মিটফোর্ড থেকে চট্টগ্রাম—সব চাঞ্চল্যকর মামলায় র‍্যাবের জোরালো অবস্থান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১২ ১৩:০৬:৩৮
মিটফোর্ড থেকে চট্টগ্রাম—সব চাঞ্চল্যকর মামলায় র‍্যাবের জোরালো অবস্থান

দেশজুড়ে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত বেশ কয়েকটি ভয়াবহ ও চাঞ্চল্যকর অপরাধের তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) যে কার্যকর ও প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে, তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থাকে আরও দৃঢ় করেছে। ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রকাশ্যে ইট দিয়ে নির্মমভাবে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সোহাগকে হত্যা, চট্টগ্রামে স্ত্রীকে ১১ টুকরো করে লাশ গুমের চেষ্টা কিংবা শাহজালাল বিমানবন্দরে বোমা আতঙ্ক—সবকটি ঘটনায় র‍্যাবের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সাফল্য দেশবাসীর নজর কেড়েছে।

মিটফোর্ডের ঘটনার পরদিনই র‍্যাব দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে এজাহারনামীয় দুই আসামি আলমগীর ও লম্বা মনিরকে গ্রেপ্তার করে। চট্টগ্রামে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে ১১ টুকরো করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা এক ব্যক্তিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে, শাহজালাল বিমানবন্দরে বোমা থাকার খবর পেয়ে র‍্যাব যৌথ অভিযানে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে হেফাজতে নেয়।

র‍্যাব একের পর এক জটিল ও ভয়ঙ্কর মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করে দেশবাসীকে যেমন স্বস্তি দিয়েছে, তেমনি অপরাধ দমনে তাদের সক্ষমতার বার্তা স্পষ্টভাবে পৌঁছে দিয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত গণপিটুনি, নারী ও শিশু নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা ও হত্যা মামলায় র‍্যাব যেসব আসামিদের গ্রেপ্তার করেছে, তার মধ্যে রয়েছে লালমনিরহাটের পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলাকারী, কুমিল্লায় মা ও দুই সন্তানকে খুনের ঘটনায় জড়িত ৬ জন, কুমিল্লা ও ভোলার নারী নির্যাতন মামলার ৭ আসামি এবং মোহাম্মদপুরের ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’-এর কুখ্যাত সদস্য টুন্ডা বাবু।

অপহরণ, মানবপাচার ও বিনিয়োগ প্রতারণার মতো অপরাধেও র‍্যাব নজরকাড়া সাফল্য দেখিয়েছে। কুমিল্লা থেকে অপহৃত শিশু উদ্ধার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপহরণ মামলায় একাধিক আসামি গ্রেপ্তার, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতারণায় লিপ্ত বিদেশিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার, এবং লক্ষ্মীপুরে বাবাকে খুন করা মাদকাসক্ত ছেলেকে আটকের ঘটনা—সবই র‍্যাবের কৌশলগত দক্ষতার উদাহরণ।

মাদকবিরোধী অভিযানেও র‍্যাব বরাবরের মতো কঠোর অবস্থানে রয়েছে। গাঁজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও বিদেশি মদসহ রেকর্ডসংখ্যক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এক বছরে তারা ৩,৫০০ মাদক কারবারি আটক করেছে এবং উদ্ধার করেছে লাখ লাখ ইয়াবা ও টনকে টন গাঁজা। পাশাপাশি অপহরণ দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও জলদস্যু দমনেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে র‍্যাবের।

র‍্যাব মহাপরিচালক জানিয়েছেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মানবাধিকার রক্ষা, অপরাধ চিহ্নিত ও দমন এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে র‍্যাব আরও শক্তভাবে কাজ করবে। তার ভাষায়, জনগণের আস্থা অর্জন করাই র‍্যাবের সবচেয়ে বড় অর্জন এবং ভবিষ্যতেও তারা হবে মানুষের পাশে নির্ভরযোগ্য এক শক্তি।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ