কুমিল্লায় নজরুল: প্রেম, বিদ্রোহ ও সংস্কৃতির পুনর্জন্ম

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৫ ১১:১৭:৩০
কুমিল্লায় নজরুল: প্রেম, বিদ্রোহ ও সংস্কৃতির পুনর্জন্ম

কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লায় শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠানের বর্ণাঢ্য আয়োজন। ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ২৫ থেকে ২৭ মে জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি, মুরাদনগরের দৌলতপুর ও জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠান হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এবং কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এই উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সৃষ্টিশীলতার এক বড় অধ্যায় কুমিল্লায় লিপ্ত ছিল। ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দফায় প্রায় ১১ মাস তিনি এখানে অবস্থান করেন। এই সময়ে কবি প্রেম, বিদ্রোহ, সুরকার ও শিল্পী হিসেবে নিজের পরিচয় গড়ে তুলেন। কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গায় কান্দিরপাড়, ধর্মসাগর, রাণীর দীঘি, মুরাদনগরের দৌলতপুর তার পদচারণার স্মৃতি অমলিন। এছাড়াও ব্রিটিশ বিরোধী রাজনীতি এবং ভারতের গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণের প্রেক্ষাপটও এখানেই গড়ে উঠেছিল।

দৌলতপুরে কবির প্রথম স্ত্রী নার্গিস আসার খানমের বাড়িতে মঙ্গলবার বিশেষ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব প্রধান অতিথি থাকবেন। মুরাদনগর প্রশাসনের সহায়তায় ‘দৌলতপুরে নজরুল’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনও এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ।

কুমিল্লায় নজরুলের স্মৃতি সংরক্ষণের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। ১৯৬০ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে কবি নজরুল ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬২ সালে কান্দিরপাড় থেকে ফরিদা বিদ্যায়তন পর্যন্ত সড়কটি ‘নজরুল অ্যাভিনিউ’ নামে নামকরণ করা হয়। ১৯৭০ সালে নজরুল ললিতকলা পরিষদ গঠিত হয়, যা পরে নজরুল পরিষদে রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৩ ও ১৯৯২ সালে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে কবির অবস্থান ও স্মৃতিচিহ্নের জন্য টিন ও পাকা স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়।

কুমিল্লা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সামনে নির্মিত ‘চেতনায় নজরুল’ স্মৃতিস্তম্ভ, নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের গবেষণা ও পাঠাগার কুমিল্লাকে দেশের অন্যতম নজরুল স্মরণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

কবি নজরুল ইন্সটিটিউট কেন্দ্র, কুমিল্লার কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, “কবি নজরুলের স্মৃতি ও সাহিত্যকর্ম সংরক্ষণে আমরা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছি। এখানে জাদুঘর, পাঠাগারসহ গবেষণার সুযোগ রয়েছে যা জাতীয় পর্যায়ে নজরুল চর্চাকে সমৃদ্ধ করবে।”

ঐতিহ্য কুমিল্লার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল জানান, “এই আয়োজন কুমিল্লার সাংস্কৃতিক জীবনে একটি নতুন প্রাণদানের কাজ করবে। নজরুলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ ও তার সাহিত্য-সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় এই অনুষ্ঠান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”

এসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে কুমিল্লা পুনরায় দেশের ‘বিদ্রোহী কবি’ কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি ও সাহিত্যচর্চার এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত