চাঁদের দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল গ্রহাণু, হতে পারে মহাজাগতিক বিস্ফোরণ!

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৮ ২১:৩৫:৫৮
চাঁদের দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল গ্রহাণু, হতে পারে মহাজাগতিক বিস্ফোরণ!
ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীর পাশ দিয়ে একটি বিশালাকৃতির গ্রহাণু উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যার নাম ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর আকার প্রায় ১৫ তলা ভবনের সমান—প্রায় ২০০ ফুট চওড়া। এটি যদি চাঁদের গায়ে ধাক্কা খায়, তাহলে হতে পারে এই দশকের সবচেয়ে বড় মহাজাগতিক ঘটনা।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, গ্রহাণুটি সরাসরি পৃথিবীতে আঘাত হানবে না। তবে এর গতিপথ এমনভাবে রয়েছে যে, এটি ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর চাঁদের পৃষ্ঠে আছড়ে পড়তে পারে। নাসার সর্বশেষ পূর্বাভাসে দেখা গেছে, এ সংঘর্ষের সম্ভাবনা ৪.৩ শতাংশ। যদি সেটি সংঘটিত হয়, তবে চাঁদের বুকে তৈরি হতে পারে প্রায় এক কিলোমিটার চওড়া গর্ত, যার দৃশ্য সাধারণ টেলিস্কোপ দিয়েও দেখা যাবে।

বিজ্ঞানীদের মতে, এ ধরনের সংঘর্ষ থেকে কিছু ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর দিকে ছুটে আসতে পারে। বেশিরভাগ অংশ বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পুড়ে যাবে, তবে কিছু টুকরো স্যাটেলাইট, জিপিএস, ইন্টারনেট ও আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

নাসার প্ল্যানেটারি ডিফেন্স ইউনিটের মলি ওয়াসার জানিয়েছেন, গ্রহাণুটি বর্তমানে সূর্যের চারপাশে আবর্তন করছে এবং জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে এর গতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শুরুতে সংঘর্ষের সম্ভাবনা ধরা হয়েছিল ৩.৮ শতাংশ, যা এখন বেড়ে ৪.৩ শতাংশে পৌঁছেছে।

এ ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিসহ বিশ্বের কয়েকটি মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান এখন বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি ‘নিউমির’ ইনফ্রারেড টেলিস্কোপটি আগে থেকে চালু থাকত, তাহলে এই গ্রহাণুটিকে আরও আগে শনাক্ত করা সম্ভব হতো। ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি বড় শিক্ষার জায়গা হয়ে থাকবে।

এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে, মহাকাশে আমাদের অবস্থান কতটা অনির্দেশ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ। যদিও পৃথিবী সরাসরি এই ধাক্কায় প্রভাবিত হবে না, তবে এটি হতে পারে এক যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, যা গ্রহ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির জন্য এক বড় পরীক্ষা হিসেবেও বিবেচিত হবে।

তাই ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর দিনটি মহাকাশপ্রেমীদের জন্য হয়ে উঠতে পারে স্মরণীয় এক মুহূর্ত—একদিকে মহাজাগতিক বিস্ফোরণের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য, অন্যদিকে প্রযুক্তি ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ