মিটফোর্ড ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় নতুন তথ্য জানা গেল

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১২ ১২:০১:০৪
মিটফোর্ড ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় নতুন তথ্য জানা গেল

রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রকাশ্যে ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) হত্যার ঘটনায় তদন্ত ও ধরপাকড় কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে। শনিবার (১২ জুলাই) ডিএমপি জানায়, মামলার এজাহারভুক্ত আরও এক আসামি মো. টিটন গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এ নিয়ে র‌্যাব ও ডিএমপি মিলিয়ে মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, নিহত সোহাগের বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় মো. টিটন গাজী এজাহারভুক্ত একজন আসামি। তাকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার ডিএমপি জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অভিযানে নামে পুলিশ। অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিন (২২) নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই রাতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১০) একটি দল রাজধানীর কেরাণীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আরও দুই আসামি লম্বা মনির ও আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে।

র‍্যাব জানিয়েছে, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে নিহত ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে চাঁদা না দেওয়ার কারণেই পরিকল্পিতভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হামলাকারীরা সোহাগকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে এবং মাথায় পাথরের আঘাত করে হত্যা করে। ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়।

নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পর দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার সংস্থা ও নাগরিক সমাজ দ্রুত বিচারের দাবি তুলেছে। সরকারও এ ঘটনায় কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ঘটনাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং অন্য পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, অপরাধীরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

সোহাগ হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে, রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে প্রকাশ্যে একটি মানুষকে পাথর দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা, পুলিশের টহল ও সিসিটিভির উপস্থিতির পরেও তা সংঘটিত হওয়া প্রশাসনিক তৎপরতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলেছেন, যদি এই মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই পুরো জাতির দৃষ্টি এখন মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দিকে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ