শেখ হাসিনার উপযুক্ত বিচার বাংলাদেশেই হবে: আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের মন্তব্য

২০২৫ জুলাই ০৯ ১৬:১৩:৩৩
শেখ হাসিনার উপযুক্ত বিচার বাংলাদেশেই হবে: আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের মন্তব্য

আইন উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব ধরনের অভিযোগ ও মামলার বিচার বাংলাদেশেই হবে। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিংয়ের ওপর ভিত্তি করে এই মন্তব্য করেন।

বিবিসি আই-এর যাচাইকৃত ওই অডিও রেকর্ডিংয়ে স্পষ্টভাবে শোনা যায়, গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া গণআন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলির নির্দেশ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসীন নেতা শেখ হাসিনা নিজেই। রেকর্ডিং অনুযায়ী, তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেন, "তারা যেখানেই আন্দোলনকারীদের পাবেন, গুলি করবেন।"

ড. আসিফ নজরুল এই অডিওকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর সময় গুলির অনুমতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি প্রকাশ করে যে, দেশের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলির নির্দেশনা সরাসরি সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে দেওয়া হয়েছিল, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর বিষয়।

গত বছরের জুলাই মাসে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষা নীতি পরিবর্তনের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে। সরকার বিক্ষোভ দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনী eingesetzt করে, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়।

এই অডিও প্রকাশের পর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে এই তথ্যকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে মানবাধিকার সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও শাসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আইনি প্রক্রিয়া ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে বাংলাদেশেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগের ন্যায়সঙ্গত বিচার হবে। দেশের নাগরিক হিসেবে এটাই প্রত্যাশা।”

অন্যদিকে, সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এই অডিও রেকর্ডিং ফাঁসের পেছনে যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে, এমন আশঙ্কা করলেও এটি দেশের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জনমতকে তীব্রভাবে প্রভাবিত করেছে।

বর্তমানে রাজনৈতিক মহল, সাধারণ জনগণ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ার দাবি করছে, যাতে সত্যিকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয় এবং ভবিষ্যতে এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ