শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা স্থগিত

২০২৫ জুলাই ১৩ ২০:৪৫:৪৩
শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা স্থগিত

ব্রিটিশ এমপি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ফ্ল্যাট জালিয়াতির মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এই আদেশে মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া থমকে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক। তবে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

মামলাটি ঘিরে বিতর্ক শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে, যখন গুলশানে অবস্থিত একটি ভবনের ফ্ল্যাট বিনামূল্যে গ্রহণের অভিযোগ ওঠে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়, ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে অনৈতিকভাবে নির্মাণের সুযোগ করে দেওয়ার বিনিময়ে রাজউকের অনুমোদিত প্লটে একই ভবনে একটি ফ্ল্যাট বিনামূল্যে গ্রহণ করেন তিনি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫ এপ্রিল টিউলিপ সিদ্দিকসহ রাজউকের সাবেক দুই কর্মকর্তা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সরদার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।

পরবর্তীতে ৮ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী ও বিচারপতি এসকে তাহসিন আলীর বেঞ্চ আসামি শাহ মো. খসরুজ্জামানের আবেদনের প্রেক্ষিতে রুল জারি করে এবং মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার আদেশ দেয়। এই আদেশের ফলে মামলার তদন্তে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে দুদক।

দুদকের আইনজীবী এম এ আজিজ খান জানান, তদন্ত যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে, ঠিক তখনই হাইকোর্টের স্থগিতাদেশে গোটা প্রক্রিয়াটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা মনে করছি, তদন্তের মধ্যে এই ধরনের স্থগিতাদেশ দেওয়া হলে প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই আমরা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করব।”

তবে এই স্থগিতাদেশে পুরো মামলাটি নয়, বরং শুধু আবেদনকারী খসরুজ্জামানের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন এই আইনজীবী। তার মতে, বিষয়টি এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার না হলেও, মামলার মূল তদন্ত যেন ব্যাহত না হয়, সে লক্ষ্যে দুদক উচ্চ আদালতের কাছে আপিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এদিকে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে টিউলিপ সিদ্দিকের মতো একজন আন্তর্জাতিক রাজনীতিকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ও মামলা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও অভিহিত করেছেন, আবার অনেকে স্বচ্ছ তদন্তের দাবিও তুলেছেন।

এই মামলার ভবিষ্যৎ কী হবে, এবং হাইকোর্টের চূড়ান্ত আদেশে মামলার কোন দিকটি সামনে আসবে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা। তবে আপাতত হাইকোর্টের আদেশে মামলা কার্যক্রম যে স্থগিত রয়েছে, সেটি দুদকের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ