জেগে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন, যা তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল ছিল।

তাঁর প্রিয় নবী দাউদ (আ.)-এর নফল ইবাদতের পদ্ধতিও এ ক্ষেত্রে অনুকরণীয় রাতের অর্ধেক ঘুম, এক তৃতীয়াংশ ইবাদত ও বাকি ষষ্ঠাংশ ঘুম। যারা সম্পূর্ণ রাত ঘুমিয়ে দেন, তাদের প্রতি সতর্ক করে তিনি বলেছেন, “তাদের কানে শয়তান প্রস্রাব করেছে।”

ঘুমের পূর্বে ওজু ও বিছানা পরিষ্কার করার সুন্নাহ

ঘুমের পূর্বে পবিত্রতা রক্ষা করে ওজু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নবীজি (সা.) নামাজের মতোই ঘুমের আগেও ওজু করতেন। আর ঘুমের আগে নিজের বিছানাকে ঝেড়ে পরিষ্কার করাও ছিল তাঁর অভ্যাস। তিনি নির্দেশ দেন, কেউ শোবার আগে যেন নিজের কাপড়ের ভেতরের অংশ দিয়ে বিছানাটি ঝেড়ে নেয় যাতে অবাঞ্ছিত কিছু থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

ডান কাত হয়ে ঘুমানো এবং দোয়া পাঠ করা

রাসূল (সা.) ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমাতে উৎসাহ দিতেন। বিছানায় যাওয়ার আগে তিনি ওজু করে ডান পাশে শুয়ে পড়ার আদেশ দিতেন এবং কিছু বিশেষ দোয়া ও যিকির পাঠ করতেন, যা মুমিনের রুহানি নিরাপত্তা ও আল্লাহর নৈকট্য বৃদ্ধিতে সহায়ক।

ঘুমের পূর্বে দোয়া ও যিকিরসমূহ

ঘুমের আগে তিনি সূরা ইখলাস, ফালাক, ও নাস তিনবার পড়ে নিজের দুই হাতে ফুঁ দিয়ে তা শরীরের ওপর বুলাতেন। এছাড়া, আয়াতুল কুরসি, বিভিন্ন প্রশংসামূলক ও নিরাপত্তামূলক দোয়া এবং “বিসমিকা আল্লাহুম্মা আমুতু ওয়া আহইয়া” - এই ছোট অথচ গভীর অর্থবহ দোয়াগুলো পড়তেন।

সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণের দোয়া: রাতের শেষ কথা

বারা ইবনে আযিব (রা.)-কে রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি বিশেষ দোয়া শিখিয়েছিলেন যা তাঁর ঘুমের পূর্বে শেষ কথা হতো। সেই দোয়ায় রয়েছে আত্মসমর্পণ, আস্থা, নিরাপত্তা, ঈমান এবং আল্লাহর উপর পূর্ণ নির্ভরতার প্রকাশ। রাসূল (সা.) বলেন, যদি এই দোয়া পাঠ করে কেউ ঘুমিয়ে পড়ে এবং সেই রাতে মারা যায়, তবে সে প্রকৃত ইসলাম তথা ‘ফিতরাত’-এর উপর মৃত্যু লাভ করবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ