বাংলাদেশের আম এবার চীনের বাজারে!

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২২ ১১:০৫:২৬
বাংলাদেশের আম এবার চীনের বাজারে!

বাংলাদেশের সুস্বাদু ও মানসম্মত আম এবার জায়গা করে নিচ্ছে চীনের বাজারে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান জানিয়েছেন, আগামী ২৮ মে প্রথমবারের মতো চীনে ৫০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি করা হচ্ছে। রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

কৃষি সচিব জানান, বাংলাদেশে উৎপাদিত আমের স্বাদ, গন্ধ ও গুণগত মান বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হতে পারে এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে আমের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের আম খুবই সুস্বাদু। এই চাহিদা কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সচেষ্ট রয়েছে।”

চীনে বাংলাদেশস্থ দূতাবাসের মাধ্যমে দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে আম ছাড়াও কাঁঠাল রপ্তানির জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতে এই তালিকায় অন্যান্য ফলমূল ও কৃষিপণ্যও যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সচিব।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ২৪ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে মোট উৎপাদন ছিল ২৭ লাখ মেট্রিক টন, যেখানে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৩,১০০ মেট্রিক টন। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে উৎপাদন কমে ২৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়ালেও রপ্তানির পরিমাণ আরও কমে গিয়ে দাঁড়ায় ১,৩২১ মেট্রিক টনে।

এই ব্যবধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা বোঝায় যে বিপুল উৎপাদনের বিপরীতে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি কার্যক্রম এখনও সীমিত। তাই কৃষি মন্ত্রণালয় এ ব্যবধান কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আম রপ্তানি বাড়াতে নতুন নতুন বৈশ্বিক বাজার খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশনার ভিত্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় আমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে তৎপর হয়ে উঠেছে।

ড. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, “বিশ্বের যেসব দেশে আমাদের পণ্যের চাহিদা রয়েছে, সেখানে আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছি। একদিকে উৎপাদন, অন্যদিকে মান নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্যাকেজিং-এর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আম রপ্তানি বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের আম রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন আধুনিক রপ্তানি অবকাঠামো, কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ এবং দীর্ঘমেয়াদী বাজার-ভিত্তিক কৌশল। এই উদ্যোগ সফল হলে দেশের কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন এবং বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহও বাড়বে।

এই উন্নয়ন শুধু কৃষি খাত নয়, সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করছে। বাংলাদেশের ফলমূল বিশেষ করে আমকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই রপ্তানি উদ্যোগগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত