জানা গেল সেন্ট মার্টিন নিয়ে সরকারের নতুন পরিকল্পনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৮:২২:২৬
জানা গেল সেন্ট মার্টিন নিয়ে সরকারের নতুন পরিকল্পনা

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সভায় পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সেন্ট মার্টিন দ্বীপ রক্ষায় সরকারিভাবে গৃহীত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণ এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের সমন্বিত ও টেকসই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।

উপদেষ্টা বলেন, “দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় আমরা শুধু সীমিত সংরক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করছি না, বরং স্থানীয় মানুষের বিকল্প ও পরিবেশবান্ধব জীবিকার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করছি।”

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিবেচনায়, দরিদ্র কৃষিজীবী পরিবারগুলোকে বিশেষভাবে লক্ষ করে লবণ ও জলবায়ু সহনশীল শাকসবজি ও ফসল চাষে সহায়তা দেওয়া হবে। এর সঙ্গে থাকবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী আয়োজন এবং কারিগরি সহায়তা।

তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে কম্পোস্ট ও ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে সাহায্য প্রদান, নারকেল গাছে জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ এবং হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালনসহ ঘরোয়া প্রাণিসম্পদ পালনেও সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি বাড়ির আঙিনায় ছোট নার্সারি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে, যা দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

সভায় পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মো. নাভিদ শফিউল্লাহ, ড. ফাহমিদা খানম, মো. খায়রুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. কামরুজ্জামান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বিশেষভাবে কোস্টগার্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ, সিইজিআইএস, মৎস্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সংশ্লিষ্টরা এই সভায় উপস্থিত থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণে সম্মত হন।

উল্লেখ্য, সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ হিসেবে সমুদ্রসৈকতের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। তবে জলবায়ু পরিবর্তন, অতিরিক্ত পর্যটন ও দখলের ফলে দ্বীপের প্রতিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব পড়ছে। তাই সরকার দ্বীপের টেকসই উন্নয়ন এবং বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় একাধিক পর্যায়ের উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয়দের জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করছে, যা দ্বীপের দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষায় মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ