উত্তরা হবে ‘গ্রিন বেল্ট’: তিন মাসে লাগানো হবে ৫ লাখ গাছ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৭ ১২:০৩:৫৩
উত্তরা হবে ‘গ্রিন বেল্ট’: তিন মাসে লাগানো হবে ৫ লাখ গাছ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) রাজধানীর উত্তরা অঞ্চলকে একটি পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব ‘গ্রিন বেল্ট’ বা সবুজ বেষ্টনীর আওতায় আনতে পাঁচ লাখ গাছ রোপণের বৃহৎ বনায়ন কর্মসূচি শুরু করেছে। নগরীর পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা এবং বায়ুদূষণ হ্রাসে এই পদক্ষেপকে যুগোপযোগী ও টেকসই উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, নগরবাসীর জন্য বাসযোগ্য, সবুজ ও স্বাস্থ্যসম্মত নগরী গড়ার অংশ হিসেবে চলতি বর্ষা মৌসুমজুড়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। তিন মাসব্যাপী এই অভিযানে সড়কের বিভাজক, পার্ক, খেলার মাঠ, খালপাড়, কবরস্থান এবং নিম্নআয়ের মানুষের বসবাসরত এলাকাসমূহে গাছ রোপণ করা হবে।

এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (১৬ জুলাই) উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ের ১৫ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ি এলাকায়, ৫ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন ৪ নম্বর লেকপাড়ে একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রশাসক। সেখানে স্থানীয় জনগণ, পরিবেশবাদী সংগঠন ও করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘‘শুধু সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। আমরা চাই কমিউনিটি-নির্ভর অংশগ্রহণ, যেন পরিবেশ সুরক্ষায় নগরবাসী নিজেদের মালিকানার অংশীদার মনে করে। এই ‘কমিউনিটি ওনারশিপ’ তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’’

অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির সঙ্গে অংশীদার হিসেবে যুক্ত ছিল আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড ও পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন সেভারস। তাদের অর্থায়ন ও সহায়তায় ওইদিন ৫০০টি দেশীয় প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়। এসব গাছের মধ্যে ছিল হিজল, বট, কদম, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, ছাতিম, জাম, জামরুল, নিম ও অর্জুন যেগুলো বিশেষভাবে খাল ও নদীপাড়ে রোপণের উপযোগী।

প্রশাসক এজাজ বলেন, ‘‘ঢাকার ভেতরে একসময় পাঁচটি নদী প্রবাহিত হতো। এর মধ্যে কনাই নদীর শাখা খিদির খালকে টঙ্গী খালের সঙ্গে যুক্ত করে পুনরায় প্রবাহিত করা হয়েছে। এটি শহরের প্রাকৃতিক জলধারা পুনরুদ্ধারের একটি পদক্ষেপ।’’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, পরিকল্পিতভাবে খাল ও নদীর দুই পাশে গাছ লাগানো হলে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার এলাকা সবুজে পরিণত করা সম্ভব। এর মাধ্যমে নগরী আরও জলবায়ু সহনশীল হয়ে উঠবে এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইডিএলসির লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও সিএসআর প্রধান ফারহানা শারমিন, গ্রিন সেভারসের প্রধান নির্বাহী আহসান রনি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, রোপিত চারাগুলোর পরিচর্যার দায়িত্বও গ্রহণ করেছে গ্রিন সেভারস। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, নগরবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহণে এই কর্মসূচি কেবল পরিবেশ সংরক্ষণের একটি মডেল নয়, বরং আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই একটি নগর ব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ