ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ভারতে ওয়াকফ আইন

ভারতে ওয়াকফ সংশোধন আইনে স্থিতাবস্থা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কেন্দ্রকে

২০২৫ এপ্রিল ১৭ ২২:২৯:০৫
ভারতে ওয়াকফ সংশোধন আইনে স্থিতাবস্থা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কেন্দ্রকে

সত্য নিউজ:ভারতে সদ্য কার্যকর হওয়া ওয়াকফ সংশোধন আইন-২০২৫–এর কয়েকটি ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সাময়িক স্থিতাবস্থা (status quo) জারি করেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে আগামী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত এই স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে লিখিত জবাব চেয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি যৌথ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। শুনানিতে ভারতের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতকে আশ্বস্ত করেন যে, সরকার ওয়াকফ সংশোধন আইন-২০২৫ অনুসারে আপাতত কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে কোনো নতুন নিয়োগ দেবে না এবং ১৯৯৫ সালের মূল ওয়াকফ আইনের অধীনে ইতোমধ্যে নিবন্ধিত সম্পত্তিসমূহের বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হবে না।

আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছে যে, পিটিশনের পরবর্তী পাঁচ দিনের মধ্যে ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবহারকারীদের কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়েও কেন্দ্র সরকারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ সংশোধন আইন-২০২৫ বাতিল চেয়ে মোট ৭২টি পিটিশন দাখিল হয়েছে, যার মধ্যে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দসহ বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন ও ব্যক্তি রয়েছেন। এছাড়াও ডিএমকে ও কংগ্রেসের সাংসদ ইমরান প্রতাপগারহি ও মোহাম্মদ জাওয়াদও আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন।

বিচারপতিদের বেঞ্চ জানায়, এত বিপুল সংখ্যক পিটিশনের শুনানি একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। তাই আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী বাছাই করে পাঁচটি পিটিশন গ্রহণ করা হবে, এবং সেগুলোতেই আপাতত শুনানি চলবে। আদালত আরও নির্দেশ দেয়, সরকার থেকে সাড়া পাওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে আবেদনকারীরা তাদের চূড়ান্ত অবস্থান জানিয়ে জবাব দাখিল করবেন।

প্রসঙ্গত, ওয়াকফ সংশোধন বিল ২০২৫ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে উত্তপ্ত বিতর্কের মধ্য দিয়ে ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষ—লোকসভা ও রাজ্যসভা—থেকে পাস হয়। ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হয়। লোকসভায় বিলটির পক্ষে ২৮৮টি এবং বিপক্ষে ২৩২টি ভোট পড়ে। রাজ্যসভায় পক্ষে ভোট পড়ে ১২৮টি এবং বিপক্ষে ৯৫টি।

এই সংশোধিত আইনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকের আশঙ্কা, নতুন আইনের মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বেড়ে যাবে এবং মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বায়ত্তশাসনে চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।