হাসিনার শাসনে অর্থপাচারের হিসাব দিলেন ড. ইউনূস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৯ ১৮:২০:৪৬
হাসিনার শাসনে অর্থপাচারের হিসাব দিলেন ড. ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি জাপানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। এ দাবিটি ইতোমধ্যেই দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।

ইউনূস জানান, এর মধ্যে দেশের ভেতরেই ১১ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ চিহ্নিত ও জব্দ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, “এই অর্থ যদি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তবে দুটি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল (Sovereign Wealth Fund) গঠন করা হবে, যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার মতো খাতে ব্যয় করা হবে।”

টোকিওতে অনুষ্ঠিত নিক্কেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়া ২০২৫-এ মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্যকালে ড. ইউনূস বলেন, “প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার শেষ হওয়ার পরই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।” তিনি জানান, নির্বাচনটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে আমরা নিশ্চিত করবো যাতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।” তিনি জাপানসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের নতুন ও স্বচ্ছ বাংলাদেশ গঠনে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

ড. ইউনূস আরও বলেন, “বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই তরুণ। এ বিশাল জনগোষ্ঠীই হবে আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপকার। আমরা তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে আমাদের মূল এজেন্ডা।”

সাম্প্রতিক সময়ে একটি গুঞ্জনের জন্ম হয়, যেখানে বলা হয় যে, ড. ইউনূস নাকি এক ছাত্রনেতাকে বলেছেন রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে তিনি পদত্যাগ করতে পারেন। এ প্রসঙ্গে নিক্কেই তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমি বাংলাদেশে এই প্রশ্নের উত্তর দিইনি। যদি আমি জাপানে বলি, তবে তা আমাকে বড় ঝামেলায় ফেলতে পারে।” এ বক্তব্যে বিষয়টির গুরুত্ব ও সংবেদনশীলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ড. ইউনূসের এই সাক্ষাৎকারকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখছেন এক যুগান্তকারী রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে। এতে একদিকে যেমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে, তেমনি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন ও তরুণ নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ