শেরপুরে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণপ্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২১ ১২:৫৬:৫৪
শেরপুরে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণপ্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ
ছবি:দৈনিক জনকণ্ঠ

শেরপুর সদর উপজেলার কুসুমহাটি কৃষি ব্যাংক শাখার সেকেন্ড অফিসার শামসুন্নাহার ‘আশা’-এর বিরুদ্ধে কৃষকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া এবং ঋণপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় একাধিক ভুক্তভোগী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দালালের সহযোগিতায় গ্রামীণ অশিক্ষিত মানুষদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন এবং ঋণ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি করছেন।

বলায়েরচর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের খাদিজা খাতুন বলেন, "আমি ভেবেছিলাম ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। দালাল ইসমাইল ঘুষ হিসেবে ৪৫ হাজার টাকা নেন। পরে জানতে পারি আমার নামে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋণ অনুমোদন হয়েছে। বাকি টাকা কোথায় গেল—তা কেউ বলেনি।”

একই ইউনিয়নের হেজাক মিয়া জানান, “২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋণ পেয়েছি, অথচ হাতে পেয়েছি মাত্র ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা দালাল ও কর্মকর্তার পকেটে গেছে।”

ডোবারচর গ্রামের কৃষক আব্দুল করিমের অভিযোগ, "৫০ হাজার টাকার ঋণ নিতে গিয়ে জানতে পারি ব্যাংক ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ দিয়েছে আমার নামে। অথচ আমাকে কিছুই জানানো হয়নি, কাগজপত্রও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।”

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, এই প্রতারণা চালানো হয় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে—যার মূল দুই ব্যক্তি হলেন ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুন্নাহার ‘আশা’ এবং স্থানীয় দালাল ইসমাইল।

২০ জুলাই বিকেলে ভুক্তভোগী কয়েকজন কৃষক কুসুমহাটি ব্যাংক প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানান। পরে রাত সাড়ে বারোটায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং তিনজন গ্রাহককে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে। বাকি ৬০ হাজার টাকার জন্য ব্যাংক ম্যানেজার অভিযুক্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে একটি চেক গ্রহণ করেন এবং আশ্বাস দেন যে আজকের মধ্যে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর রাত দেড়টার দিকে কর্মকর্তাকে ব্যাংক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।

শেরপুর জেলা তাতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, “নিরীহ কৃষকদের সঙ্গে এমন প্রতারণা শুধু অনৈতিক নয়, বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

স্থানীয় নেতারা বলেন, “অডিটে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রমাণও মিলেছে। তদন্ত করে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ