ঢাকায় আবারও বেড়েছে দূষণ, বাতাস 'অস্বাস্থ্যকর' পর্যায়ে

বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলেছে বায়ুদূষণের মাত্রা, যার প্রভাব থেকে বাদ যাচ্ছে না বাংলাদেশও। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে ঢাকার বায়ুমান কিছুটা উন্নত হলেও সোমবার (২১ জুলাই) সকালে আবারও রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
সকালে আন্তর্জাতিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার-এর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) স্কোর দাঁড়িয়েছে ১৪৫। এই স্কোর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য এই বায়ু পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় এদিন প্রথম অবস্থানে ছিল উগান্ডার রাজধানী কামপালা (AQI ১৫৪)। এরপর ছিল চিলির সান্তিয়াগো (AQI ১৪৮), তৃতীয় স্থানে ছিল ঢাকা, চতুর্থে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই (AQI ১২৯) এবং পঞ্চম স্থানে ছিল ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসা।
আইকিউএয়ারের স্কোর অনুযায়ী:
০–৫০: ভালো
৫১–১০০: মাঝারি
১০১–১৫০: সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর
১৫১–২০০: সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর
২০১–৩০০: খুব অস্বাস্থ্যকর
৩০১–৪০০: বিপজ্জনক (ঝুঁকিপূর্ণ)
বায়ুদূষণের এই পরিমাপ সাধারণত পাঁচটি দূষকের ওপর ভিত্তি করে করা হয়: পিএম২.৫, পিএম১০, নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO₂), সালফার ডাইঅক্সাইড (SO₂), কার্বন মনোক্সাইড (CO) এবং ওজোন (O₃)। বিশেষজ্ঞদের মতে, দূষিত বায়ু সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর হলেও সবচেয়ে বেশি বিপদে থাকে শিশু, প্রবীণ, অসুস্থ ও অন্তঃসত্ত্বা নারীরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যানসার ও শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগে।
চলমান দূষণের প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন—অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়া, মাস্ক ব্যবহার, বায়ু বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রের ব্যবহার এবং বাচ্চা ও অসুস্থদের বিশেষভাবে ঘরে রাখা।
/আশিক
দেশে ফিরতে চাইলে তারেক রহমানকে সহায়তা দেবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি দেশে ফিরতে চান, তবে সরকার তাকে সব ধরনের সহায়তা দেবে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত বিষয়। তার ভ্রমণ সংক্রান্ত নথিপত্র বা ট্রাভেল ডকুমেন্টস নিয়ে কোনো সমস্যা থাকলে, সরকার তা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
তৌহিদ হোসেন জানান, তারেক রহমান পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন কি না, সে বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। তিনি যখন দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন, তখন তার জন্য প্রয়োজনীয় পাসপোর্ট বা অন্য যেকোনো ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্র সরবরাহ করা হবে।
সরকার নিজে থেকে তাকে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ নেবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আমার মনে হয় সেটার প্রয়োজন নেই। তিনি যখনই দেশে ফিরতে চাইবেন, আমাদের যতটুকু সহযোগিতা করার দরকার, আমরা অবশ্যই করব।"
এছাড়াও, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, এ নিয়ে ভারতকে নতুন করে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। একটি চিঠি একবারই দেওয়া হয়েছে এবং এরপর এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হলে তা সবাইকে জানানো হবে।
পোস্টারবিহীন নির্বাচন, প্রচারে নতুন বিধান যুক্ত করল ইসি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় পোস্টার ব্যবহার নিষিদ্ধ করে নতুন আচরণবিধি যুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন বিধান অনুযায়ী, একজন প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় সর্বোচ্চ ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর জন্য প্রণীত এই নতুন আচরণবিধিমালায় আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এই বিধিমালা সংশোধনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ইসি।
নতুন আচরণবিধিমালায় বলা হয়েছে:
প্রচারণায় নতুন নিয়ম: নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোনো ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
বিলবোর্ডের ব্যবহার: প্রতিটি বিলবোর্ডের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য হবে ১৬ ফুট এবং প্রস্থ ৯ ফুট। একজন প্রার্থী তার সংসদীয় আসনে সর্বোচ্চ ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
সাইবার নিরাপত্তা: নারীদের সাইবার বুলিং থেকে রক্ষা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার ছড়ালে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
বিদেশে প্রচারণা: কোনো প্রার্থী সশরীরে বিদেশে গিয়ে তার পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির বিধানও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ইসি। এক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। জরিমানার পরিমাণ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা করা হয়েছে এবং ছয় মাসের কারাদণ্ডের আগের বিধানটি বহাল রাখা হয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তৈরি করা এই বিধিমালা কার্যকর হলে এটি নির্বাচনের প্রচারণার পদ্ধতিকে পুরোপুরি বদলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জিএম কাদের ও তার স্ত্রীর বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি
দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এবং তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে চলা দুর্নীতির অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিম এই নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া এই আদেশ দেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়, জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। এই অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে চলে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত বা দীর্ঘায়িত হতে পারে।
আদেশে আরও বলা হয়, অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। আদালত ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে এই আদেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।
ব্যয় সাশ্রয়ের পরিপত্র উপেক্ষা: মন্ত্রীদের জন্য ৬০টিসহ ২৮০ গাড়ি কিনছে সরকার
আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টিসহ মোট ২৮০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য জারি করা পরিপত্র লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২১ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়, যেখানে আগামী নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং পরবর্তী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার কথা বলা হয়। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের ৬০টি গাড়ি মন্ত্রীদের জন্য কেনা হবে, যার প্রতিটির দাম প্রায় ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এছাড়াও নির্বাচনকালীন সময়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য ১৯৫টি জিপ ও ২৫টি মাইক্রোবাসসহ মোট ২২০টি গাড়ি কেনা হবে।
সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে সরকারের মোট খরচ হবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় এসব গাড়ি কেনা হবে।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারেরই জারি করা ব্যয় সাশ্রয়ের পরিপত্র উপেক্ষিত হচ্ছে। গত ৮ জুলাই জারি করা ওই পরিপত্রে বলা হয়েছিল, নতুন যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে, তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ির প্রতিস্থাপক হিসেবে নতুন গাড়ি কেনা যেতে পারে। কিন্তু পরিবহণ পুলের তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রীদের জন্য কেনা গাড়িগুলো ৯ বছরের পুরোনো। ফলে এই শর্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, “পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, সেই সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া উচিত নয়। এটি তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।” তিনি আরও বলেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ের পদক্ষেপের পরিপন্থী। তিনি অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানান।
এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৬ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে এক সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনকালীন গাড়িগুলোর মধ্যে ১৯৫টি মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের জিপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য এবং ২৫টি মাইক্রোবাস জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য কেনা হবে। প্রতিটি জিপের দাম ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং প্রতিটি মাইক্রোবাসের দাম পড়বে ৫২ লাখ টাকা। এসব গাড়ি কিনতে মোট খরচ হবে প্রায় ৩৪৩ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত ২৮০টি গাড়ির জন্য মোট ব্যয় ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দকৃত ৩২৮ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকার চেয়ে প্রায় ৯৬ কোটি টাকা বেশি। অতিরিক্ত এই ব্যয়ের অনুমোদনও দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
জুলাই সনদে আসছে বড় পরিবর্তন
জুলাই সনদে আসছে পরিবর্তন, সংবিধানের ওপর প্রাধান্য থাকছে না
‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এর চূড়ান্ত খসড়ায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসছে। সংবিধান ও আইনের ওপর এই সনদের প্রাধান্য দেওয়া হবে না এবং সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ রহিত করার অঙ্গীকারেও বদল আসবে। এছাড়া, সনদের ব্যাখ্যার ক্ষমতা আপিল বিভাগকে দেওয়ার অঙ্গীকার বাতিল করা হতে পারে। সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতিও এতে থাকবে না, বরং তা সুপারিশ আকারে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ সরকারকে দেবে। এরপর সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, কোন পদ্ধতিতে সনদ বাস্তবায়িত হবে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর বৈঠক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
অঙ্গীকারনামায় পরিবর্তন ও রাজনৈতিক মতভেদ
গত ১৬ আগস্ট, কমিশন সনদের একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া তৈরি করে ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে মতামত দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিল। ২৮টি দল মতামত দিয়েছে এবং এক সপ্তাহ ধরে তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকও করেছে কমিশন। চূড়ান্ত খসড়ার আট দফা অঙ্গীকারনামার মধ্যে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় পরিবর্তন আসবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার।
খসড়ার দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছিল, বিদ্যমান সংবিধান ও আইনের ওপর সনদ প্রাধান্য পাবে। কিন্তু বিএনপি এই অঙ্গীকারে রাজি নয়, যদিও জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি এতে একমত। এই আপত্তির কারণে অঙ্গীকারে ভাষাগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নতুন প্রস্তাবে বলা হতে পারে, যেসব সংস্কার বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন করতে হবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সনদের সুপারিশ প্রাধান্য পাবে। যেমন—এক ব্যক্তি জীবনে ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে যেন সব দল রাজি থাকে এবং রাজনৈতিক বিতর্ক এড়ানো যায়।
খসড়ার তৃতীয় দফায় বলা হয়েছিল, সনদের ব্যাখ্যা দেওয়ার এখতিয়ার একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের থাকবে। কিন্তু বিএনপি-সহ আটটি দল এতে রাজি নয়। তাদের যুক্তি, সনদ একটি রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল, তাই এটি আদালতের হাতে তুলে দেওয়া ঠিক হবে না।
বাস্তবায়ন পদ্ধতির সমাধান ও চূড়ান্ত খসড়া
সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পরেও কোনো সুরাহা হয়নি। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টি গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার চায়, আর বিএনপি-সহ ছয়টি দল মনে করে সংবিধান সংশোধন শুধুমাত্র সংসদের মাধ্যমে হওয়া উচিত। এই মতবিরোধের কারণে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বাস্তবায়ন পদ্ধতি সনদের অংশ হবে না।
তবে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করে সুপারিশ আকারে সরকারকে দেওয়া হবে। চূড়ান্ত খসড়া দুটি খণ্ডে বিভক্ত হবে—প্রথম খণ্ডে থাকবে প্রশাসনিক আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে অবিলম্বে কার্যকর করা যায় এমন সুপারিশগুলো। দ্বিতীয় খণ্ডে থাকবে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হয় এমন সুপারিশগুলো।
কমিশন সূত্র জানিয়েছে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সনদটি চূড়ান্ত করে রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হবে। যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়নি, সেগুলোতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবেই বিএনপির আপত্তি রয়েছে।
মাদকের ভয়াবহ পরিণতি: অকালে ঝরে যাচ্ছে জীবন, পঙ্গু হচ্ছে তরুণ সমাজ
রাজধানীসহ সারা দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই কিশোর থেকে তরুণ (১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকাসক্তদের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ ভাগই ইয়াবায় আসক্ত, যাদের মধ্যে শিক্ষিত তরুণের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ প্রায় সব পেশার লোক এই আসক্তির শিকার।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, মাদকাসক্তদের মধ্যে কিডনি, লিভার, স্ট্রোক, ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এর ফলে তাদের মধ্যে মৃত্যুর হারও বাড়ছে। মাদকের এই আগ্রাসন প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল, প্রশাসন এবং অভিভাবকদের নিয়ে একটি সমন্বিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভয়াবহ রোগ ও পঙ্গুত্বের ঝুঁকি
কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, মাদকাসক্তদের মধ্যে নেফ্রাইটিস, কিডনি ফেইলর এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। মাদকাসক্ত তরুণদের মধ্যে কিডনি রোগীর সংখ্যাই বেশি। তিনি মনে করেন, মাদক কারবারি ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তরুণ সমাজকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, তরুণদের একটি বড় অংশ মাদকাসক্ত হয়ে অকালে মারা যাচ্ছে। লিভার ও প্যানক্রিয়াসে ক্যানসারসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মাদকাসক্তদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি।
নিউরো সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের যুগ্ম-পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম জানান, দীর্ঘদিন মাদক সেবনের ফলে অনেকের নার্ভ ড্যামেজ হয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনিদ্রা ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। এছাড়া নিউরোপ্যাথি, পঙ্গুত্ব এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের কারণে অকালে তাদের মৃত্যু হচ্ছে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, মাদকাসক্তরা একপর্যায়ে দানবে পরিণত হয় এবং তাদের মধ্যে কোনো মানবতাবোধ থাকে না। মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে তারা খুন, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ করতেও দ্বিধা করে না।
চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এন হুদা বলেন, মাদকাসক্তরা স্থায়ীভাবে যৌন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নোংরা পরিবেশে থাকার কারণে তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগও বেশি হয়।
সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে মাদক, প্রয়োজন সমন্বিত প্রতিরোধ
২০১৭ সালে সরকারি জরিপ অনুযায়ী, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ছিল ৮৩ লাখ, যাদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই সর্বাধিক। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি হবে।
র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি মো. এ কে এম শাহিদুর রহমান বলেন, র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে। তবে বড় ধরনের সামাজিক আন্দোলন ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তার মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র এবং সাধারণ জনগণ সমন্বিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলেই মাদকের আগ্রাসন রোধ করা সম্ভব।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: আপিলের রায় আজ, কী হবে তারেক রহমানের ভাগ্য?
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের রায় আজ ঘোষণা করবে আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে এই নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা। এই ঘটনায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
মামলার বিচারিক ও হাইকোর্টের রায়
হামলার পর দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল—একটি হত্যা এবং অন্যটি বিস্ফোরক আইনে। প্রাথমিক তদন্তে বিতর্ক দেখা দিলে এক-এগারো পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন করে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে অধিকতর তদন্তের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ মোট ৫২ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এই মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ড বাতিল করে সব আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্ট তাদের রায়ে উল্লেখ করেন, মামলার তদন্ত পর্যাপ্ত ও স্বাধীনভাবে হয়নি এবং এতে অসঙ্গতি ও দুর্বলতা ছিল। আদালত এই স্পর্শকাতর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের অভাবকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে বাধা হিসেবে উল্লেখ করে।
আপিল বিভাগে শুনানি
হাইকোর্টের দেওয়া এই খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। তারা বিচারিক আদালতের সাজা বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে। অন্যদিকে, আসামিপক্ষ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি দেখায়। আপিল বিভাগে এই মামলার ধারাবাহিক শুনানি ১৭ জুলাই থেকে শুরু হয়ে মোট পাঁচ দিন ধরে চলে। আজ এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাদাত মো. সায়েম ভূঞা ও সাদিয়া আফরিন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও শিশির মনির।
/আশিক
ইসি’র ঘোষণায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা: তাহলে কি আওয়ামী লীগ বাদ পড়তে যাচ্ছে?
কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের প্রতীকও স্থগিত থাকবে এবং তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। যদিও তিনি আওয়ামী লীগের নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি, তবে তার বক্তব্যে এটি স্পষ্ট যে, যদি দলটির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হয়, তাহলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নিতে পারবে না।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরপিও সংশোধনে নতুন বিধিমালা
ইসি সানাউল্লাহ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের বিষয়ে জানান যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তালিকায় সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভোটকেন্দ্র স্থাপন করবেন। এছাড়া, আদালত কর্তৃক যারা ফেরারি হবেন, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। লাভজনক পদে থাকা এবং যে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার আছে এমন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
নতুন সংশোধনীতে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনো প্রার্থী হলফনামায় তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দেন, তাহলে ইসি পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে এবং সেই ব্যক্তি সংসদ সদস্য পদ হারাবেন। একইসঙ্গে, প্রার্থীর জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
ভোটের পদ্ধতি ও অন্যান্য পরিবর্তন
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, একক প্রার্থী থাকলে সেই আসনে ব্যালটে ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকবে। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন। এছাড়া, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংক্রান্ত সকল বিধান বাতিল করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকতে পারবেন। নির্বাচনী পোস্টার বাতিল করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা যাবে না।
/আশিক
বান্দরবানে সেনা অভিযানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের ঘাঁটি দখল
বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় দীর্ঘ এক মাসব্যাপী অভিযান চালিয়ে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি দখল করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ অভিযানে সংগঠনটির প্রশিক্ষণ ও কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ও রসদ জব্দ করা হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, গত ২৫ জুলাই থেকে ২৬ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেং ত্লাং এলাকার সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে এই অভিযান পরিচালিত হয়। সেনাবাহিনীর টহল দল দীর্ঘ সময় পর্যবেক্ষণের পর কেএনএফের একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি শনাক্ত করে। পরবর্তীতে সেখানে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয় এবং সংগঠনটির সামরিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
অভিযান শেষে সেনাবাহিনী জানায়, ঘাঁটি থেকে প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত কাঠের রাইফেল, স্নাইপার অস্ত্রের সিলিং, সামরিক বেল্ট, কার্তুজ বেল্ট, পোচ, ইউনিফর্ম, বুট, কম্বল, ওয়াকিটকি চার্জার, সোলার প্যানেল, খাদ্যরসদ এবং বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেনারা কেএনএফের প্রশিক্ষণ মাঠ, ফায়ারিং রেঞ্জ, পরিখা এবং কৌশলগতভাবে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনাও দখল করেছে। এসব সামরিক অবকাঠামো থেকে বোঝা যায় যে সংগঠনটি সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ চালিয়ে আসছিল।
কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ মূলত পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে বেশি পরিচিত। ২০২২ সালের শুরুর দিকে সংগঠনটির অস্তিত্ব প্রকাশ্যে আসে। তখন বলা হয়, বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রো সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে সংগঠনটি গঠিত হয়েছে। তবে বাস্তবে এতে বম জনগোষ্ঠীর একটি অংশ সক্রিয় থাকায় এটি স্থানীয়ভাবে বম পার্টি নামেই পরিচিতি লাভ করে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি এই অভিযান মূলত সীমান্তবর্তী দুর্গম অঞ্চলে কেএনএফের শক্ত ঘাঁটি ভেঙে দেওয়ার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে তাদের সামরিক সরঞ্জাম ও অবকাঠামো দখল করে সেনারা পাহাড়ি এলাকায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের অভিযান কেবল একটি সশস্ত্র সংগঠনের কার্যক্রম ব্যাহত করতেই নয়, বরং পার্বত্য অঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
-শরিফুল
পাঠকের মতামত:
- দেশে ফিরতে চাইলে তারেক রহমানকে সহায়তা দেবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ডিএসই’র বাজার প্রতিবেদন: এক নজরে আজকের লেনদেন
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তির মহাপ্রদর্শনী:বেইজিং থেকে বিশ্বকে চীনের কৌশলগত বার্তা
- পোস্টারবিহীন নির্বাচন, প্রচারে নতুন বিধান যুক্ত করল ইসি
- গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে ফ্রান্সের বিদায়ি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই
- টিকিট বিক্রির তিন ধাপ, ফিফা জানাল বিস্তারিত পরিকল্পনা
- ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব বিমানবন্দর বন্ধ
- নাচই বদলে দিল ধনশ্রীর জীবন
- জিএম কাদের ও তার স্ত্রীর বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি
- বিএনপির হাতেই বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্র সুরক্ষিত: আবু নাসের
- মা-কন্যার অনন্য বন্ধন: সুস্মিতা সেনের পোস্টে মুগ্ধ ভক্তরা
- মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে না, আসমানে হয়: নিরাপত্তা নিয়ে মুখ খুললেন ওসমান হাদি
- অ্যাশেজে খেলতে ঝুঁকি নিতেও প্রস্তুত প্যাট কামিন্স
- বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোয়াইট হাউসের রহস্যজনক পদক্ষেপ
- আওয়ামী লীগের পদ ছাড়লেন ইউপি সদস্য, জানালেন তিনি সব সময় বিএনপির ‘একনিষ্ঠ কর্মী’
- দুইবারের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়নের স্বপ্নযাত্রা আবার শুরু
- ফজলুর রহমানকে ঘিরে নতুন বিতর্ক, ছাত্রদল নেতার বহিষ্কারের দাবি
- অতিরিক্ত যাত্রীতে ট্র্যাজেডি:নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত ২৯
- ব্যয় সাশ্রয়ের পরিপত্র উপেক্ষা: মন্ত্রীদের জন্য ৬০টিসহ ২৮০ গাড়ি কিনছে সরকার
- ইকুয়েডরে আবারও মার্কিন উপস্থিতির সম্ভাবনা
- একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক ও বাবরের খালাসের রায় বহাল
- হঠাৎ স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন! মোনালি ঠাকুরের সংসারে ভাঙনের সুর?
- কোরআনের আলোকে পরকাল: অবিশ্বাসীদের শেষ পরিণতি
- জুলাই সনদে আসছে বড় পরিবর্তন
- পুতিন জানালেন, কেন তিনি এখনো ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি
- অভিষেক রাঙাতে পারলেন না কিউবা: এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শুরুতেই হোঁচট খেলো বাংলাদেশ
- মাদকের ভয়াবহ পরিণতি: অকালে ঝরে যাচ্ছে জীবন, পঙ্গু হচ্ছে তরুণ সমাজ
- বিধ্বস্ত হচ্ছে একের পর এক মহল্লা, গাজায় এবার মানবিক সংকট চরমে
- সকালে খালি পেটে এই ৬টি খাবার খান, নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস-উচ্চ রক্তচাপ
- আজ কেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া? জেনে নিন আজকের পূর্বাভাস
- গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
- ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: আপিলের রায় আজ, কী হবে তারেক রহমানের ভাগ্য?
- কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি: যেসব ফল খেলে মিলবে সমাধান
- বেইজিং সফরে কিম জং-উন, আলোচনায় তার মেয়ে জু আয়ে
- মেসির বিদায়ী ম্যাচে পানি ঢালতে চান ভেনেজুয়েলার কোচ বাতিস্তা
- ইতিহাসে সর্বোচ্চ: বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম আবারো বাড়লো
- নুরের চিকিৎসা দেশে করাই সম্ভব: ঢামেক পরিচালক
- খুলনায় জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুর
- আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ভারতের দল: রাশেদ খান
- চাঁদাবাজদের মানুষ ক্ষমতায় দেখতে চায় না: চরমোনাইর পীর
- আফগানিস্তানে নতুন আতঙ্ক: বাড়ি থেকেও আশ্রয়হীন হাজারো পরিবার
- লিটনের ব্যাটে ঝড়, শেষ টি-টোয়েন্টিতে দারুণ শুরু বাংলাদেশের
- ইতালির পথে আবারও ট্রাজেডি, ভূমধ্যসাগরে প্রাণহানি
- মাত্র ২২০ টাকায় মিলল পুলিশে চাকরি
- তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে নতুন ঘোষণা দিলেন আহমেদ আযম খান
- গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভে অচল পল্টন মোড়
- চায়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একই প্রেমিকের সঙ্গে দুই গৃহবধূর পলায়ন
- ড. ইউনূসের নতুন ভিশন: সমুদ্রই হবে বিশ্বের পথে বাংলাদেশের মহাসড়ক
- যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থার শীর্ষে এএইচজেড
- জ্ঞান ফিরেছে নুরুল হক নুরের
- "জাতীয় নাগরিক পার্টি আসলে ইউনূসের দল, জামায়াতই দেশ চালাচ্ছে"
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ভ্যালু, ভলিউম ও ট্রেডে শীর্ষ ২০ কোম্পানি
- ডিএসই–৩০ সূচকের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর লেনদেনের চিত্র
- জুলাই সনদ নিয়ে মতভেদ চরমে, আজ তিন দলের সঙ্গে বৈঠক অন্তর্বর্তী সরকারের
- ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ০১ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- শেয়ারবাজারে ফিরল স্বস্তি, শীর্ষে থাকা কোম্পানির তালিকা প্রকাশ
- নিহত গাজা সাংবাদিকের চিঠি পড়ে কেঁদে ফেললেন জাতিসংঘে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত
- সংসদ ভবনে আগুন দিল বিক্ষোভকারীরা
- ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০২৪ সালের নগদ লভ্যাংশ বিতরণ সম্পন্ন
- ডা. তাহেরের বিতর্কিত মন্তব্যে চিকিৎসক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া
- নোয়াখালীর সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুরের অবৈধ সম্পদের পাহাড়
- ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা আনতে কঠোর আইন: অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিলেই কারাদণ্ড