১ কোটি তরুণের কর্মসংস্থানে বিএনপির পরিকল্পনা ঘোষণা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মূল নায়ক জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের কঠোর আন্দোলন ও সংগ্রামে যারা তাদের আত্মত্যাগ দিয়েছেন, তাদের কথা এখনকার আলোচনায় অপ্রতুল উঠে আসছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা রয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।

শনিবার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রামের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার আয়োজনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু আরও বলেন, ১৬ বছরের আন্দোলনে বিএনপির নেতাকর্মীরা নানা যন্ত্রণার মধ্যে থেকেও দেশের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করেছেন। তাদের ব্যবসা-জীবন নষ্ট হয়েছে, পরিবার ভেঙে গেছে, অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন, আবার অনেক সময় কোর্ট-কারাগারে কাটাতে হয়েছে। এসব বেদনাদায়ক দিক আলোচনায় আসছে না, যা একটি বড় সমস্যা। তবে বিএনপি ইতোমধ্যেই দেশের উন্নয়নে একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করেছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প ও কৃষিক্ষেত্রসহ বিভিন্ন সেক্টরে পরিকল্পনা হাতে রাখা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যাবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য সহনশীলতা ও ভিন্নমতকে সম্মান করা জরুরি। বিএনপির ৩১ দফা ঘোষণার ভিত্তিতে এখন দেশের গঠন ও উন্নয়নের সময় এসেছে। বিএনপি শুধু বর্তমান সরকারের পতনের ওপর মনোযোগ দেয়নি, বরং তারেক রহমান এখন রাজনীতিতে সহনশীলতা এবং ঐক্যের বার্তা দেন, যা রাজনীতির জন্য ইতিবাচক।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ৩৬ দিনের এই গণঅভ্যুত্থান একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি ১৬ বছরের ধারাবাহিক সংগ্রামের অংশ। এই আন্দোলনে যুবক, নারী, শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, গত বছর তার বাড়ি এবং ভাইয়ের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে, যাদের বিচার হয়নি, যা দেশের সামগ্রিক ন্যায়বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতার ইঙ্গিত।

আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচি। আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হাসান আলী চৌধুরী এবং মহানগর ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইফতেখার ইসলাম লিটন অনুষ্ঠানের পরিচালনা করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক এবং ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভার শুরুতে আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও শাসনব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নির্মিত একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

এই সমাবেশে তুলে ধরা হয় দেশের ভবিষ্যত গঠনে বিএনপির দৃঢ় সংকল্প ও আন্দোলনের মূল্যবান অবদান।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক