গোপালগঞ্জে নতুন করে উত্তেজনা: সংঘর্ষের পর শুরু ১৪৪ ধারা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২০ ১০:৫০:২৯
গোপালগঞ্জে নতুন করে উত্তেজনা: সংঘর্ষের পর শুরু ১৪৪ ধারা

গোপালগঞ্জে টানা কয়েকদিনের সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর রোববার সকাল থেকে জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা কার্যকর। এর আগে শনিবার রাত ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সেখানে কারফিউ জারি ছিল। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনে আরও সময় বাড়ানো হতে পারে।

শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপালগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় মাঝেমধ্যে কারফিউতে বিরতি দেওয়া হলেও সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত বুধবার গোপালগঞ্জে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয় এবং বহু লোক আহত হন। ওই সহিংসতা থেকে উত্তেজনা আরও বাড়লে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত একজনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর থেকেই গোটা জেলা কার্যত নিরাপত্তাবেষ্টনীতে পরিণত হয়।

বর্তমানে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় জেলার কোথাও কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল বা গণজমায়েত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে এই বিধিনিষেধের বাইরে রাখা হয়েছে পরীক্ষার্থীদের, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাকেন্দ্র, জরুরি সেবা, এবং সরকারি অফিস ও আদালত কার্যক্রমকে।

রবিবার সকাল থেকে সীমিত পরিসরে কিছু দোকানপাট খুললেও এখনও বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্ধারিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং যানবাহন চলাচল সীমিত আকারে স্বাভাবিক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরো জেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, বিশেষ করে গোপালগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় অংশ ও সংঘর্ষকবলিত এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, “বর্তমানে আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনাই এখন প্রধান অগ্রাধিকার।”

পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির যৌথ টহল চলছে, যাতে কোনো পক্ষ উসকানি দিয়ে পরিস্থিতি পুনরায় উত্তপ্ত করতে না পারে। প্রশাসন বিশেষ নজরে রেখেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও, যাতে গুজব বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ে জনমনে আতঙ্ক না সৃষ্টি হয়।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ