গাজায় ইসরায়েলি হামলা: একদিনে ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত, ত্রাণ সংকট তীব্র

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৭ ০৯:১৮:৫৭
গাজায় ইসরায়েলি হামলা: একদিনে ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত, ত্রাণ সংকট তীব্র
ছবি: সংগৃহীত

গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার কারণে সহিংসতা ও মানবিক সংকট দিন দিন আরও তীব্রতর হচ্ছে। শনিবার (২৬ জুলাই) একক দিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪২ জন ছিল ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ সাধারণ মানুষ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্ষুধাজনিত কারণে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হওয়ায় অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা মোট ১২৭ জনে পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে অন্তত ৮৫ জন শিশু।

বৈশ্বিক নিন্দার মধ্যে ইসরায়েল শনিবার রাতে ঘোষণা দেয়, তারা নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় ‘মানবিক করিডোর’ এবং বেসামরিক এলাকায় সাময়িক অভিযান স্থগিত রাখবে যাতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। তবে কোন এলাকায় এই বিরতি কার্যকর হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে, তারা জাতিসংঘের ওপর ত্রাণ বিতরণে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে, যা জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানান, তারা নিরাপদে ত্রাণ বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি এবং নিরাপত্তা এখনও পাননি। ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গাজায় আকাশপথে ত্রাণ পাঠানোর দাবি করলেও বিশেষজ্ঞরা এটিকে ‘অকার্যকর ও বিপজ্জনক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, আকাশপথে পাঠানো এসব ত্রাণ ‘দৃষ্টি ঘোরানোর কৌশল’ মাত্র এবং এর মাধ্যমে গাজার ভয়াবহ অনাহার দূর করা সম্ভব নয়।

গাজার আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, শনিবার মাত্র সাতটি প্যালেট খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিমান থেকে ফেলা হয়েছে, যা একটি ট্রাকের অর্ধেক লোডের সমান। পাশাপাশি, প্লেন থেকে অন্ধকারে ত্রাণ ফেলার কারণে অনেক সাহায্য সামরিক নিষিদ্ধ এলাকায় পড়ছে, যেখানে তা উদ্ধার করাও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

গাজার চিকিৎসা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে পরিস্থিতি ‘অনাহারে গণমৃত্যুর’ দিকে দ্রুত এগোচ্ছে। হানি মাহমুদ বলেন, ইসরায়েলের মানবিক বিরতি কার্যকর সমাধান নয়, কারণ গাজায় অনাহারের মাত্রা ইতোমধ্যে সীমা অতিক্রম করেছে।

এই অবস্থায় গাজার মানুষের জীবন ও নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের ত্বরিত হস্তক্ষেপের দাবি তীব্র হচ্ছে, যেখানে অবিলম্বে ত্রাণ পৌঁছানো, অবরোধ তুলে দেওয়া এবং সহিংসতা বন্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ