মেজর সিনহা হত্যা

‘৭ দিনে ফাঁসি’ নয়, এখনো চলছে শুনানি: রাষ্ট্রপক্ষ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৭ ১৯:৪৬:৪৬
‘৭ দিনে ফাঁসি’ নয়, এখনো চলছে শুনানি: রাষ্ট্রপক্ষ

টেকনাফের বাহারছড়ায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের মামলায় হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি ধারাবাহিকভাবে চলছে। ইতোমধ্যে মোট ১৪ কার্যদিবসে পেপারবুক উপস্থাপনসহ মামলার বিভিন্ন পর্যায়ের নথি শুনানি হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মুস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেন লিয়নের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে রোববার (১৮ মে)।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত ‘সাত দিনের মধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ফাঁসি কার্যকর’ সংক্রান্ত খবরকে ‘ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "এমন কোনো রায় বা আদেশ এখনও হয়নি। এখনো বিচারিক আদালতের রায়ের অংশ উপস্থাপন চলছে, রায়ের পর্যায়ে আসাই হয়নি।"

রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, আপিল শুনানিতে এরই মধ্যে এফআইআর, চার্জশিট, সাক্ষ্য ও জেরা, আসামি ও সাক্ষীদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি এবং অভিযোগ গঠনের আদেশ উপস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। এখন বিচারিক আদালতের রায়ের পাঠ চলছে, যার প্রায় অর্ধেক ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবণী আক্তার, সুমাইয়া বিনতে আজিজ, তানভীর প্রধান এবং গিয়াস উদ্দিন গাজী। এছাড়া রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান মামলার শুরুতেই উপস্থিত ছিলেন।

আসামি পক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন এস এম শাহজাহান ও বিচারপতি মুনসুরুল হক চৌধুরী। তবে সর্বশেষ শুনানির দিনে (১৫ মে) আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী অংশ নেননি।

রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, বিচারিক আদালতের রায় পাঠ শেষ হলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন পর্ব শুরু হবে। তারপরই আদালত রায় দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এই ঘটনায় আলোচিত মামলায় মূল আসামি ছিলেন টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জন। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রদীপ কুমার দাশসহ দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। এরপর নিয়ম অনুযায়ী উচ্চ আদালতে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি এখনো প্রক্রিয়াধীন থাকায়, ফাঁসি কার্যকরের কোনো প্রশ্নই ওঠে না বলে পুনরায় নিশ্চিত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এই মামলাটি জনস্বার্থ ও মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি নজিরবিহীন অধ্যায় হয়ে উঠেছে যেখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি ধাপকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে উচ্চ আদালত।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ