বর্ষার নাস্তায় নতুন স্বাদ, কোরিয়ান গার্লিক চিলি পটেটো বাইটস

বর্ষার এই মৌসুমে আলুর স্বাদ থেকে একটু নতুনত্ব চান? তাহলে মজাদার কোরিয়ান গার্লিক চিলি পটেটো বাইটস বানিয়ে দেখতে পারেন। সহজ উপকরণ ও কম সময়ে তৈরি এই রেসিপি, যা সকালে বা বিকেলের নাশতায় সবার পছন্দ হবে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক গার্লিক চিলি পটেটো বাইটস তৈরির করার জন্য কী কী লাগবে এবং কীভাবে তৈরি করবেন-উপকরণ:
১. আলু ২-৩ টি (মাঝারি সাইজ)
২. কর্নফ্লাওয়ার ১ কাপ
৩. রসুন কুচি ১ টেবিল চামচ
৪. পেঁয়াজ কুচি ২ টি
৫. বেকিং পাউডার ১/৪ চা চামচ
৬. লবণ স্বাদমতো
৭. টমেটো সস ২ টেবিল চামচ
৮. চিলি সস ২ টেবিল চামচ
৯. পানি পরিমাণমতো (ডো তৈরির জন্য)
প্রস্তুতি প্রণালি:
প্রথমে মাঝারি সাইজের ২-৩টি আলু সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিন। এরপর কর্নফ্লাওয়ার এক কাপ, ১/৪ চা চামচ বেকিং পাউডার, পরিমাণমতো লবণ এবং প্রয়োজনমতো পানি দিয়ে একটি নরম ডো তৈরি করুন। ডো থেকে ছোট ছোট আকারে বাইটস তৈরি করুন। একটি প্যানে তেল গরম করে আলুর বাইটসগুলো বাদামি রং হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিন।
অন্য একটি প্যানে একটু তেল দিয়ে কুচানো রসুন ও পেঁয়াজ হালকা সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এরপর এতে ২ টেবিল চামচ টমেটো সস ও ২ টেবিল চামচ চিলি সস মিশিয়ে ঘন সস তৈরি করুন। ভাজা আলুর বাইটসগুলো এই গার্লিক চিলি সসের সঙ্গে ভালো করে মেখে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এভাবেই খুব সহজে আপনি বাড়িতে মজাদার কোরিয়ান গার্লিক চিলি পটেটো বাইটস তৈরি করে পরিবারের সবাইকে খুশি করতে পারেন।
খেজুর রসের পায়েস বানানোর সহজ রেসিপি
শীতের আমেজে বাঙালির খাদ্যতালিকায় যেসব ঐতিহ্য আজও একইভাবে জনপ্রিয়, তার মধ্যে অন্যতম খেজুর রসের পায়েস বা Khejur Rosher Payesh। গ্রামীণ বাংলার শীত মানেই ভোরের টাটকা খেজুর রস, আর সেই রস দিয়েই তৈরি হয় এই ঘন, সুগন্ধি এবং স্বাদে অতুলনীয় মিষ্টান্ন। খেজুরের রস, পোলাওয়ের চাল, এলাচ–দারুচিনির গন্ধ এবং নারকেলের স্বাদ একসঙ্গে মিলেমিশে তৈরি হয় অপূর্ব একটি ডেজার্ট, যা শীতকালীন উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ।
এই পায়েসের বিশেষত্ব হলো এর সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক মিষ্টি ও স্বাদ। খেজুর রস ফুটতে শুরু করলে ধীরে ধীরে ঘন হয় এবং চালের সঙ্গে মিশে তৈরি করে অনন্য টেক্সচার। গ্রাম থেকে শহর—সবখানেই এখন শীতকালীন খাবারের তালিকায় রসের পায়েস নতুন করে জায়গা দখল করেছে।
উপকরণ
- পোলাওয়ের চাল: ১ কাপ
- খেজুরের রস: ১ লিটার
- কোরানো নারকেল: ১ কাপ (ঐচ্ছিক)
- এলাচ: ২টি
- দারুচিনি: ২–৩ টুকরা
- তেজপাতা: ২টি
- লবণ: অল্প
পদ্ধতি
প্রথমে চাল ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিয়ে পাটায় হালকা ভেঙে নেওয়া হয় যাতে রান্নার সময় দানাগুলো সুন্দরভাবে ফেঁপে ওঠে। পাত্রে খেজুরের রস চুলায় তুলে একবার বলক দেওয়া হলে তাতে চাল, এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা ও সামান্য লবণ যোগ করা হয়। মাঝারি আঁচে ধীরে ধীরে চাল সেদ্ধ হয়ে রস ঘন হওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়। চাল সেদ্ধ হয়ে এলে এবং রস পায়েসের মতো ঘনত্ব পেলে যোগ করা হয় কোরানো নারকেল, যা বাড়িয়ে দেয় স্বাদ ও গন্ধ।
সবশেষে নামিয়ে ঠান্ডা করা হলে তৈরি হয় শীতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পায়েস। সকালের নাশতায় কিংবা বিকেলের আড্ডায়, অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে উৎসব সবখানেই এটি রাখতে পারে বিশেষ মান।
ঘরে বানান সহজ উপকরণে মজাদার পাটিসাপটা পিঠা
হেমন্তের হাওয়া লাগতেই বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় নতুন ধানের সুবাস, আর সেই সাথে পিঠা-পুলির উৎসব। বিশেষত শীতকাল এলেই পিঠা যেন বাঙালির জীবনে উৎসবের আরেক নাম হয়ে ওঠে। কুয়াশাভেজা সকাল, খেজুরের রস আর গরম গরম পিঠার স্বাদ এই সবকিছু মিলে শীতে পিঠাকে করে তোলে আরও আকর্ষণীয়। তবে আধুনিক নগরজীবনে বিদেশি খাদ্যের চাপে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব অনেক সময়েই হারাতে বসেছে। অথচ পিঠার সমারোহে পাটিসাপটা পিঠা এখনও সবার পছন্দের শীর্ষে।
বাংলাদেশের পিঠার বৈচিত্র্য
বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে রয়েছে পিঠার নিজস্ব ধরণ ও স্বাদ। একেক জায়গায় একই পিঠার ভিন্ন ভিন্ন নামও প্রচলিত। দেশে প্রায় ১৫০ ধরনের পিঠা থাকলেও সর্বসাধারণের রান্নাঘরে ৩০টির মতো পিঠাই বেশি প্রচলিত। নতুন চালের গুঁড়া, গুড়, নারিকেল, সুজি এসবই পিঠার মূল উপকরণ। কিছু পিঠায় আবার মাংস, সবজি বা ডালও ব্যবহার হয়। শীতকাল তাই পিঠাকাল বললেও অত্যুক্তি হয় না। পিঠা উৎসবও এখন দেশজুড়ে জনপ্রিয় প্রতিযোগিতার রূপ নিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দেন নতুন রেসিপির ভিড়ে যেন ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলো হারিয়ে না যায়।
পাটিসাপটা: শীতের ঘরোয়া আনন্দ
পাটিসাপটা পিঠা বাঙালির কাছে খুবই প্রিয় হলেও অনেকে ভুলভাবে মনে করেন এটি বানানো কঠিন। আসলে সামান্য কৌশল জানা থাকলে ঘরেই খুব সহজে তৈরি করা যায় এই মজাদার পিঠা।
পাটিসাপটা পিঠা তৈরির সহজ রেসিপি
উপকরণ
- দুধ ২ লিটার
- চিনি ৫০০ গ্রাম
- সুজি ২ টেবিল চামচ
- নারিকেল কোরা আধা কাপ
- চালের গুঁড়া ১ কেজি
- ময়দা আধা কাপ
- পানি পরিমাণ মতো
- লবণ স্বাদমতো
- তেল ভাজার জন্য
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে দুধের সাথে অর্ধেক চিনি দিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিন। দুধ ঘন হয়ে এলে তাতে সুজি ও নারিকেল কোরা মিশিয়ে ক্ষীর তৈরি করুন। ক্ষীর ঘন হলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা হতে দিন।
এবার চালের গুঁড়া, বাকি চিনি, লবণ ও পানি মিশিয়ে পাতলা গোলা তৈরি করুন। ফ্রাই প্যানে অল্প তেল গরম করে আধা কাপ গোলা ঢেলে রুটির মতো পাতলা করে ছড়িয়ে দিন। ওপরে শুকিয়ে আসলে এক চামচ ক্ষীর রেখে পাটিসাপটার মতো মুড়িয়ে আবার হালকা ভেজে নিন। পর্যায়ক্রমে সব পিঠা তৈরি করে পরে পরিবেশন করুন।
পিঠার স্বাদ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রয়োজন ভেজালমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত উপকরণ নির্বাচন। চালের গুঁড়া, দুধ, নারিকেল বা তেলের গুণগত মান খারাপ হলে পিঠার স্বাদ ও পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।
জানুন চিতই পিঠা বানানোর গোপন সহজ রেসিপি
বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলোর মধ্যে চিতই পিঠা বরাবরই স্বাদে, গন্ধে এবং সহজ প্রস্তুতিতে আলাদা। শীতের শুরু থেকেই গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে যেভাবে পিঠাপিঠির আয়োজন বসে, তার কেন্দ্রে প্রায়ই থাকে নরম, সাদা, ছিদ্র–ওঠা চিতই পিঠা। এটি শুধু একটি খাবার নয়, বরং শীতের সকালের উষ্ণ আরাম আর পরিবারিক আনন্দের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিশেষ পিঠাটি তৈরি করতে খুব বেশি উপকরণের প্রয়োজন হয় না, বরং প্রয়োজন সঠিক পরিমাপ ও নিখুঁত ব্যাটার তৈরি করার কৌশল।
উপকরণ ও ব্যাটার তৈরির প্রথম ধাপ
সবার আগে প্রয়োজন হবে ভালো মানের চালের গুঁড়া। বাজারে চালের গুঁড়া পাওয়া যায়, তবে অনেকেই নিজেরা চাল ভিজিয়ে শুকিয়ে গুঁড়া করে নেন। এতে পিঠা আরও নরম হয় এবং স্বাদও অনেক বাড়ে। একটি বড় বাটিতে দুই কাপ চালের গুঁড়া নিন। এরপর এক চিমটি লবণ দিন। এখন মূল প্রক্রিয়া হলো ব্যাটারের সঠিক ঘনত্ব তৈরি করা। ব্যাটার খুব ঘন হলে পিঠা শক্ত হবে, আবার খুব বেশি পাতলা হলে আকৃতি ধরা কঠিন হবে। তাই সামান্য সামান্য করে গরম পানি মেশাতে হবে, যতক্ষণ না ব্যাটার চামচ থেকে টপটপ করে পড়ে এমন তরল অবস্থায় আসে।
ব্যাটার তৈরি হয়ে গেলে সেটিকে ১৫–২০ মিনিট ঢেকে রাখতে হয়। এই সময়টা ব্যাটারকে স্থির হতে এবং চালের গুঁড়াকে ঠিকভাবে ফুলতে সাহায্য করে, ফলে রান্নার সময় পিঠা নিখুঁতভাবে ছিদ্র ওঠে এবং ফেঁপে উঠে।
পিঠা ঢালার পদ্ধতি
চিতই পিঠা রান্নার জন্য সবচেয়ে ভালো হয় একটি ননস্টিক প্যান বা মাটির তৈরি বিশেষ চিতই পিঠার প্যান। প্যান মাঝারি আঁচে ভালোভাবে গরম হওয়া খুবই জরুরি। প্যান যথেষ্ট গরম না হলে পিঠায় ছিদ্র উঠবে না এবং নরমও হবে না। গরম প্যানে একটি ব্রাশ দিয়ে খুব অল্প তেল মেখে নিতে হয়, তবে অনেকে তেল ছাড়া শুধু ড্রাই প্যানে পিঠা তৈরি করেন।
এবার এক লাডল ব্যাটার তুলে প্যানের মাঝখানে ঢেলে দিন। দেওয়ার পর সাথে সাথে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। কম আঁচে ১ থেকে ২ মিনিট রান্না করলেই দেখা যাবে পিঠার উপরের অংশ ফেঁপে ওঠে এবং সুন্দর সাদা ছিদ্র তৈরি হয়। চিতই পিঠা সাধারণত এক পাশেই রান্না করা হয়, উল্টে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ঠিকভাবে হলে পিঠাটি নিজে থেকেই প্যান থেকে আলগা হয়ে আসে।
পরিবেশনের সময় স্বাদের বাড়তি জাদু
চিতই পিঠা অনেকভাবেই খাওয়া যায়। সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো খেজুরের গুড় বা পাকা নারকেল বাটা দিয়ে খাওয়া। অনেকে দুধে গুড় মিশিয়ে মিষ্টি দুধের সাথে এটি পরিবেশন করেন। আবার অনেক অঞ্চলে গরম মাংসের ঝোলের সঙ্গে চিতই পিঠা পরিবেশনের রেওয়াজ আছে, যা ভীষণ সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর।
শহর-গ্রাম নির্বিশেষে এখন শীতের বাজারে খেজুরের রস পাওয়া যায়, আর এই রসের সঙ্গে গরম চিতই পিঠার স্বাদ এক কথায় অনন্য। একই সঙ্গে চিনি বা গুঁড় মিশিয়ে হালকা সিরাপ তৈরি করে তাও চিতই পিঠার সঙ্গে বেশ ভালো মানিয়ে যায়।
রান্নার টিপস: নিখুঁত চিতই পিঠার গোপন রহস্য
চিতই পিঠা নরম ও ছিদ্র–ওঠা করতে ব্যাটার অবশ্যই পাতলা রাখতে হবে। প্যান অবশ্যই যথেষ্ট গরম হতে হবে এবং তাপমাত্রা মাঝারি রাখতে হবে। যদি পিঠায় ছিদ্র না ওঠে, বুঝতে হবে ব্যাটার ঘন হয়ে গেছে। তখন সামান্য পানি যোগ করলেই সমস্যার সমাধান হয়। আবার যদি পিঠা শক্ত হয়, তবে ব্যাটার আরও পাতলা করা প্রয়োজন।
ভাপা পিঠা বানানোর সহজ উপায় জেনে নিন
বাংলাদেশের শীতকাল মানেই পিঠা-পুলি আর চুলোর ধোঁয়া। সেই পিঠার তালিকায় ভাপা পিঠা একেবারে সবার প্রিয়। খুবই সহজ উপকরণে, স্বল্প সময়ে এবং কম ঝামেলায় এই পিঠা তৈরি করা যায়। নরম, তুলতুলে ভাপা পিঠা মুখে দিলেই গলে যায়। তাই ঘরেই যদি চান দোকানের মতো মজাদার ভাপা পিঠা বানাতে, তাহলে ধাপগুলো ভালোভাবে অনুসরণ করলেই যথেষ্ট।
ভাপা পিঠা বানানোর প্রথম ধাপ হলো চালের গুঁড়া প্রস্তুত করা। অনেকেই বাজারের তৈরি গুঁড়া নেন, তবে ঘরোয়া চালের গুঁড়ায় পিঠা আরও সুস্বাদু হয়। এজন্য প্রথমে ভালো মানের চাল ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। এরপর চাল পানি ঝরিয়ে শুকনা অবস্থায় ব্লেন্ডারে অথবা শিলপাটায় বেটে মিহি গুঁড়া বানানো হয়। এই গুঁড়ো হালকা গরম কড়াইয়ে খুব কম আঁচে নেড়ে নিলে বাড়তি আর্দ্রতা কমে যায় এবং পিঠা আরও নরম হয়।
চালের গুঁড়া প্রস্তুত হয়ে গেলে সেটিকে ভিজিয়ে নিতে হয়। এটি ভাপা পিঠার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। একটি বড় বাটিতে চালের গুঁড়া নিয়ে তার মধ্যে চিমটি লবণ দিতে হয়। এরপর গরম পানি হালকা করে ছিটিয়ে গুঁড়োটি ভেজাতে হয়। এখানে মনে রাখতে হবে, চালের গুঁড়া যেন কখনোই খামির বা মণ্ডের মতো না হয়ে যায়। বরং ভেজা বালুর মতো দানাদার টেক্সচার হওয়া জরুরি। বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে পিঠা শক্ত হয়ে যেতে পারে, তাই ১০ মিনিট ঢেকে রাখলেই যথেষ্ট।
এরপর শুরু হয় পুর তৈরি। ভাপা পিঠার পুর হিসেবে নারিকেল ও খেজুরের গুঁড় সবচেয়ে জনপ্রিয়। একটি প্যানে সামান্য নারিকেল কুঁচি দিয়ে নেড়ে নিতে হয়। তারপর এতে তাল বা খেজুর গুঁড় যোগ করতে হয়। গুঁড় গলতে শুরু করলে পুরো নারিকেলের সঙ্গে মিশে এক ধরনের মিষ্টি সুগন্ধ বের হয়। অতিরিক্ত স্বাদের জন্য সামান্য এলাচ গুঁড়া যোগ করলে পুরটির ঘ্রাণ আরও বাড়ে। পুরটি ২–৩ মিনিট নেড়ে নামিয়ে ঠান্ডা করে রাখতে হয়।
এবার পিঠা তৈরির পালা। ভাপা পিঠার জন্য ছোট ছাঁচ বা স্টিলের বাটি ব্যবহার করা যায়। ছাঁচটিতে প্রথমে সামান্য ভাপ দেওয়া চালের গুঁড়া ঢেলে হালকা চাপ দিতে হয়। এরপর মাঝখানে একচামচ পুর দিয়ে উপরে আবার গুঁড়া ঢাকতে হয়। যেন হাঁড়ির ভেতরে পুর সম্পূর্ণভাবে ঢাকা থাকে। চাইলে ছাঁচে একফোঁটা তেল কিংবা ঘি মাখিয়ে নিতে পারেন, তাহলে পিঠা সহজে উঠবে।
সবশেষ ধাপ হলো ভাপে দেওয়া। একটি বড় হাঁড়িতে পানি গরম করে তার ওপর ছিদ্রযুক্ত স্টিমারের প্লেট বসাতে হয়। ঢাকনার ভেতরে কাপড় বেঁধে নিলে অতিরিক্ত পানি ঝরে পিঠা নষ্ট হওয়ার ভয় কমে যায়। পিঠার ছাঁচগুলো স্টিমারের ওপর সাজিয়ে ঢেকে ৭ থেকে ১০ মিনিট ভাপ দিতে হয়। পিঠা হয়ে গেলে ছাঁচ থেকে আলতো করে তুলে গরম গরম পরিবেশন করতে হয়।
ভাপা পিঠা বানানোর সময় কিছু টিপস মানলে পিঠা আরও নরম হবে। যেমন গুঁড়ো বেশি ভিজিয়ে ফেলবেন না। জলপাই সবুজ বা সাধারণ চালের গুঁড়ায় পিঠা আরও ভালো হয়। পুর মিষ্টি বেশি চাইলে অতিরিক্ত গুঁড় যোগ করতে পারেন। ইউভি আলোয় শাপলার মতো জেল্লা দেওয়ার মতো, পিঠার ওপর হালকা নারিকেল ছড়িয়ে দিলে দেখতেও ভালো লাগে।
জেনে নিন ভাপা পিঠা বানানোর সহজ রেসিপি
শীতের সকালে ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চা আর পাশে গরম গরম ভাপা পিঠা বাঙালির হৃদয়ে এই দৃশ্য এক বিশেষ উষ্ণতা জাগায়। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের রান্নাঘরে শীত এলেই যেন শুরু হয় পিঠার উৎসব, আর সেই উৎসবের কেন্দ্রবিন্দুতেই থাকে ভাপা পিঠা। এর কোমল স্বাদ, গুড় ও নারকেলের ঘ্রাণ, আর নরম চালের আবরণে লুকিয়ে থাকা মিষ্টি পুর সব মিলিয়ে এটি বাঙালি ঐতিহ্যের এক অপরিহার্য অংশ।
চালের গুঁড়ার নিখুঁত প্রস্তুতি
ভালো ভাপা পিঠা তৈরি করতে প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো চালের গুঁড়ার সঠিক প্রস্তুতি। আতপ চাল ভালোভাবে ধুয়ে একদম শুকিয়ে নিতে হয়। এরপর মিহি করে গুঁড়া করে চালের গুঁড়াটি ছেঁকে নিতে হয় যাতে কোনো দানা না থাকে।
গুঁড়া তৈরির পর আসে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের কাজ। পানি দিতে হবে ধীরে ধীরে একটু গরম পানি হাতে ছিটিয়ে, তারপর আঙুল দিয়ে মেখে নিতে হবে। উদ্দেশ্য হলো এমন টেক্সচার তৈরি করা যা হাতে চাপ দিলে দানা বাঁধবে কিন্তু চেপে ধরলে ভেঙে যাবে। এই সূক্ষ্ম ভারসাম্যই পিঠার নরমত্ব ও গঠন ঠিক রাখে।
অনেক গ্রামীণ গৃহিণী গুঁড়া মাখানোর সময় সামান্য নারকেল দুধ যোগ করেন। এতে পিঠা হয় আরও সুগন্ধি ও কোমল, আর ভাপের পর ফেটে যায় না।
পুর তৈরির আনন্দ
ভাপা পিঠার প্রাণ হলো তার পুর যা মিষ্টি, স্নিগ্ধ, আর একদম ঘরোয়া স্বাদের। সাধারণত কুচানো নারকেল, খেজুরের গুড় ও এক চিমটি এলাচ গুঁড়া মিশিয়েই তৈরি হয় এই পুর। কেউ কেউ পুরে সামান্য দুধ বা ঘি মেশান, যা স্বাদে এক অন্য মাত্রা যোগ করে।
গুড় যেন একদম টাটকা হয়, কারণ পুরের স্বাদ অনেকটাই নির্ভর করে গুড়ের ঘ্রাণের ওপর। খেজুরের গুড় না পেলে আখের গুড় ব্যবহার করা যায়, তবে খেজুরের গুড়ের মিষ্টি সুবাসই ভাপা পিঠাকে করে তোলে অনন্য।
পিঠা গড়ার সময় ধৈর্য ও কৌশল
চালের গুঁড়া ও পুর তৈরি হলে শুরু হয় পিঠা গড়ার কাজ। ছোট স্টিলের বাটি বা পিঠার ছাঁচে প্রথমে সামান্য চালের গুঁড়া ছড়িয়ে দিতে হয়। তার উপর এক চা চামচ পরিমাণ পুর দিয়ে আবার ওপর থেকে গুঁড়া ছড়িয়ে দিতে হয়। হালকা চাপে সেট করে দিতে হয় যাতে ভাপে নরম কিন্তু ঝরঝরে টেক্সচার পায়।
এই ধাপে সবচেয়ে বেশি দরকার হয় ধৈর্যের। গুঁড়া বেশি চাপ দিলে পিঠা শক্ত হয়ে যায়, আবার ঢিলা রাখলে ভাপের সময় ভেঙে যেতে পারে। তাই প্রত্যেকটি পিঠা যেন হয় নরম, ফোলাফোলা, আর পুর যেন মাঝখানে মিষ্টি আকারে ছড়িয়ে থাকে সেটাই সঠিক নিপুণতা।
ভাপে সিদ্ধ করার কৌশল
ভাপা পিঠা তৈরির শেষ ধাপটি হলো ভাপে সিদ্ধ করা। একটি বড় হাঁড়িতে পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হয়। তারপর ছাঁকনিতে পাতলা কাপড় বিছিয়ে পিঠাগুলো সাজিয়ে দিতে হয়। হাঁড়ির মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে যাতে বাষ্প বাইরে না যায়।
৮ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে পিঠাগুলো ফুলে উঠবে এবং তাদের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়বে রান্নাঘর জুড়ে। পানি যেন ফুটন্ত থাকে, তবে অতিরিক্ত সময় ভাপে রাখলে পিঠা শক্ত হয়ে যেতে পারে— তাই সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ভাপ থেকে নামানোর পর এক মিনিট রেখে গরম গরম পরিবেশন করলে পিঠা তার সর্বোচ্চ স্বাদ প্রকাশ করে।
ঘরে বসেই বানান নিখুঁত ভ্যানিলা স্পঞ্জ কেক, রইল সহজ রেসিপি
ভ্যানিলা স্পঞ্জ কেক এমন এক মজার খাবার, যা চায়ের সঙ্গে হোক বা জন্মদিনের কেক হিসেবেই—সবসময়ই দারুণ জনপ্রিয়। এই রেসিপিতে খুব সহজভাবে জানানো হলো, কীভাবে আপনি বাসায় বসেই একটি নরম ও মোলায়েম স্পঞ্জ কেক তৈরি করতে পারেন। সন্ধ্যার চায়ের সঙ্গে বা অতিথি আপ্যায়নে এই কেক আপনাকে প্রশংসিত করবেই।
উপকরণ
ভ্যানিলা স্পঞ্জ কেক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ: ময়দা – ১ কাপ, ডিম – ৩টি, চিনি (গুঁড়ো করা) – ১ কাপ, তেল বা বাটার – ১/২ কাপ, দুধ – ১/২ কাপ, বেকিং পাউডার – ১ চা চামচ, এবং ভ্যানিলা এসেন্স – ১ চা চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি
ধাপ ১: ডিম ও চিনির মিশ্রণ প্রথমে একটি বড় বাটিতে ডিমগুলো ভেঙে নিন এবং গুঁড়ো চিনি দিয়ে ভালোভাবে বিট করুন। মিশ্রণটি ফেনার মতো ঘন হয়ে এলে বুঝবেন ভালোভাবে বিট হয়েছে।
ধাপ ২: তেল ও এসেন্স মেশানো এবার তেল (বা গলানো বাটার) এবং ভ্যানিলা এসেন্স দিন। ভালোভাবে নেড়ে নিন।
ধাপ ৩: শুকনো উপকরণ প্রস্তুত একটি আলাদা বাটিতে ময়দা ও বেকিং পাউডার একসঙ্গে চেলে নিন (ছাঁকা খুব গুরুত্বপূর্ণ, এতে কেক ফ্লাফি হবে)।
ধাপ ৪: ব্যাটার তৈরি এখন ধীরে ধীরে শুকনো উপকরণ (ময়দা + বেকিং পাউডার) মিশ্রণে দিন। পাশাপাশি দুধও অল্প অল্প করে দিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন। ব্যাটার যেন খুব পাতলা বা খুব ঘন না হয়।
ধাপ ৫: বেকিংয়ের জন্য প্রস্তুত একটি কেক টিনে হালকা করে তেল ব্রাশ করে সামান্য ময়দা ছিটিয়ে নিন। এরপর ব্যাটারটি ঢেলে দিন।
ধাপ ৬: বেক করা কেক টিনটি প্রি-হিটেড ওভেনে (১৮০°C তাপমাত্রায়) ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট বেক করুন। কেক সেঁকা হয়েছে কি না বোঝার জন্য একটি টুথপিক ঢুকিয়ে দেখুন—পরিষ্কার বেরিয়ে এলে কেক তৈরি।
কেকটি ঠান্ডা হলে টিন থেকে বের করে পছন্দমতো টুকরো করুন। চাইলে ওপর থেকে একটু চিনি ছিটিয়ে বা হালকা আইসিং করে পরিবেশন করতে পারেন।
ওজন কমানোর সবচেয়ে সহজ ও টেস্টি উপায়!
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে অনেকেই ভাত বা রুটি কমিয়ে দেন। কিন্তু পেট খালি রেখে তো ওজন কমানো সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার নির্বাচন। ডায়েট চার্টে এমন কিছু সালাদ রাখা যেতে পারে, যেগুলো শুধু পেটই ভরাবে না, বরং শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহও করবে।
স্বাস্থ্যকর সালাদ মানেই শুধু শসা, টমেটো আর পেঁয়াজ নয়। এতে থাকতে পারে প্রোটিন, ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর চর্বি। চলুন, জেনে নিই এমনই কয়েকটি সহজ ও উপকারী সালাদ রেসিপি।
ছোলার সালাদ:
প্রথমে এক কাপ ছোলা সেদ্ধ করে নিন। একটি প্যানে সামান্য অলিভ অয়েল গরম করে তাতে সেদ্ধ ছোলা, আধা চা চামচ অরিগ্যানো, আধা চা চামচ জিরার গুঁড়া, স্বাদমতো মরিচের গুঁড়া ও ১ চা চামচ রসুন কুচি দিয়ে হালকা ভেজে নিন।
ভাজা ছোলা ঠান্ডা হলে একটি বড় পাত্রে নিয়ে তাতে মেশান—আধা কাপ করে শসা, গাজর, টমেটো ও ক্যাপসিকাম কুচি। সঙ্গে দিন ধনেপাতা, পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ কুচি, সামান্য লবণ, ২ চা চামচ লেবুর রস, গোলমরিচের গুঁড়া, অল্প মধু ও অলিভ অয়েল। সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে স্বাস্থ্যকর প্রোটিন সালাদ।

থাই বিফ সালাদ:
আধা কেজি গরুর মাংসের বড় টুকরা বেকিং পাউডার দিয়ে মেখে অল্প তেলে হালকা ভেজে নিন। এরপর পাতলা টুকরো করে কেটে নিন। চাইলে ছোট টুকরা করেও ভেজে নিতে পারেন।
সালাদ ড্রেসিংয়ের জন্য মিশিয়ে নিন—১ চা চামচ রসুন কুচি, লাল কাঁচা মরিচ কুচি, ২ চা চামচ লেবুর রস, ১ চা চামচ ফিশ সস, সামান্য জলপাই তেল ও চিনি।
এবার মাংসের সঙ্গে মেশান টমেটো ও শসার বিচি ফেলে কাটা টুকরা, পেঁয়াজ কুচি, পুদিনা পাতা ও গোলমরিচের গুঁড়া। সব উপকরণ ড্রেসিংয়ের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে পরিবেশন করুন থাই বিফ সালাদ।

এগ সালাদ:
আলু ও ডিম সেদ্ধ করে ছোট কিউব করে কেটে নিন। অন্যদিকে একটি পাত্রে নিন গাজর কুচি, বেবি কর্ন এবং নিজের পছন্দের যেকোনো সবজি।
এইসব উপকরণের সঙ্গে মেশান সেদ্ধ আলু, ডিম, টক দই, গোলমরিচের গুঁড়া এবং পরিমাণমতো লবণ। সব কিছু ভালোভাবে মিশিয়ে তৈরি করুন পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য এগ সালাদ।

এই তিনটি সালাদই সহজে তৈরি করা যায়, এবং প্রতিদিনের ডায়েটে রাখলে তা শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণেই নয়, বরং শরীর সুস্থ রাখতেও সহায়ক হবে। খালি পেটে না থেকে বুদ্ধিমানের মতো বেছে নিন এমন স্বাস্থ্যকর খাবার।
/আশিক
ঘরেই তৈরি করুন পারফেক্ট হোয়াইট সস, শর্মা সস, মেয়োনিজ!
নিশ্চিতভাবেই! নিচে হোয়াইট সস, তেল ও ডিমবিহীন শর্মা সস, মেয়োনিজ এবং বার্গার/শর্মা সসের বিস্তারিত ও ধাপে ধাপে রেসিপি তুলে ধরা হলো। প্রতিটি সসের তৈরি প্রণালীকে সহজভাবে ও বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে যেকেউ সহজেই ঘরে তৈরি করতে পারেন।
হোয়াইট সস (সাদা সস)
উপকরণ:
বাটার বা তেল এক টেবিল চামচ, ময়দা এক টেবিল চামচ, চিনি এক চা চামচ, তরল দুধ আধা কাপ, রসুন কুচি, গোল মরিচ গুঁড়ো এবং লবণ ১/৪ চা চামচ করে।
প্রস্তুত প্রণালী:
প্রথমেই একটি মাঝারি সাইজের প্যানে বাটার বা তেল গলিয়ে নিন। বাটার গলে গেলে সেখানে ময়দা দিয়ে অল্প আঁচে নাড়তে থাকুন। ময়দা ভালোভাবে ভাজতে হবে যেন তা কাঁচা গন্ধ মুক্ত হয় এবং একটু সোনালি রঙ ধারণ করে। এই পর্যায়ে খুব সাবধানে মেশাতে হবে যাতে ময়দা পুড়ে না যায়।
এরপর ময়দার মধ্যে রসুন কুচি, গোল মরিচ গুঁড়ো, লবণ ও চিনি দিয়ে নাড়ুন। এই মশলা গুলো সসের স্বাদ ও গন্ধ বাড়াবে। এরপর ধীরে ধীরে তরল দুধ ঢালুন এবং অবিরাম নাড়তে থাকুন। তরল দুধ দিয়ে সসটি গাঢ় হয়ে ঘন ক্রিমের মত স্বরূপে পরিণত হবে। এই পর্যায়ে মনে রাখবেন, চুলার আঁচ কম রাখতে হবে যাতে সস পুড়ে না যায় এবং ভালোভাবে সেদ্ধ হয়।
সসটি যখন পর্যাপ্ত ঘন হয়ে যাবে, তখন চুলা থেকে নামিয়ে নিন। এই সস আপনি বার্গার, পাস্তা বা বিভিন্ন মশলাদার খাবারে ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি বেস সস যা অন্যান্য স্বাদ বাড়ানোর সঙ্গেও খুব ভালো মানায়।
তেল ও ডিমবিহীন শর্মা সস
উপকরণ:
টক দই (পানি ঝরানো) আধা কাপ, রসুন বাটা ১/৪ চা চামচ, গুঁড়ো দুধ ১ টেবিল চামচ, সরিষা বাটা ১/৪ চা চামচ, গোল মরিচ গুঁড়ো ২ চিমটি, চিনি দেড় চা চামচ (স্বাদমতো), লবণ স্বাদমতো, টমেটো সস ২-৩ টেবিল চামচ। ঝাল বাড়াতে চাইলে অল্প মরিচ গুঁড়ো দিতে পারেন।
প্রস্তুত প্রণালী:
সব উপকরণ একত্রে একটি বাটিতে নিন। ভালোভাবে মিশিয়ে নিন যতক্ষণ না সব উপকরণ ভালোভাবে মিশে যায় এবং সসটি সমান মসৃণ হয়।
আপনি চাইলে এই মিশ্রণটি ব্লেন্ডারে ৩০-৪০ সেকেন্ড ব্লেন্ড করে নিতে পারেন। এতে রসুন ও সরিষার স্বাদ আরও বেরিয়ে আসবে। তবে যদি ব্লেন্ডার ব্যবহার করেন, তাহলে রসুন ও সরিষা আস্ত আস্ত দিতে পারেন যেন সস অতিরিক্ত তীব্র না হয়।
এই সসটি তেল বা ডিম ছাড়া তৈরির কারণে যারা তেল ও ডিম এড়িয়ে চলেন, তাদের জন্য আদর্শ। এটি শর্মা, স্যান্ডউইচ কিংবা সালাদের সঙ্গে দারুণ মানিয়ে যায়। টমেটো সস এবং সরিষা বাদ দিয়ে একই প্রণালী অনুসরণ করলে ঘরোয়া মেয়োনিজও তৈরি করা যায়।
মেয়োনিজ
উপকরণ:
ডিম (নরম টেম্পারেচারের) ১ টি, সয়াবিন তেল প্রায় ১ কাপ (ডিমের সাইজ অনুসারে সামঞ্জস্য করবেন), গোল মরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ, চিনি ২ চা চামচ, লবণ ১/৪ চা চামচ, সিরকা বা লেবুর রস ১ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালী:
মেয়োনিজ তৈরির প্রথম ধাপ হলো ব্লেন্ডারে ডিম, গোল মরিচ গুঁড়ো, চিনি, লবণ ও সিরকা একসঙ্গে নিয়ে ভালোভাবে ৩০ সেকেন্ড ব্লেন্ড করা।
এরপর আস্তে আস্তে তেল ঢালতে থাকুন। খুব দ্রুত বা একবারে তেল ঢালবেন না। তেলকে থেমে থেমে ৪-৫বার ভাগ করে ঢালতে হবে এবং প্রতিবার ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এতে মেয়োনিজের ফিনিশিং হবে মসৃণ ও ঘন।
২ মিনিটের মধ্যে মেয়োনিজ তৈরি হয়ে যাবে। মেয়োনিজের ঘনত্ব পরীক্ষা করতে ব্লেন্ডার উল্টে ধরলে যদি তা গড়িয়ে না পড়ে, তাহলে এটি উপযুক্ত কনসিস্টেন্সির। ঘনত্ব কম থাকলে সামান্য তেল আর ঢেলে ব্লেন্ড করুন।
সংরক্ষণ:
নরমাল ফ্রিজে এটি ১ সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে। বাড়তি সতর্কতার জন্য মেয়োনিজ সংরক্ষণ পাত্র ভালোভাবে পরিষ্কার রাখা উচিত।
বার্গার/শর্মা সস
উপকরণ:
ডিম ১ টি, চিনি ১ টেবিল চামচ, লবণ আধা চা চামচ, সাদা সরিষা বাটা আধা চা চামচ, তেল ১ কাপ বা সামান্য কম, রসুন কুচি ১ চা চামচ, সিরকা ১ টেবিল চামচ, গোল মরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ, গুঁড়ো দুধ (ঐচ্ছিক) ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস ৪ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালী:
প্রথমেই মেয়োনিজের মতো ব্লেন্ডারে ডিম, চিনি, লবণ, সরিষা বাটা, রসুন কুচি, সিরকা, গোল মরিচ ও গুঁড়ো দুধ একত্রে ব্লেন্ড করুন।
এরপর আস্তে আস্তে তেল ঢালতে থাকুন এবং ব্লেন্ড চালিয়ে যান যতক্ষণ না সস ঘন হয়। শেষ পর্যায়ে টমেটো সস যোগ করে আবার ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এই সসটি বার্গার বা শর্মার স্বাদকে সম্পূর্ণ রূপে বাড়িয়ে তোলে এবং খাবারে একটি লজমা ও টকটকে স্বাদ আনে।
এই চার ধরনের সস যেকোনো ধরনের স্যান্ডউইচ, বার্গার, শর্মা কিংবা সালাদের সঙ্গে পরিবেশন করা যায়। ঘরোয়া পরিবেশে সহজেই বানিয়ে খাওয়ার স্বাদ বাড়াতে এগুলো অত্যন্ত কার্যকর। স্বাদের ভারসাম্য রেখে, সঠিক মাপমতো উপকরণ দিয়ে তৈরি সস আপনাকে রান্নার রন্ধনে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
ঘরে বসেই ভুটানি স্বাদ: এমা দাতশি রেসিপি
ভুটান, হিমালয়ের কোলঘেঁষা শান্তিপূর্ণ এক রাজ্য, যার পরিচিতি শুধু প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যেই নয়, বরং তার গভীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, জীবনধারা এবং খাদ্যসংস্কৃতিতেও। এই রাজ্যের একটি বিশেষ ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘এমা দাতশি’ এখন শুধু ভুটানিদের কাছে নয়, গোটা বিশ্বেই পরিচিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন এক সাক্ষাৎকারে এই খাবারের অকুণ্ঠ প্রশংসা করায়, ইন্টারনেটজুড়ে রেসিপিটি ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি হয়ে ওঠে ভুটানি রন্ধনশৈলীর একটি আন্তর্জাতিক মুখপত্র।
‘এমা দাতশি’: শুধু খাবার নয়, ভুটানের আত্মপরিচয়
ভুটানি ভাষায় ‘এমা’ অর্থাৎ কাঁচা মরিচ এবং ‘দাতশি’ অর্থ চিজ বা পনির। এই দুই উপাদান নিয়েই তৈরি হয় এমা দাতশি, যা দেখতে অনেকটা ঘন ঝোলের মতো। এটি ভুটানের জাতীয় খাবার হিসেবেই স্বীকৃত। প্রতিদিনের ভাত কিংবা রুটির সঙ্গে এই ঝাল ও ক্রিমি চিজ-ভিত্তিক তরকারিটি ভুটানিদের নিত্যসঙ্গী। খাবারটিতে মসলা খুব কম ব্যবহার হয়, রান্না সহজ এবং সময়সাশ্রয়ী হওয়ায় এটি শহর ও গ্রাম দুই পর্যায়ের ভুটানিদের কাছেই সমান জনপ্রিয়।
ঘরে বসেই ভুটানি স্বাদ: এমা দাতশি রেসিপি
এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি তৈরি করা যায় সহজ কয়েকটি উপকরণে। নিচে তুলে ধরা হলো ঘরে বসেই এমা দাতশি রান্নার বিস্তারিত পদ্ধতি।
উপকরণ:
হ্যালাপিনো মরিচ – ৪টি (লম্বালম্বি করে কাটা, বিচি ফেলে ধোয়া)
চিজ (চেডার বা মোজারেলা) – ১ কাপ (ছোট টুকরো করে কাটা)
কাঁচামরিচ – ২টি
বড় পেঁয়াজ – ১টি (মোটা করে কাটা)
টমেটো – ১টি (কাটা)
রসুন কুচি – ২-৩ কোয়া
আদাবাটা – ১ চা চামচ
সাদা তেল – ২ চা চামচ
মাখন – ১ চা চামচ
গোলমরিচ – ১ চা চামচ
ধনিয়া পাতা কুচি – পরিমাণমতো
লবণ – স্বাদমতো
প্রস্তুত প্রণালি:
প্রথমে মরিচগুলো কেটে বিচি ফেলে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। পেঁয়াজ, টমেটো এবং কাঁচামরিচ বড় করে কেটে নিন। এবার একটি প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ ও রসুন দিয়ে হালকা ভেজে নিন। এরপর দিন আদাবাটা ও টমেটো কুচি এবং কিছুক্ষণ নাড়ুন।
এবার এতে যোগ করুন হ্যালাপিনো ও কাঁচা মরিচ। ভালোভাবে নেড়ে দিন। এর মধ্যে প্রয়োজনমতো পানি ও চিজের টুকরোগুলো দিন। চিজ গলে গেলে তাতে মাখন, লবণ ও গোলমরিচ যোগ করে ৫-৭ মিনিট মাঝারি আঁচে রান্না করুন যতক্ষণ না একটি ঘন গ্রেভি তৈরি হয়।
শেষে ধনিয়া পাতা ছিটিয়ে দিন এবং গরম গরম পরিবেশন করুন সেদ্ধ ভাত বা গরম রুটির সঙ্গে। চাইলে এটি পাস্তা বা নুডলসের সঙ্গেও খাওয়া যায়।
এক ব্যতিক্রমী রন্ধনসংস্কৃতির স্বাদ
এমা দাতশি যেমন ভুটানিদের জীবনের অংশ, তেমনি এটি এখন বৈশ্বিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বিশেষ স্বাদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভুটান যেখানে ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস’-এর দেশ, সেখানে এমা দাতশি শুধু ক্ষুধা নয়, বরং একটি শান্তিপূর্ণ জাতিসত্তার সংস্কৃতির প্রতীক। এটি এমন একটি খাবার, যা প্রতিদিনের রুটিন ভাঙে না বরং জীবনকে সহজ, সরল আর স্বাদের সঙ্গে সংযুক্ত রাখে।
আপনি যদি রান্নায় নতুনত্ব খুঁজে থাকেন, তবে এমা দাতশি হতে পারে আপনার কিচেনের পরবর্তী চমক।
পাঠকের মতামত:
- নৈতিক সমাজ ও মানসিক প্রশান্তির খোঁজে ইসলামি বিয়ে এবং নবীজির সা. নির্দেশনা
- বারবার হাই তোলা শুধুই ক্লান্তি নয় বরং এটি হতে পারে হৃদরোগের আগাম বার্তা
- নামিদামি ক্রিম নয় বরং গরম পানির ভাপেই মিলবে শীতের শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি
- বিশেষ একজন ছাড়া সবাই খারাপ এই মানসিকতা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক: তারেক রহমান
- বিএনপির সঙ্গে জোট হলে মাঠের পরিস্থিতি কেমন হবে জানালেন রাশেদ খান
- বিএনপির আমলে শেয়ার বাজারে ধস নামেনি: রিজভী
- বিএনপির এক অংশের আচরণ আওয়ামী লীগের মতোই: ফুয়াদ
- আগের ৯৬টি বাতিল করে নতুন ৮১ সংস্থাকে ভোটের মাঠে নামাচ্ছে কমিশন
- প্রিজনভ্যানে উঠে জাতীয় সংগীত গাইলেন পলক
- গ্রামের গর্ভবতী মা থেকে শহরের কর্মজীবী নারী সবার জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ বার্তা
- আধিপত্যবাদী রাজনীতির পথে হেঁটে জামায়াত দেশের জন্য অশুভ সংকেত আনছে: এনসিপি
- ক্ষমতায় গেলে খাল খনন প্রকল্প আবার চালু করা হবে: তারেক রহমান
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সরকার দিল কঠোর নীতি
- দেশে ফেরা নিয়ে যা জানালেন সাকিব আল হাসান
- ৮ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ৮ ডিসেম্বর ডিএসইতে শীর্ষ ক্ষতিগ্রস্ত ১০ শেয়ারের তালিকা প্রকাশ
- ৮ ডিসেম্বর ডিএসই টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর নতুন ন্যাভ প্রকাশ, জানুন বিস্তারিত
- নীতি ছাড়া ধর্মের নামে রাজনীতিতে একটি দল: সালাহউদ্দিন
- বিমান প্রস্তুত হলেও আগামী ৪৮ ঘণ্টা খালেদা জিয়ার জন্য অগ্নিপরীক্ষা
- চাঁদাবাজদের কাছে মাথা নত করব না: হাসনাত আব্দুল্লাহ
- জুলাই গণহত্যার বিচারে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় শেখ হাসিনার ১৭ মন্ত্রী ও উপদেষ্টা
- ডিএসই–৩০ এ মিশ্র প্রবণতা, কোন শেয়ার এগিয়ে
- এইচআইভি চিকিৎসায় বড় সুখবর, ওষুধ ছাড়াই ১৮ মাস সুস্থ থাকার রেকর্ড
- কে হচ্ছেন দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি? জল্পনা চূড়ায়
- সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খেলার ঠাসা সূচি: কোথায় দেখবেন জেনে নিন
- জুলাই–আগস্ট হত্যামামলায় সাবেক ১৭ মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রী ট্রাইব্যুনালে
- নতুন আর্থিক প্রতিবেদনে বড় ধাক্কায় ডাকাডাই ডাইং
- কীভাবে দেহ তাপমাত্রা ঠিক রাখে জানুন বিস্তারিত
- খেজুর রসের পায়েস বানানোর সহজ রেসিপি
- বাংলালিংকের সঙ্গে বড় চুক্তি করল কেয়ি অ্যান্ড কিউ
- আর্থিক ফলাফল ও ডিভিডেন্ড নিয়ে মিশ্র বার্তা দিল অলটেক্স
- বিডি থাইয়ের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- প্রথম নারী ফুটসাল বিশ্বকাপের মুকুট ব্রাজিলের মাথায়
- টাকার মান ও ভিনদেশি মুদ্রার লেনদেন নিয়ে সোমবারের বাজার দর
- সপ্তাহের শুরুতে স্বর্ণের বাজার দর ও বিস্তারিত মূল্য তালিকা
- আজকের নামাজের সময়সূচি ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সোমবার
- যানজট এড়াতে বাসা থেকে বের হওয়ার আগে জেনে নিন আজ রাজধানীর কোথায় কী?
- মেগা প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শোধ করতে গিয়ে বড় চাপে বাংলাদেশ
- নির্বাচনী আসন নিয়ে টানাপোড়েন: ৫টি জোটে বিভক্ত রাজনীতির মাঠ
- ৪৫ মিনিটের তুমুল গোলাগুলি আর রকেট লঞ্চারের আঘাতে তছনছ আফগান চেকপোস্ট
- হিমালয়ের কনকনে হাওয়ায় কাঁপছে পঞ্চগড়
- একযোগে গতি হারাল কৃষি ও শিল্পসহ অর্থনীতির প্রধান চার খাত
- "সম্পর্ক যতই ভালো হোক, সীমান্ত হত্যা থামবে না"- পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- পুরুষের শক্তি ও টেস্টোস্টেরন বাড়াতে রোজকার পাতে রাখুন এই ৫টি খাবার
- শৈশবের নায়কের রেকর্ড ভাঙার দ্বারপ্রান্তে এমবাপে: আজ রাতে নতুন ইতিহাসের হাতছানি
- মস্তিষ্কের শক্তি ও পড়াশোনায় অদম্য মনোযোগ বাড়ানোর ৯টি সহজ কৌশল
- শরীয়তপুর ২: ধানের শীষের শফিকুর নাকি জামায়াতের ডা. মাহমুদ কার পাল্লা ভারী
- নির্বাচনে যত বিলম্ব হবে তত শঙ্কা বাড়বে: মান্না
- ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকারের নতি স্বীকার, বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম
- ফিউচার স্টার বনাম ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা, দেখুন সূচি
- আজকের রাশিফল: ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে
- খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিতে পারছেন যা ভালো লক্ষণ: ডা. জাহিদ
- আজকের রাশিফল: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- এসএসএফ নিরাপত্তা পেলেন খালেদা জিয়া: কী সুবিধা থাকছে
- চট্টগ্রামে দাপুটে জয়ে আয়ারল্যান্ড বধ
- আজকের নামাজের সময়সূচি: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- একদিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দামে বড় পতন
- ব্যথানাশক নিয়েই খেলতে নেমে হ্যাটট্রিক করলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার
- ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকারের নতি স্বীকার, বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম
- আজকের রাশিফল: ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- কর্মবিরতি নিয়ে ফার্মাসিস্ট টেকনোলজিস্টদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিল সরকার
- আকাশ আংশিক মেঘলা ও শুষ্ক আবহাওয়া নিয়ে ঢাকার সর্বশেষ পূর্বাভাস
- শরীরের নীরব শত্রু থাইরয়েড ক্যানসার চেনার ৫টি প্রাথমিক লক্ষণ








