সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি প্রতিনিধি দল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১১:৩২:০৯
 সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি প্রতিনিধি দল

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের প্রথম পছন্দ ‘শাপলা’ প্রতীক না পাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে। রোববার (১৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। নতুন নিবন্ধনের আবেদনপ্রক্রিয়ায় প্রতীক সংরক্ষণ ইস্যুতে এটি ছিল এনসিপির এক প্রভাবশালী পদক্ষেপ।

এর আগে ২২ জুন এনসিপি দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন জমা দেয় এবং পছন্দের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ চায়। এরও আগে, চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য একই প্রতীক দাবি করে। দুটি দলই একাধিকবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে শাপলা প্রতীক নিয়ে বৈঠকে অংশ নেয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ১০ জুলাই যে ১১৫টি প্রতীকের সংশোধিত তালিকা সংরক্ষণ করে তা থেকে শাপলা প্রতীক বাদ দেয়। এই তালিকা একইদিন পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য।

বর্তমানে দেশে ৫১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। নির্বাচনী প্রতীক তালিকার বাকি প্রতীকগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নতুন নিবন্ধিত দলের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে বলে জানায় কমিশন। তবে তালিকা থেকে শাপলা বাদ পড়ায় এনসিপির পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তকে পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

এনসিপির নেতাদের দাবি, ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় তারা তিনটি প্রতীককে জনগণের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন। কিন্তু তালিকায় শুধু কলম ও মোবাইল ফোন থাকলেও শাপলা না থাকায় তারা হতাশ। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, শাপলা জাতীয় প্রতীক নয় এমন যুক্তি দিয়ে কমিশন যেভাবে ব্যাখ্যা দিচ্ছে তা অস্পষ্ট ও অসঙ্গত। তারা স্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানান, কেন এই প্রতীককে বর্জন করা হলো।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, প্রাথমিকভাবে প্রতীকের তালিকায় ১৫০টি চিহ্ন চূড়ান্ত করা হলেও পরে তা কমিয়ে ১১৫টি রাখা হয়। তবে শাপলা প্রতীক কেন বাদ দেওয়া হলো তা নিয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনী প্রতীক বণ্টন শুধু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি একটি রাজনৈতিক ভারসাম্য ও ন্যায়ের প্রতিফলন। যদি নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, তাহলে তা অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের পরিপন্থী হয়ে দাঁড়াবে। এনসিপির অভিযোগ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত এবং স্বাধীন রাজনৈতিক দলের স্বাভাবিক বিকাশের পথে অন্তরায়।

সিইসির সঙ্গে এনসিপির এই বৈঠকে আদৌ কোনো ইতিবাচক সমাধান আসবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটা পরিষ্কার, ‘শাপলা’ প্রতীককে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক এখন কেবল প্রতীকের সীমায় নেই বরং এটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নতুন দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ